তিনটি কবিতা

হুমায়ুন আজাদ

হাত
সেই কবে থেকে বাড়িয়ে রেখেছি হাত
প্রতিটি রেখায় ভ’রে আছে শূন্যতা
কেটেছে হাজার সূর্য এবং রাত
দুই হাত ভরে জমে আছে নীরবতা।
হাত ভরে আছে ঠান্ডা দীর্ঘশ্বাস
হাহাকার করে হৃদয়ে সবুজ ঘাস
বাতাসের স্বরে দিনরাত তাকে ডাকে
অশ্রুর মতো যে আছে অফেনবাকে।

ইচ্ছে করে
তোমাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে, ইচ্ছে করে
টফির মতোন চুষে খেতে, শিশিরের
মতো ছুঁতে, ইচ্ছে করে
একটি চুমোতে রক্তজবা ক’রে
ফোটাই আকাশে, ইচ্ছে করে
বুকের ভেতরে রেখে দিই
রক্তপদ্ম ক’রে।

সৌন্দর্য, সেখানেই যাবে তুমি
যেখানেই যাবে তুমি শিউরে উঠবে জনগণ।
মাছের দোকানে গেলে দেখবে জেলে
মাছ ভুলে দেখছে তোমাকে, আর আমরণ
নদীতে নদীতে জাল ফেলে তোমাকে ধরার স্বপ্নে
ভুলে যাবে জাল, মাছ, নৌকোর কথা। গাড়ি কিনতে যাবে তুমি,
দেখবে সারি সারি টয়োটা ফিয়াট মার্সিডিস
হেডলাইট জ্বেলে দেখছে তোমাকে; আর একশ পঁচিশ
কিলোমিটার বেগে দেখছে তোমার স্বপ্ন; সেই সব মানুষ
যারা আসে এবং আসবে তোমার কার্যালয়ে, তারা হঠাৎ অসুখ
বোধ করবে হৃৎপিণ্ডে, জেগে উঠবে তাদের সৌন্দর্যের ক্ষুধা,
যদিও মাংসাশী ওরা। সৌন্দর্য, তুমি যেখানেই যাবে,
পালে পালে নেড়িকুত্তা, হায়েনা, নেকড়ে, বুলডগ
সেখানেই পাবে।