পাপস্নান 

(১)

 

-অ মা…মা…

ডাকটা কানে যেতেই আদুরির পিঠে দুম করে কিল বসিয়ে দিল সুফিয়া। সাথে সাথে কান্নার তীব্রতা বেড়ে গেল মেয়েটার।

-মরোস না ক্যান হারামির বাচ্চা! কোন পাপে তরে আমি জনম দিছিলাম…

এবার সুফিয়া নিজেও হাপুস নয়নেকাঁদতে লাগল। গরীবের কপালে এত ভোগান্তি কেন জানে না সে।

 

সুফিয়া ছুটা কাজের বুয়া।ভোর হতে না হতেই ছুটতে হয় বস্তির পাশের ফ্ল্যাটবাড়িতে। তিনটা বাসায় কাজ করে ফিরে আসে এগারোটা নাগাদ। তারপর মেসবাড়িতে যেতে হয় রান্না করতে। আজ এসবের কোনটাই হবে না। গতকালও সে কাজে যায় নি ।

চারদিন আগে সকালে দুই কেজি কৈ মাছ কাটতে বসেছিল ম্যাডামের বাসায়। ঠিক তখুনি নুড়ির মা হন্তদন্ত হয়ে এসে তাকে ডেকে নিয়ে গেলো। যাবার সময় ওই ফ্ল্যাটের ম্যাডাম বলে দিলেন শিগগির ফিরে আসতে নইলে বেতন কাটা হবে। এত কথা কানে তোলার সময় ছিল না তখন সুফিয়ার। ভয়ংকর কোন বিপদ যে হয়েছে সেটা নুড়ির মায়ের চেহারা দেখে বেশ আঁচ করতে পেরেছিলো সে।

সেদিন রাতে প্রচন্ড ব্যথায় নীল হয়ে গেলে আদুরিকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। এমন একটা মারাত্মক ঘটনায় ভীষণ ঘাবড়ে গেছে সুফিয়া, ভয়ে বাড়িই ফেরে নি। এখন আর বেতন কাটার ভয় নেই তার। কাজ থেকেই ওকে ছাটাই করে দেবে মনে হয়।

আজ সকালে ডাক্তার এসে আরো কিছু ওষুধ লিখে দিলেন। নার্স ব্যাথার ইনজেকশন পুশ করল। পাশের বিছানার মহিলাটা থুথু ফেলেছে সদ্য ঝাড়ু দেয়া ফ্লোরে। এই নিয়ে গন্ডগোল লেগে গেল ওয়ার্ডের আয়ার সাথে। সুফিয়ার ইচ্ছে করছে সব কিছু ভেঙ্গেচুরে দিতে। একটু পর নুড়ির মা এলো। সে আজকে সকাল সকাল এসেছে ওদের দেখতে। এসেই জানতে চায় পুলিশ এসেছিলো কিনা। সুফিয়া অস্ফুটে মাথা নাড়ে। কেউ আসে নি শুনে নুড়ির মা রাগে গজগজ করে খানিকক্ষণ। সুফিয়ার কান্না দেখে তিতিবিরক্ত হয়ে পড়ে সে।

 

-আহ আর কাইন্দো না তো! কান্দনের সময় না অহন। পুলিশ আইলে সব কইবা কইলাম। ডরাইও না,আর কিসের ডর কও?

 

সুফিয়ার মাথা কাজ করছে না। আতঙ্ক আর বিষাদে দিশেহারা লাগছে তার।

 

-জানের ডর গো বইন। বাইচ্চাটারেও ছাড়ল না ..কোন শত্তুর এই কামডা করলো…অহন কেইস করছি জানলে মাইরা ফেলাইবো।

পেটের ব্যাথায় কাতরাচ্ছে নয় বছরের আদুরি। ওর ব্লিডিং থামে নি।

-মন শক্ত করো বইন। মাইয়ার তো মাসিক শুরু অয় নাই, চিন্তা কইরো না। ব্যথা সারলেই ছুডি দিব,আমগো বাড়িত নিমু তোমারে। নুড়ির বাপরে আইতে কমুনি আমার লগে।

 

সুফিয়া কথাগুলো শুনে যেন একটু আশ্বাস পেল। তবু এত বড় দুর্যোগ কীকরে সামলাবে জানে না সে। সুফিয়া নুড়ির মাকে বললো কাল সকালে সে যেন মেসে গিয়ে ওর হয়ে রান্নাটা করে দিয়ে আসে। তার এই রান্নার চাকরিটা হারালে মহাবিপদ হয়ে যাবে। বেতন কাটলেও চাকরিটা থাকুক। মেয়ের চিকিৎসার খরচ আছে। চোখে রীতিমতো অন্ধকার দেখছে সে।

একটা যোনির লোভ সামলাতে পারে না পুরুষগুলো। ভাবতেই গা গুলিয়ে বমি পায় সুফিয়ার। তার নয় বছরের বাচ্চা মেয়েটাকেও ছাড় দেয়া গেলো না!

