কখন ছবি হয়ে যাই

আপনার সঙ্গে কিছু কাজের কথা ছিল হাসনাতভাই।   বিদ্যাসাগর সংখ্যার জন্য এতো তোড়জোড়, এতো  উৎসাহ, কিন্তু আপনার লেখা ছাড়াই সেটা ছাপতে গেল। পুরোটা একবার দেখে দিলেন না … এরকম কখনো হয়নি। এতো ঝড়ঝঞ্ঝা গেছে, কালি ও কলম কিন্তু হাতছাড়া করেননি, একটিবারের জন্যও কাজ থামিয়ে রাখেননি।

এ-বছর সবকিছু কেমন এলোমেলো। আপনি কিন্তু ঘরে বসেই ঈদের ছোটগল্প সংখ্যা আর আনিসুজ্জামান স্মরণসংখ্যা ছেড়েছেন। আনিস স্যার চলে যাওয়ায় ভীষণ ভেঙে পড়লেও বাসা থেকে ফোনে লেখা চেয়ে খুব ভালো একটা সংখ্যা দাঁড় করালেন। মেইলে আর হোয়াটসঅ্যাপে লেখা পড়তে আপনি মোটেই অভ্যস্ত নন। কাগজ-কলম ছাড়া স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। তবু মানিয়ে নিয়েছেন। ওভাবেই লেখা দেখেছেন, পছন্দ-অপছন্দ করেছেন, এদিক-ওদিক করে লে-আউটে বসাতে বলেছেন, ক্রম ঠিক করেছেন। আপনার এত অসুবিধা হলেও সংখ্যা হাতে নিয়ে কিন্তু সেসব বোঝার উপায় নেই। স্বভাবসুলভ বিনয়ে বলেছিলেন, সংখ্যাটা বোধ হয় খারাপ হয়নি।    

যেটা বেরুলো সেটা আপনার বহুদিনের পরিকল্পনার ফসল বিদ্যাসাগর সংখ্যা। সেটাই যে আপনার শেষ সম্পাদিত সংখ্যা হবে, সম্পাদকীয়তে আপনাকে স্মরণ করা হবে এমন তো কথা ছিল না!  শুক্রবার ফোনে বললেন, সংখ্যাটা নিয়ে কোনো চিন্তা করবেন না, সব কাজই শেষ। সময়মতো বেরিয়ে যাবে। হ্যাঁ, বেরুলো তো বটেই। সংখ্যাটা হাসপাতালেও যদি হাতে তুলে দিতে পারতাম আপনি কি খুশিই না হতেন!  

মনে আছে, আপনাকে একবার জিজ্ঞেস করাতে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ওপর অনেক বই আনিয়ে দিয়েছিলেন? সেগুলোও পড়ছি, খোয়াবনামাও আবার পড়ছি। আরেকবার অতুলপ্রসাদ-দ্বিজেন্দ্র-রজনীকান্তের ওপর কী দারুণ দারুণ লেখা পড়তে দিলেন। মেঘদূতের ওপর বুদ্ধদেব বসুর লেখা পড়তে চেয়েছিলাম, সেটা আনিয়ে দিয়েছেন। একবার নিয়েও গেলেন তাঁর কন্যা দময়ন্তী বসুর বাড়িতে। আপনাকে বলা মাত্র বই পাঠিয়ে দিতেন। মৃদুস্বরে বলতেন, এটা পড়ে দেখুন, মনে হয় আপনি যেটা জানতে চাইছেন সেটা পাবেন। বহু ম্যাগাজিন-পত্রিকা-বই এভাবে হাতে তুলে দিয়েছেন। নতুন নতুন বিষয়ের খোঁজ দিয়েছেন। থিয়েটার  দেখে  এসে  একদিন  বললেন,  শুভাশিস   খুব  ভালো কাজ করছে। নাটকটা অবশ্যই দেখবেন। যোগেনদার কোনো ছবি, গণেশদার স্মৃতিচারণমূলক লেখা, নাসিরউদ্দিন শাহ্র জীবনী এভাবে নতুন লেখার কথা, অনুবাদের কথা, গানের কথা বলেছেন। আমরা হতভাগ্য, সবটা ধারণ করতে পারিনি। আমার আরো অনেক প্রশ্ন জমা হয়েছে। আপনাকে জিজ্ঞেস করবো, কিন্তু দেখা পাবো কই?  

