ব্রেনে ব্রাউনের আমিই সেই অরণ্য যে-লেখায় রাজনৈতিক আর হার্দিক অনুসন্ধান মিলেমিশে থাকে

 

বেঁচেবর্তে থাকার ব্যাপারে স্বচ্ছন্দ, স্বাধীন, স্বয়ম্ভূ হতে কে না চায়! অথচ কয়জন বা সারাজীবন সেই খুব অন্তরঙ্গ আপন হওয়ার বোধ, সেই সোনার কাঠির স্পর্শ পায়, বলতে পারেন? ব্রেনে ব্রাউনের অনুবাদে প্রকাশিতব্য বই, আমিই সেই অরণ্য সেই আপন হওয়ার
চাওয়া-পাওয়া নিয়েই। ব্যক্তিগত তালাশ থেকে নৈর্ব্যক্তিক গবেষণার দীর্ঘ ও গভীর বিবর্তন। ব্যক্তিমানুষ থেকে সামাজিক-রাজনৈতিক নির্বিশেষ মানুষের কাছে এসে দাঁড়ানো। বিষয়-ভাবনাই আমাদের আকর্ষণ করে। লেখক ব্রেনে ব্রাউন কিন্তু সভয়ে শুরু করেন তাঁর এই লেখা। বলেন, ‘আমি লিখতে শুরু করেছি; কিন্তু ভয় আমাকে অজগরের মতো গিলে ফেলছে। তার কারণ বিশেষ করে এই যে, আমি আমার গবেষণা থেকে যা পেলাম আর যা বলতে যাচ্ছি তা বহুদিনের বিশ্বাস আর ধারণাকে বাতিল করবে। এমন যখন হয় আমি তখন ভাবতে থাকি – এসব বলার আমি কে? অথবা আমার কথা শুনে কি মানুষ খুব খেপে যাবে? বিরক্ত হবে?’

এমন নম্রতার সঙ্গে শুরু করা মানুষটি কিন্তু কাজ নেহাত কম করেননি। দুই দশক ধরে তিনি সমাজের সবচেয়ে জরুরি মনস্তাত্ত্বিক নিয়ামক নিয়ে গবেষণার কাজ করছেন। তাঁর গবেষণার কয়েকটি বিষয় : ভয়, হিম্মত, বিপন্নতা, দরদ, সৃজনশীলতা, উদ্ভাবনী শক্তি, মানুষকে হেয় করা, লজ্জা, ঘৃণা, ক্রোধ। এসব তত্ত্বের সঙ্গে সেতু গড়ছেন বিচিত্র মানুষের সাক্ষাৎকারে পাওয়া একান্ত ব্যক্তিগত তথ্যের।

এই মুহূর্তে তাঁর হালের গবেষণা কাজে লাগছে নানামুখী জগতে। মনস্তত্ত্ব, সমাজতত্ত্ব, সংগঠন, বহুজাতিক কোম্পানি, স্বাস্থ্যসেবা, ভালো থাকার যে-কোনো ক্ষেত্রে। তিনি হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সমাজবিজ্ঞানী, শিক্ষক, গবেষক ও বিভাগীয় প্রধান। কয়েক বছর আগে তাঁর টেড-টক সাম্প্রতিককালের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। প্রায় সাড়ে তিন কোটি দর্শক সেই টেড-টক দেখেছেন আজ পর্যন্ত। তাই সে-সংবাদ জানার পর ‘পাওয়ার অব ভালনারেবিলিটি’ (নাজুক হওয়ার শক্তি) শিরোনামে আন্তর্জালে পাওয়া তাঁর
টেড-টক শুনে ফেলেছিলাম। আর শুনে তাঁর কথা জানতে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলাম। তাঁর সব সাক্ষাৎকার মন দিয়ে শুনে ফেলি এর পরে। তাঁর বইয়ের খোঁজ করতে থাকি। টিভি-হোস্ট বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিত্ব ওপরাহ উইনফ্রের নেওয়া ব্রেনে ব্রাউনের সাক্ষাৎকার ও আলোচনা মন দিয়ে শুনি। তাঁর বই পড়ে জানতে পারি বিখ্যাত কবি, শিল্পী, মানবাধিকারকর্মী মায়া অ্যাঞ্জেলু তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তাঁকে তাঁর জরুরি কাজের জন্য অভিবাদন জানিয়েছেন।

