নিউইয়র্ক বইমেলা ও বাংলা সংস্কৃতির বিশ্বায়ন

বিশ্বজুড়েই এখন বাঙালি। আর যেখানেই বাঙালি, সেখানেই ছড়িয়ে পড়েছে বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতি এবং বাংলাকে নিয়ে নানা রকম উৎসব। বাংলাদেশের ঠিক উলটো পিঠে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরও এর ব্যতিক্রম নয়। নিউইয়র্ক এখন বাংলা সংস্কৃতিতে ঘেরা এক তিলোত্তমা নগরী। বাংলা সংস্কৃতির বিশ্বায়নে এই নিউইয়র্ক শহরের অবদানকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বরং গর্ব করে বলা যায়, এই শহরেও এখন বাংলাদেশ অথবা কলকাতার মতো বৃহৎ আয়োজনে একটি বইমেলা হয়। সেই মেলায় দেশ-বিদেশের বাঙালি লেখক, প্রকাশক এবং পাঠকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ভাবা যায়, নিউইয়র্কে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে এই বইমেলাটি করে আসছে! ভিন্ন
সংস্কৃতি, ভিনদেশি ভাষা, ভিনদেশি মাটি আর সেই ভিনদেশি মাটিতে বাংলা সংস্কৃতির চাষবাস দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ কোনো কথা নয়। তারপরও ছোটখাটো কোনো আয়োজন করে নয়, নিউইয়র্ক মুক্তধারা বইমেলায় যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশ এবং কলকাতা তো বটেই সেইসঙ্গে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আসা নামকরা কথাসাহিত্যিক, কবি, সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক থেকে শুরু করে
গায়ক-বাদক আরো কত শ্রেণি-পেশার বিশিষ্ট জন!

সেদিন এক বন্ধু আক্ষেপ করে বলছিলেন কথাটা। বই নাকি আর আগের মতো দরদ দিয়ে কেউ পড়ে না। বাঙালির অলস দুপুরে সুগন্ধি তেলের ঘ্রাণে ভরা তেল চিটচিটে বালিশের নিচে, ঝকঝকে ড্রয়িংরুমে কিংবা পড়ার টেবিলেও নাকি বই নামক বস্ত্তটির উপস্থিতি খুব কম। সেখানে নাকি এখন জায়গা করে নিয়েছে ফেসবুক, ল্যাপটপ, ভিডিও গেম, কিন্ডেল, আই প্যাড, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি। বন্ধুটির কথায় অবশ্য যুক্তি আছে; কিন্তু তাই বলে বাঙালি বইবিমুখ হয়ে গেছে – এই কথাটি কেন জানি মেনে নিতে পারলাম না। বরং নিউইয়র্কের বইমেলা দেখে মনে হয়েছে খুব নীরবেই বহির্বিশ্বে বাংলা বইয়ের একটি বিপস্নব শুরু হয়েছে। প্রতিবছর বাংলাদেশ কি কলকাতায় তো বটেই, এখন পৃথিবীজুড়েই বাংলা বইমেলা হচ্ছে এবং দিন দিন এর বিস্তার আরো ব্যাপক হচ্ছে। নিউইয়র্ক মুক্তধারা বইমেলার পাশাপাশি লন্ডন বইমেলা, কানাডা বইমেলা, ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলাসহ পৃথিবীর নানা প্রামেত্ম বইমেলা বেশ উৎসবমুখর হয়ে উঠছে। এই ডিজিটাল দুনিয়ায় যেখানেই দুজন বাঙালি এক হয়েছেন সেখানেই বাঙালির হাজার বছরের লালিত বাংলা সংস্কৃতিটি যেন এসে বাসা বাঁধছে। এটাকে আপনি কী বলবেন? বাংলা সংস্কৃতির বিপস্নব নয়? বইয়ের বিপস্নব নয়? বইকে যদি বাঙালি বিদায় করে দিতই তাহলে বাঙালিরা বঙ্গ থেকে সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে এই বইমেলার নাম শুনলে এত গদগদ হয়ে পড়তেন না।

