প্রথম বাঙালি নারী-চিকিৎসক কাদম্বিনী গাঙ্গুলী

প্রথম বাঙালি নারী-চিকিৎসক ডা. কাদম্বিনী বসুর (বিয়ের পর কাদম্বিনী গাঙ্গুলী) পৈতৃক নিবাস বরিশালের গৌরনদীর চাঁদশীতে। তাঁর জন্ম ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে, মৃত্যু ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে, জীবনকাল ৬২ বছর। পিতার নাম ব্রজকিশোর বসু। তিনি ছিলেন
ব্রাহ্ম-ধর্মাবলম্বী। কাদম্বিনী বসুর মাতার নাম জানা যায়নি। ডা. কাদম্বিনীর স্বামী দ্বারকানাথ গাঙ্গুলীর জন্মস্থান মাগুরখণ্ড, বিক্রমপুর/ মুন্সীগঞ্জ। তিনিও ব্রাহ্ম-ধর্মাবলম্বী ছিলেন। কাদম্বিনী বসুর জন্মস্থান বরিশালের গৌরনদীর চাঁদশী, মতান্তরে বিহারের ভাগলপুর, তবে পৈতৃক নিবাস (চাঁদশী, গৌরনদী, বাংলাদেশ) নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। কাদম্বিনী গাঙ্গুলী ৩রা অক্টোবর ১৯২৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। চলতি বছর (২০২৩) তাঁর মৃত্যুশতবার্ষিকী। শতাব্দীর সীমানা পেরিয়ে তিনি আজো আলোর দ্যুতি ফেলে, জ্ঞান ও সাধনার প্রদীপ জ্বালিয়ে আমাদের আপ্লুত করেন।

প্রথম বাঙালি নারী-চিকিৎসক কাদম্বিনী গাঙ্গুলী। এই কৃতিত্ব একমাত্র কথা নয়। রেকর্ডের স্বর্ণকন্যার ধ্রুপদী উপস্থাপনায় সৃষ্টি হয়েছে একে একে ইতিহাসের মাইলফলক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এন্ট্রান্স পাশ করা প্রথম ছাত্রী কাদম্বিনী বসু (১৮৭৮), এফ. এ পাশ করা প্রথম দুজন ছাত্রীর মধ্যে তিনি একজন (১৮৮০)। সমগ্র ভারতবর্ষে তথা ব্রিটিশ ভারতে তিনি ও চন্দ্রমুখী বসু প্রথম নারী গ্র্যাজুয়েট (১৮৮২), কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়া প্রথম ও একমাত্র ছাত্রী (১৮৮৩) এবং পাশ করা প্রথম নারী-চিকিৎসক, বিলাত থেকে চিকিৎসাবিদ্যায় ট্রিপল ডিগ্রি আনা প্রথম বাঙালি নারী-চিকিৎসক (১৮৯৩)। তিনি পরবর্তী প্রজন্মের বঙ্গনারীদের জন্য খুলে দিয়েছিলেন বদ্ধ দুয়ার, ভেঙে ফেলেছেন অচলায়তন। কাদম্বিনী গাঙ্গুলী ছিলেন সময়ের অগ্রগামী (ঞরসব ধফাধহপবফ) নারী। নিঃসন্দেহে বলা যায়, কাদম্বিনী গাঙ্গুলীর তুলনা কাদম্বিনী গাঙ্গুলী নিজেই।

মহীয়সী বঙ্গনারী কাদম্বিনী গাঙ্গুলীর মৃত্যুশতবার্ষিকী (২০২৩-১৯২৩) উপলক্ষে বাংলাদেশ ডাকবিভাগ দশ টাকা মূল্যমানের একটি আকর্ষণীয় স্মারক ডাকটিকিট, দশ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম ও পাঁচ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটাকার্ড এবং একটি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করেছে (৩-১০-২০২৩)। এই স্মারক ডাকটিকিটের নকশাবিদ সুমন্ত কুমার।

