জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা যে প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে পাল্টে দিয়েছে, প্রশ্নবিদ্ধ করেছে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে, নতুন পথের প্রয়োজনীয়তাকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছে তাকে ‘অভ্যুত্থান’ বললে তা কেবল তিন সপ্তাহের ঘটনার একটি সংকীর্ণ ফ্রেমে আটকা পড়ে যায় কি? এখানে ‘গণ’ শব্দ যুক্ত করে দেশের আপামর (অবশ্যই ৫ই আগস্টের পূর্বের ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকগণ বাদে) মানুষের অংশগ্রহণকে স্বীকার করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে শিল্পীরাও এই আন্দোলনে নানা মাধ্যমে, কখনো সশরীরে রাজপথে নেমেছেন; কিন্তু এই আন্দোলনে যে-মৃত্যু, যে-নিপীড়ন মানুষ দেখেছে, তার যে মনস্তাত্ত্বিক ক্ষত তৈরি হয়েছে, যে তর্ক-বিতর্ক দিশাহীন পথকে খুঁজছে, শিল্পীরা তার সঙ্গে একীভূত না হয়ে পারেন না। মানবিক বিপর্যয় বা
সমাজ-সংস্কৃতির উপর আগ্রাসন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে শিল্পীর দায়িত্ব আরো বেড়ে যায়।
শিল্পীরা নিজেদের শিল্পমাধ্যমকে কাজে লাগিয়েছেন নানা আঙ্গিকে। সমাজ-রাজনীতির ঢেউ কীভাবে শিল্পীকে আচ্ছন্ন করে, তার প্রতিক্রিয়া তাঁদের শিল্পকর্ম নির্মাণে কেমন ভূমিকা রাখে তা যেন এখানে স্পষ্টতর।
দশজন শিল্পী এই সময়কে পাঠ করে ধরতে চেয়েছেন দৃশ্যশিল্পের বিভিন্ন মাধ্যমকে ব্যবহার করে। এ এসেন, আফসানা শারমিন, আসাং মং, ফারজানা আহমেদ, মং মং শে, নিয়াজউদ্দিন আহমেদ, পলাশ ভট্টাচার্য, রাসেল রানা, রাজীব দত্ত, রিপন সাহা একত্রিত হয়েছেন কিউরেটর শার্মিলী রাহমানের চিন্তা ও প্রদর্শনী বিন্যাসের বহুস্তরবিশিষ্ট এক প্রক্রিয়ায়, যা ‘শরীর ও মানচিত্র’ শিরোনামে দলীয় অবয়ব ধারণ করেছে। অর্থাৎ শিল্পকর্ম প্রদর্শনালয়ে জনসম্মুখে এলে শিল্পীর একক নিজস্বতা থাকে না, তা কালেক্টিভ বা সকলের বা জনগণের হয়ে ওঠে। কিন্তু একেকজন স্বতন্ত্র শিল্পীর জগৎ এতটাই বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত যে বেঙ্গল শিল্পালয়ের চারতলার অপ্রথাসিদ্ধ প্রদর্শনশালাটি যেন সার্বভৌম একটি মানচিত্রে রূপ নিয়েছে। এমন রাজনৈতিক পটভূমিকে মাথায় ও আবেগের তীরে রেখে শিল্পীদের নিজস্ব ভাবনা, বহুমাত্রিক মাধ্যমের মিশেল ও মিথস্ক্রিয়ায় শার্মিলী রাহমান এমন এক বহির্জগৎ নির্মাণ করেছেন, যেখানে এলে ফারজানা আহমেদ ঊর্মির উল্লম্বভাবে ঝোলান কাগজের স্ক্রল এই শক্তিশালী