সংবাদপত্র প্রকৃত ইতিহাসের জন্মপ্রদায়ক

হাবিব আর রহমান

এ -আলোচনার শিরোনাম গ্রহণ করা হয়েছে কলকাতা থেকে সপ্তাহে তিনদিন প্রকাশিত দ্বিভাষিক (বাংলা ও ইংরেজি) পত্রিকা চমৎকার মোহনের ১৮৫৭ সালের ২ ডিসেম্বর সংখ্যার একটি মন্তব্য থেকে। যথার্থই জাতীয় ইতিহাস নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণের ক্ষেত্রে সংবাদ-সাময়িকপত্র গুরুত্বপূর্ণ অন্যতম প্রাথমিক উৎস হিসেবে স্বীকৃত। কেননা, সংবাদপত্র ধরে রাখে একটি জাতির সামগ্রিক জীবনচিত্র। আর সাময়িকপত্র ধারণ করে তার সৃষ্টিশীলতা ও চিন্তাচেতনার প্রবাহ। সেজন্যে ইতিহাস-সচেতন গবেষক-লেখক, এমনকি প্রতিষ্ঠান প্রভূত পরিশ্রমে সংবাদ-সাময়িকপত্রের ইতিহাস রচনা করেন, নানা ধরনের পরিকল্পনা থেকে প্রস্ত্তত করেন সংকলনগ্রন্থ।

ইতিহাস-সচেতন জাতি হিসেবে বাঙালির তেমন একটা সুনাম নেই, বরং দুর্নামই আছে। তবু খানিকটা গর্বের সঙ্গে বলা যায় ১৮১৮ সালের মাঝামাঝি বাংলা সাময়িক ও সংবাদপত্রের জন্মের মাত্র এক যুগ পর থেকেই ইংরেজি-বাংলা উভয় ভাষার কাগজগুলোতে প্রবন্ধ আকারে তার ইতিহাস লেখা শুরু হয়ে যায়। এই ধারা এখনো অব্যাহত। এগুলোকে ঠিক ইতিহাসের মর্যাদা দেওয়া না গেলেও ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে এদের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

গ্রন্থাকারে বাংলা সংবাদ-সাময়িকপত্রের ইতিহাস প্রথম রচনা করেন কেদারনাথ মজুমদার। বাঙ্গালা সাময়িক সাহিত্য
(প্রথম খ-) নামে তাঁর বইটি বেরোয় ১৯১৭ সালে ময়মনসিংহ থেকে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় পথিকৃৎ বিখ্যাত ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৩৬ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর দেশীয় সাময়িকপত্রের ইতিহাস (প্রথম খ-)। পরে ১৯৩৯-এ এটিকে পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত করে প্রকাশ করেন বাংলা সাময়িকপত্র নাম দিয়ে। এর দ্বিতীয় খ- প্রকাশ পায় ১৯৫২-র গোড়ায়, কালসীমা ১৮৬৮-১৯০০। অর্থাৎ ব্রজেন্দ্রনাথের বই ধারণ করেছে পুরো উনিশ শতকের ইতিহাস। শতাব্দীর শেষ দশকে তিন খ– প্রকাশিত হয় গীতা চট্টোপাধ্যায়ের বাংলা সাময়িক পত্রিকাপঞ্জী, কালসীমা ১৯০০-১৯৪৭। শেষের দুজনের কাজ মিলিয়ে দেশভাগ পর্যন্ত বাংলা সংবাদ-সাময়িকপত্রের ইতিহাস পূর্ণাঙ্গতা পায়।

পূর্ণাঙ্গতার কথা বলা হলো সময়ের দিক থেকে। না হলে গীতা চট্টোপাধ্যায়ের বইয়ের পূর্ববর্তী কাজগুলোর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে  অপূর্ণতা রয়েছে। সেটি নিরসনের লক্ষ্য বাংলাদেশের দুজন কৃতী গবেষক আনিসুজ্জামান ও মুনতাসীর মামুন মূল্যবান কাজ করেছেন। বাঙালি মুসলমান-সম্পাদিত পত্রিকার সূচনাবর্ষ ১৮৩১ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত একশ বছরের ইতিহাস প্রণয়ন করেছেন আনিসুজ্জামান তাঁর মুসলিম বাংলার সাময়িকপত্র (১৯৬৯) গ্রন্থে। মুনতাসীর মামুনের উনিশ শতকে বাংলাদেশের সংবাদ সাময়িকপত্র গ্রন্থ এগারো খ–র সুবিশাল প্রকল্প। এর কালসীমা ১৮৪৭-১৯০৫। প্রথম খ–র প্রকাশকাল ১৯৮৫। গ্রন্থনামের ‘বাংলাদেশ’ আজকের স্বাধীন বাংলাদেশের ভৌগোলিক এলাকা।

