কবিতা

  • দুটি কবিতা

    আলতাফ হোসেন   মন রে ওরে মন   ঠিকই তো মরে যেতে ভয় বেঁচে থাকতেও ভয় হোয়াট আ ওয়ে টু একজিস্ট! প্রথমে শাদা পর্দায় পরে নীল ঝকঝকে আকাশে ফুটে ওঠে এই লেখা   মন রে ওরে মন তুমি কোন সাধনার ধন ন্যুইয়র্ক গিয়ে-পড়া বাচ্চা বাঙালিনী বলেছিল এ-গেরামডা বালা না মন রে ওরে মন   আমি…

  • দুটি কবিতা

    পিনাকী ঠাকুর ছবির মতো গ্রাম   তিস্তা শুয়ে থাকে, পাহাড়ি স্পাইর‌্যাল রাস্তা ঘুরে ঘুরে শীর্ষে চলে গেছে ট্র্যাফিক ছুটে যায় ত্রস্ত, সাবধান   হঠাৎ ধস ওই পাহাড়ি ঢাল বেয়ে গাড়ির কনভয় থমকে, ফ্রিজ শট! মাথার উপরেই ছবির মতো গ্রাম…   ছবির মতো! তবু জলের হাহুতাশ স্কোয়াম, লাল মোটা চালেরও অনটন পৃথিবী থেকে দূরে কাঠের ক’টা…

  • বুনোফুলটি

    ফারজানা করিম সাঁঝের বেলা ফিরবো যখন বাড়ি বুনোফুলটি বললে হেসে : যাও, তোমার সঙ্গে আড়ি।   আমি হঠাৎ ফিসফিসানি শুনে যেই-না ফিরে তাকাই একটুখানি চুপিচুপি হাওয়ার দোলটি খেয়ে করলে শুরু কেমন কানাকানি।   সাঁঝের বেলা গড়িয়ে নামে রাত, ধুলোয় দুলে বললে হেসে : যাও, ছেড়েই দিলেম হাত।   আমি বললাম, এত্ত তোমার চাওয়া, আমার সাথে…

  • জীবন উড়ে গেছে ধুলোয়

    শ্যামল চন্দ্র নাথ আমার জীবন উড়ে গেছে ধুলোয়, যাক, যাক না – সে-কথা শোনাতে চেয়ে প্রতীক্ষায় চেয়ে চেয়ে হারিয়েছি কখন। কোথায় তার এত ব্যথা, কেন সে লুকায় অভিমানে? আমার দৃষ্টি আর কতদূর যেতে পারে? চোখের ভিতরে স্বপ্নেরা বারেবারে ভাঙে – তাই জীবনের কাছাকাছি কান পেতে আছি, দু-পায়ে চরকি বাঁধা, কী করে হই আমি মায়াবৃক্ষের পাতা…

  • সজল করুণাধারা

    শামসুল ফয়েজ   হঠাৎ দুপুরে বৃষ্টির নূপুরে নেমে আসে সজল করুণাধারা। হলুদ জন্ডিস, শ্বাসকষ্ট ছেড়ে জেগে ওঠে ঘাসপাড়া।   আয়না হয়ে যায় ভাঙা রাস্তার নয়ানজুলি; আনন্দধ্বনিতে নেচে ওঠে বস্তির কমলাফুলি; সজল সোহাগে নাচতে থাকে অনাবৃত শিশুগুলি; টাটকা রক্তস্রোতে চাঙ্গা হয় হতোদ্যম শতমূলী।

  • কিছু একটা

    মেহেদী ইকবাল কিছু একটা ধরতে চাই ধরতে চাই লাল, নীল কিছু হলুদ পাখিটির মতো কিছু ফড়িঙের ডানার মতো কোমলতা কিছু।   কিছু একটা ধরতে চাই জ্যোৎস্নার ছোঁয়ালাগা জলের ঝিকিমিকি কিছু। রুপোলি মাছের চোখে মায়াভরা স্বপ্নের মতো কিছু।   কিছু একটা ধরতে চাই ধরতে চাই ফেলে আসা মেঠোপথ জোহরার কালো চুল, হু-হু হাওয়া ঘাসেদের মমতা নিয়ে…

