November

  • November 2024
  • গণমুক্তি ও মানুষের মুক্তিসাধনা

    গণমুক্তি ও মানুষের মুক্তিসাধনা

    গত শতকের ষাটের দশক ছিল আমাদের প্রজন্মের জেগে ওঠার কাল। রবীন্দ্রনাথের শেষ জীবনের মন্ত্রোপম কবিতা ‘রূপনারানের কূলে’র আলোকে বলতে চাই, কৈশোর পেরুতে পেরুতে আমরা জেনেছি এ-জগৎ স্বপ্ন নয়, আন্দোলন-সংগ্রামে সত্যিই রক্তের অক্ষরে লেখা হচ্ছিল আমাদের কালের রূপ। তার ভেতর দিয়ে পাড়ি দিতে দিতে আঘাতে-বেদনায় আত্মোপলব্ধির পথরেখা ফুটে ওঠে। আভাসে যেন বুঝতে পারি সত্য কত কঠিন;…

  • আবুল হাসনাত ও তাঁর প্রত্যয়ী সাহিত্যবোধ

    আবুল হাসনাত ও তাঁর প্রত্যয়ী সাহিত্যবোধ

    সাহিত্যসৃষ্টি আর সাহিত্যসমালোচনার মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠভাবে পরিব্যাপ্ত। বোধকরি সে-কারণেই নিজের সাহিত্যসৃষ্টির আদর্শের কথা বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথকে তাঁর সমালোচনাসাহিত্যের ধরন বিষয়েও জানাতে হয়েছিল। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘যে সমালোচনার মধ্যে শান্তি নাই, যা কেবলমাত্র আঘাত দেয়, কেবলমাত্র অপরাধটুকুর প্রতিই সমস্ত চিত্ত নিবিষ্ট করে, আমি তাকে ঠিক মনে করিনে।’ কেন তিনি ঠিক মনে করতেন না, তার কারণ সম্পর্কে…

  • সদ্ভাবশতক ও কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার

    সদ্ভাবশতক ও কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার

    যে জন দিবসে মনের হরষে, জ¦ালায় মোমের বাতি, আশু গৃহে তার দেখিবে না আর, নিশীথে প্রদীপ ভাতি। কিংবা, কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে। কবিতার এই পঙ্ক্তিগুলি ছাত্রজীবনে ভাবসম্প্রসারণ হিসেবে পড়েছি আমরা। কিন্তু যখন আমরা পঙ্ক্তিগুলো সম্প্রসারণ করেছি তখন কী জেনেছি বিখ্যাত এই প্রবাদবাক্যতুল্য চরণগুলির রচয়িতা কে? এই…

  • সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবনে ইউনেস্কো অধ্যায়

    সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবনে ইউনেস্কো অধ্যায়

    সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবনে ইউনেস্কো অবিমিশ্র হিতকারী ভূমিকায় ছিল না; এক পর্বে তা লেখক হিসেবে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বেলায় অনুঘটকের ভূমিকা পালন করলেও তাঁর জীবনের অন্তিম পর্বে আশাভঙ্গকারী বিপর্যয়ের সূত্রপাত করেছিল। তাঁর জীবনের শেষ দশকটিকে প্যারিসের দশক হিসেবে চিহ্নিত করলে ইউনেস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ এর গোড়া থেকেই ছিল। দশকের শেষ অর্ধেকে এসে ওয়ালীউল্লাহ ইউনেস্কোর কর্মী হিসেবে…

  • অথৈ পরমানন্দ

    অথৈ পরমানন্দ

    কে এই অথৈ পরমানন্দ? তাঁকে নাকি দেখা যায় না। ছোঁয়া যায় না।  তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায় না। আসলে তিনি কে? তবে কি তাঁর চোখ আকাশের মতো নীল? তাঁর কেশ কি ঝুরিবটের মতো কাঁধ পর্যন্ত নামানো? তাঁর গায়ের রং কি সমুদ্রের মতো গাঢ় নীল? পাহাড়ের মতো তিনি কি ঋজু ও বলিষ্ঠ? তাঁর কণ্ঠস্বর কি সুললিত,…