১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে যখন কাদম্বিনী বসু ভাগলপুর থেকে এসে কলকাতার হিন্দু কলেজে ভর্তি হন তখন তাঁর বয়স ছিল ১৩ বা ১৪ বছর। ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে হিন্দু কলেজের অবলুপ্তির পর নবগঠিত বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয়ে প্রথম দিন (১লা জুন ১৮৭৬) থেকেই তিনি ছাত্রী। ১৮৭৭ সালে ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী কাদম্বিনী বসু ২৫০ নম্বরের মধ্যে ১৫১ নম্বর পেয়ে প্রথম হন। তখন থেকেই তাঁর প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়। বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয় বেথুন স্কুলের সঙ্গে একীভূত হয়ে গেলে কাদম্বিনী বসুও হয়ে যান সেই স্কুলের ছাত্রী (১৮৭৮ খ্রি.)।

উল্লেখ্য, হিন্দু ফিমেল স্কুল-পরবর্তী সময়ে বেথুন স্কুল নামে পরিচিতি লাভ করে। হিন্দু ফিমেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন [John Elliot Drinkwater Bethune (1801-1851], রামগোপাল ঘোষ, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, মদনমোহন তর্কালঙ্কার প্রমুখ। এই স্কুল প্রতিষ্ঠা ছিল কলকাতা তথা বাংলায় নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক মাইলফলক, যার ফলে নারীশিক্ষা আন্দোলন বিশেষ গতি লাভ করে। বেথুন সাহেব পরলোকগমন করেন ১২ই আগস্ট ১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দে। তিনি ভারতবর্ষে এসেছিলেন ১৮৪৮ সালে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি স্কুলের উন্নতির জন্য আন্তরিক চেষ্টা করে গেছেন এবং মৃত্যুর আগে তাঁর যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এই স্কুলকে দান করে যান। পরে হিন্দু ফিমেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বেথুন স্কুল।

বেথুন স্কুলের লক্ষ্য ছিল, মেয়েদের এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানো। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নেই। এন্ট্রান্স পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত হলেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ তখনো মেয়েদের হয়নি। বর্তমান সময়ের আলোকে এটি চিন্তারও বাইরে, অথচ কাদম্বিনী বসুদের ক্ষেত্রে তাই হয়েছিল। কিন্তু কাদম্বিনী বসু থেমে থাকতে আসেননি, তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করতে এসেছিলেন। তাঁকেই মেয়েদের উচ্চশিক্ষার বন্ধ দরজাটা খোলার দায়িত্ব নিতে হলো। অবশেষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের ১৭ই মার্চ (১৮৭৭) তারিখে অনুষ্ঠিত সিনেট সভায় মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়।

এদিকে রক্ষণশীল সমাজপতিরা বসে থাকেননি। সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা লিখল (২২. ১১. ১৮৭৭ খ্রি.) : ‘গত বর্ষ হইতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় রমণীরা লব্ধাবকাশ হইয়াছেন। … আমরা স্ত্রীশিক্ষার বিরোধী নহি। কিন্তু তাহাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি লইয়া যে কি ফল হইবে, বলিতে পারি না। বাঙালী মেয়েরা কি বি. এল. পরীক্ষা দিয়া আদালতে ওকালতি করিবেন? আমরা দেখিতেছি ইংরাজি সভ্যতা প্রবেশ করাতে এদেশের সর্ব্বনাশ হইল।’ কিন্তু শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এন্ট্রান্স পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হলেন কাদম্বিনী বসু ও দুর্গামোহন দাসের কন্যা সরলা দাস। এদিকে ডাক্তার প্রসন্ন  কুমার রায়ের সঙ্গে সরলা দাসের বিয়ে হয়ে গেল, সরলা দাস হয়ে গেলেন সরলা রায়, তাঁর আর বসা হলো না বহুকাক্সিক্ষত এন্ট্রান্স পরীক্ষায়। সময়টা সরলার পক্ষে গেল না আর অন্যদিকে কাদম্বিনী বসু হয়ে গেলেন একা। কিন্তু যিনি লড়াইয়ের ময়দানে অগ্রগামী প্রধান সৈনিক, তিনি তো থেমে থাকতে পারেন না। সময়ের লড়াকু কন্যা কাদম্বিনী বসু একাই বহু লড়াইয়ে পাওয়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসলেন। যেন ভিনি ভিডি ভিসি (veni, vidi, vici-I came, I saw, I conquered) – গেলেন, দেখলেন ও জয় করলেন। কাদম্বিনী বসু পরীক্ষায় পাশ করে রেকর্ডের খাতায় নাম লেখালেন। মাত্র এক নম্বরের জন্য প্রথম বিভাগ পাননি, তিনিই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত এন্ট্রান্স পরীক্ষায় (১৮৭৮ খ্রি.) উত্তীর্ণ প্রথম বাঙালি নারী। ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ৮ই ফেব্রুয়ারির সংবাদ প্রভাকর লিখল : ‘শ্রীমতী কাদম্বিনী বসু বর্তমান বর্ষের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হইয়া বঙ্গীয় রমণীকুলের মুখোজ্জ্বল করিয়াছেন, পাঠকগণ যথাকালে এ সংবাদ জ্ঞাত হইয়াছেন। … আমরা জিজ্ঞাসা করি যে শ্রীমতী কাদম্বিনী এক্ষণে কোন বিদ্যালয়ে পড়িবেন? যুবকদিগের সহিত কোন কলেজে পাঠ করা সম্পূর্ণ অসম্ভব এবং অন্য বিদ্যালয়ই বা কোথায়?’