স্বভাবত অন্য অনেকের মতো আমি কৌতূহলী হয়ে পড়ি ব্রেনে ব্রাউনের কাজ সম্পর্কে। জানতে ইচ্ছা করে, একজন অধ্যাপকের সামাজিক গবেষণা টেড-টকের মঞ্চে এমন সাড়া ফেলে কী করে? এমন কী কথা জানেন তিনি? কী কাজ তাঁকে করতে হয়, লেখালেখি আর গবেষণা ছাড়াও যে, তিনি চারটি সমাজকল্যাণমূলক কোম্পানির সিইও হয়ে ওঠেন অবধারিতভাবে? সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পেশাদারি সংস্থার ব্যবস্থাপনার উন্নতির জন্য, উপদেষ্টা হিসেবে তাঁর ডাক আসে – কেন? স্মিতমুখে সহজ ভাষায় তিনি কী পরিবেশন করেন? কেন তাঁর বই রাইজিং স্ট্রং আর ব্রেভিং দ্য উইল্ডারনেস নিউইয়র্ক টাইমসের বেস্টসেলার তালিকায় উঠে আসে? কেন তিনি সমাজ, সংসার, ব্যক্তি আর বিশ্বের সীমানায়, রাজনীতি আর পেশাদারি জগতে হাজির হন বারবার? অথচ আমাদের এখানে এখন পর্যন্ত আমরা তাঁর কাজের কথা তেমন শুনতে পাইনি। নিজের মতো করে পাঠ আর অনুসন্ধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ পাই।

ব্রেভিং দ্য উইল্ডারনেস বইটি তাই বাংলায় অনুবাদ করি ২০১৮ সালে। বইটির নাম হয়তো সংগত কারণে রাখা হয় আমিই সেই অরণ্য। এই কাজে তিনি আপন হওয়ার কথা বলেন, নিজের সঙ্গে স্বচ্ছন্দ থাকার কথা বলেন – ঘরে-বাইরে, দলে, দুনিয়ায়, সমাজে, সংগঠনে। কথাটা যত সরল মনে হোক, তিনি চার বছরের গবেষণা আর তথ্য-উপাত্তের সাহায্যে দেখান : এই নিয়ে আমরা আসলে প্রায় কিছুই জানি না। দেখতে পাই, ভয়কে জয় করা সার্থক, সাহসী সমাজের বুনিয়াদে এই বইয়ের জরুরি উন্মোচন কত মোক্ষমভাবে কাজে লাগানো যায়।

আমরা নিশ্চয়ই ভয়কে জয় করতে চাই। কিন্তু তার আগে ভয় একটা বোঝার জিনিস, এমনকি তথ্য-উপাত্ত দিয়ে একে বুঝে নিতে হবে। এর যে সামাজিক বিবর্তন আছে, নকশা আছে – এ-কথা আগে ভাবিনি। ঠিক তেমনি আপন হওয়া, স্বয়ম্ভূ, স্বচ্ছন্দ হওয়া, বায়বীয় ব্যাপার নয়। এসব গভীরে গিয়ে বুঝতে হবে। ব্রেনে ঠিক এ-কাজটাই এ-বইতে করেন। এমন সহজ ভাষায় তিনি লেখেন যে, পাঠক যদি স্থির করেন তিনি কৌতূহলী হয়ে পড়ে যাবেন, তাহলে শুরু করা মাত্র তাঁর মধ্যে অনুরণন হতে থাকবে; জানালা খোলা থাকলে মনে হবে বাতাসের ঝাপটা পাচ্ছি।

