রম্য রচনা

  • ‘ষোলো আনা’ বাঙালির গল্প

    ‘ষোলো আনা’ বাঙালির গল্প

    গপ্পোবাজ  বাঙালির  জীবনে  আর  যা  কিছুর  অভাব থাক, গল্পের অভাব নেই। আর গল্পের অভাব হবেই বা কেন – আমাদের স্বপ্নবিলাসী মন ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখে। তাই তো গপ্পোবাজ টেনিদা বা কাঠিমামা আমাদের এতো প্রিয়। কী নেই আমাদের গল্পে – দেশ, দশ, বিশ্ব থেকে মহাবিশ্ব। গল্পে আমরা দেশোদ্ধার করি, গল্পে আমরা রাজা-উজির পরাস্ত…

  • ঋতানৃত

    ঋতানৃত

    এক – সত্য! সত্য! ও সত্য! ঠান্ডা পড়েছে। পৌষ গেছে, বাঘের মতো মাঘের শীত জেঁকে বসেছে। ঠান্ডায় কাতর সত্য; একটা পশমি আলোয়ান গায়ে চাপিয়ে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে ছিল। কেউ তাকে অপ্রত্যাশিতভাবে ডাকছে শুনে ও চমকে উঠলো। যেনবা তার স্বপ্নে ব্যাঘাত ঘটেছে। – কী-ই! কীহ! কে! কে! কে ডাকছো? – তোমার কাঁচা-তন্দ্রা ভাঙালাম বুঝি সত্য? আহা!…

  • মামুন যখন ইউরোপে

    মামুন যখন ইউরোপে

    কিন্তু বিপদটা এলো অন্যদিক দিয়ে

  • সংলাপগদ্য : সেখসম্বরা

    রণজিৎ বিশ্বাস   শওকত ওসমানের সঙ্গে আপনার তো একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। : ছিল। এখনো আছে। : এখনো আছে মানে?! তিনি তো এখন পরলোকে! এখন তাঁর সঙ্গে আপনার কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে নাকি?! এটি কী করে সম্ভব! : সম্ভব। শ’প্রতিশত সম্ভব। জীবনের অবসানে মানুষের সঙ্গে মানুষের আত্মীয়ের সঙ্গে আত্মীয়ের সম্পর্ক কখনো শেষ হয় না। যেমন,…

  • মামুন ও তার বন্ধুরা

    তানভীর মোকাম্মেল সত্তরের দশকের রাজশাহী শহরে মামুনদের পাড়ায় ছিল তিন পিন্টু – ল্যাথারি পিন্টু, মাথামোটা পিন্টু আর মিচকে পিন্টু। তো নিত্যদিনের মতো সেদিনও মামুনরা ওদের পাড়ার সুধীরকাকার চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। ল্যাথারি পিন্টুই খবরটা আনল : ‘শুনছিস বেটা, ধলুভাইয়ের ভাগ্নের জন্মদিন। খুব বড় করে করছে।’ ‘কী বুলছিস? আমাদের তো দাওয়াতই দিলো না!’ এক পাড়ায়…

  • মধ্যযামে আসেন তিনি কাঁদেন চুপিচুপি

    রণজিৎ বিশ্বাস সারাটা রাত তুমি আমার সঙ্গে দুশমনি করেছো। কোনো কঠিন দুশমনও এমন দুশমনি করে না। : ঘাড়ে আমার মাথা কয়টা আছে যে তোমার সঙ্গে দুশমনি করবো! তাও আবার সারারাত! তাও আবার পার পেয়ে যাবো আমি! এতো ভাগ্য আমার! : এমন ফুউল স্পিডে ফ্যান ছেড়েছো যে আমার পিঠব্যথা শুরু হয়েছে। : ফ্যানের সঙ্গে পিঠব্যথার কী…