এয়ারপোর্টের ধারে যখন অফিস ছিল, তখন আপনি বলতেন এভাবে বড় কাচের জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখতে খুব ভালো লাগে। অফিসের সামনে বিস্তৃত জলাশয় ছিল, খাওয়া-দাওয়ার পর আপনি ঘুরে আসতেন। আপনি আর আনিস স্যার পাশাপাশি ঘরে বসতেন, আর আপনারা কাছে আছেন জেনে আমরা কেমন তুষ্ট ছিলাম। আপনার কাছে বহু লেখক-কবি আসতেন, কলকাতা থেকেও। ঘুরে ঘুরে তাঁদের দেয়ালের পেইন্টিংগুলো দেখাতে আপনি বড় পছন্দ করতেন। ভবনটা ছেড়ে আসার পর কালি ও কলম বিভাগ চলে গেল ধানমন্ডিতে, আর আমি এলাম গুলশানে। কিন্তু মাসখানেক পর ভেতরে খচখচ করতে লাগল। এভাবে কি কাজ করা যায়? আপনার আর আনিস স্যারের কাছাকাছি না থাকলে কি রকম নোঙরছাড়া মনে হচ্ছে। আবার সব গুছিয়ে আনিস স্যারের রুমেই আরেকটা টেবিল পেতে বসে পড়লাম। তাতে আনিস স্যারের একটু অসুবিধা হলেও, অত ভালো মানুষ, মুখে কিছু বলেননি। আমার আর উপায়ও ছিল না। আবার বই-চালাচালি, আলাপ শুরু হলো। আমিও স্বস্তিতে কাজ করলাম।  

এরপর ধানমন্ডিতেই কবি আবুল হোসেনের বাড়িতে কালি ও কলম চলে এলো। ভাবতে ভালো লেগেছিল যে, একজন অত বড়মাপের কবির বাড়িতে আমরা আছি। অপরিসর সেই অফিসে বেশিদিন থাকা হলো না; কিন্তু সে-কদিনের জন্য, যেখান থেকে একটু আকাশ আর বাগান দেখা যায়, সেখানেই আপনার টেবিল বসানো হয়েছিল। 

অক্টোবরের পাঁচ তারিখ মতিভাইয়ের (প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান) বাসায় আমরা গেলাম মুর্তজা বশীরের প্রদর্শনীর জন্য ছবি নির্বাচন  করতে। অনেক গল্প হলো, ষাটের দশকের গল্প, বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের গল্প, কিন্তু আপনি খুব চুপচাপ ছিলেন। খেলেনই না। আমরা বললাম, এই মহামারিতে কারো সঙ্গে দেখা নাই। একটু একসঙ্গে হওয়া গেল কিন্তু আপনি কোনো কথাই বলছেন না। বললেন, না, একটু চিন্তিত। কী নিয়ে সেটা আর জানা হলো না।   

কত কাজে দিনে কতবার আপনার কাছে গিয়েছি। কত সমাধান, কত পরামর্শ দিয়েছেন। সংকটে আপনাকে দেখেছি স্বচ্ছ, অবিচল। কঠিন সময়ে হেসে বলেছেন, চিন্তা করবেন না, আমরা ওসব অনেক দেখেছি। চালিয়ে নেবো।

আপনি শৌখিন ও রুচিবান মানুষ, কিন্তু বাইরে এসব দেখান না। হয়তো অনেকে বুঝতেও পারে না। কাপড় কেনেন খুব বেছে আর যুগীনগরে আপনার এক দর্জি আছে যার বিশেষ ছাঁটে তৈরি পাঞ্জাবি আপনি পরেন। আপনার মানসগঠনে মায়ের ভূমিকা ছিল প্রধান। নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে সবসময় ভালো জিনিসটাই জীবনে বেছে নিয়েছেন। আপনাদের বাড়িতে পেইন্টিং, ভাস্কর্য, মাটির পুতুলের কি সুন্দর সমাহার! যত্ন করে এসব বহু বছর ধরে সংগ্রহ করেছেন। উনিশে ডিসেম্বরে বোধহয় প্রণবদার (প্রণবরঞ্জন মুখোপাধ্যায়) কল্যাণে অনেকে মিলেই আপনার বাড়িতে রুচিস্নিগ্ধ এক পরিবেশে আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া হলো। এই দুদিন আগে গিয়ে দেখলাম ছবি, পুতুল সবই আছে। ঘরে মিনু ভাবি একা বসে আছেন।

অক্টোবরের এগারো তারিখে শেষ অফিসে এলেন। দালানের কাজ শেষ হয়নি তাই মেঝেটা অমসৃণ। আপনি সাবধানে দুয়ার পেরিয়ে ঘরে ঢুকে বললেন, এখানে বসে কাজ করতে পারলে ভালো হতো। প্রশ্নই ওঠে না। এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। আপনার জন্য বাড়িতে থেকে কাজ করাই শ্রেয়, হাসনাতভাই। আর দালানের কাজ শেষ হলে আপনার জন্য সুন্দর একখানা ঘর তো ওপরে আছেই।  