ঠিকই, কাদম্বিনী বসু তো এন্ট্রান্স পাশ করলেন। তিনি এফ.এ. পরীক্ষায় বসতে চান। কিন্তু কলেজ কোথায়? ছেলেদের জন্য অনেক কলেজ আছে, মেয়েদের জন্য একটিও নেই। কো-এডুকেশনের কথা সে-সময় কেউ কল্পনায়ও আনেননি। অবশেষে বেথুন স্কুলের এক অংশে ভারতের প্রথম মহিলা কলেজের যাত্রা শুরু হলো। নাম বেথুন কলেজ। সেই কলেজের ছাত্রী মাত্র একজন। নাম কাদম্বিনী বসু। স্কুলভবনের একটি কক্ষে থাকতে শুরু করলেন কাদম্বিনী বসু। ১৬ই জুন ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এফএ বা ফার্স্ট আর্টস পড়া শুরু হলো তাঁর। এই বেথুন কলেজই বাংলা তথা এশিয়ার প্রথম মহিলা কলেজ। কাদম্বিনী বসুর সাফল্যে বেথুন স্কুল কলেজে রূপান্তরিত হওয়ায় চারদিকে সাড়া পড়ে গেল। একজন ছাত্রী একজন অধ্যাপক মিলে একটি কলেজের যাত্রা, তা তো অভাবনীয় ও বিরলদৃষ্ট। বামাবোধিনী পত্রিকায় খবর হলো (ফাল্গুন ১২৮৬ বঙ্গাব্দ) : ‘… কুমারী কাদম্বিনী ফার্স্ট আর্টস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হইবার অভিপ্রায় প্রকাশ করাতে লেপ্টেনান্ট গবর্ণর বেথুন স্কুলে কলেজ শ্রেণী খুলিবার ব্যবস্থা করিয়া কটক কলেজের সুযোগ্য অধ্যাপক বাবু শশীভূষণ দত্ত, এম. এ কে এখানে আনয়ন করিয়াছেন …।’ পরবর্তী সময়ে এই কলেজে যোগদান করলেন একজন শিক্ষিত ইউরোপিয়ান শিক্ষয়িত্রী এফ এ লিপ্স কোম। তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হলো সুপার বা তত্ত্বাবধায়কের। কাদম্বিনী বসু একাই তৈরি হলেন এফ এ পরীক্ষার জন্য। ১৮৮০ সালে বেথুন কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে কাদম্বিনী বসু এফ এ পাশ করলেন, পেলেন তৃতীয় বিভাগ।