আর পাঁচ দশটা দিনের মতোই চারদিন আগে খুব ভোরে কাজে বেড়িয়ে পড়েছিল সুফিয়া। বস্তির অনেকেই দুয়ার খুলে বেরোয় নি তখনো। ঠিক সেই সময়টায় ঘুমন্ত আদুরির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নরপশুর দল। সুফিয়া খবর পেয়ে ছুটে এসেছিল। তখনই হাসপাতালে নেবার সাহস হয় নি ওর। যেন ব্যাপারটা গোপন করতে পারলেই বেঁচে যেত সে! সারাদিন কেটে গেলেও রাতে ব্যথা আর ব্লিডিং সামলানো গেলো না, আদুরি কেমন নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল। তখুনিই ছুটে গিয়ে নুড়ির মাকে ডেকে আনে সুফিয়া। তারপর সে-ই হাসপাতালে দিয়ে গেছে ওদের।

 

গত কয়েকটা দিনের প্রতিটা মুহূর্ত ঘুরেফিরে চোখের সামনে ভাসছে। সুফিয়া ভেবে ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেলে সারাদিন। এর মধ্যেও ওর ঝিমুনি পায় ক্লান্তিতে।দুপুর একটা নাগাদ ট্রলি করে খাবার নিয়ে এলো ওয়ার্ড বয়। নুড়ির মা কনুই দিয়ে ধাক্কা দেয় ওকে। সুফিয়া লজ্জিত ভঙ্গিতে ধড়মড় করে উঠে দাঁড়ায়, থালা নিয়ে খাবার নিতে ছুটে যায়। কে কার আগে নেবে এই নিয়ে হুলস্থূল চললো কিছুক্ষণ। সুফিয়ার গলা দিয়ে ভাত নামে না। সে নুড়ির মাকে সাধে, খাবার নষ্ট করতে ইচ্ছে হয় না ওর। এই এক ভাতের জন্যই তো রক্ত পানি করা সংগ্রাম করে চলেছে দিনরাত!

পরের দিন নুড়ির মা যখন এলো তখন বেলা পড়ে গেছে। সুফিয়া দুশ্চিন্তায় ছটফট করেছে সারাদিন। তার উপর সকালে পুলিশ এসেছিল। ওদের জেরার মুখে সুফিয়া বোবার মত তাকিয়ে ছিল শুধু, কোন প্রশ্নের জবাব দেয়নি। ভয় আর আতঙ্কে জড়োসড়ো হয়ে বসে ছিল পুরোটা সময়। বিকেলে নুড়ির মাকে দেখে মনে মনে স্বস্তি ফিরে পেলেও ওর দিকে তেড়ে গেলো সুফিয়া।

– এত দেরি করলি ক্যান আজকা? না আইলেই তো পারতি।

-বস্তির ঘর ছাড়তে কইতেসে তোরে…

সুফিয়া হা করে তাকিয়ে আছে।

-বেয়ানবেলা পুলিশ খুঁজতে গেছিলো তোগোরে, তারপর থেইকা মালিকে ঘর ছাড়তে কইতেসে।

 

কাল রাতে আদুরি যখন কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছিল,দুটো ছেলে ওর বেডের পাশে ঘুরঘুর করেছে। সুফিয়ার ছেলেগুলিকে একদম সুবিধের মনে হয় নি, সে খুব দ্রুত অন্যদিকে সরে পড়েছিল। কেন এসেছিল ওরা? ডিউটিরত নার্স জেরা করতেই ব্যস্ত ভঙ্গিতে চলে যায় ছেলে দুটো। এখন নুড়ির মায়ের মুখে সব শুনে সুফিয়ার মাথাটা গুলিয়ে যাচ্ছে।ভয়ে ঘেমে নেয়ে যাচ্ছে সুফিয়া। এরকম উত্তেজনার মধ্যেও সুফিয়া বুঝতে পারছে বস্তিতে ফিরে যাওয়া এখন মোটেই নিরাপদ নয়।

 

শুরুতে খুব সাহস দিলেও নুড়ির মা এখন বলছে ওদের গ্রামে চলে যেতে। অন্য কোথাও একটা থাকার জায়গার খোঁজ করবে সে, খোঁজ পেলে সুফিয়া ফিরে আসতে পারবে। এছাড়া আর কী করা যেতে পারে! গরীব বাঁচে ধুঁকে ধঁকে, মরণটাও যেন এদের অচ্ছুৎ মনে করে! নুড়ির মা আক্ষেপ করে ওর পিঠে হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেয়।

 