বাংলা সংবাদ-সাময়িকপত্রের ইতিহাস রচনার এই ধারায় সর্বশেষ সংযোজন স্বপন বসুর উনিশ শতকের বাংলা সংবাদ-সাময়িকপত্র। হয়তো প্রশ্ন দেখা দিতে পারে ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনিসুজ্জামান ও মুনতাসীর মামুনের প্রভূত শ্রমে ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ববর্তী যে-বিপুলসংখ্যক পত্রপত্রিকার নাম-পরিচয় জানা গেছে, সেক্ষেত্রে একুশ শতকে এসে আবার নতুন করে উনিশ শতকীয় পত্রিকার ইতিহাস রচনার প্রয়োজন অনুভূত হলো কেন? বলেছি যে, পত্রপত্রিকা শুধু জাতির ইতিহাস নির্মাণের নয়, পুনর্নির্মাণেরও উপাদান জোগায়। এ-বইয়ের জন্ম হয়েছে পুনর্নির্মাণের আবশ্যিক তাগিদ থেকে।

গ্রন্থের ‘নিবেদন’ অংশে স্বপন বসু জানাচ্ছেন, উনিশ শতকের বাংলা সংবাদ-সাময়িকপত্রের একটি পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনার অভাব তিনি দীর্ঘদিন ধরে অনুভব করে আসছিলেন। এর অর্থ এই যে, আগে যাঁরা এ-প্রয়াস পেয়েছিলেন তাঁদের কাজে অপূর্ণতা রয়ে গেছে। অপূর্ণতা মানে ভুক্তির সংখ্যাগত বিচার নয় কেবল, অন্য কিছু দিক থেকেও অপূর্ণতা। পথিকৃৎদের ক্ষেত্রে সেগুলো একটু বেশি থাকাই স্বাভাবিক। সেটা কাটিয়ে ওঠার জন্যই এই নবপ্রয়াস। কিন্তু এটিও যে পূর্ণতা লাভ করেছে তা বলা সম্ভব নয়। লেখক অবশ্য সে-দাবি করেনও না। কেননা এরপরও ওই সময়কার পত্রপত্রিকা সম্পর্কে নতুন তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যেতে পারে।

এ তো সত্য যে, পূর্বসূরির কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করে উত্তরসূরি অনেকদূর অগ্রসর হতে পারেন। নিজের কাজ উপস্থাপনের ক্ষেত্রে গ্রহণ করতে পারেন নতুন কিছু পরিকল্পনা। তাছাড়া প্রযুক্তির কল্যাণে  সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। ব্রজেন্দ্রনাথ, আনিসুজ্জামান প্রমুখ পূর্বসূরির প্রচেষ্টা ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়ার অনেক পর স্বপন বসু তাঁর গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। মুনতাসীর মামুনও বলা চলে একই কালে কাজ করেছেন, কিন্তু স্বপন বসুর বই বেরোলো বেশ পরে। ফলে তাঁর পক্ষে এতদিন অপরিজ্ঞাত বেশ কিছু পত্রপত্রিকার সন্ধান পাওয়া সম্ভব হয়েছে, কোনো কোনোটি চাক্ষুষ করতেও পেরেছেন। জানিয়েছেন, চলিস্নশ বছর ধরে এজন্য শ্রম দিয়ে তিলতিল করে তিনি উপাদান সংগ্রহ করেছেন।

ব্রজেন্দ্রনাথের বইয়ের ভুক্তিতে এমন কিছু নাম আছে যেগুলো  প্রকৃতপক্ষে পত্রিকা নয়, সেগুলোকে গ্রন্থনামে চিহ্নিত করাই সমীচীন। অবশ্য সেগুলো প্রচলিত আঙ্গিকের গ্রন্থও নয় আবার। যেমন, বিজ্ঞান সেবধি (১৮৩২)। একে মাসিক পত্রিকা হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও সম্পাদকের নামোল্লেখ নেই। আসলে Society for Translating Europeans Sciences নামের একটি সংগঠন বিজ্ঞানের বই থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাংলায় অনুবাদ করিয়ে বিজ্ঞান সেবধি নামে মাসে মাসে সংখ্যাভিত্তিকভাবে প্রকাশ করত। একে তাই গ্রন্থাংশের অনুবাদ বলাই সংগত। সমাচার দর্পণ তাদের আলোচনাতেও একে পুস্তকই বলেছে। এরকম আয়ুবের্বদ দর্পণ (১৮৪০), সববার্থ সঙ্কলন (১৮৭২), হীরাপ্রভা (১৮৮৩) প্রভৃতির নাম উল্লেখ করা যায়। সংগত কারণে স্বপন বসু এগুলোকে ‘বই না পত্রিকা?’ শিরোনামে আলাদাভাবে দেখিয়েছেন যে, বৈশিষ্ট্যগত বিচারে এগুলোকে পত্রিকা বলা যায় না।