বইমেলা মানেই বাঙালির অন্যতম প্রাণের এক উৎসব। বাংলাদেশ কিংবা কলকাতার মতোই নিউইয়র্কেও বইমেলার তারিখ ফেলার সঙ্গে সঙ্গে বাঙালির ধমনিতে যেন আনন্দের ঢাকে কাঠি পড়ে। শহরজুড়ে বইমেলাকে কেন্দ্র করে বাংলা সংস্কৃতিঘেরা বিভিন্ন উৎসব নিয়ে বাঙালিরা তখন মেতে ওঠে। দেখতে পাই নিউইয়র্কের বইমেলার তারিখ ফেলার অন্তত এক মাস আগে থেকেই শহরজুড়ে যেন উৎসব শুরু হয়ে যায়। সত্যি বলতে, বারো মাসে তেরো পার্বণ উদ্যাপনে বাঙালির মতো উৎসবপাগল আর কোনো জাতি পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। এই মেলা বিলেত হোক, বাংলাদেশ হোক, কলকাতা হোক আর নিউইয়র্কই হোক, অথবা পৃথিবীর যে কোনো প্রামেত্মই এই মেলা বসুক না কেন সব উৎসবের দেখি একই ভাষা, একই রং আর একই প্রাণের উচ্ছ্বাস। মনে হয় একই বীণার তারে যেন বাঙালির উৎসবগুলো বাঁধা পড়ে আছে। শুধু অন্তরের ভালোবাসা দিয়ে নয়, কঠিন বাসত্মব দুনিয়ার হাজারো বাসত্মবতাকে দূরে ঠেলে দিয়ে এই প্রবাসী বাঙালিরা তাঁদের হাজার রকম প্রাণের উৎসবের স্রোতগুলোকে একই নদীর মোহনার সঙ্গে মিলিয়ে দিচ্ছেন। প্রবাসের এই পাথুরে মাটিতে সেই মোহনার নাম যদি হয় নিউইয়র্কের মুক্তধারা বইমেলা তাহলে কি তা এতটুকু বাড়িয়ে বলা হবে?

নিউইয়র্কের বইমেলার কথা বলি। ১৯৯২ সাল থেকে মুক্তধারা এবং বিশ্বজিত সাহা নিউইয়র্কের মতো এই ভিনদেশি আলো-হাওয়ার দেশে বাংলা বইমেলা করে আসছে। ভিনদেশি ভাষা, ভিনদেশি সংস্কৃতি, ভিনদেশি মাটি – সবকিছুর ভিন্নতা সত্ত্বেও নিউইয়র্ক শহরে বাংলা বইমেলা একটি শক্ত আসন তৈরি করে নিতে সমর্থ হয়েছে। নিউইয়র্ক মানেই এখন মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত একটি জম্পেশ বইমেলা। এই বইমেলাকে সামনে রেখে নিউইয়র্কের বাঙালিপাড়া তো বটেই উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন প্রামেত্ম অবস্থিত বাঙালি আত্মায় যেন নবউদ্যমে বাংলা উৎসব পালনের ধুম পড়ে যায়। বইমেলাকে ঘিরে দেখতে পাই গানের দল তাদের গান নিয়ে ব্যসত্ম হয়ে পড়ে, কবিদের পকেটে তাজা কবিতাগুলো ভূমিষ্ঠ হওয়ার আশায় লম্ফঝম্প করতে শুরু করে, কেউ আবৃত্তি নিয়ে মহাব্যসত্ম হয়ে পড়েন, যাঁরা নাচেন তাঁরা তাঁদের নাচের মুদ্রাগুলো ঠিক করে নেন, লেখককুল তাঁদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থটি নিয়ে আহ্লাদে যেন আটখানা হয়ে পড়েন। বাঙালি প্রজন্মের শিশু-কিশোররা তাদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অথবা বাংলা শেখা প্রতিযোগিতার জন্যে নিজেদের মতো করেই তৈরি হয়ে যায়। সবমিলিয়ে

বাঙালিরা যেন তাঁদের চিন্তায় আর মননে বাংলা উৎসবে হেমন্তের ফসলের ঘ্রাণটি ঠিক খুঁজে পান।
যদি বলি নিউইয়র্ক এখন বাঙালি সংস্কৃতিতে ঘেরা এক তিলোত্তমা নগরী তাহলে সে-কথা একেবারেই বাড়িয়ে বলা হবে না। আটলান্টিকের পারের এই বাঙালিদের বিনোদনের যেন কোনো শেষ নেই। নাটক, সংগীত, আবৃত্তি, কাব্য জলসা, গুরুগম্ভীর সেমিনার, আউল-বাউল সন্ধ্যা, বইমেলা Ñ সবই হচ্ছে এখানে। আর সে-কারণেই বাংলাদেশ থেকে হাজার মাইল ব্যবধানে নিউইয়র্কের এই কঠিন ব্যস্ত শহরেও বাঙালির বোধ আর মননে এই বাংলা আর বাংলাদেশ অনেক আদর, ভালোবাসায় নিত্যই আদৃত হয়ে আসছে। এই ‘বাংলাদেশ’ নামক ছোট্ট শব্দটি বাঙালি তার ধমনিতে অনেক আদর আর ভালোবাসায় ঠাঁই দিয়েছে বলেই এই নিউইয়র্কে বাংলা সংস্কৃতির একটা উর্বর ভূমি তৈরি হয়েছে। গাঁটের পয়সা খরচ করে, নাওয়া-খাওয়া ভুলে এই সংস্কৃতিপাগল বাঙালি তখন দিবানিশি বাংলার পুজো দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সত্যি বলতে, নিউইয়র্কে যাঁরা বাংলা সংস্কৃতির এই চাষবাস করছেন, সেই সব কৃষকের আনন্দমাখা মুখ দেখলে অহংকারে বুকটা ভরে ওঠে। এখানকার পাথুরে মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে সংস্কৃতির চাষবাস আর সেই সঙ্গে এর ফসল ঘরে তোলা, সত্যিই কি এত সহজ কথা? কিন্তু সেই কঠিন কাজটিই বাঙালিরা করছে তাদের ভালোবাসায় মাখা দুটো হাত দিয়ে। নিউইয়র্কে মুক্তধারা বইমেলা বাঙালির সেই ভালোবাসারই এক ফসল।