রেখাচিত্র ও শব্দবিন্যাস গূঢ় এক বেদনা হয়ে শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। I live here but do not exist সিরিজের ১২ ফুটের স্ক্রলের সামনে ফেলে রাখা কয়লাগুলো কিসের প্রতীক? শুধুই নিভে যাওয়া আগুন, নাকি পুড়ে ভস্ম কয়লা হয়ে যাওয়া শরীরের? বিবেকের? চেতনার? জিহ্বা বের করে আছে বুলেটের দিকে তাকিয়ে এক মুখ, সশস্ত্রবাহিনীর একজোড়া বুটের মধ্যে দিয়ে বেরিয়েছে একটা লাল গোলাপ! সনাতন ধর্মের দেবী কালী আছেন রক্তচক্ষু নিয়ে দাঁড়িয়ে, লেখা আছে সত্য আর আংশিক সত্যের শবমালা! এই মানব-ইতিহাস যেন পুরাণ ঘুরে বর্তমানে এসে ঠেকেছে। ফারজানা আহমেদের স্থাপনা যেখানে লোমযুক্ত চামড়া সরাসরি ব্যবহার হয়েছে টেবিলের উপর – ২০১৩ সালে পুরান ঢাকার দর্জি বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডকে পাশবিকতা ও নপুংসক সমাজের একটি চিত্র হিসেবে পুনর্নির্মাণ করেছেন শিল্পী।
এ এসেন এই জগৎকে দেখেন নিজের ফ্রেমে। ক্ষমতার কাঠামো যা মানুষের অস্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, তাকে এসেন একটি গোলকধাঁধা মনে করেন। তাই নিজেদের এই হাহাকারের মহাবিলাপ থেকে নিস্তার পেতে সংকটকে সংগ্রামে রূপান্তরের ভাবনা এনে হাজির করেন। যেভাবে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান জাগ্রত করেছে এদেশের হাজার মানুষের চেতনাকে। Not enough space – সিরিজের কাঠের ব্লকে করা কাঠখোদাইয়ের প্রিন্ট এবং ব্লক দুটোই বস্তু হিসেবে বিষয়ের সঙ্গে একাকার হয়ে উপস্থাপিত হয়েছে। এ এসেনের মানুষ, আকাশ, বাতাস – সবই আলাদা এক চরিত্র নিয়ে হাজির, ঠিক বাস্তব নয়, অবাস্তব নয় – সুখস্বপ্ন ও দুঃস্বপ্নের দোলাচলে অভিব্যক্তিবাদী কর্কশ তীব্রতায় আচ্ছাদিত নন্দন প্রশ্ন! এই বিশেষণ ফারজানা আহমেদ ও আসাং মংয়ের শিল্পকর্মেও দেখা যেতে পারে। Present Tense একটি স্থাপনাধর্মী শিল্পকর্ম, যেখানে গজ ব্যান্ডেজের কাপড়ের উপর একধরনের গল্পের বর্ণনা পাওয়া যায়, যা আবার দুই প্রান্তে থাকা দুটি রোলারে মোড়ানো। ক্ষত বাঁধার গজ কাপড়ের মধ্যে ক্ষত ও সেরে ওঠার দুই ধরনের সম্ভাবনা প্রতীয়মান। প্রদর্শনশালার মধ্যে প্রতিটি শিল্পকর্ম আলাদা ও এক হয়েছে। ফলত, শিল্পীর আত্মপরিচয়ের চেয়ে সামাজিক পরিচয় শক্তিশালী হয়েছে। শিল্পীর সমাজবিছিন্নতার অপবাদ যেন ঘুচেছে।
আসাং মংয়ের স্থাপনা শান্ত সম্মুখে – একটি বিশালাকার পাখিসদৃশ প্রাণী, প্রদর্শনশালায় ছাদ দেয়াল থেকে ঝুলে দেয়ালেই আটকে গিয়েছে। ১৪ ফুট বাই ২১ ফুটের সাদা তুলায় তৈরি মাথাকাটা প্রাণীর শরীরটির বয়ান তার উপস্থিতিতে, কিন্তু স্বপ্ন দেখার মতো অলৌকিক।