তারপর আবার বিকেলে দেখা হলো। মুর্তজা বশীরের প্রদর্শনী নিয়ে আপনিও খুব উৎসাহী। বশীর স্যার নবাবপুর স্কুলে আপনার শিক্ষক ছিলেন বলে শুধু নয়, ওঁর বৈচিত্র্যসন্ধানী মানস আপনাকে আকৃষ্ট করেছিল। মুর্তজা বশীরের লেখা আমার জীবন ও অন্যান্য বইটা তো আপনিই উদ্যোগী হয়ে বের করেছিলেন আর সেটা একুশে বইমেলায় পুরস্কারও পেল। বরাবরের মতো প্রদর্শনী নিয়ে আপনার সঙ্গে বহুবার আলাপ করেছি। দিক বলে দিয়েছেন, লেখার সূত্র ধরিয়ে দিয়েছেন। প্রদর্শনীতে আপনার সংগ্রহের বেশ ক-খানা ছবি আছে। প্রদর্শনী শুরু হবার কিছুদিন আগে সব ঘুরে দেখে বললেন, আমার কাছে আরেকটা স্কেচ আছে, মনে হচ্ছে সেটা এখানে ভালো যাবে। বায়ান্নর ভাষা-আন্দোলনের ওপর করা অসাধারণ ড্রইংটা যুক্ত করায় প্রদর্শনীর তাৎপর্য বেড়েছে।

এগারো তারিখ বিকেলে গ্যালারিতে গিয়ে দেখলাম আপনি আর তারিক সুজাত চা খাচ্ছেন। তারিক আপনার অনুজ বন্ধু, কবি, প্রকাশক। আপনি ওঁর কাজের প্রশংসা করেন সবসময়। স্বভাবসুলভ কুণ্ঠায় আপনি বললেন, গ্যালারির ভেতর বসে চা খাওয়াটা বোধহয় ঠিক হচ্ছে না। আমরা সবাই হেসে কথাটা উড়িয়ে দিলাম। এখনো তো প্রদর্শনী শুরু হয়নি, এ নিয়ে কেন চিন্তুা করছেন …

মুর্তজা বশীরের প্রদর্শনী আপনার খুব ভালো লেগেছিল। সেদিন বলেছিলেন, জানেন, এসব ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না।

কালি ও কলম পুরস্কার আপনার প্রাণ ছিল। নতুন লেখকদের লেখা পড়ে আপনার চোখ চকচক করতো। বুঝলেন, এরাই গড়বে। নতুনদের ওপর আপনার বড় আস্থা ছিল।

প্রতিবছর বইমেলার স্টল দেখতে যেতাম মেলার আগের দিন সন্ধ্যায়। এবারো তাই। মিনু ভাবি সঙ্গে ছিলেন। স্টলের অবস্থান ও বিন্যাস আপনার পছন্দ হলো। খুব বেছে, যত্ন করে নির্বাচন করতেন কোন কোন বই ছাপা হবে। নানা কারণে হয়তো তালিকার সব বই বের করা সম্ভব হতো না। তবু যে কটাই বেরুতো, একেবারে সন্তানের মতো যত্ন করে সেগুলো হাতে তুলে দিতেন।   

উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব আপনাকে উদ্দীপিত করেছিল। দুঃখ পেয়েছিলেন সতেরো সালের পর যখন আর অনুষ্ঠান হলো না। চোদ্দ সালে মঞ্চে কাইয়ুম চৌধুরীর অকস্মাৎ মৃত্যুতে ভীষণভাবে মুষড়ে পড়েছিলেন। মঞ্চে ওঠার আগে আপনারা তো সবাই দর্শকসারিতে একসঙ্গে বসে গল্প করছিলেন, তার মধ্যে এমন একটা কাণ্ড ঘটলো! কাইয়ুম চৌধুরীকে আপনিই কালি ও কলমে যুক্ত করেছিলেন। শুধু ইলাসট্রেশন নয়, বহু সংখ্যার পরিকল্পনা আপনারা একসঙ্গে করেছেন। গান, থিয়েটার দুজনেই ভালোবাসতেন। সুবীর চৌধুরীর উদ্যোগে লেখক-পেইন্টারদের বহু আড্ডা হতো। আপনারা সবাই মিলে ঢাকার বাইরে বেড়াতে যেতেন। শেষবার বোধহয় গণেশদাকে (গণেশ হালুই) নিয়ে সবাই জামালপুর গেলেন। নৌকাভ্রমণ, গ্রাম দেখা, আড্ডা। একাধিকবার বলেছেন যে, সুবীরের কল্যাণেই আমার গ্রামবাংলা ঘুরে দেখা। আজ কি সবাই আবার একসঙ্গে আছেন, মনের সুখে উড়ে বেড়াচ্ছেন?

