জাহিদুল হক
নের্ভাল, কোথায় যাচ্ছো
নের্ভাল, কোথায় যাচ্ছো? গোধূলি সেজেছে
বধূ, দীপ্র সোনা মুড়ে। স্বপ্নগুলো যেচে
আসে ঘন মসিন্তষ্কের দীর্ঘ দীর্ঘ পথে
মদ্যপ, বেশ্যার দলসুদ্ধ অপঘাতে
কতো দিন, চুম্বনের শোকার্ত মুহূর্ত
মৃত হয় : শেয়ালেরা ডাকে স্বতঃস্ফূর্ত।
কেন যাবে হোটেলে কি সরাইখানাতে,
অন্ধকার স্যাঁতসেঁতে গহন হানাতে
তুমি বন্ধু? তার চেয়ে অনুবাদও ভালো!
শ্যাম্পেনে অরুচি হলে, আঁধিতে সে-আলো
লুপ্ত হলে, পারীর নারীতে হলে ব্যর্থ
পিছু নিও অন্য কোনো অসুখে, অব্যর্থ :
এ-যন্ত্রণা ভয়ংকর, এ-জীবনযুদ্ধ :
নের্ভাল, কোথায় যাচ্ছো – যাত্রায় উদ্বুদ্ধ!
দাস্তের রাস্তা
এই কি দাস্তের রাস্তা? বিকেল ওড়নায় ঢাকে, ঘন
হচ্ছে আলোহীন তারা। সন্ধ্যা সমাগত। আকাশের
উঠোনে গোধূলি তার সোনা-ধান ছড়াচ্ছিলো যেন।
দুঃখ নামে সিঁড়ি বেয়ে, ছোঁয়া লাগে কী দীর্ঘশ্বাসের!
পুরনো এ-পাড়ায় কে বাঁধে গৃহ? কারা ফেরে ঘরে
স্ত্রীদের লোনাক্ত স্পর্শে, প্রেমিকার ক্ষিপ্র সুগন্ধিতে?
যেন এখানেই প্রেত ছায়া ফেলে, বাদুড়েরা ওড়ে;
তোমার স্মৃতিরা ভাসে সামারের মৃদু এই শীতে।
কৌতূহলী মন ছোটে : স্মৃতি খুঁটে স্মৃতিরা বিব্রত।
আমাদেরও হতে পারতো গৃহ, বাড়ি, নিজেদের গলি।
হয়নি। তা বলে ক্ষুধা লাগবে না, হৃদয় সতত
ছড়াবে না দোলা? বাজে অপার্থিব কথার আধুলি।
ট্যুরিস্টের ঢল নামে, ওরা যেন স্বপ্নের গোয়েন্দা।
আমিও ওদেরই মতো স্বপ্ন খুঁড়ি, ভাসাই জাহাজ।
বিয়াত্রিচে আর তার গির্জাটিকে পেরুতেই সন্ধ্যা
নামে বিমর্ষতাসহ। প্রভু, প্রভু, কী আঁধার আজ!
তবু সুবাস নামে, কী মৃদু, প্রত্যন্ত – এই প্রাণে;
অন্ধকারও এখনো তোমার জন্য কী ঔজ্জ্বল্য আনে!