  • কলকাতায় জীবনানন্দ : সিনেট হল, মহাজাতি সদন ও গারস্টিন প্লেসের ভূত

    কলকাতায় জীবনানন্দ : সিনেট হল, মহাজাতি সদন ও গারস্টিন প্লেসের ভূত

    কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, অনুবাদক, সম্পাদক ও ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক জীবনানন্দ দাশের ৫৫ বছরের জীবনের (১৮৯৯-১৯৫৪) উল্লেখযোগ্য সময় কেটেছে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের কিছু আগে তিনি পাকাপাকিভাবে জন্মস্থান বরিশাল ছেড়ে কলকাতায় চলে যান এবং সেখানেই ট্রাম দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। কলকাতার ল্যান্সডাউন রোড (বর্তমান নাম শরৎ বসু রোড), রাসবিহারী…

  • গল্পহীনতার রাতগুলি

    গল্পহীনতার রাতগুলি

    প্রায়ই এমন ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন রাত্রিগুলি হাঁটতে থাকে। বড় বড় পাইপ … সড়ক থেকে অদূরে তার পাশেই ছাতাহীন জীর্ণ ঘর, এঁদো আঁশটে নর্দমার পাশেই শতছিন্ন কাপড় খাবলা খাওয়া মেঝেতে, তার ওপরই চিৎপাত পড়ে আছে গুগলু, পাশে কুকুরটা রাজকীয় হাই তুলছে, তার পাশেই একটা বাক্স, এর ভেতর থেকে সাপ এসে গুগলু যেনবা কোনো দেবতা তার কণ্ঠ পেঁচিয়ে মাঝেমধ্যে…

  • পথিক বনাম রাক্ষসরাস্তা

    পথিক বনাম রাক্ষসরাস্তা

    খাড়া! খাড়া! কেডা? কেডায় আমারে খাড়াইতে কয়? থপথপ করে হাঁটে ইসমাইল শেখ। মোটা থলথলে শরীরে হাঁটলে পথের ওপর পায়ের পদাঘাতে এক ধরনের বেঢপ শব্দ তৈরি হয়। মাঝবয়েসি ইসমাইল শেখ হাঁটছে আর আপনমনে বকে যাচ্ছে, মাগি তোরে আমি দেইখা লমু। কত্তো বড় সাহস তোর? আমার ঘরবাড়ি রাইখা তুই বাপের বাড়ি চইলা যাস? তোর পায়ের নলি যুদি…

  • ওয়াল্টার বেঞ্জামিন  :  তাঁর অসমাপ্ত  জীবন ও বহুমুখী চর্চা

    ওয়াল্টার বেঞ্জামিন  :  তাঁর অসমাপ্ত  জীবন ও বহুমুখী চর্চা

    এক। ভূমিকা ১৯৪০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নাৎসি বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা তিরোহিত হতে দেখে স্পেন-পর্তুগাল সীমান্তে এক হোটেলে আত্মহত্যা করার সময় জার্মান বুদ্ধিজীবী ওয়াল্টার বেঞ্জামিনের বয়স হয়েছিল আটচল্লিশ বছর। সেই পর্যন্ত তাঁর যা পরিচিতি এবং খ্যাতি, তার সবই ছিল জার্মানির ‘ফ্রাংকফুর্ট স্কুল’ নামে খ্যাত বামপন্থী গোষ্ঠীর কতিপয় মার্কসবাদী চিন্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ। জার্মান দার্শনিক-চিন্তক…

  • উড়ে যায় সময়

    শরতের শিউলি ঝরে পড়ে রোজ শিশুকালের আলো-আঁধারের স্মৃতি কত চেনা অচেনা ফুলের বাগান আর সব ভুতুড়ে বাড়িতে ফেরার গল্প। কত কান্না ঝরে যায় চোখের পাপড়ি বেয়ে কাঠ চেরাইয়ের কলের নিচে নিজেকে শুইয়ে রাখি। তবু ভুলতে পারি না কাকে? এখন আর বলতে পারি না। শুধু মনে হয় কেউ একজন ছিল। কাশবনে গেলে হয়তোবা তাকে খুঁজে পাওয়া…

  • তুমি ভালো থেকো শকুন্তলা

    প্রকৃতি দিনরাত চেষ্টা করে চলেছে মানুষে মানুষে ভালোবাসা সৃষ্টি হোক, তার মতো সান্ত্বনা হয়ে নির্জনে নিজেকে মেলে ধরুক … সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্তের গোধূলি শিখুক; শৈলশিখরে দৃশ্যমান সূর্যের উদয় মুহূর্তে ক্ষণে ক্ষণে আকাশে যে নান্দনিক দৃশ্যের সূচনা হয় মানুষ তা নিজের জীবনে অনুবাদ করে প্রতিফলনের আনন্দে লোকজ জীবনে বাস্তবায়িত করতে শিখুক; প্রিয় শরীরের ভাঁজে ভাঁজে লালনের…