এর তিনদিন পর আদুরিকে ছুটি দিল ডাক্তার। ওকে নুড়িদের ঘরে রেখে রাতের বেলা চুপিচুপি সুফিয়া বস্তির ঘরে গেল, নিজের জমানো টাকাটা সরিয়ে আনতে। গুটিয়ে রাখা তোশকটা নামিয়ে রেখে টিনের তোরঙ্গটা সামনে টেনে আনল। চুলার উপরের তাক থেকে চাবিটা খুঁজে বার করল। তালাটা খুলছে না কিছুতেই। কয়েকবার চেষ্টার পরও যখন খুলল না তখন খুব মরিয়া হয়ে গেল সুফিয়া। শিল নোড়া নিয়ে এলো হাতের কাছে কিছু না পেয়ে। তিনবারের সময় ভেঙ্গে গেল পুরনো মরচে ধরা তালাটা। তোরঙ্গ থেকে প্লাস্টিকের বয়ামটা বার করল। তার মধ্যেই টাকাটা রয়েছে। হাতে নিয়ে গুনতে লাগল সে। এ টাকায় এত দ্রুত হাত দিতে হবে সে ভাবে নি।

 

 

(২)

 

নেশাখোর জলিলের সাথে একবছর সংসার করার পর সুফিয়া বুঝতে পেরেছিল নিজের সঞ্চয় না থাকলে হঠাৎ বিপদ হলে অকূল পাথারে পড়তে হবে ওর। জলিল এর আগে ট্রাক চালাতো। ওর আয়ে ভালোই চলছিল সংসার।

শুরুর দিকে খুব আদর সোহাগ করতো জলিল। এমনকি বাসাবাড়িতে কাজ করতেও দিতো না। তারপর কী হলো কে জানে! একদিন রাতে এসে চোরের মতো লুকিয়ে ঘরে ঢুকলো। কদিন বেরুলোই না। দুদিন পর পুলিশ খুঁজতে এলো ওকে। পুলিশের মুখেই সুফিয়া জানতে পেলো রাস্তায় কাকে যেন চাপা দিয়ে এসেছে জলিল। কিন্তু সেদিন ওর নাগাল পাওয়া গেলো না, পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গেলো সে।

সুফিয়া বুঝতে পারলো ঘরে বসে থাকলে চলবে না তার। বাসাবাড়িতে কাজ শুরু করলো সে। আদুরি তখন পেটে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে অল্প অল্প করে টাকা জমাতে লাগলো সুফিয়া।

মাসখানেক পর জলিল ফিরে এলো। কিন্তু কেমন বদলে গেলো লোকটা! কথায় কথায় গায়ে হাত তোলে আর টাকার জন্য চেঁচামেচি করে। সুফিয়া লুকিয়ে রাখতে শুরু করলো ওর রক্ত পানি করা উপার্জন। মাঝেমাঝে জলিল কী করে যেন টের পেয়ে যেতো। লুকিয়ে ফেলার আগেই বেদম মার মেরে ছিনিয়ে নিয়ে যেতো সব।

আদুরির জন্মের পর জলিল একটু সদয় হলো। মেয়ের জন্য মনটা নরম হলো ওর। তবু হুটহাট আফসোস ঝরে পড়তো, আদুরিকে কোলে নিয়ে বলতো – পোলা হইলে তোর মায়ের কষ্ট কমতো রে বেটি! এসব কথায় সুফিয়া বেশির ভাগ সময় নীরব থাকতো। কখনো কখনো অতিষ্ঠ হয়ে মুখ ঝামটে উত্তর দিতো- ‘মায়ে নিজেরে পালতে জানে, পোলার ঠ্যাকা নাই।’ সেদিন আবার দুয়েকটা কিল চড় কপালে জুটে যেতো ওর। এতকিছুর পরেও এই জলিলের সাথেই সংসার করছিল সুফিয়া।

 

আদুরির বয়স যখন দুই তখন সুফিয়া আরেকবার পোয়াতি হল। জলিল ততদিনে পুরোপুরি উচ্ছন্নে গেছে। নেশায় চূড় হয়ে থাকে সারাদিন। একরাতে খুপড়িতে ফিরে সুফিয়াকে আচ্ছামতো পেটালো। মার খেতে খেতে কাঁদতে ভুলে গিয়েছিলো সুফিয়া। ব্যথার চেয়েও বিস্ময় কাজ করছিল মনে মনে। এই পোয়াতি অবস্থাতেও ছাড় দিলো না তাকে? কী অপরাধ ওর?