কিন্তু অন্যদিকে বলে রাখা জরুরি – আমরা যা জানি বা মনে করি তার বেশিরভাগ প্রচলিত ধারণার সঙ্গে এই নতুন কথা হয়তো মিলবে না। প্রচলিত ধারণার সঙ্গে নতুন তথ্য মিলছে না, এমন যেহেতু ব্রেনের নিজের ক্ষেত্রেই হয়েছে, তাই বুঝতেই পারি এই অভিজ্ঞতা একচেটিয়া। তবে সুবিধার কথা এই যে, ব্রেনে নিজে সহজ, সরল, আটপৌরে ভাষায় কথা বলেন, অনেক দৃষ্টান্ত টানেন, এক দরদি বক্তার মতো আমাদের হাত ধরে নিয়ে যান। একজন সহৃদয় সফরসঙ্গী থাকলে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পালটে যেতে পারে। আমার মনে হয় ব্রেনে ব্রাউন এ-বইয়ের সফরসঙ্গী, পথপ্রদর্শক বলেই যাত্রাটা হিমালয়-উতরাইয়ের মতো সাহস-সাপেক্ষ আর প্রাপ্তির দিক থেকে সেরকমই উঁচু দরের মনে হয়।

এই বইটি তাঁর ব্রেভিং দ্য উইল্ডারনেস : দ্য কোয়েস্ট ফর ট্রু বিলংগিং অ্যান্ড দ্য কারেজ টু স্ট্যান্ড অ্যালোন (Braving the Wilderness : The Quest for True Belonging and the Courage to Stand Alone) নামে ২০১৭ সালে প্রকাশিত, বিপুলখ্যাত বইয়ের ঈষৎ সংক্ষেপিত অনুবাদ। Brene Brown.com ওয়েবসাইটে তাঁর কথা লেখা আছে আরো বিশদভাবে; পাঠক চাইলে আরো জেনে নিতে পারবেন। প্রথমবার আমি একটু চেষ্টা করেছিলাম সংশয় নিয়ে পড়ার। তবে আমার সংশয় বৃষ্টির জলে ধুয়ে যেতে থাকে যখন পড়ি, ‘Courage is contagious. Every time We choose courage, We make everyone around us a little better and the world a little braver.’ এ-কথাগুলো একজন সমাজবিজ্ঞানীর বলে অবাক হতে হয়।

ব্রেনে ব্রাউনের এই বই এইসব নানা কারণে অনুবাদ না করে পারিনি। মনে হয়েছে, আজ ও আগামীর জন্য তাঁর কাজ যুগান্তকারী হয়ে থেকে যাবে। তার প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর কাজের বৈপস্নবিক সাড়ায়। হয়তো আমাদের দেশে তেমন সাড়া পড়েনি, কিন্তু যেসব দেশে মুখের ভাষা ইংরেজি সেসব জায়গায়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে, তাঁর কাজ গবেষণার জগতের বাইরেও সচেতন মানুষজনের মধ্যে অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছে সেই ২০১০ সাল থেকেই।

নেতাদের তাঁকে দরকার হচ্ছে হঠাৎ করে। তাঁরা বুঝতে পারছেন সংগঠন, কোম্পানি বা দলের প্রতিটি মানুষ যদি দলের সঙ্গে একাত্ম আর আপন না হতে পারেন, তাহলে সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন মাঠে মারা যাবে, আর শেষে দলেরই মৃত্যু হবে। যেহেতু সংগঠন বা কোম্পানির নেতারা সেই সংগঠনের মঙ্গল চান, দলকে সত্যিই শক্তিশালী করতে চান, সে-কারণে ব্রেনের ‘আপন হওয়ার তত্ত্ব’ তাঁদের বিশেষ প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আমরাও কি দেশের, দশের মঙ্গল, দলের, সংগঠনের নীরোগ আয়ুর কথা ভেবে, ব্যক্তিজীবন, পরিবার আর গোষ্ঠীর আনন্দের কথা ভেবে এই আপন হওয়ার তত্ত্বকে কাজে লাগাতে পারি না?