প্রকাশিত হবে বলে বিজ্ঞাপিত হলেও বাস্তবে বেরোয়নি অথবা কিছু বেরোলেও খোঁজ পাওয়া যায়নি এমন পত্রিকার সংখ্যা কম নয়। এজাতীয় প্রায় অর্ধশত পত্রিকার নাম বিজ্ঞাপনসহ সংশিস্নষ্ট পত্রিকায় প্রকাশের সাল-তারিখ ইত্যাদি তথ্য উল্লেখপূর্বক একটি বিবরণ স্বতন্ত্রভাবে এ-বইয়ে সন্নিবেশ করা হয়েছে। বাংলা-ইংরেজি উভয় ভাষার অসংখ্য পত্রিকা থেকে এতগুলো অপ্রকাশিত অথবা অজ্ঞাত পত্রিকার বিজ্ঞাপনের সন্ধান পাওয়া কম কথা নয়। এতে সবদিক থেকে লেখকের প্রভূত শ্রমশীলতা স্বতঃপ্রমাণিত হয়। তাছাড়া এই প্রয়াস সম্পূর্ণ নতুনও বটে। এর আগে এ জাতীয় দু-একটি পত্রিকা ব্রজেন্দ্রনাথ ও আনিসুজ্জামান তাঁদের বইয়ের ভুক্তিতে স্থান দিয়েছেন, যদিও দুজনেই সে-পত্রিকার প্রকাশের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশও করেছেন। সংগত কারণেই স্বপন বসু এগুলোতে ভুক্তির অন্তর্ভুক্ত করেননি।

ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা সাময়িক-পত্র দুখ–র মধ্যে আকারে-প্রকারে একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। প্রথম খ– তিনি গুরুত্বপূর্ণ বহু পত্রিকা থেকে প্রয়োজনানুগ অনেক উদ্ধৃতি দিয়েছেন, বিশেষত প্রথম সংখ্যার সম্পাদকীয় অংশ থেকে। এতে পাঠকের দুটি প্রাপ্তি ঘটেছে। প্রথমত পত্রিকার চরিত্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া, দ্বিতীয়ত সমাজ ও রাষ্ট্র বিষয়ে তথ্য লাভ। কিন্তু কেন জানি না দ্বিতীয় খ– তিনি এ-রীতি অনুসরণ করেননি।

‘বেঙ্গল লাইব্রেরি ক্যাটালগ’ অবলম্বনে ১৮৬৮-১৯০০ পর্যন্ত সময়ে প্রকাশিত পত্রিকাগুলোর সম্পাদকের নাম ও প্রকাশকালই কেবল জানানো হয়েছে এই খ–। কিছু পত্রিকার আবার নামোল্লেখ ছাড়া আর কোনো তথ্য নেই। ব্রজেন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা জানিয়েও বলতে হবে যে, দ্বিতীয় খ-টি হয়েছে একটি ডেসক্রিপটিভ ক্যাটালগ। এটি তাঁর কাজের একটি বড় অসম্পূর্ণতা। স্বপন বসু তাঁর বইয়ে এই অসম্পূর্ণতা থেকে মুক্ত থাকার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। ফলে ১৮১৮-১৯০০ পর্যন্ত ৮৩ বছরে প্রকাশিত এক হাজার দুশো দুটি পত্রিকার কালানুক্রমিক ভুক্তি কেবল উনিশ শতকের বাংলা সংবাদ-সাময়িকপত্রের নিছক ইতিহাস হয়নি, একই সঙ্গে এটি হয়ে উঠেছে সমকালীন বাঙালির বিচিত্র চিন্তাজগতের অনেকটা উৎসগ্রন্থ।

