কাজলেন্দু দে

  • অসুখ

    কাজলেন্দু দেঅসুখ থেকে উঠে-আসা ঘরবাড়ি সারাদিন রোদ্দুরে ঝিমোয়। রোদ্দুরে কি তাপ আছে? বুঝতে পারি না। আমি আঙুলে জড়াই মৃত্যু; সভ্যতার সংকটে, দ্বৈরথে চেয়ে দেখি – দূরাগত মেঘমল্লারের সুরধ্বনি বৃষ্টির আশায় ঘুমভাঙা অভুক্ত সকালের সাথে হাসপাতালের সিঁড়িতে দীর্ঘক্ষণ চুপচাপ বসে আছে। অন্যদিকে, অমীমাংসিত দ্বন্দ্বের শ্রম্নতিলিপি হাতে নিয়ে রক্তজবা বাগানে এসেছে বৈজুবাওরা আর তানসেনের খোঁজে।

  • প্রতীক্ষা

    কাজলেন্দু দে   নাটাকরঞ্জ লতার নিচে নির্জনতা, পাশে ধ্যানমগ্ন না-ফেরার দিন কুয়াশাকুহক পার হয়ে উঠে আসা মাইক্রোবাসে কয়েকটি উদ্বিগ্ন মুখ মনে সচকিত পুরনো পাতার শব্দ এলোমেলো ভাবনার মেঘ দূরে, নদীতীরে অপঠিত অসংখ্য কবিতা শব্দকাতরতা সারাদিন হাতছানি দিয়ে ডাকে আমি দিনশেষে ওইদিকে যেতে যেতে ভাবি – যে-রাসত্মা দীর্ঘ আর এবড়ো-খেবড়ো, প্রসারিত অবচেতনের দিকে তার শেষপ্রামেত্ম, অর্থাৎ…

  • বার্ধক্য কিংবা নকশিকাঁথার গল্প

    কাজলেন্দু দে ব্যস্ততা কুড়িয়ে রাখি গাছের কোটরে। শীতবস্ত্র বুনতে বুনতে ক্রমশ এগিয়ে আসে শীত – শূন্যঘরে রং-তুলি ধুলোময়লা জুতো ও বিলাপ। স্বরলিপি রাতের ফসলগুলি কবেই কুয়াশায় নিরুদ্দেশ! আজকাল ভ্রু ছুঁয়ে যাওয়া পাখির ঠিকানা খোঁজে ইসিজি রিপোর্ট – আর, পোস্টমর্টেমের সুচ সারাদিন দুঃখের সুতোয় নকশিকাঁথা বোনে। আমার হারিয়ে যাওয়া জামাটির ওপর একটা সবুজ ঘাসফড়িং বসে আছে।…

  • সুলেখার জন্য শোকগাথা

    কাজলেন্দু দে   নিসর্গের গ্রন্থাগারে আমরাই পাঠক ছিলাম। কখনো জীবনানন্দ দাশ এসে ঝিঁঝি পোকার ডাক আর ট্রামের চাকার শব্দ শুনতেন। ঘাটশিলা থেকে আসতেন বিভূতিভূষণ – নদী, আকাশ, গাছপালা আর পাখিদের সঙ্গে কথা বলে ফিরতেন নিস্তব্ধ সন্ধ্যায়। একদিন এক বটগাছ এসে বলল আমায় – সুলেখাকে চেনো নাকি? সুলেখানাম্নী কাউকে কখনো দেখিনি; এ-নামের কাউকে চিনি না। আমার…

  • প্রকৃতি

    কাজলেন্দু দে   ক্রমে বইমেলা ঘুরে ঘরে ফিরে আসি। এই ঘরে নীড়হারা পাখির উড়াল আর বিধবা সকালের স্বপ্ন মিলেমিশে থাকে – এককোণে পথ থেকে তুলে আনা দীর্ঘশ্বাসও থাকে। চৌকাঠ পেরোলে মাঠ, দূরে নদী, হাওয়ার চিৎকার। হাওয়া জানে কেন আমি মাঝে মাঝে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতাম। এভাবেই ক্রমশ নিজের কাছে ফিরে আসা, রহস্যকে ভালোবাসা আর পরাবাস্তবের…