ইতি শতবর্ষী সুভাষ

পিয়াস মজিদ

আগুন অধ্যুষিত
এই কালমালঞ্চে
নির্বাসন আমার।
পুষ্পের পরশমণি
জাগায় না বরং পাড়ায় ঘুম।
ফুলের হর্ম্য আছে, প্রেমডাকাত নেই
বাবরালি আর সলোমনের মা
মে দিনের মিছিলে গলা মেলাতে গিয়ে
নিজেরাই আজ কবন্ধ কবিতা।
হাত-পা হারা ইদানীং আবহাওয়ায়
সমুদ্রও শুকায় পদাতিক-তৃষ্ণায়।
আলোয় নাকি ভুবন ভরা!
পাঁচ পাশে অন্ধকারের
উজ্জ্বল ইম্প্রেশন
কবরের কোরাস, চিতার বৈভব।
আমার বাংলা থেকে কলকাতা কতদূর
স্বপ্নের সোপান থেকে কতদূর
বাস্তবের বজবজ?
বস্ত্তবাদী দ্বন্দ্বকুসুম, শ্রেণিচ্যুতির স্বরগ্রাম
সবহারাদের ঐকতান – মিলেমিশে
আমরা ধর্মতলার কাকের দঙ্গল থেকে
ছুটতে চেয়েছি কোকিলের কুহু কুহু মহড়ার দিকে।
কিন্তু মাঠই ফিরিয়ে দেয় মানুষকে,
মধুমাস থেকে মিহি করে কেটে তোলা

বিষবকুলের গুচ্ছের দিকে।
এই বাদশাহির কালে
ফকিরের ফুল্ল আলখেল্লায়
ছেলে যায় বনে,
উধাও বসন্তের বংশলতিকা গুপ্ত কোথায় কোথায়
কোন সে অচিন মাঘের গুহায়?
মানুষের কৃতঘ্ন নিশ্বাসে
ফাল্গুন ক্রমশ ফিকে হয়ে আসে
বাগান সরেজমিন;
যা ফোটে তা গন্ধহারা বাণীফুল
এই কুসুম-করালকালে
বাকি থাকে তবু কিছু
ইশতেহারের আত্মা,
যারা বেলভিউ নার্সিংহোমে
যেতে যেতেও থমকে দাঁড়ায়।
রোগশয্যাশীল কিন্তু স্বপ্নের গন্তব্যে
কোনো অস্ত্রোপচার লেখা নেই,
বজ্রকে বধির করে আজ ধূসর দেশে
হৃদয়ের লালে আশ্চর্য নীল লিখে রাখি,
আয়ুর সীমায়িত অক্ষরময় পৃথিবীতে
একমাত্র কবির অক্ষরের নেই কোনো
অন্তিম নিশ্বাস,
ইতি শতবর্ষী সুভাষ।