  • রহস্যময় শব্দসংসার

    আবদুশ শাকুর বাংলাভাষার জাদুকর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মাবধি সুদীর্ঘকাল জাদুটি প্রদর্শন করে যাওয়ার পরেও ৭৭ বছর বয়সে রচিত ‘বাংলাভাষা পরিচয়’-এর ভূমিকায় প্রথমেই তিনি লিখেছেন – ‘ভাষার আশ্চর্য রহস্য চিন্তা ক’রে বিস্মিত হই।’ আমার মতে এর অন্যতম কারণ, ভাষা একটা ‘ইনার্ট প্রোসেস’ বা অতৎপর প্রক্রিয়া। সে পথ চলে আনমনে। চলার পথে তার গায়ে অনেক কিছুই লাগে। কোনোটা…

  • চলছে-চলবে

    চলছে-চলবে

    জানা-অজানা দক্ষিণ কলকাতার গোলপার্কে ‘মৌচাক’ নামে বিখ্যাত একটি মিষ্টির দোকান আছে। এই দোকানের ওপরেই সপ্তর্ষি হোটেল। ছিমছাম এবং অভিজাত। এই হোটেলেরই দোতলায় সমকাল আর্ট গ্যালারি। সেখানে প্রায় নিয়মিত চিত্রপ্রদর্শনীর সঙ্গে কবিতাপাঠের আসর বসছে। সেই আসরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত, নবনীতা দেব সেন থেকে শুরু করে আরো অনেকেই যোগদান করেন। আমিও যাই। ‘মৌচাক’ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের কর্মকর্তা…

  • হচ্ছে-হবে

    হচ্ছে-হবে

     বেড়াল অথবা বিড়াল যা বিড়াল তাই বেড়াল। স্থানভেদে, জিহ্বাভেদে বেড়াল বিড়াল হয়ে যায়। কোথাও-কোথাও এই বিড়াল ভাষাতত্ত্বের রহস্যময় কারণে বিলাই নামে পরিচিত। এর চেয়েও বড় কথা, খাঁটি বাঙাল দেশে এই বেড়াল কিংবা বিড়াল কী করে মেকুর হয়েছিল? অনেকদিন আগে আমি একটা গল্প বলেছিলাম আপনাদের, মনে আছে কি-না বলতে পারব না, সেই জন্যে আপনাদের অনুমতি নিয়েই…

  • হচ্ছে-হবে

    হচ্ছে-হবে

    মুখবন্ধ হচ্ছে-হবে। হচ্ছে এবং হবে, হচ্ছে ও হবে, হচ্ছে কিংবা হবে। চমৎকার দ্বন্দ¡ সমাস। আমার অভিমত শুনে ব্যাকরণবিদ ভ্রƒকুঞ্চন করলেন। আমি বাধ্য হয়ে বললাম, ‘তাহলে তোমাদের এখনকার কালের ভঙ্গিতে বলা যেতে পারে, ‘ব্যতিক্রমী দ্বন্দ¡ সমাস। যেমন, চলছে-চলবে।’ ব্যাকরণবিদ বললেন, ‘চলছে-চলবে চলবে না।’ ‘চলবে না, মানে? তুমি কি কোনো কল-কারখানার মালিকানা নিয়েছ? শ্রমিক-আন্দোলনের ভয়ে আছো?’            …

  • মুঠোফোনের গদ্য

    মুঠোফোনের গদ্য

    বংলাদেশে কতকগুলো জায়গার নাম আছে, সাধুভাষায়, ক্রিয়াপদ, অতীতকাল। যেমন: টাঙ্গাইল। কে যে কী সেখানে টাঙ্গাইলেন জানি না, তবে টাঙ্গাইলেন যে বটে, তা না হয়েই যায় না। না হলে জায়গার নাম টাঙ্গাইল হবে কেন! এমনিভাবে নড়াতে নড়াতে নড়াইল, সরাতে সরাতে সরাইল। এখন এদেশে এসেছে এক নতুন জিনিস – মোবাইল। কে-যে কাকে কবে এদেশে প্রথম মোবাইয়াছিলেন, জানা…