গল্পের শেষ থেকে শুরু

জরিনা আখতার

অকস্মাৎ সমূলে উৎপাটিত হলো গাছটি নানারকম শব্দ করতে করতে
অনেকটা খেলার মাঠে বালকদের হইচই করার মতো,
তারপর উত্থাপিত হলো নানা প্রশ্ন –
গাছটি এইভাবে উপড়ে পড়লো কেন
কেউ কি শত্রুতা করে গোপনে গোড়ার মাটি কেটে গাছটিকে আলগা
করে দিয়েছিল
নয়তো মাটিরই আর ধারণক্ষমতা ছিল না গাছটিকে বহন করবার
অথবা ফিনিক্স মাখির মতো গাছটিরই অরুচি ধরে গিয়েছিল দীর্ঘ
জীবনের ওপর
আবার নতুন করে জীবন ফিরে পাবার জন্য এই আত্মাহুতি!
তারপর গাছটির বয়স নিয়ে সরব হলো কেউ কেউ –
কতো বছরের আয়ু নিয়ে জন্মেছিল গাছটি!
কেউ বললো ত্রিশ-চল্লিশ
কেউ পঞ্চাশ-ষাট
তারপর ক্রমেই বেড়ে চললো গাছটির বয়স নিলামের ডাকের মতো –
শেষ পর্যন্ত স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছানো গেল না গাছটির বয়সের হিসাবে।
এরপর গাছটির জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে চললো নানা গুঞ্জন
কার পিতা-পিতামহ বা তাদের পূর্বপুরুষের কেউ কবে কখন
কী রকম পরিবেশে গাছটির চারা রোপণ করেছিল,
তখন কোন ঋতু কোন মাসে যাপিত হচ্ছিল এই লোকালয়,
বৃষ্টি অথবা শুষ্ক আবহাওয়ায়, সকাল-বিকেল অথবা গোধূলির
মøান আলোয় চারাগাছটি নিজের জায়গা করে নিয়েছিল
এইখানে এই জ্যোৎস্নাবিধৌত গ্রামে,
নাকি কোনো আনমনা বাতাস অথবা পাখির ঠোঁট বয়ে এনেছিল
এই গাছটির জন্মের উপকরণ!
শুধু পুরুষের কথাইবা উঠছে কেন? – এই বলে প্রসঙ্গ পাল্টালো
কেউ কেউ,
সুডৌল দুহাতে লাল-সবুজের মিশেলে কাঁচের চুড়ি পরা কোনো
কিশোরী-তরুণী
নয়তো কোনো মাঝবয়সী গৃহবধূর অবিরাম ঘরকন্নার কাজে রত দুটি
অমসৃণ ভেজা হাত পরম মমতায় রোপণ করেছিল গাছের চারাটি!