প্রতিবছর একবার আপনার নিউইয়র্কে যাওয়া হতো। ওখানকার বইমেলা, বইয়ের দোকান, বন্ধুদের সংশ্রব, জাদুঘর, পেইন্টিং একজিবিশন সবই আপনার ভীষণ ভালো লাগতো। ফিরে এসে দিঠির মেয়ে শ্রেয়সীর নানা গল্প, কোথায় কী দেখলেন, কী আড্ডা হলো সেগুলো শোনাতেন। এ-বছর প্রথমে এপ্রিলে ও পরে পিছিয়ে জুনে টিকিট করা হলো। তারপর এলো করোনা আর আপনি নিজেই চলে গেলেন … দিঠি কাঁদছে, শেষ দেখাটা হলো না।

কলকাতা আপনার বড় ভালোবাসার শহর। প্রতিবার দারুণ উদ্দীপিত হয়ে ফিরতেন। বলতেন, বছরে দু-তিনবার ওখানে না গেলে অনেক কিছু জানা হয় না। শিল্পী, লেখক, থিয়েটারকর্মী, প্রাবন্ধিক, গবেষক এঁদের সঙ্গে আপনার গভীর সখ্য ছিল। এ নিয়ে বন্ধুরা অনেকেই ঠাট্টা করতেন হাসনাত তো আবার কলকাতা ছাড়া কিছু বোঝে না! একাত্তর সালের কলকাতা আপনার স্মৃতিতে অমোচনীয়। সে-সময়কার টান আপনাকে বারবার কলকাতামুখী করেছে। ২০১৪ সালে যখন কলকাতা থেকে কালি ও কলম পত্রিকা প্রকাশের প্রস্তাব এলো, তখন নীরেনদাকে (নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী) আপনি রাজি করালেন সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হতে। বেশিদিন সেটা অব্যাহত না থাকলেও আপনার উৎসাহ আর চেষ্টায় কখনো ভাটা পড়েনি। তখন রীতিমতো মাসে দুটো সংখ্যার কাজ করতে হতো। পাঠকের রুচিভিন্নতার কারণে দুটো সংস্করণের বিষয়বস্তু দুরকমভাবে সাজাতে হতো। কলকাতারটা নীরেনদা দেখে দিতেন। এ-কাজের দায়ভার আপনি সানন্দেই গ্রহণ করেছিলেন। শিল্প ও শিল্পী আপনার প্রিয় পত্রিকা ছিল। ওটা সাজিয়েছিলেন চলচ্চিত্র, থিয়েটার, সংগীত নিয়ে বড় কলেবরের আর্টস ম্যাগাজিন হিসেবে। বেঙ্গল বারতা পত্রিকাটি কালচারেল বুলেটিন হিসেবে দাঁড় করানোর ইচ্ছে ছিল। অনেক কাজের মধ্যে হয়তো কালি ও কলমই ভালোভাবে টিকে গেছে। অন্যগুলো সমাহিত। কিন্তু আপনি বলতেন, কোনটা হলো বা হলো না এ-নিয়ে না ভেবে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়েই সংগঠনের চরিত্র নির্মাণ করতে হবে। খেয়াল রাখবেন যেন চিন্তার সামঞ্জস্য হারিয়ে না যায় আর মূল জায়গাটা ধরে রাখা সম্ভব হয়। 

সতেরো সালে সিলেটে সাহিত্য সম্মেলন আয়োজন করতে গিয়ে দেখেছি কীভাবে আপনি বেছে বেছে বড় লেখক-সাহিত্যিকদের কাছে টেনেছেন। কেউ আপনার আমন্ত্রণ উপেক্ষা করেনি। এখন মনে হয়, ভাগ্যিস নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও এসব আয়োজন সম্ভব হয়েছিল। আবার হয়তো হবে কিন্তু আপনাকে আর তো পাবো না। সবাই মিলে একসঙ্গে শেষ কলকাতা যাওয়া হলো উনিশ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলা গানের বড় অনুষ্ঠানে। আনিস স্যারও সঙ্গে ছিলেন। গানের শিল্পীদের নিয়ে গল্পে, আড্ডায় দিনগুলো খুব ভালো কেটেছিল। আমরা প্রায়ই বলাবলি করতাম, কে যে কখন ছবি হয়ে যাই! সবকিছু ছেড়ে আপনিও ছবি হয়ে গেলেন হাসনাতভাই?