আফসানা শারমিনের স্থাপনায় দেখা যায় ঘনীভূত স্থিরতা। জটিল জরাগ্রস্ত সময়ে নিজ বাড়ির ছাদে আপনমনে খেলতে থাকা কোমলমতি শিশুরও প্রাণ কেড়ে নেয় ঘাতকরা। সে নিষ্পাপ শিশুর স্মৃতির স্মারক হিসেবে গড়া হয়েছে খেলনার ভাস্কর্যটি। শিল্পকর্মটি গড়েছেন আফসানা শারমিন। তাঁর মোট পাঁচটি কাজ এখানে স্থান পেয়েছে।
অনেকগুলো বাঁশকে একত্র করে প্রদর্শশালার মেঝেতে জোটবদ্ধ স্থাপনার সঙ্গে রয়েছে কিছু বিঁধে থাকা মানুষ-অবয়ব, যেগুলো নিদারুণ যন্ত্রণা, বিক্ষিপ্ততা নিয়ে পুনঃউপস্থাপন করেছে Agnoy-এর মাধ্যমে। শিশুদের খেলনা একত্রিত করে কম্পোজিশন করা স্থাপনা, কাইনেটিক ভাস্কর্য – নানাভাবে আফসানা শারমিন নিরীক্ষাকে উন্মুক্ত করেছেন। এছাড়া আফসানা শারমিন প্রদর্শনী চলাকালে তিনটে পারফরম্যান্সও করেছেন।
কিউরেটর শার্মিলী রাহমান সহজ আন্তঃসম্পর্ক রেখেছেন প্রদর্শনীর নকশাবিন্যাসে। শিল্পকর্মগুলো কিছু দেয়ালে টানানো, কিছু ঝুলন্ত; আবার ঘরের মধ্যে আলো-আঁধারিতে সাউন্ড ও ভিডিওর সমন্বয়ে আবহ তৈরি করেছেন, যা দর্শককে গণঅভ্যুত্থানের সময়কে শুধু নয়, ধরার চেষ্টা করা হয়েছে মানুষের অপার সম্ভাবনাকে। মং মং শে’র এই কাজের মূলচিন্তা শারীরিক ক্ষয়, মানুষের মৃত্যু, সামাজিক অবক্ষয়। নানা ঘটনার বিষয়বস্তু নিয়ে তিনি তিনটি মিডিয়ামে কাজ করেছেন। একটা মানচিত্র বা একটা দেশে বসবাস করায় একটা স্ট্রাকচারের মধ্যে কিছু নিয়ম দ্বারা আমরা কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছি – সেটাকে খোঁজ করেছেন, প্রশ্ন করে দেখতে চেয়েছেন, যা হয় রাষ্ট্রব্যবস্থার নামে – তার গতিপ্রকৃতি কেমন। ২ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ইনস্টলেশন আছে, নাম দিয়েছেন Erode, মানে যেটা ভেতর থেকে ক্ষয় হয়।
লাল রঙের পেইন্টিং In the field of Reality নামে কিছু আধাবাস্তব মানব-অবয়ব নানা ভঙ্গিমায় ও তীব্র অভিব্যক্তিতে প্রতীয়মান। ফটোপ্রাফকে ম্যানিপুলেট করে Re-understanding of what was forgotten সিরিজটি করেছেন, যেগুলো আবছা অধরা কিছু জিজ্ঞাসা তৈরি করে।