এদিকে আর একটি অনন্য নজির স্থাপন করলেন চন্দ্রমুখী বসু। তিনি প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে এন্ট্রান্স পাশ করে এফ এ পরীক্ষার আবেদন করলে আবেদন মঞ্জুর হয়। কিন্তু বেথুন স্কুল বা কলেজে অহিন্দুদের পড়ার সুযোগ ছিল না। শেষ পর্যন্ত খ্রিষ্ট ধর্মের অনুসারী চন্দ্রমুখী বসু অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে (দেরাদুনের Free Church Mission School) এফ এ পরীক্ষা দিলেন, উত্তীর্ণও হলেন, পেলেন দ্বিতীয় বিভাগ। অর্থাৎ এফ এ পাশ প্রথম নারী যুগ্মভাবে কাদম্বিনী বসু ও চন্দ্রমুখী বসু।

বেথুন স্কুল ও কলেজ সকল ঐতিহ্য ভেঙে অন্য ধর্মের মেয়েদের ভর্তির দুয়ার খুলে দিলো, যার কৃতিত্ব কাদম্বিনী বসু ও চন্দ্রমুখী বসুর। সময়ের থেকে এগিয়ে থেকে দুই কালজয়ী নারী এভারেস্ট জয়ের মতো সংগ্রামে নেমে পড়লেন। বেথুন কলেজেই দুজন হলেন বিএ ক্লাসের ছাত্রী। ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দ থেকেই বেথুন কলেজে বিএ পড়া শুরু হয়। আর একটি রেকর্ড সৃষ্টির দ্বারপ্রান্তে তাঁরা পৌঁছে গেলেন অদম্য অধ্যবসায়ে। তখন পর্যন্ত সমগ্র ভারতবর্ষে, এমনকি সারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে, কোনো নারী গ্র্যাজুয়েট হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারেননি। কাদম্বিনী বসুদের মেধা ও দৃঢ়তায় ভর করে বেথুন স্কুল বেথুন কলেজের চ্যালেঞ্জে এগিয়ে গেল। সময়টা ছিল প্রতিকূল, ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ, অক্সফোর্ডের মতো নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুয়ার তখনো উন্মুক্ত হয়নি নারীদের জন্য। সে-সময় অর্থাৎ ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে কাদম্বিনী বসু ও চন্দ্রমুখী বসু বিএ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেন এবং কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণও হলেন। সৃষ্টি হলো ইতিহাস, নারীশিক্ষার অনন্য নজির। দুই সাহসী বাঙালি কন্যা রেকর্ড গড়লেন, কাদম্বিনী বসু ও চন্দ্রমুখী বসু হলেন শুধু ভারতবর্ষ নয়, সমগ্র ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট। ড. কৃষ্ণা রায় এর চমৎকার মূল্যায়ন করেছেন : ‘যে বাঙালি কন্যা পিতৃগৃহের সব কিছু দোহন করে শ্বশুরবাড়ি চলে যায়, কাদম্বিনী চন্দ্রমুখীরা সে ধরনের কন্যা তো ছিলেন না। দৃপ্ত পা ফেলে তাঁরা নারীর জন্য অবরুদ্ধ উচ্চশিক্ষার দরজাটি খুলে ফেলেছেন। … শিক্ষায় সম অধিকারের প্রাপ্তিই পরবর্তী পর্বে কাদম্বিনীকে বৃত্তিমূলক শিক্ষার দাবিতে মুখর করে তুলল।’ (কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়, ২০২০, পৃ ২৯)।

কাদম্বিনী-চন্দ্রমুখীদের সাফল্য আসমুদ্রহিমাচলকে নাড়িয়ে দিলো। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এত লোক হয় যে, ভিড় সামলাতে পুলিশকে অনেক বেগ পেতে হয়। হলভর্তি লোক, তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে রাস্তায় ট্রামলাইন পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য। উপাচার্য এইচ.জি. রেনল্ড স্বয়ং কাদম্বিনী বসু ও চন্দ্রমুখী বসুর হাতে বিএ ডিগ্রির সার্টিফিকেট অর্পণ করেন। ১০ই মার্চ ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে সিনেট হাউসে অনুষ্ঠিত এই সমাবর্তনে উপাচার্য বলেন, ‘‘The most memorable event, however, of the year, the event which will make the convocation of to-day a landmark in the educational history of India, is that of which I have now to speak …it is a subject of peculiar satisfaction that I am privileged to preside to-day at the admission of these ladies to the degrees they have honorably won. I congratulate them on their success. I congratulate the University on their incorporation among its graduates more than all, I congratulate the women of India, of whom they are the representative and pioneers…’

