এই বাড়ি ফেরায় না কাউকেই

এই এক বাড়ি।
ময়নামতির থেকে, পঞ্চগড়, মহানন্দা থেকে,
মেঘনার ওপার থেকে, রাঢ়দেশ থেকে,
পেরিয়ে সন্দ্বীপ, হাতিয়ার ঢেউ টুকরো করে,
হাজার হাজার পাখি একদিন এই

  • হাজার-হাজার নয়, কোটি-কোটি পাখি –
    এই সামান্য বাড়িতে উড়ে আসে। কুলায়ের খোঁজ করে,
    খোঁজ করে অভয়ের, বিশ্বাসের খোঁজ করে,
    এবং আশার।

এই বাড়ি
ফেরায় না কাউকেই।
বারান্দায় নতুন পতাকা ওড়ে।
স্বপ্নের মানুষ
দাঁড়ান সে-পতাকার নিচে
তারপর একদিন
পাখি নয়, ঝাঁকে-ঝাঁকে গুলি
এ বাড়ির দিকে ছুটে আসে।

জানালার কাচ ভাঙে, ইট গুঁড়ো হয়,
রক্তের সমূহ স্রোত সিঁড়ি বেয়ে
নিচে নেমে আসে, বাগানের
গাছ ঘিরে ফেলে।
গাছেরা অবাক হয়। ভাবে :
এ তো জল নয়;
যার কোনো প্রয়োজনই আমাদের নেই,
তাই কেন আমাদের সিক্ত করে যায়?
বরফে ও কাঠের মোড়কে
একটি শরীর যায় এই বাড়ি থেকে।
সাদা জামা, ভাঙা চশমা, টুকরো পাইপ
যায় তাঁর সাথে।
কেবল শরীরই যায়। স্বপ্নের মানুষ –
তিনি তো থেকেই যান নিজের বাড়িতে।

ধ্বনিত থেকে প্রতিধ্বনি হয়
তাঁর কণ্ঠস্বর
ঘর থেকে ঘরে।

এই বাড়ি ফেরায় না
কাউকে।

পুনর্মুদ্রণ : দুই বাংলার কবিতায় বঙ্গবন্ধু
সম্পাদক-আহমেদ সুবীর
শিশুসাহিত্য কেন্দ্র, ২০১৬