ব্রেনের সাক্ষাৎকার, ২০১০ সালের টেড-টক আর তাঁর উদ্ধৃতি ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। টেড-টকটি অন্তত তিন কোটি বার দেখা হয়েছে। টেড-টকের ইতিহাসে এই ঘটনা অভূতপূর্ব। আমি দেখেছি সে-দেশে সচেতন মানুষ বেশি বলেই একজন সম্ভাবনাময় বক্তাকে তাঁরা চিনতে ভুল করেন না। আশা করি আমরাও করব না।

ব্যক্তিমানুষ রাজনীতির বিপরীত প্রামেত্ম বিচ্ছিন্ন হতে হতে একা হতে হতে বুঝতে পারে, তার মানবতার শেকড় আলগা হয়ে পড়েছে – এখানে পরিচর্যা দরকার। জানাশোনার বুনিয়াদ যাচাই করে নিতে হবে আরো গভীরভাবে।

আজকের দুনিয়ায় নিঃসঙ্গতার মাত্রা বেড়েছে। বারোজনের মধ্যে একজন ডিপ্রেশনে ভোগে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা মহামারির আকার নিয়েছে। এইসব ব্যক্তিগত, পারিবারিক, আসলে সামাজিক সংকটের মূলে গিয়ে ব্রেনে খুঁজে পেয়েছেন নিঃসঙ্গতা, তার তলায় লুকিয়ে থাকতে দেখেছেন ভয়। যে-ভয় আমাদের আপন হওয়ার সবচেয়ে বড় অন্তরায়।
যে-বিষয়গুলি সব সমাজে অনালোচিত, ট্যাবু বিষয়, সেগুলির তল পর্যন্ত গিয়েছেন তিনি, যেমন যেতে পারেন একজন দরদি আর নাছোড় সমাজবিজ্ঞানী। আপন হওয়ার সঙ্গে যে সমস্ত কিছু আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। তিনি নানা ব্যক্তিগত কাহিনি দিয়ে জড়িয়ে নেন তাঁর কাজের কথাকে। বৈঠকি চালে আমাদের মশগুল রাখেন।

ব্রেনে যা করেন তাকে বলা হয় কোয়ালিটেটিভ সমাজবিজ্ঞান। তিনি তাই একাধারে একজন সমাজবিজ্ঞানী, গবেষক, লেখক, বক্তা, নেতা, যিনি তাঁর কাজকে সমাজের বৈপস্নবিক পরিবর্তনের চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যবহার করেন অত্যন্ত দক্ষতা আর সাহসের সঙ্গে। তাঁর নিজের চারটি কোম্পানি রয়েছে। সেখানে তিনি নেতৃত্ব দেন। সমাজে আরেকটু ‘সাহস আনার’ জন্য তাঁরা কাজ করেন। তাঁর কয়েকটি জরুরি আর বিখ্যাত বই – গিফটস অব ইম্পারফেকশন (২০১০), ডেয়ারিং গ্রেটলি (২০১২), রাইজিং স্ট্রং (২০১৫), ব্রেভিং দ্য উইল্ডারনেস (২০১৭) এবং ডেয়ার টু লিড (২০১৮)।

ব্রেনে নিছক গবেষণার জন্য গবেষণা করেন না, লেখার জন্য লেখেন না; এইসবের মূলে তাঁর সারাজীবনের গভীর মানুষী অভিজ্ঞতা ও নিজেকে খুঁজে ফেরার তীব্র তাগিদ কাজ করে। সে-কথা তিনি আমাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন। তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি আমাদের হৃদয় ভিজিয়ে দেয়, উষ্ণতা আর স্বচ্ছতা দাবি করে। আমরাও হয়ে উঠি আপন-সন্ধানী।

আমরা কি সত্যি স্বচ্ছন্দ, সার্থক জীবন চাই? আমরা কি চাই এমন সমাজ, পরিবার, দল, সংগঠন, দেশ, পৃথিবী যেখানে আমরা একজন সুযোগ্য অংশীদার, যেখানে আপন হয়েছি আমরা? হয়তো তাহলে এর উত্তর পাওয়া যাবে এখানে। মনে রাখতে চাই যে, ব্রেনের কাজ কোটি কোটি মানুষকে অল্পদিনে স্পর্শ করেছে – পত্রিকা, খবর, ঘর, পড়ার টেবিল, শিক্ষাঙ্গনের দোরগোড়ায় আসতে শুরু করেছে। আন্তর্জাল ছেয়ে ফেলেছে তাঁর লেখা, ছবি, সাক্ষাৎকার। বাংলায় ব্রেনের অনুবাদ থাকবে না এ যেন অমার্জনীয় ব্যাপার।