শত বৈরিতা থাকা সত্ত্বেও মুক্তধারা ফাউন্ডেশন এবং বিশ্বজিত সাহা নিউইয়র্কে বইমেলা করে আসছেন শুধু প্রাণের তাগিদে, আর বাংলা সংস্কৃতিকে ভালোবাসেন বলেই। আর শুধুই কি বইমেলা? এই বইমেলাকে ঘিরে থাকছে বাঙালির চিরায়ত সেই আদি অকৃত্রিম মেলার স্বাদ। বাংলাদেশ, কলকাতা তো বটেই, পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে বাঙালিরা উপচে পড়েন নিউইয়র্কের বইমেলায় অংশ নিতে। লেখক-পাঠকের হই-হট্টগোল তো আছেই, পাশাপাশি সেই মেলার কোলজুড়ে বসছে কলকাতা, বাংলাদেশ থেকে আগত বিভিন্ন প্রকাশনীর মনোহারি ভিন্ন স্বাদের বইয়ের স্টল। নিউইয়র্কের বইমেলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো প্রতিবছর এই মেলা উদ্বোধন করানো হয় বিশিষ্ট কোনো লেখকের হাত দিয়ে। এরই মধ্যে এই মেলা উদ্বোধন হয়েছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হুমায়ূন আহমেদ, সমরেশ মজুমদার, তপন রায় চৌধুরী, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, শহীদ কাদরী, হাসান আজিজুল হক, জয় গোস্বামী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রামকুমার মুখোপাধ্যায়, রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, নবনীতা দেব সেন, তিলোত্তমা মজুমদার, আনিসুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, সৈয়দ শামসুল হক, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, গোলাম মুরশিদ, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, মহাদেব সাহা, সেলিনা হোসেন, পবিত্র সরকার, শামসুজ্জামান খান, পূরবী বসু, ফরিদুর রেজা সাগরসহ নামকরা অনেক জনপ্রিয় লেখকের হাত দিয়ে। বলতে দ্বিধা নেই, নিউইয়র্কের এই বইমেলা যেন ধীরে ধীরে সমগ্র পৃথিবীর বাঙালির বইমেলায় রূপ নিয়েছে। এ-কথা এখন চোখ বুঁজে বলে দেওয়া যায় যে, নিউইয়র্কে বাঙালিদের বইমেলা বা বাংলা উৎসব মানেই মুক্তধারা আয়োজিত বইমেলা।
যদি বলি নিউইয়র্কের এই বইমেলা শুধুই বাংলাদেশ আর পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের মিলনমেলা তাহলে কিন্তু বড্ড ভুল বলা হবে। বইমেলা উপলক্ষে নিউইয়র্ক এবং এর বাইরের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত শিল্পী-সাহিত্যিকদের পদধূলি বইমেলা ও বাংলা উৎসবের আরেক প্রধান অলংকার। দেখা যায় মেলার দিনক্ষণ যতই এগিয়ে আসতে থাকে, ততই যেন বাঙালির বুকের ভেতর টানটান এক উত্তেজনা ভর করে। দুষ্প্রাপ্য আর লোভনীয় বইয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা একঝাঁক লেখক আর প্রকাশকের সান্নিধ্যলাভের এই তো সুবর্ণ সুযোগ! একদিকে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ, অন্যদিকে লেখকদের সান্নিধ্য। যাঁদের বই পড়ে আমরা বড় হয়েছি, কল্পনায় কোনো প্রিয় লেখকের সামনে নিজেকে দাঁড় করিয়েছি, সেই লেখক যখন স্বয়ং হাসিমুখে আমাদের সামনে উপস্থিত হন, তখন জীবনে এর চেয়ে অসাধারণ ঘটনা আর কী হতে পারে? সেই সঙ্গে আসছেন দুই বাংলার প্রথম সারির একঝাঁক প্রকাশক। নিউইয়র্ক বইমেলায় বিভিন্ন সময়ে অংশগ্রহণ করা প্রকাশকদের তালিকায় রয়েছে সময়, অনন্যা, বেঙ্গল পাবলিকেশন্স, মাওলা ব্রাদার্স, অন্য প্রকাশ, ইত্যাদি, সন্দেশ, নালন্দা, প্রথমা, অঙ্কুর, নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলা প্রকাশ, অন্বয়, অন্বেষা, কথাপ্রকাশ, স্টুয়েন্ড ওয়েজ, পত্রভারতী, সাহিত্যম, দে’জ, বিশ্বভারতী, দে’জ সাহিত্য কুটির, প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা, ঘুংঘুর, পঞ্চায়েত, ছড়াটেসহ আরো অনেকে।