শিল্পীরা ‘শরীর ও মানচিত্র’ প্রদর্শনীতে শিল্পমাধ্যমের সহায়তায় সততার সঙ্গে নিজেদেরও সমালোচনা করেছেন সংগ্রামের প্রতি নিজেদের অবস্থান খুঁজে দেখার প্রক্রিয়ায়। যেখানে তাঁরা শিল্পীর সমাজবিচ্ছিন্নতার যে প্রচলিত সমালোচনা, সেটিকে নাকচ করেছেন। কিউরেটর নিজের মনোজগতের বহিঃপ্রকাশ করেছেন শিল্পীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে। সকলেই যে এক – দর্শক, সমালোচক, শিল্পবোদ্ধা কিংবা শিল্পবিমুখী মানুষেরা সকলে মিলে একটি প্রণালি। সমাজবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন, রাজনীতি, বিজ্ঞান, সংস্কার-কুসংস্কার ইত্যাদিকে শিল্পজ্ঞান আমলে নিয়ে সঙ্গে বিকশিত হয়। শিল্পীদের দৃশ্যমান ভাষা নির্মাণের জটিল প্রক্রিয়ায় জীবন, জগতের প্রায় সবকিছুই সংযুক্ত হয়ে যায়। কারণ শিল্প কখনো জীবনবিচ্ছিন্ন নয়।
পলাশ ভট্টাচার্য দুটি স্মৃতি নিয়ে এ-কাজের প্রক্রিয়াটি শুরু করেন। প্রথমটি হলো জুলাইয়ের যে-সময়গুলোয় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল সে-সময় যে-তথ্যমাধ্যম বা গণমাধ্যমগুলোর উপর ব্যক্তিগত নির্ভরতা ছিল, তার মধ্যে বিশেষ মাধ্যম দুটি ছিল সংবাদপত্র ও টেলিভিশন। সেই সময়টিতে বিভিন্ন যোগাযোগের সীমাবদ্ধতার ভেতর পত্রিকা অথবা টিভি-নির্ভরতার ওপর ভিত্তি করে সঞ্চিত অভিজ্ঞতাগুলোর কিছু অংশকে ভিডিও ও ইমেজের সমন্বয়ে শিল্পকর্মের প্রক্রিয়াটুকু শুরু করা হয়, যা পরবর্তী সময়ে ‘শরীর ও মানচিত্র’ শিরোনামে বেঙ্গলের এই প্রদর্শনীতে সিঙ্গেল চ্যানেল ভিডিও ও পাঁচটি ডিজিটাল কোলাজ ইমেজের সমন্বয়ে প্রদর্শিত হয়। এ-কাজের শিরোনাম The Days of Logout। দ্বিতীয়টি আগস্টের মাঝামাঝি সময় একটি মব সৃষ্টি হতে যাওয়ার মুহূর্তে একটি ছোট সাংস্কৃতিক সমাবেশ বানচাল হয়ে যাওয়ার ঘটনা থেকে। ঘটনা নজরে আসার পর অভিজ্ঞতাটিকে সেলফোনের ক্যামেরায় নথিবদ্ধ করতে গেলে সেটি ওই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই অভিজ্ঞতা ও সেলফোনটি ব্যবহার করে দুটি ভিডিওসহ একটি মাইক্রোফোনের শব্দ, বাংলা ও ইংরেজি অক্ষরের বিন্যাসে এলইডি নিয়ন ব্যবহার করে শিল্পকর্মটি নির্মাণ করেন – Broken lens। এখানে প্রজেক্টরের লুপে চলতে থাকা প্রথম ভিডিওটি সেই ক্ষতিগ্রস্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে একটি পারফরম্যান্স ধারণ করা হয়।
রিপন সাহা ছোট সাদা ক্যানভাসে কালিতে রেখাচিত্রে মানুষের দেহের নানা অঙ্গ ও চরিত্র নিয়ে অবজেক্টের মধ্যে রূপান্তরধর্মী সংযোগ ঘটিয়েছেন, যা বাস্তবে ব্যঙ্গাত্মক কিন্তু সূক্ষ্ম তার বাছবিচার। মধ্যাঙ্গুলি নির্দেশে যে-ভাষার প্রকাশ ঘটে তা শক্তিশালী। প্রতিনিয়ত প্রতারিত হতে থাকা বাংলাদেশের মানুষের বিদ্রোহ ঘোষণার ইশতেহার দিয়েছেন Birth of a Content সিরিজে।