বামাবোধিনী পত্রিকার ভাষ্য (এপ্রিল ১৮৮৩ খ্রি.) : ‘ভারতেতিহাসের সর্বপ্রথম মহানন্দকর এই ঘটনাটি স্বর্ণাক্ষরে খোদিত হউক – গত ১০ মার্চ কলিকাতা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাধিদান মহাসভায় কুমারী কাদম্বিনী বসু ও কুমারী চন্দ্রমুখী বসু বি. এ উপাধি দ্বারা ভূষিত হইয়াছেন।’ আর সমাজপতিরা যাঁরা বিরুদ্ধাচরণ করেছিলেন নারীদের উচ্চশিক্ষার, তাঁরা এবার পিছিয়ে গেলেন। একটি নমুনাই উদাহরণ হিসেবে যথেষ্ট। তৎকালীন বিশিষ্ট কবি হেমচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় খুবই ব্যঙ্গাত্মকভাবে ‘বাঙালীর মেয়ে’ শিরোনামে কাদম্বিনীদের  কলেজে পড়া নিয়ে লিখেছিলেন :

ঐ যায় ঐ যায় বাঙালীর মেয়ে

          খেয়ে যায়, নিয়ে যায় আর যায় চেয়ে।

অথচ এই দুই বঙ্গরমণী যখন হয়ে উঠলেন সমগ্র ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রথম স্নাতক, তখন এই কবিরই কলম ঘুরে গেল, এবারে কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় লিখলেন পাঁচ স্তবকের দীর্ঘ কবিতা। শিরোনাম ছিল ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে (বঙ্গরমণীর উপাধিপ্রাপ্তি উপলক্ষ্যে)’। বসুমতি পত্রিকায় তা মুদ্রিত হয়। কবিতাটির একটি স্তবক নিম্নরূপ :

হরিণ-নয়না শুন কাদম্বিনী বালা,

শুন ওগো চন্দ্রমুখী কৌমুদীর মালা,

তোমাদের অগ্রপাঠী আমি একজন,

অই বেশ ও উপাধি করেছি ধারণ।

কাদম্বিনী বসুর চলার পথ থেমে যায়নি। ২৩শে জুন ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। এই তারিখটা শুধু একটি তারিখ নয়, সময়ের বাঁকবদলের দিনও। কেমন ছিল সেই সময়? সেই সময়ের নারীদের কাছে সমাজের প্রত্যাশা ১৩০১ বঙ্গাব্দের সৎসঙ্গ-র নির্দেশনায় পাওয়া যায় : ‘স্ত্রী শুদ্ধ হইয়া প্রাতঃকালে গাত্রোত্থান করিয়া স্বামীকে প্রণাম করিবেন, পরে গোময় বা জল দ্বারা প্রাঙ্গণে মণ্ডল দিবেন। এই গৃহকার্য শেষ করিয়া গৃহদেবতার পূজা করিবেন। তদনন্তর সমুদয় গৃহকার্য (রন্ধনাদি) শেষ করিয়া পতিকে ভোজন করাইবেন, পরে অতিথির সেবা করিয়া চারিটি আহার করিবেন।’ এই হলো তৎকালীন সমাজচিত্র। অন্যদিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মেয়েদের ভর্তির কোনো নিয়ম নেই। কাদম্বিনী বসু এফ এ পাশ করেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির আবেদন করেছিলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর সে-আবেদন পত্রপাঠ নাকচ করে দেন। স্নাতক হওয়ার পর পুনরায় আবেদন করেন তিনি। কিন্তু মেয়েদের ডাক্তারি পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল পুরোপুরি। তাই কাদম্বিনী বসুকে পাহাড়সমান বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এ-লড়াইয়ে তাঁর পাশে সাহসী যোদ্ধা হিসেবে দাঁড়ালেন স্বামী দ্বারকানাথ গাঙ্গুলী।

