গাছেরা মেতেছে খুব নান্দনিক নাচে
অবেলার এই অকাল বসন্তে এবার,
গাঢ় নীল আকাশের তলে পাতারাও নামিয়েছে
সবুজের অঢেল সুন্দর – দূর শৈশবের পরে
বাহারি ফুলের দল ছত্রিশ রঙের আয়োজনে
কখনো এমন মেতেছে বলে মনেও পড়ে না;
ছায়াতলে শীর্ণ গাছেরাও
যৌবনের নানারং ঘাগরা মেলে আমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে
সেও ফেলনা কেউ নয়;
অন্যদিকে মানবসংসারে আজ তীব্র হুলস্থূল
করোনার করাল থাবা
প্রতিদিন প্রতিরাতে
ছড়িয়ে দিচ্ছে বিভীষিকা
কাড়ছে প্রাণ প্রতিদিন হাজার পঁচিশ;
বিশ্বজুড়ে দম্পতিরা ছানাপোনা নাতিনাতকুড় নিয়ে
নির্বাসনে গেছে নিজেদের ডেরার ভেতর,
বন্ধ পথঘাট, বাজার-দোকান, গাড়িঘোড়া, কলকারখানা,
বিগত কয়েকটি মাস কোনো কারখানার চোঙ থেকে এক ফোঁটা
ধোঁয়াও ওড়েনি –
আকাশনীলের পটে লম্বা শাদা রেখা টেনে তেলপোড়া মনোকার্বন ছড়িয়ে
ওড়েনি কোনো বিমানপোত, এমনকি মার্কিনি গাধারাও
ওড়ায়নি যুদ্ধবিমান,
যন্ত্রসভ্যতা আজ স্তব্ধতার কালো টুপি পরে সেঁটে আছে নিজেদের ঠোঁট,
তারপর করোনার নানা রূপে – বিচিত্র ঢঙের বাহারে
থমকে
চমকে
দুলেভুলে
মৃত্যুর মতো
নিঃশেষে সবকিছু মুছে ফেলা দেখে
কাঁপছে মানুষ;
এদিকে বিবিসি কাল, কী ভেবে কে জানে, ছড়িয়েছে কিছু তথ্য আজব :
মেরুপ্রদেশের যেসব বরফ ভেঙেচুড়ে ছিঁড়েখুঁড়ে গিয়েছিল গলে
তারা নাকি পুনর্বার জমাট বেঁধেছে, মেরুভালুকেরা খুশি –
প্রেমপরিদের টানে ঘর-বাঁধতে তারা খুব ব্যস্ত এখন,
দুপেয়ে জন্তুদের বোকামি ও স্বার্থান্ধ বর্বরতায় দূর আকাশের পটে
যেসব ওজোনহোল কেবলই যাচ্ছিলো বেড়ে
তাও নাকি আধাআধি বন্ধ হয়েছে,
আর পরিশুদ্ধ হয়ে গেছে প্রাণিদের শ্বাসের বাতাস :
তবে কি পৃথিবী মাতা নিজে মর্মরিত – তিনিই প্রকৃত তারক!
কখনো বরফে ঢেকে, কখনো মারী ও মড়কে
কখনো-বা প্লাবনে ভাসিয়ে
নিজেকেই বারবার পরিশুদ্ধ করছেন তিনি!
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.