  • কৃষ্ণের জ্বর হলে

    শামীম হোসেন লৌকিক রাধা এসে ঘুরে গেছেন পার্বতীপুর!   সে এক প্রাচীন বট – ঝুরি দিয়ে বিছিয়েছে পথ চোখবন্ধ অন্ধকারে ধাওয়া করে মোহনীয় সুর… অসংখ্য প্রাণকণা সাপের লকলকে জিহবার মতো নিশ্বাসের বায়ুজুড়ে খেলা করে বুকের ভেতর।   পাথরের প্রেম গেছে – দেহভর্তি যমুনার জলে দেখো – কার সুরে কে নাচে সুদূর মাধবনগরে! শতবছরের প্রত্নরাত ঘুম…

  • মেঘলা আকাশ

    চঞ্চল শাহরিয়ার   মেঘলা আকাশ দেখে ভাবলাম বৃষ্টি হবে আজ। বৃষ্টি তো হলো না। ও-পাড়ার মেঘলা নামের মেয়ে প্রাইভেট পড়ে খুব দ্রম্নত বাসায় ঢুকলো। চোরা চোখে একবার আমাকে দেখলো। আমি ওর ঠোঁটের মুগ্ধতা নিয়ে কথা বলতেই বৃষ্টি নেমে এলো। বৃষ্টি বুঝি মেঘলার বোন। বর্ষার আকাশ জুড়ে তাই এতো আয়োজন।

  • সম্পর্ক

    সাজ্জাদ আরেফিন   দূরত্ব কখনো কখনো একলা পাহাড় নির্জন – কোলাহলময়   আলো-ছায়ার দাগ জেগে থাকে অনাগরিক –

  • সাপ

    নাসরীন নঈম একটি কুড়াল কাঁধে ঝুলিয়ে দুম্ দুমাদুম পা চালিয়ে যাচ্ছি হেঁটে খাচ্ছি খেটে তারপরেও কল্জেটাতে লেপটে আছে দুধে ভাতে একটি কালো সাপ।   অমাবস্যায় পুণ্যি দেখে জীবনটাকে বাজি রেখে চলছি ছুটে নিচ্ছি লুটে তোমার দেওয়া দুঃখবুকে আর কতদিন ধুকেপুকে উদ্যত অই সাপের মুখে দিতে হবে ঝাঁপ?

  • ভিডিও ফুটেজমাখা

    হেনরী স্বপন বরফের কথা ভেঙে-ভেঙে শোনাতে চাইছি সে-কথায় গলে যায় সূর্যাসেত্মর তাপ,   রাত্রির গভীর গন্ধ আরো অন্ধকার দিয়ে ঢেকে ফেলি বুকে জড়িয়ে দিই ফটোর অ্যালবাম খুলে নেগেটিভগুলো ল্যাপটপে আপডেট রাখি…! ঝরনার কলতানে… বড় বেশি কোমলতা ঝরে পাথর-পাহাড় ধসে পড়ে সর্বাঙ্গ ভাঙতে থাকে।   সেখানেই ভয়ংকর হয়ে ওঠে সম্পর্কের খাদে পড়ে উঠে দাঁড়ায় শিশ্নের ফণা…

  • বিলম্ব

    শ্যামলকান্তি দাশ আমাকে হয়তো কিছুদূর নিয়ে গেলে আমাকে হয়তো আরো দূর নিয়ে যাবে ওভাবে পালাতে পারব না আমি আর আমাকে কোথাও পুঁতে রেখে যেও তুমি।   গ্রামের দুপাশে উদাত্ত বাঁশবন – কোনো উৎপাত ধারেকাছে ঘেঁষবে না।   চোখ ফুঁড়ে-ফুঁড়ে যেদিন উঠবে গাছ বুক খামচিয়ে যেদিন গজাবে পাতা মাথা চুরমার, যেদিন উড়বে ছাই দেখো তো আমার…