সুশান্ত মজুমদার
-
জীবনের ঘরে মৃত্যু
ভোরের একপশলা বৃষ্টির পানি তখনো শুকায়নি, দীর্ণ হেয় জনপদে পুরো জেগে ওঠেনি কোলাহল, পাড়াগাঁর হাটের পসরা টানা ভ্যানগাড়িগুলো সারিসারি দাঁড়ানো, ছাপরা দোকান থেকে বাইরে ছুড়ে ফেলা পচা টক-মিষ্টির টুকরো ধরতে কাকের ঠোঁট-নখের বেজায় পাখসাট, ঠিক তখন বাতাসে আত্মনাশের খারাপ খবরটি ঘরের দরজার ফাঁকফোকর দিয়ে ঢুকে জনে জনে চাউর হয় – কাল রাতে অল্পবয়সী স্বামী-স্ত্রী গলায়…
-
মানুষ প্রথম খাবারের কথা বলে
সুশান্ত মজুমদার হাড্ডি ঠাটে চামড়ার পাতলা খোসা প্যাঁচানো না থাকলে বুড়োকে কিছুতেই প্রাণী মনে হতো না। কোলবাঁকা এই কাঠামোর চোয়াল চিমসে, মাথায় চুলের নামে আছে উসকোখুসকো আগাছা, দুই চোখের কোয়া ঘোলা, তক্ষকের পেটের মতো খরখরে ছবি মিলিয়ে বুড়োকে ইতর জন্তু বলেও শনাক্ত করা যায়। আশ্চর্য! বুড়োর সামর্থ্যের সব শাঁস ফুরালেও কানে সে কম শোনে না।…
-
বুড়ো গাছ নিখিল অন্ধকারে
সুশান্ত মজুমদার পালিশ ওঠা ক্ষয়াটে কাঠের সিঁড়ি; আর মরচেধরা সরু রডের খরখরে রেলিং উঠেছে নিচ থেকে দোতলায়। দোতলা মানে সেকেলে আমলের চুন-সুরকির বাড়ি। সিলিং থেকে হঠাৎ-হঠাৎ পলেস্তারার চাক খসে জমিয়ে রেখেছে রুমের অসুস্থতা। খ–খ- প্রলেপ না-থাকায় শক্তিক্ষুণ্ণ দেয়ালটা যেন ক্ষতে ভর্তি। ঢাকার ঝকঝকে চাকচিক্যময় পাইওনিয়ার রোডে সামনে-পাশে-আকাশে ঘাড় তোলা বিশাল সব সরকারি দপ্তর। মোড় ফিরলেই…
-
হাড়ের জোড়ে তেজ
সুশান্ত মজুমদার মেজাজ খারাপ হবে কি, তা প্রায় এক যুগ রোকেয়া নগণ্য পাড়াগাঁ ছেড়েছেন, বয়সও তিন কাল পার, বর্তমান বাসের এলাকা ছাড়া যাঁর কাছে ঢাকা আজ অবধি অপরিচিতই, এই তিনি বোঝেন – রাজধানী নামের শ্রীহীন মহানগরে মাথা গোঁজার পরিবেশ পুরো অযোগ্য। বরাবর এমন বোধোদয় তাঁর বাইরে থেকে ফিরলে। ধুলো ও ধোঁয়ার মধ্য দিয়ে হেঁটে রুগ্ণ…
-
আর খিদে থাকার কথা না
সুশান্ত মজুমদার হাড্ডি ঠাটে চামড়ার পাতলা খোসা প্যাঁচানো না থাকলে বুড়োকে কিছুতেই প্রাণী মনে হতো না। কোলবাঁকা এই কাঠোমোর চোয়াল চিমসে, মাতায় চুলের নামে আছে উস্কোখুস্কো আগাছা, দুই চোখের কোয়া ঘোলা, তক্ষকের পেটের মতো খরখরে ছবি মিলিয়ে বুড়োকে ইতর জন্তু বলেও শনাক্ত করা যায়। আশ্চর্য! বুড়োর সামর্থ্যের সব শাঁস ফুরালেও কানে সে কম শোনে না।…