শিউল মনজুর
-
বাঁক পেরিয়ে ঘুরতে ঘুরতে
শিউল মনজুর অনেকদূর পথ হেঁটে এসে তোমাকে ছুঁয়ে দেখি মনোলোকের শাদামাটা ক্যানভাসে খেলা করছে হারানো দিনের বহুমাত্রিক জীবনলিপি। যদিও ঝরাপালকের মতো ঝরে যাচ্ছে সময় তবু শুকনো পাতার মর্মর ধ্বনির ভেতর দিয়ে অবিরাম গান গাইছে শৈশবের রাঙা চড়ুই আর দুপুরের পুকুরজলে ডুব দিচ্ছে পাঠশালা পাঠের দুরন্ত মাছরাঙা। অনেকদূর পথ হেঁটে এসে দেখি জংধরা পুরনো দরজা আজো…
-
আরো গভীরে আরো ভিতরে
শিউল মনজুর এখানেই শেষ নয়। সামনে রয়েছে আরো অসংখ্য রহস্যময় পথের বাঁক। রয়েছে সোনালি পথের ধূলি। বাঁকে বাঁকে শালিক, টিয়া, ময়না ও নানা রং পাখিদের মুখ রয়েছে লুকিয়ে। আর মনে রেখো পথের ধূলিতে উড়ছে দশকে দশকে হারানো ডাক পিয়নের চিঠি অথবা মার্বেল খেলার দিন। অথবা কোথাও কোথাও দাঁড়িয়ে আছে নক্ষত্র বেদনার পাঠশালা। এখানেই শেষ নয়।…
-
ঝলমলে রোদগুলো হারিয়ে যাচ্ছে
শিউল মনজুর শীতের কুয়াশায় প্রবেশ করছে বেদনাসিক্ত রোদ। ধীরে-ধীরে মরে যাচ্ছে সবুজপাতা। জড় পদার্থ হয়ে যাচ্ছে বৃক্ষগুলো। কোনো-কোনো বাড়ির দরজা জানালা লেগে যাচ্ছে দ্রম্নত। আজ তোমার হাত ছুঁয়ে দেখি, ভীষণ ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছো তুমি আর তোমার পাপড়ির মতো কোমল আঙুলগুলো ধুলোবালির মতো খসখস শব্দে যেন খুব বেশি বিরক্ত। লক্ষ করি নতুন কেনা কার্ডিগানে প্রবেশ…
-
ভালোবাসার মতো কেউ
শিউল মনজুর ভালোবাসার মতো বিশেষ কেউ একজন আসছে; এই ভেবে কুয়াশাভোরে, বাসস্টপে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য প্রতীক্ষায় কাঁপন ধরে শরীরে, তবু অপেক্ষা করতেই হয়…। ভালোবাসার মতো বিশেষ কেউ একজন আসছে; ট্রেন এসে পৌঁছুতে পারেনি, ওয়েটিং রুমে গভীর রাত পর্যন্ত ঝিমুতে ঝিমুতে ক্লান্ত শরীর আর যেন চলে না, তবু অপেক্ষা করতেই হয়…। ভালোবাসার মতো বিশেষ কেউ…
-
ঘুমের পিপাসা
শিউল মনজুর ভাল্ লাগছে না। ভাল্ লাগছে না। করপোরেট ভুবনে উড়ছে উদ্বাস্ত্ত ধূলি। প্লিজ হাত বাড়াও। মেঘের ভিতর জন্ম নিচ্ছে ঘুমের পিপাসা। সারিগাঙে উঁকি দিচ্ছে মাছরাঙা মাছের ঘর। ভাল্ লাগছে না। একদম না। দিঘির বাগানবাড়ি, একা একা ঘুরছে প্রজাপতি। বেলাশেষে চলে গেছে সমুদ্রজলের ধীবর। ভাল্ লাগছে না। ভাল্ লাগছে না। প্লিজ হাত বাড়াও। জলের…
-
মনিষা ও বেদনাগুচ্ছ
শিউল মনজুর বুকের ভিতর যে বেদনাগুচ্ছ পাথরের মতো ভারী হয়ে বসে থাকে নীরবে, তা মাঝে মধ্যে ধ্বনির কারুকাজে পঙ্ক্তিমালায় ছড়িয়ে পড়ে চোখের জলে। মাঝেমধ্যে মনে হয় এইসব বেদনা নিয়ে যেন ছেলেখেলা করেন স্বয়ং বিধাতা। বুকের ভিতর এই বেদনা যখন চাপা দেয় ভারী পাথর, তখন দেখি মনিষা হাসতে হাসতে উড়ে যাচ্ছে বাতাসের বেগে। নাটাই ঘুড়িও পারে…
-
কবিতার মায়াবী জংশন
শিউল মনজুর মৃত্তিকার ছাইভস্ম কামাল আজাদ উৎস প্রকাশন ঢাকা, ২০১২ ৭০০ টাকা কবিতা বহুদূরের পথ। বহুদূরের পথ পাড়ি দিয়েই তবে একজন কবিকে পৌঁছতে হয় কবিতার জংশনে। যে-জংশনের স্বর্ণালি পতাকা কবিকে হাতছানি দিয়ে ডাকে, প্রলুব্ধ করে, স্বপ্ন দেখায়। এই জংশন অলৌকিক এক মায়াবী জংশন। এই আরাধ্য জংশনে সব কবিই পৌঁছতে চান। অথবা বলা যায়, সব কবিই…