বায়তুল্লাহ্ কাদেরী
-
যন্ত্র তো উদ্বাস্ত
বায়তুল্লাহ্ কাদেরী যন্ত্র তো উদ্বাস্ত্ত যন্ত্র হকচকিত, কিংকর্তব্যবিমূঢ়! যন্ত্র আসে… যন্ত্র তার হরিৎ ডিমটুকু পেড়ে যায় তোমার-আমার বাসনার কুঁজোজলে! যন্ত্র অবিরাম তার মাথাটা টেকো করতে থাকে – জলাভূমি ছেড়ে আমরা যখন একটুখানি তেষ্টায় রেলক্রসিং পার হয়ে যখন সন্ধ্যা অতি নিরীহ মুরুবিব ছাড়া আর কিছুই নয়, তখন যন্ত্র আসে অবুঝ ঝড়ের রাতে মেয়েলোকের কোমর-ধরা আলুথালু…
-
আমি পক্ষীগোত্র
বায়তুল্লাহ্ কাদেরী আমি কি বলতে পারি না ঘোড়াটি কাহার লেজে নেচেছিল লেজের ওপর? ডিম্বাণুর ঘোড়া মেঘের ভেতরে মুখ ডোবায়-ভাসায় আবার ঘুরতে থাকে… উপত্যকা বেয়ে গিরিখন্দে কিংবা অদ্ভুত পাতালে জলডুবি কলসির ভিতরের গতিপথে ওই আসিতেছে পুণ্যবতী আসিতেছে আর্যতের মগধের মটকাতে পুরনো স্নানের কীর্তি আমি যার ভাগ্যের উদোম সৌন্দর্যের সঙ্গে কিছু আড়িয়াল, কিছু পৈকগাছা, কিছু গঙ্গাফুঁর কিছু…
-
শহীদ কাদরী সময়স্রোতে ‘ঝকঝকে সদ্য, নতুন নৌকো’
বায়তুল্লাহ্ কাদেরী বিশ শতকের বাংলা কবিতায় শহীদ কাদরীর (১৯৪২-২০১৬) অবস্থান কোথায়? দশকওয়ারি পুরনো বহুল তর্কসাপেক্ষ বিষয়টি মাথায় রেখে অথবা না রেখেই কীভাবে কাদরীকে চিহ্নায়িত করা যাবে? শামসুর রাহমান (১৯২৯-২০০৬), আল মাহমুদের (১৯৩৬) সুহৃদ হিসেবে একই দশকের তকমায় ফেলে তাঁর কবিতা কি একই মেজাজে পড়া সম্ভবপর? নাকি রাহমান, মাহমুদের দশক পেরিয়ে প্রাগ্রসর দশকে গিয়েই শহীদ কাদরী…
-
মাছির ছিলান দেহ
বায়তুল্লাহ্ কাদেরী এই যে একটি মাছি ভং ধরে সারাদিন পড়ে আছে বিছানার ওপর সারাদিন মাছিটির ভং বিহবল মাছির মাথা চক্রাকার ঘুরিতেছে আরো চক্রাকার মাছির ছিলান দেহ হায় এত জটিলতা! কীভাবে খোয়াব দেখি – যন্ত্রণার নর্তকীকে একা ফেলে আমি কতল করেছি এক তিমির মোরগ? নিজের সাজের দিকে তাকালেই মনে হবে সং, জবরজং রংচঙে সং এক…
-
মাছির ছিলান দেহ
বায়তুল্লাহ্ কাদেরী এই যে একটি মাছি ভং ধরে সারাদিন পড়ে আছে বিছানার ওপর সারাদিন মাছিটির ভং বিহবল মাছির মাথা চক্রাকার ঘুরিতেছে আরো চক্রাকার মাছির ছিলান দেহ হায় এত জটিলতা! কীভাবে খোয়াব দেখি – যন্ত্রণার নর্তকীকে একা ফেলে আমি কতল করেছি এক তিমির মোরগ? নিজের সাজের দিকে তাকালেই মনে হবে সং, জবরজং রংচঙে সং এক…
-
অগ্নিসঙ্গিনী
বায়তুল্লাহ্ কাদেরী এক আমাকে জলজ ভেবে কেন তুমি ভিজে উঠেছিলে স্বিন্নতায় নিজের ভিতরে? কেন গোধূলিকে গাভিছায়াময় স্মৃতিভূমি ভেবে বসেছিলে খুব নিচু, থুতুনিতে দেখি গম্ভীর মৌসুমি বায়ুর নিঃসঙ্গ ঘূর্ণি, মুখ ছেয়ে গেছে শৈতিক বিষণ্ণতায়, মনে পড়ে, তুমি ছিলে অগ্নিসঙ্গিনী। জীয়নকাঠি। শূন্যতায় আমার আগুনে এসে এলোমেলো কখনো তোমার মৃতধূপ জঙ্গমপারঙ্গমতা পায়, বিস্মৃতির নগ্ন তাসের তুরুপ তুমি…
-
সতেজ-উত্থান
বায়তুল্লাহ্ কাদেরী জীবন যেভাবে কথা বলে তোমার আমার সঙ্গে প্রচ্ছন্ন সন্ধ্যায়, শত শতাব্দীর কোলাহলে এখনো মানুষ সেই নির্জন ভাষায় পৌঁছে যায়… বিবর্ণ বন্ধ্যায় যেসব মাঠের প্রসবের কাল চলে যায় কালান্তরে ওরাও তো জানে একদার সবুজ বর্ষায় উর্বরার মন্ত্রবলে শুরু হয় আমাদের সতেজ-উত্থান, অতএব মথুরায় যে-প্রাণের বীজ সুর তুলে কদম্বের তলে আমাদের প্রেম নেচে ওঠে আজ…