স্বপন বসুর কল্যাণে এতদিন অপরিজ্ঞাত মুসলিম-সম্পাদিত তিনটি পত্রিকার খবর আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে বরিশালের গোপালপুর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বালারঞ্জিকা (১৮৭৩), চট্টগ্রামের পাক্ষক্ষক পূবর্ব দর্পণ (১৮৮৫) ও ময়মনসিংহের আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাসিক মুখপত্র উদ্দেশ্য ও মহৎ (১৮৮৮)। এছাড়া আনিসুজ্জামানের বইয়ের ভুক্তিতে আছে কিন্তু তাঁর পক্ষে চাক্ষুষ করা সম্ভব হয়নি এমন দু-একটি পত্রিকার প্রত্যক্ষ বিবরণও স্বপন বসু দিয়েছেন। যেমন মুসলমান পত্রিকা। আনিসুজ্জামান পত্রিকাটির প্রকাশকাল উল্লেখ করেছেন ১৮৮৪, ধরন সাপ্তাহিক, সম্পাদক মোহাম্মদ রেয়াজুদ্দীন আহমদ। প্রথম দুটি তথ্য তিনি গ্রহণ করেছেন ব্রজেন্দ্রনাথের বইয়ের দ্বিতীয় খ–র ৪১১নং ভুক্তি থেকে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘মুসলমান-সম্প্রদায়ের মুখপত্র হিসেবে এই সাপ্তাহিক সংবাদপত্র জানুয়ারি মাস হইতে প্রকাশিত হইবে বলিয়া বিজ্ঞাপিত হইয়াছিল।’ ব্রজেন্দ্রনাথের লেখায় সম্পাদকের নাম নেই। আনিসুজ্জামান তা জেনেছেন রেয়াজুদ্দীনের স্মৃতিকথা থেকে। তাতে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়ান একো নামের ইংরেজি সংবাদপত্রের পরিচালক শশিভূষণ মুখোপাধ্যায়-পরিচালিত স্বল্পস্থায়ী মুসলমান পত্রিকার তিনি সম্পাদক নিযুক্ত হয়েছিলেন। স্বপন বসু পত্রিকাটি কেবল চাক্ষুষ করেননি, এর প্রথম সংখ্যার নামপত্রের ফটোচিত্র দিয়েছেন। যে-কোনো কারণে হোক, পত্রিকাটি জানুয়ারিতে প্রকাশলাভ করতে পারেনি, কয়েক মাস পর এটি প্রকাশিত হয় ৯ সেপ্টেম্বর। অন্যান্য ক্ষেত্রেও স্বপন বসু আনিসুজ্জামান-প্রদত্ত তথ্যের পুনর্বিচার করেছেন।

ক্রাউন সাইজের এ-বইয়ের ১৩৬ পৃষ্ঠার ভূমিকাটি সন্দেহাতীতভাবে অতীব মূল্যবান। এ যে বহু বছরের বহু সাধনার ফল তা পাঠকমাত্র স্বীকার করবেন আশা করি। একে তুলনা করা যেতে পারে ছোট আকারের এমন একটা আয়নার সঙ্গে, যার ক্ষমতা রয়েছে একটা বিশাল পরিসরের ছবি ধারণ করে রাখার। উনিশ শতকের প্রধান-অপ্রধান যাবতীয় বিষয় ও ঘটনাবলি বিধৃত আছে সংবাদ-সাময়িকপত্রের
পাতায়। কেবল তা-ই নয়, বাংলা গদ্যের বিবর্তন, নবধারার সাহিত্য সৃষ্টি, ব্যক্তিত্বচেতনাসহ জনমত গঠন, ব্রিটিশ শাসকের অন্যায্য আচরণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সৃষ্টি প্রভৃতি ক্ষেত্রেও সংবাদ-সাময়িকপত্রের অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে। গ্রন্থের বিষয় অনুযায়ী এসব প্রসঙ্গ ছাড়া আরো কিছু প্রয়োজনীয় দিক প্রচুর উদ্ধৃতি সহযোগে এই দীর্ঘ ভূমিকায় দক্ষতার সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়েছে।

আগেই বলেছি, এই বই স্বপন বসুর প্রচুর শ্রম ও নিষ্ঠার ফসল। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে তিনি বহু প্রাতিষ্ঠানিক গ্রন্থাগার ও পারিবারিক সংগ্রহ ব্যবহার করেছেন, যার তালিকা শুরুতে দিয়েছেন। বেশকিছু ফটোচিত্র এ-বইয়ের সৌষ্ঠব ও মান বাড়িয়েছে। আর অতিআবশ্যকীয় গ্রন্থপঞ্জি ও নির্দেশিকা তো আছেই। সব মিলিয়ে বলা যায় উনিশ শতকের বাংলা সংবাদ-সাময়িকপত্র একদিকে পত্রিকার ইতিহাস, অন্যদিকে সামাজিক ইতিহাস। উনিশ শতক অধ্যয়নে সহায়ক বহুসংখ্যক রচনার মধ্যে স্বপন বসুর এ-বইটিকে নিঃসন্দেহে নবতর সংযোজন হিসেবে চিহ্নিত করা চলে।