অন্ধকারের রবীন্দ্রনাথ

বিশ্বজিৎ চৌধুরী

রবীন্দ্রনাথের জীবনের কথিত অন্ধকার নিয়ে
প্রচুর আলোচনা হচ্ছে রকে-রেস্তোরাঁয়;
এত যে আলো জ্বেলেছেন তিনি
হঠাৎ সব তুচ্ছ হয়ে গেল, শুধু অন্ধকার
অন্ধকার নিয়ে চিত্তাকর্ষক সব গবেষণা
কাদম্বরী দেবী শেষ চিরকুটে কী লিখেছিলেন
কাহিনি বিস্তারের সে কী উত্তেজনা!

এত রস ও রসদ জমা ছিল কালের ভাঁড়ারে
ভ্রাতৃবধূ, ভ্রাতুষ্পুত্রী কিংবা দূর-বিদেশিনী
প্রতিটি সম্পর্ক ঘিরে যৌনগন্ধী গল্পের ইশারা…
বাজারে বিকোচ্ছেও ভালো;
রবীন্দ্রনাথ আম খেতে ভালোবাসতেন
এখনো রস চুঁয়ে পড়ছে তাঁর দাড়িগোঁফ বেয়ে
দেড়শ বছর পরও তিনি এতোটা রসালো!

সেদিন এক গবেষকের লেখা উপন্যাসে দেখলাম
নির্জন বাগানে কাদম্বরীকে চুমু খাচ্ছে রবি
কাদম্বরীও বাংলা সিনেমার কথা মনে রেখে
‘কেউ যদি দেখে ফ্যালে’… ধরনের সংলাপ বলছেন
তাতে তৈরি হচ্ছে চিত্রকল্প, ধারণাসম্মত ছবি।

এবার আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, কখন
বেহুলা-বাসরের মতো একটি ফুটো করে দেবেন লেখক
সরীসৃপ হয়ে আমাদের দৃষ্টি প্রবেশ করবে তাঁর ঘরে
দেখতে পাবো বিবস্ত্র রবীন্দ্রনাথকে
আমরা কম্পমান একটি অসাধারণ শয্যাদৃশ্যের জন্য
দেখবো তিনি কতটা অরণ্যদেব, নীলছবির মতো
অবৈধ সঙ্গম দৃশ্যে তিনি কতটা ক্ষিপ্র, কত বন্য!

মূল কথা হচ্ছে, আমাদের ঘরে যে ছবির ফ্রেমটি আছে
সেখানে কিছুতেই আঁটানো যাচ্ছে না তাঁকে
এমনকি আমাদের দৃষ্টিও পৌঁছায় না সেই উচ্চতায়
অতএব আমরা রকে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি
তাঁকে টেনে নামাতে হবে আমাদের দৃষ্টিসীমায়!