অনুবাদের রাস্তা আমার কাছে মসৃণ নয়। সুকঠিন বিড়ম্বনার বললে, সত্যি বলা হয়। এটুকু বলি যে, সমালোচনা, অনাদর আর অবহেলার পাথুরে জমিতে হাঁটতে গিয়ে টের পেয়েছি ব্রেনে যাকে বলেন ‘আপন হবার তত্ত্ব’, সে-পথে আমিও একজন ভবঘুরে। কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা, এই আপন হবার তত্ত্ব চিনতে, বুঝতে অসুবিধে হয় না যদি কেউ এই তত্ত্ব তাঁর জীবন দিয়ে যাচাই করে থাকেন। আমার সৌভাগ্য যে, চোখের সামনেই পরিবার ও চেনা পরিবেশে তেমন অনেক দৃষ্টান্ত আছে। আমরা একা দাঁড়ানোর স্নিগ্ধ দৃপ্ততা আর নিজের কাছে একান্ত আপন মানুষ দেখেছি বইকি। কিংবদন্তির মতো সেসব মানুষ আমাদের চেতনায় স্থায়ী জায়গা করে নেন। বলা যায়, তাঁদের না দেখলে আজ এই অনুবাদে হাত দেওয়ার সাহস পেতাম না। এছাড়া আমরা মুক্তিযুদ্ধের সাহসী নেতা আর সৈনিকদের চিনি; এক দরদি মানবিক আদর্শের জন্য তাঁরা একা বাঁচতে বা মরতে ভয় পাননি। কিন্তু ব্রেনে এখানে শুধু একটি মানুষকে নয়, সমাজকে, জনগোষ্ঠীকে সাহসের অন্তরায় চেনাতে আর হিম্মতের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে চান। কেন সাহসের নির্বাসন কঠিন বিপর্যয় আনে, আর তার ফলাফল ঠিক কী, সেইসব বিস্তারিত জানা যাবে এই বইতে। আর জানা যাবে কী করে আপন হওয়া অভ্যেস করতে হবে। প্রত্যেক ম্যারাথনের আগে কিছু প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এও সেরকম। অভ্যেসগুলি আমাদের চমকে দিতে পারে।

ব্রেনের কাজের গুরুত্ব বুঝতে পেরে এগিয়ে এসেছে কিছু পত্রপত্রিকা। এই কাজের কিছু অংশ প্রকাশিত হয়েছে ২০১৮ সালের বিভিন্ন পর্যায়ে। এই সুযোগে পুঞ্জ, পরস্পর, দৈনিক আজাদী, উইমেনস চ্যাপ্টার এবং কালি ও কলমের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি। ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই আবুল হাসনাত, লুনা শর্মা, উৎসর্গ রায়, মাজুল হাসান, মহসিন চৌধুরী জয়, সুপ্রীতি ধর আর আসমা বীথিকে। সেইসঙ্গে যাঁরা ব্রেনে ব্রাউনের আমিই সেই অরণ্য বইটির কিছু টুকরো পোস্ট পড়ে পাঠ-প্রতিক্রিয়া জানাতে পিছপা হননি, উৎসাহ দিয়েছেন, দুনিয়ায় সত্যি যা বেশ দুর্লভ সামগ্রী, তাঁদের প্রতি আমার অপার কৃতজ্ঞতা। আশা করি ব্রেনে ব্রাউনের এই যুগান্তকারী বই সাধারণ পাঠকের কাছে পৌঁছতে পারবে; নানা হৃদয়স্পর্শী পথ উন্মোচিত হবে, অনেক সাহসী আর সৎ আলোচনা, কৌতূহলী প্রশ্নের সূত্রপাত হবে এখান থেকে -যা এখনো অজানা, অদেখা, অব্যক্ত।