সজল রানা আন্দোলনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত যে-কাজগুলো যে-সিরিজে করেছেন, তার নাম কাঙ্ক্ষিত শান্তি বা Desired Peace। এ সিরিজের কিছু শিল্পকর্ম ‘শরীর ও মানচিত্র’ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে – ড্রইং, ইনস্টলেশন, স্কাল্পচার প্রভৃতি। প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া ড্রইংগুলো নাইটমেয়ার সিরিজের। আন্দোলনের সময়ের ট্রমার, দিনের বেলা আন্দোলন করা, নির্ঘুম রাত। ফেলে দেওয়া কিছু কাগজের মধ্যে আঁকাআঁকি শুরু করে মানসিক অস্থিরতা থেকে পরিত্রাণের পথ খোঁজেন। আন্দোলনে পারফর্ম করেছেন অ্যাঞ্জেলিক হয়ে। তিনি জানান, ‘ওই অ্যাঞ্জেলিক ফর্মে কাগজে দাগাদাগি করে, সারাদিন
যে-শব্দগুলো আমাকে ট্রিগার করত সেগুলো কাগজে টুকে রেখে – এভাবেই কিছু কাজ তৈরি হয়েছিল। ওই কাজগুলোই এখানে উপস্থাপন করা।’ এগুলো আন্দোলনের সময়কার কাজ – Nightmare সিরিজ।
রাজীব দত্ত ফটোগ্রাফ, টেক্সট বা শব্দ, ড্রয়িং, শাবল, শুকনো মরা গাছ ইত্যাদি ব্যবহার করেছেন স্থাপনা বা ইনস্টলেশনধর্মী উপস্থাপনায়। রাজীব দত্ত রাজনীতি-সচেতন; তাঁর উপস্থাপনা ব্যঙ্গাত্মাক। Archive of Laughter and Forgetting সিরিজটিতে রাজীব দত্ত যে হাসির খোরাক জুগিয়েছেন, তা স্পষ্টতই চিন্তার খোরাকও জোগায়। কারো একটি ফটোগ্রাফ মাটির ঢিবির উপরে পড়ে আছে, যা দেখে মনে হয় সেটি পতিত কোনো ব্যক্তির।
নিয়াজউদ্দিন আহম্মেদ ভিডিও, কাইনেটিক স্কাল্পচার, পেইন্টিংয়ের সমন্বয়ে একটি স্থাপনা করেছেন, যার নাম দিয়েছেন Fallen। যে-চেয়ারটি গতিশীল কিন্তু ঘুরছে একঘেয়ে ভাবে – যেন বলছে জীবনে ক্ষমতার পিপাসার কথা। চেয়ারের নানাবিধ ব্যাখ্যা আমরা পাই – তার মধ্যে নিয়াজউদ্দিন আহম্মেদ ভিডিওতে যেভাবে চেয়ারে উঠছেন ও নামছেন সেই অভিব্যক্তি সামাজিক।
প্রদর্শনীর কিউরেটর শার্মিলী রাহমান উল্লেখ করেছেন – জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে দাঁড়িয়ে যাপিত জীবনের মনস্তাত্ত্বিক দৃশ্যপটে, যা সমষ্টিগতভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে তারই একটি প্রতিরূপ হিসেবে এই প্রদর্শনী উপস্থাপনা করছি। এখানে স্মৃতিকাতরতার চেয়েও যা সবচেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে তা হচ্ছে আত্মবিনির্মাণ ও আত্মানুসন্ধান এবং সব কাঠামোগত চর্চার মোকাবিলার চেষ্টা করা।
বেঙ্গল আর্টস প্রোগ্রাম-নিবেদিত ‘শরীর ও মানচিত্র’ প্রদর্শনীটি ১৫ নভেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত প্রদর্শিত হয়েছে বেঙ্গল শিল্পালয়ে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.