এই দুরন্ত সময়ে কাদম্বিনী বসুকে লড়াইয়ে নামতে হলো শুধু কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই ভর্তির অনুমতি পেতে। এবার কাদম্বিনী বসুর আবেদন নাকচ হলে দ্বারকানাথ গাঙ্গুলীসহ প্রগতিশীল ব্রাহ্মনেতারা আন্দোলন শুরু করলেন। কলেজ কাউন্সিল থেকে শিক্ষকদের প্রবল আপত্তি আসে। ডিপিআই অফিস অবশেষে বাংলার ছোটলাট স্যার রিভারস্ থমসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় ২৯শে জুন ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে সরকার, মেডিক্যাল কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত নাকচ করে কাদম্বিনী বসুকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির অনুমতি দেয়। তৎকালীন সঞ্জীবনী পত্রিকা জানায় (১৫ই আষাঢ় ১২৯০ বঙ্গাব্দ) : ‘গবর্ণমেন্টের আদেশানুসারে মেডিকেল কলেজের কর্ত্তৃপক্ষগণ শ্রীমতী কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় বি.এ কে মেডিকেল কলেজ গ্রহণ করিয়াছেন।’ এই সাড়া জাগানো ঘটনায় সমাজে আলোড়ন ওঠে। বামাবোধিনী পত্রিকা লিখলো (আগস্ট ১৮৮৩ খ্রি.) : ‘শ্রীমতী কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় (যিনি কুমারী কাদম্বিনী বসু বি.এ. বলিয়া পাঠিকাগণের নিকট পরিচিত) কলিকাতা মেডিকাল কলেজে সর্বপ্রথম ছাত্রীরূপে গৃহীত হইয়াছেন। আশ্চার্য্য। মেডিকাল কাউন্সিলের অধিকাংশ বিজ্ঞ ডাক্তার এ নূতন প্রথা প্রবর্তনের বিরোধী ছিলেন, কিন্তু লেপ্টেনেন্ট গবর্ণরের বিশেষ যত্নে স্ত্রীলোকদিগের ন্যায্য অধিকার স্থাপিত হইয়াছেন। এজন্য রিবর্স টমসনকে শতশত ধন্যবাদ। …’

ভর্তিযুদ্ধে জয়ী হয়ে কাদম্বিনী বসু কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে প্রথম ছাত্রী হিসেবে ভর্তি হলেন। কিন্তু এক রণাঙ্গন থেকে আর এক রণাঙ্গনে যুদ্ধে নামতে হলো তাঁকে। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান ভরসা হয়ে থাকেন সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলী। কিন্তু কাদম্বিনী বসুর দুর্ভাগ্য, অধিকাংশ শিক্ষক/ অধ্যাপক ছিলেন নারীশিক্ষা, বিশেষ করে মেডিক্যালে নারীশিক্ষার ঘোর বিরোধী। গভর্নর থমসনের সিদ্ধান্তে কলেজ কাউন্সিল বাধ্য হলেন কাদম্বিনীকে ভর্তি করাতে। কিন্তু তাঁরা মন থেকে মেনে নেননি; কেবল অধ্যক্ষ কোটসসহ কয়েকজন অধ্যাপক তাঁর পক্ষে ছিলেন, বাকিরা তাঁর বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় প্রথম ও একমাত্র নারী হয়ে তাঁকে সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে এগিয়ে যেতে হয়েছে। বিরোধীদের সঙ্গে ছিল সমাজের একশ্রেণির রক্ষণশীল মানুষ, যাঁরা কাদম্বিনী বসুর ডাক্তারি পড়ার বিরোধিতা করে গেছে। তাছাড়া সহপাঠী ছাত্ররা সবাই তাঁর অনুকূলে ছিলেন না।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিনের অধ্যাপক ছিলেন ডা. রাজেন্দ্রচন্দ্র চন্দ্র। কাদম্বিনী বসুর মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সবচেয়ে ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি। পদে পদে তাঁকে আটকেছেন। সে-কারণেই হয়তো কাদম্বিনী বসুর (গাঙ্গুলী) সাফল্যের জয়গাথা যেখানে লেখা হয়েছে, তার পাশে খলনায়ক হিসেবে ডা. চন্দ্রের নামও খোদিত আছে। সময় কাউকে ক্ষমা করে না। অথচ এই ডা. চন্দ্র ইংল্যান্ড থেকে এমআরসিপি, এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেছেন। শুধু তাই নয়, ইংল্যান্ডের লর্ড চ্যান্সেলর হার্ডিঞ্জ স্ট্রবলির বোন মেরি পিকাউকেও বিবাহ করেছেন। কিন্তু পাশ্চাত্য শিক্ষাপ্রাপ্ত ও মেমসাহেবের স্বামী হয়েও তাঁর রক্ষণশীল মন কাদম্বিনী বসুকে দমিয়ে রাখতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি করেনি। কিন্তু যে-মেয়ে ইতিহাসের চূড়ায় ওঠার যোগ্যতা রাখেন, তাঁকে হারানো যায় না। কাদম্বিনী বসু হেরে যাননি।

