শিরোনামহীন

বাংলাদেশে ভাস্কর্য চর্চার ক্ষেত্রে হামিদুজ্জামান খান বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী। দেশে ও বিদেশে তাঁর বেশকিছু দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভাস্কর্য চর্চার মধ্য দিয়ে এদেশের আধুনিক ভাস্কর্য চর্চাকে নবমাত্রা দান করেছেন। সত্তরের দশকে ভাস্কর্য চর্চায় তাঁর প্রিয় বিষয় ছিল মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানিদের গণহত্যা ও নির্যাতনকে বিষয় করে তিনি বেশকিছু ভাস্কর্য সৃষ্টি করেছেন, যা শিল্পমূল্যে ও আধুনিকবোধে উজ্জ্বল হয়ে আছে। সাম্প্রতিক কাজে তিনি জীবনের নানা অনুষঙ্গকে তুলে ধরছেন।

এসব সৃষ্টিতে তাঁর সৃজনের আবেগ যেমন ধরা আছে, তেমনি জীবন রূপায়ণের অঙ্গীকারের চেতনাও পাওয়া যায়। ভাস্কর্য সৃজনে তিনি যে-ত্রিমাত্রা সঞ্চার করেন, তা হয়ে ওঠে নান্দনিক বোধে ও সংবেদনে ভিন্নধর্মী এবং ভাস্কর্যগুণে বৈশিষ্ট্যময়। এ গুণাবলির জন্য হামিদুজ্জামান আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পরিচিতি অর্জন করেছেন।

ভাস্কর্য চর্চায় তাঁর নিরলস সাধনা ও বিরতিহীন চর্চা তাঁকে অনন্য ভাস্করে পরিণত করেছে। এ মাধ্যমে চর্চার প্রাধান্য দিলেও তিনি চিত্রশিল্পে বেশ পারদর্শী। বিশেষত জলরঙে তাঁর সহজাত দক্ষতা রয়েছে।

তিনি ১৯৬৭ সালে ঢাকা চারু ও কারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে বিএফএ এবং ১৯৬৭ সালে বরোদা এমএস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএফএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া তিনি ১৯৮২-৮৩ সালে নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক ভাস্কর্য কেন্দ্রে ভাস্কর্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারু ও কারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগ থেকে অবসরগ্রহণের পর ফ্রিল্যান্স ভাস্কর ও শিল্পী হিসেবে কর্মরত আছে।

তাঁর জন্ম ১৯৪৬ সালে কিশোরগঞ্জে। প্রচ্ছদের চিত্রকর্মটি ২০২৫ সালে জলরঙে আঁকা।