সেদিনের পর ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে কোন চুলোয় যে চলে গেল জলিল, সুফিয়া খোঁজও নেয় নি আর। বাচ্চাটাও বাঁচে নি। এর কিছুদিন পর ওর দ্বিতীয় বিয়ের খবরটা শুনতে পেয়েছে সুফিয়া। সেখানেও দুবেলা মারধর করে বউকে। সেই মেয়েটা গার্মেন্টস এ কাজ করে। তার টাকায় নেশা করছে জলিল আজকাল। এমন লোকের কাছে বিয়ে মানে টাকাপয়সার নতুন একটা উৎস ছাড়া আর কিছু নয়।

 

পুরনো দিনের কথা মনে করতে চায় না সুফিয়া। তবু দিনশেষে ঘামে ভেজা শরীরটাকে যখন বস্তির ঘরের মেঝেতে এলিয়ে দেয় তখন কোত্থেকে এইসব দিন ফিরে এসে গিলে খেতে চায় পুরো রাতটাকে! আজ বড় অন্ধকার রাত, বিপদের রাত। এসব স্মৃতিচারণের বিলাসিতা মানায় না এ মুহূর্তে। সুফিয়া আঁচলে টাকাগুলো ভালো করে গুঁজে নেয়।

 

ঠিক তখনই খুপরির পেছনের দিকটায় খুট করে একটা শব্দ হল যেন। সুফিয়া কান খাড়া করে। সতর্ক হয়ে নোড়াটা হাতে নেয় সে। উত্তেজনায় বুকটা ঢিপঢিপ করছে ওর। দ্রুত ব্লাউজের ভেতর মুঠো করে টাকাটা ঢুকিয়ে ফেলল সে। দরজা খুলে বেড়িয়ে যেতে উঠে দাঁড়াতেই কড়া নাড়ল কেউ। সুফিয়া হাতের মধ্যে নোড়াটাকে শক্ত করে ধরল। কয়েক মিনিট পর দরজাটা খুলে দিল। ঘুঁটঘুঁটে আঁধার ঘাঁপটি মেরে আছে চারপাশে। একটু গলা বাড়াতেই চেনা মুখটা দেখতে পেয়ে ভূত দেখার মত চমকে উঠল সুফিয়া। বিশ্রী একটা হাসি খেলা করছে লোকটার চোখেমুখে।

-কইত্তে আইলা এদ্দিন বাদে? কী চাও? সুফিয়া খেঁকিয়ে উঠল।

-ঘটনা হুনছি আমি। না আইয়া পারি? পরিবার বইলা কথা…কই, মাইয়াডা কই?

ঘরের ভেতর উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে জলিল। সুফিয়া বিস্ময়টাকে চাপা দিয়ে নির্বিকার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে নিরুত্তর হয়ে।কুতকুতে দৃষ্টি দিয়ে ওকে আপাদমস্তক দেখছে জলিল। সুফিয়ার গা ঘিনঘিন করছে।

 

-আমারে দিয়া দে, ওরে ধান্ধায় লাগায়ে দিমু। তুই ঠ্যাং এর উপরে ঠ্যাং তুইল্যা খাবি।আর কত খাটবি, ক? ইশ্‌ কি চেহারা হইসে তোর!

মুখ দিয়ে চুকচুক করে শব্দ করছে জলিল।সুফিয়ার চোখ দুটো জ্বলছে। রাগে কাঁপছে সে। ওকে দেখে একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেল জলিল।

-ওরে আর অন্য কামে নিত না কেউ। এইটাই ঠিক হইব, একবার ইজ্জত গেছে, আর চিন্তা কইরা কি হইব? টাকার বিছানায় ঘুমাইবি তুই..

 

হড়বড় করে কথাগুলো বলছে জলিল। ওকে একটা ধূর্ত শেয়াল ছাড়া আর কিছু মনে হচ্ছে না। কথা বলতে বলতে হঠাৎ করে জলিল মাথা নিচু করেখুকখুক কাশতে লাগলো। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কাশির দমক আরো বেড়ে গেল ওর। কাশতে কাশতে বুকে হাত দিয়ে বসে পড়েছে লোকটা। সুফিয়া তবু নির্বিকারে দাঁড়িয়ে থাকে। ওর কানের কাছে অশরীরি কেউ অবিরাম বলে যায়- “তোর শত্তুর ফিইরা আইছে রে সুফিয়া… তোর শত্তুর ফিরছে…”

 

বহুদিনের পুরনো ইচ্ছেটা তীব্রতর হতে থাকে। সুফিয়া হাতের মুঠোটাকে শক্ত করে আরেকটু। আদুরিকে জন্ম দেয়াটা পাপ হলে আজ আরেকটা পাপ করতে একটুও হাত কাঁপবে না ওর।

একটু পর রক্তাক্ত জলিল ঘরের চৌকাঠে মুখ থুবড়ে পড়ে গেলে সুফিয়া উদভ্রান্তের মতো ছুটে চলল মেয়ের কাছে। আকাশে তখন একটাও তারা নেই, শুধু একটা অপাপবিদ্ধ চাঁদ স্থির হয়ে চেয়ে থাকে। তার আলোয় স্নাত হয় সুফিয়া ও বাকি চরাচর।