চারদিনের অনুষ্ঠানসূচিতে ছিল সেমিনার, কবিতা পাঠের আসর, কয়েক পর্বে সংগীতানুষ্ঠান, সাম্প্রতিক বই নিয়ে আলোচনা ও উপস্থিত চারজন লেখকের সাহিত্যভাবনা নিয়ে মনোজ্ঞ মতবিনিময়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন সেলিনা হোসেন, আনিসুল হক, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, রোকেয়া হায়দার, আমিরুল ইসলাম, আবুল হাসনাত প্রমুখ। এছাড়া নিউইয়র্কে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিরা।
প্রতিবছরের মতো এ-বছরও অর্থাৎ ২০১৯ সালের জুন মাসের ১৪, ১৫, ১৬ ও ১৭ তারিখ মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে নিউইয়র্ক বইমেলা ও বাংলাদেশ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এ-বছর বইমেলার সেøাগান ছিল ‘মননে বই জীবনে বই’। এবারের বইমেলা উদ্বোধন করেন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগর। এ-বছর মেলার আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট লেখক এবং অর্থনীতিবিদ ড. নজরুল ইসলাম। অন্যান্য বছরের মতো এবারো মুক্তধারা/ জেএফবি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এ-বছর সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন কথাসাহিত্যিক দিলারা হাশেম। পুরস্কারের আর্থিক মূল্যমান আড়াই হাজার ডলার। শ্রেষ্ঠ প্রকাশক হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স। পুরস্কারটির নামকরণ Ñ চিত্তরঞ্জন সাহা/ কথাপ্রকাশ পুরস্কার। উল্লেখ্য, প্রকাশনা সংস্থা কথাপ্রকাশ ২০১৮ সাল থেকে চিত্তরঞ্জন সাহা পুরস্কার নামে এই পুরস্কার প্রবর্তন করে। বিষয়বৈচিত্র্য, সৃজনশীল এবং মননশীল প্রকাশনা এই পুরস্কারপ্রাপ্তির প্রধান যোগ্যতা। পুরস্কারের মূল্যমান ৫০০ ডলার। বেঙ্গল পাবলিকেশন্সের নির্বাহী পরিচালক আবুল হাসনাতের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। এছাড়া এই
প্রথমবারের মতো প্রবাসে বসবাসরত বাঙালি লেখকদের ২০১৯ সালে প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্য থেকে ‘সেরা গ্রন্থ’ পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারটি ঘোষণা করা হবে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য নিউইয়র্ক মুক্তধারায় বইমেলায়। পুরস্কারের মূল্যমান ১০০০ ডলার।
বইমেলার নাম শুনলেই প্রাণটা কেমন জানি আনচান করতে থাকে। কখন হবে সেই মেলা? কখন লেখক, পাঠক আর প্রকাশকদের নিবিড় সান্নিধ্যে নিজেকে বিলিয়ে দেব Ñ সেই তপস্যায় যেন দিন কাটে। আর মেলাকে কেন্দ্র করে চারদিকে বই আর বইয়ের স্তূপ দেখে মনে হয় যেন চাঁদের হাট বসেছে। কত রকমের বই! কত মেজাজের বই! আহা! এই বইয়ের আঁচলে যদি আজীবন লেপ্টে থাকা যেত! অথবা বইয়ের পোকা হলে কেমন হয়? সারাক্ষণ শুধু বই নিয়েই কাটাকাটি, মারামারি আর খুনোখুনি। কিন্তু এ তো শুধুই কল্পনা! আরো একটি বছরের অপেক্ষায় নিউইয়র্কের বাঙালিরা তখন শুধু অপেক্ষার প্রহর গোনে।
বইমেলার জয় হোক। বিশ্বায়ন হোক বাংলা সংস্কৃতির। ৎ