নলিনী বেরা

  • সাঁঝে-সকালের ঝিঙা ফুল

    সাঁঝে-সকালের ঝিঙা ফুল

    বাইরের উঠোনে সাইকেলের প্যাডেলে পা রেখে হরিহর হাঁক দিলো, ‘এসো!’ ঘরের ভেতর ভ্যানিটি ব্যাগে এটা-ওটা, মায় নিজের মোবাইল ফোনটা গুছিয়ে নিতে নিতে অণিতা উত্তর করল, ‘হ্যাঁ, যাই।’   সকালবেলা। ঝলমলে রোদ উঠেছে। বাঁশঝাড়ে নিম-চল্লার গাছে কাক-কুইরি যেমন ডাকে, ডাকছে। বেগুনঝাড়ের বেড়ায় লতিয়ে-ওঠা কাবাগুড়ি ফল পেকে এখন টকটকে লাল! হরিহর সাইকেলের বেলটায় আলতো চাপ দিয়ে ‘ট্রি-নি-টি’…

  • এক মিনিটের নীরবতা

    নলিনী বেরা স্নানাহারের পূর্বেই আমার শাকান্ন ভোজন হয়ে গিয়েছিল, তাই মধ্যাহ্ন-ভোজনে অভিরুচি ছিল না। কিন্তু একে ‘মহিমারঞ্জন’, তার ওপর ‘দাদা-বউদির হোটেল’ – অগত্যা যেতেই হলো। হরিদ্বার-ভ্রমণার্থীদের মুখে এতো শুনেছি ‘দাদা-বউদির হোটেল’ ‘মাসির হোটেল’ না ‘মাসি-পিসির হোটেল’-এর নাম যে, ‘বন্যানি চ তথান্যানি স্বাহারাণি’, আহার করি আর নাই করি – যেতেই হচ্ছে আমাকে! এছাড়াও তো আছে ‘গৌরীশঙ্কর…

  • হারমোনিয়াম

    নলিনী বেরা  আমাদের গ্রামে এখন এক-আধটা নয়, ফোন আছে চল্লিশ-পঞ্চাশটা। তাও আবার যে সে ফোন তো নয়, রীতিমতো ‘সেলফোন’। অর্থৎাৎ মোবাইল ফোন। বিদ্যুৎ নেই, তাই ল্যান্ড-ফোনের প্রশ্নও নেই। অন্ধকার সান্ধ্যরজনীতে ঝোপে-ঝাড়ে এখন যত না জোনাকির আলো জ্বলে তার চাইতে সেলফোনের আলোই জ্বলে বেশি। মানুষ যত না ঘরের লোকের সঙ্গে কথা বলে, কানে মোবাইল চেপে তার…

  • ঝিঁঝি পোকার জীবন

    নলিনী বেরা আচমকা আমাদের বাবা ধুলোপায়ে কোত্থেকে প্রায় দৌড়–তে দৌড়–তে এসে মাথার ওপর হাত ঘুরিয়ে সমূহ সর্বনাশের ইঙ্গিত করে বলে বসলেন, ‘এখানে আর একদণ্ডও থাকাটা নিরাপদ নয়, আঁকাড়া বিপদ চারধার থেকে ধেয়ে আসছে ধাঁইধাঁই করে! সবকিছু ছেড়েছুড়ে এক্ষুনি পালাতে হবে। কই, ডাক তোর মাকে!’ জানি, বাবার মা অন্তপ্রাণ, তাই বলে আমি ও আমার বোন নাকফুঁড়িও…