অবশেষে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পাঁচ বছর

কৃতিত্বের সঙ্গে পড়াশোনা করার পরও বিরুদ্ধবাদী ডা. রাজেন্দ্রচন্দ্র চন্দ্রের মাধ্যমে ১ নম্বরের জন্য ফেল করিয়ে দেওয়ায় কাদম্বিনী গাঙ্গুলী আর এমবি ডিগ্রি পাননি। তবে অর্জন করেন এগঈই সার্টিফিকেট। তার মাধ্যমে তিনি হন প্রথম বাঙালি নারী-চিকিৎসক (১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দ)। ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলীকে তারপরও পদে পদে হাজারো বাধা ডিঙিয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছে; কিন্তু তিনি কখনো হার মানেননি। তাঁর বর্ণাঢ্য সংগ্রামী জীবনের পরবর্তী বিজয়গাথা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো :

১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দ     পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু।

১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দ     বোম্বাইতে কংগ্রেসের পঞ্চম অধিবেশনে প্রথম ১০ জন নারী ডেলিগেটের একজন হয়ে যোগদান।

১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দ     কলকাতায় অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের ষষ্ঠ অধিবেশনে সভাপতিকে প্রথম নারী হিসেবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন।

১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দ     ডাফরিন জেনানা হাসপাতালে চাকরি। বেতন ৩০০ টাকা।

১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দ     উচ্চশিক্ষার্থে বিলাতযাত্রা। একা একা জাহাজে ভ্রমণ। ২৩শে মার্চ ১৮৯৩ লন্ডনে পৌঁছান।

১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দ      পরীক্ষা শেষে ট্রিপল ডিপ্লোমা লাভ। এগুলো হলো LRCP (এডিনবরা), LRCS (গ্লাসগো) ও LFPS (ডাবলিন)।

১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দ     নভেম্বরে দেশে প্রত্যাবর্তন। ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলীই প্রথম বাঙালি ও ভারতীয় নারী যিনি বিদেশ থেকে চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দ      এত অর্জনের পরও হাসপাতালে যথাযথ পদায়ন হয়নি।

          ক্যাম্পরেল মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপকের পদ গ্রহণ। চিকিৎসা বিদ্যালয়ে প্রথম ভারতীয় নারী অধ্যাপক। চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি প্রাইভট প্র্যাকটিস শুরু।

১৮৯৫-৯৬ খ্রিষ্টাব্দ নেপালের রাজদরবারে রাজমাতার চিকিৎসাভার গ্রহণ ও তাঁকে সুস্থ করে তোলা।

১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দ     গুরুতর যকৃত রোগে স্বামী দ্বারকানাথ গাঙ্গুলীর মৃত্যু।

১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দ     বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ।

১৯২২ খ্রিষ্টাব্দ      বিহার ও উড়িষ্যায় কর্মরত মহিলা শ্রমিকদের দুরবস্থা দেখার জন্য সরকার নিযুক্ত অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্ব পালন।

১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ      কলকাতা, ৩রা অক্টোবর ১৯২৩ – মহীয়সী নারী, সাত সন্তানের জননী, ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলীর জীবনাবসান। তখন তাঁর বয়স ৬২ বছর।

ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলীর তুলনা ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলী। শিক্ষাজীবন বা কর্মজীবনে পদে পদে কেউ একগুচ্ছ রজনীগন্ধা দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানায়নি, বরং তাঁর বাষট্টি বছরের জীবনে বাঁকে বাঁকে বিছানো ছিল গুচ্ছ-গুচ্ছ কাঁটা। কিন্তু তিনি সব কাঁটা দলিত-মথিত করে, সমাজের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে পৌঁছে গিয়েছিলেন চূড়ান্ত লক্ষ্যে। বিজয় অর্জন করে অক্ষয় স্বাক্ষর রেখে গেছেন এই মহীয়সী বাঙালি নারী।

ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলী প্রথম বাঙালি নারী-চিকিৎসক, তবে শুধু এই কৃতিত্ব তাঁর সম্পর্কে শেষ কথা নয়। বাঙালির ক্রমসংকুচিত মন ও মননকে পাশে ঠেলে তিনি একে একে অসাধ্য সাধন করেছেন। এই ক্ষণজন্মা নারী কিন্তু তাঁর সময়ে পাননি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা। কবিগুরু ও কাদম্বিনী একই বছরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কবিগুরুর কোনো লেখায় এই বিদূষী নারীর উল্লেখ থাকলে অনেক কিছু জানা যেত। পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বেথুন কলেজের সভাপতি ছিলেন ও নারী আন্দোলনেরও ছিলেন অগ্রদূত, কিন্তু তাঁর কোনো লেখায় বা বক্তৃতায় কাদম্বিনী গাঙ্গুলীর প্রসঙ্গ আসেনি। অন্যদিকে মোহাচ্ছন্ন সমাজ কখনো তাঁকে স্বীকৃতি দেয়নি। পাশে পেয়েছেন শুধু সময়ের সাহসী যোদ্ধা তাঁর স্বামীকে, নারী আন্দোলনের অগ্রদূত দ্বারকানাথ গাঙ্গুলীকে। আরো পেয়েছেন অগ্রগামী ব্রাহ্মসমাজকে। আর তাঁর গর্বিত পিতা ব্রজকিশোর বসুর অন্তহীন আশীর্বাদ পেয়েছেন। তিনিও নারীকল্যাণ কামনায় যে সমিতি গড়ে তুলেছিলেন ভাগলপুরে, তা ভারতবর্ষে তো বটেই পৃথিবীতে প্রথম। কিন্তু কাদম্বিনী বসুর স্নেহময়ী মা সম্পর্কে উল্লেখ কোথাও নেই, নামটিও জানা গেছে অনেক খোঁজাখুঁজির পর। অন্য ভাইবোনদের কথাও রয়ে গেছে অজানা। এমন খ্যাতিমান মহীয়সী নারীর লেখা স্মৃতিকথা, এমনকি ডায়েরির একটি পাতাও কোথাও মেলেনি। কিন্তু কাল থেকে কালান্তরে ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলী তবু অকথিত ভাষায় নিরন্তর কথা বলেন – স্বপ্ন ও সুন্দরের কথা।

তথ্যের উৎস

১ .       কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় (২০২০), ড. কৃষ্ণা রায়, গ্রন্থতীর্থ, কলকাতা।

২.       কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় : প্রথম বাঙালি মহিলা চিকিৎসক (২০১৭), মালা দত্ত রায়, সিগনেট প্রেস, কলকাতা।

৩.       কালজয়ী কাদম্বিনী (২০১৫), ড. সুনীতি বন্দ্যোপাধ্যায়, পারুল, কলকাতা।

৪.       প্রথম বাঙালি মহিলা চিকিৎসক ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলী (২০২৩) (দ্বিতীয় সংস্করণ), ড. মোহাম্মদ আলী খান, নয়নজুলি, ঢাকা।

৫.    Kadambini Ganguly : The Archetypal Woman of Nineteenth Century Bengal (2020), Dr. Mousumi Bandyopadhyay, The Women Press, Delhi.

৬.       একান্ত আলাপচারিতা, ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, রাজীব গঙ্গোপাধ্যায় (ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলীর প্রপৌত্র)।