প্রশান্ত মৃধা
-
অচিন ধামাইল
প্রশান্ত মৃধা বাসটা হঠাৎ আচমকা নিকলিতে থামে। বিরতিহীন বাস। এভাবে থামা বাস মালিক সমিতির আইনসিদ্ধ নয়, কিন্তু থামে। হেলপার-কন্ডাক্টর কেউ চাপড় মেরে থামায়। ভেতরে কী পরিমাণে যাত্রী আছে তার ওপর নির্ভর করে এই থামাথামি। যাত্রী বেশ কম। ফলে চারখাই পার হওয়ার পর থেকেই ধারণা ছিল থামবে। চারদিকে হালকা কুয়াশার আস্তরণমতো। তবে এ-কুয়াশা নয়, বিকেলে…
-
অন্তর্লীন
প্রশান্ত মৃধা দশার মন্ত্রের পরে ছেলে এই ঘরে এলো। মু–ত মস্তক, এভাবে শরৎচন্দ্রের কোনো একটা চরিত্রের বর্ণনা দিয়েছিলেন স্কুলের প–ত মশাই। এখন তার ছেলের তাই, মাথা কামানো, ন্যাড়া। মায়ের স্মৃতির উদ্দেশে কেশ বিসর্জন। অশৌচ পালনের এই শেষ দিন। পাপ্পু অবশ্য পুলকেশের সামনে এসে দাঁড়ায়নি। নিজের কোনো প্রয়োজনে এসেছে। ফরসা গায়ে আটহাতি খাটো ধুতি-পরা ছেলেকে…
-
বেলি কেড্সের স্মৃতি
প্রশান্ত মৃধা পুব-পশ্চিমে টানা খানজাহান আলী রোড, মেইন রোডে মিশে যেখানে শেষ, সেই নাগেরবাজারের আগে বামে ঢুকে যাওয়া রাস্তাটার নাম কাজী নজরুল ইসলাম রোড। শহরের পুরনো বাসিন্দারা কেউ বলে, এই রাস্তার কাজিবাড়িতে একদিন এসেছিলেন বিদ্রোহী কবি, তাই এই নামকরণ। কেউ বলে, ওসব কিছুই না, এমনিতেই কাজী নজরুল ইসলামের নামে নাম, ওই কাজিরা কাজী নজরুলের কিছু…
-
এই চরাচর
প্রশান্ত মৃধা এইখানে চরাচর আসিয়া মিশিয়া গিয়াছে! সত্যি! একেবারে সত্যি কথা! যে-লোকটি অথবা যে-ছেলেটি কবির ঢঙে এই কথা বলে পরের বাক্যটির জন্যে একটু থামল, সে সত্যি কথাই বলেছে। শহরের ভেতরে এইটুকু জায়গা, কিছুদিন আগে দেওয়া নাম স্বাধীনতা উদ্যান। কার কার স্বাধীনতা এখানে রচিত কিংবা খর্ব হয় সেই হিসেব তোলা থাক। কারণ, এইখানে চরাচর এসে মিশেছে,…
-
দ্বন্দ্বের মাঝখানে
প্রশান্ত মৃধা জাহেদ দেখল, নয়াবাড়ির কেয়ারটেকার বুড়োমেয়া একটা ঝাঁকায় কী যেন ঢেকে নিয়ে যাচ্ছে। বুড়োমেয়ার মুখটা উলটোদিকে ঘোরানো। হতে পারে, জাহেদ যে তাকে দেখছে, সেটা সে বুঝতে দিতে চায় না। হতে পারে, সে যে জাহেদকে দেখেছে, এটাও যেন ঘটেনি। তাই জাহেদ যখন দাঁত ব্রাশ করতে করতে কলেজের পোলের ওপর দাঁড়িয়ে, সে-সময়ে বুড়োমেয়ার রিকশা হঠাৎ তার…