প্রসাধন
১৯৪৩ সালে অঙ্কিত দুর্ভিক্ষের চিত্রমালার মধ্য দিয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন আলোচিত ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়ে উঠেছিলেন। এইসব চিত্রে তাঁর রেখার দীপ্তি, শক্তি ও সৃজনকুশলতা নবীন মাত্রা অর্জন করেছিল। শহরের রাস্তায় অন্নের খোঁজে কঙ্কালসার মানুষের মিছিল, অনাহারী মানুষের আর্তনাদ, তাদের হাহাকার, মৃত্যুর ভয়াবহতা রেখানির্ভর কাজে চিত্রিত হয়েছিল।
দেশবিভাগের পর তিনি চলে আসেন ঢাকায় এবং একটি চিত্রবিদ্যার শিক্ষায়তন গড়ে তোলেন। এ-শিল্পালয়টি এদেশের আধুনিক চিত্রবিদ্যাচর্চার প্রধান ক্ষেত্র হয়ে ওঠে।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ১৯৫১-৫২ সালে ইউরোপ ভ্রমণ করেন। সে-সময়ে আধুনিক ইউরোপীয় চিত্রকলার সঙ্গে তাঁর যে-ঘনিষ্ঠ পরিচয় ঘটে, তাতে তাঁর শিল্পরীতি নতুন বাঁক নিয়েছিল। দেশে ফেরার পর কয়েক বছর ধরে তিনি জলরং, তেলরং বা গুয়াশে যেসব ছবি এঁকেছিলেন, তাতে দেশীয় ও বিদেশীয় রীতির আশ্চর্য সমন্বয় দেখা যায়। বিষয়ের দিক দিয়ে এসব ছবিতে প্রতিফলিত হয় পূর্ব বাংলার গ্রামীণ নরনারী ও প্রকৃতি, কিন্তু তাদের উপস্থাপনে তিনি আর পুরোপুরি বস্তুধর্মী থাকেননি। ওইসব মানুষ তাঁর চিত্রে ধরা দিয়েছে পাশ্চাত্য ধরনে রীতিবদ্ধ হয়ে।
তিনি ১৯৬৬ সালে অ্যাক্রিলিকে এই ছবিটি আঁকেন।
ছবিটির সংগ্রাহক : জাহানারা আবেদিন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.