[শিরোনামহীন]
অপরাজিতা! পাপড়ি যদি ঝরেই আজ পড়ে
সহুরে ধোঁয়া-ওড়ানো ফুল-দোলানো হিমঝড়ে
মরণ যদি গলির মোড়ে হাতছানিতে ডাকে
তোমার চোখ যদিই কভু বাঁকাও আর কাকে
তবুও আছে উদাবধি, সন্ধ্যাকাশে রঙ্গ
নিথর বৈকালি বা মেঘেরই মৃদঙ্গ
মরুভূমির পাণ্ডুদাহে আছে তমালতাল
জীবন জানি হোমশিখায়, হৃদয় জেনো তবু
প্রেমের গানে উদ্দীপিত গথিক ক্যাথিড্রাল।
ছুটি তো ফুরাবে কালিম্পঙে বা দার্জিলিঙে
দিনযাত্রায় গলাবে মহান্ হরিৎ হিমে
হাল্কা হাওয়ার খরবেগ হবে ক্রমশ ঢিমে।
তবুও হিংস্র শহরে ফিরবে মধুর স্মৃতি
ঘোর অভ্যাসে শিখবে জীবনযাত্রানীতি
জীবিকাযন্ত্রে এই সখী চিরকালের রীতি।
অতএব এই ঝর্ণামুখর ফুলের ব্যুহে
ক্ষণিক স্বর্গে অক্ষয় করি সে মহামিতি ॥
পর্জন্য পূষন্!
এ যে দেখি বিষম বাতিক!
অকস্মাৎ
ছুটে আসে মগধের পদাতিক,
হয়তো বা অশ্বারূঢ় ম্লেচ্ছবর্ণ সেনা
বাড়ী ছুটি ঊর্ধ্বশ্বাসে পিছু পিছু ছুটে আসে
ক্ষিপ্র উচ্চৈশ্রবা।
রেখে দাও বৈকালিক পার্কব্যাপী সভা
ঠিক জানো তুমিও ছুটবে না?
তার চেয়ে সত্যাগ্রহে চালাও সমিতি
জোটাও কমিটি
সন্ধ্যা কাটবে তবে নিরাপদে দশের সেবায়
তেত্রিশ কোটির মাঝে ভেবে দেখো মনে
কস্মৈ দেবায়
হবিষা বিধেম।
বেজায় গরীব আর নিরীহ? তাহলে ঘরে বসে’ ঘেমো।
তাহলে বিদায়, বলি; বসন্তের বিষণ্ন বাতাসে
যৌবনের গান ঝরে ভঙ্গুর জীবন-উচ্ছ্বাসে
ব্যর্থতার লজ্জা বহে মৌন মন মৌল নিরাশায়
অন্ধকারে সগরসন্তান; কৌল মুমূর্ষায় হৃদয় বিধায়
নিরন্তর প্রমাজ্ঞান, সদসৎ ধর্মাধর্ম আকাশকুসুম
সঞ্চয়ের দুরন্ত তৃষায় পিছু পিছু টেনে চলে দুর্মর নেশায়
জাগরণঘন নিরানন্দ দিব্যোন্মাদ প্রায়
বিষয়ী-বিষয় তবু নয়ন ও মন
নিয়ত ভুলায়।
গ্রাম্যজনপ্রায়
বস্তুবিশ্ব-কঙ্গনে বেচাকেনা পড়ে থাকে কেটে যায় বেলা
ইন্দ্রিয়ের বহুস্রোতে চলে শুধু মননের
ন যযৌ ন তস্থৌ খেলা
অবিরাম বিস্ময়ের উভবলী সংশয়ের ত্রিশঙ্কু ক্ষণের
দ্বারকার তথ্য কিসে মথুরার মাথুর সঙ্গীতে
ভাবি কিসে তত্ত্ব হবে বৃন্দাবনী শ্যামকান্ত পীতে
সত্য রবে ভাবি তাই।
শ্মশানপর্ণ
শ্মশানে আগুন জ্বলে
হুইস্কি কি তাড়ি চলে
খালের হাওয়ায় হিম-প্রখর আঁধারে
অনাথ রাত্রির আর্তনাদে
বসে’ আছি উবু হয়ে’ হৃদয়ে জমাট বাঁধে
পত্নীবিয়োগের পুণ্য কঠিন আঁধার
ব্যর্থ করে’ বৈদ্যের বিধান
ভেষজ নিদান
চলে যবে গেল অষ্ট সন্তানের মাতা যমপুরে
অকালে
বাসুকিকে ব্যর্থ করে
বৃষ্টিঝড়ে ভীমরাতে নয় রোদ-পোয়ানো সকালে।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.