বাংলাবিদ : ভাষার লড়াই ভাষার খেলা

সৌমিত্র শেখর

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল উনিশশো বায়ান্ন সালে এবং সেই আন্দোলনেই শহিদ হয়েছিলেন সালাম, বরকত, শফিউর, রফিক প্রমুখ। তবে বাংলা ভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য লড়াই কিন্তু এর আগেও ছিল, এখনো তা অব্যাহত আছে। এ-লড়াই আগে না থাকলে আবদুল হাকিম লিখতেন না : ‘যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।/ সেসব কাহার জন্ম নির্ণএ ন জানি \’ এই প্রতিবাদী কবিতাই ভাষার লড়াইয়ের অংশ। যুগ পালটেছে। এখন ভাষার লড়াইটি হলো, বাংলা ভাষাকে বিশ্বায়নের চাপ থেকে মুক্ত করে সহজ-সরল ও স্বাভাবিক পথে চলতে দেওয়া, বিভ্রান্তির জাল থেকে মুক্ত রাখা। আজ নতুন থেকে নতুনতর প্রজন্মের মানুষেরা বাংলা ভাষা নিয়ে ভাবতেই পারছে না, শুধু বলে যাচ্ছে আর লিখে যাচ্ছে। কিন্তু সেই বলা আর লেখার ধারাটি পূর্বাপর ধারা মান্য করছে কি না, তা ভাববার সময় ও সুযোগ কোনোটাই নেই তাদের সামনে। ভুল না শুদ্ধ বলছে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার সময়ই নেই। এই প্রজন্মের সামনে ‘ভাষা নিয়ে ভাবনা’র কথা বলাই একটি বড় কাজ। এ-কাজটি যে কেউ করতে পারে; যে-কোনোভাবে হতে পারে এটি। হতে পারে খেলতে খেলতেও। এই খেলাটাই শেষ অবধি ইতিহাসে লড়াই হিসেবে বিবেচিত হবে, যেমন কবি আবদুল হাকিমের একটি কবিতা লেখা চিহ্নিত হয়েছে ভাষার লড়াই হিসেবে। অতিসম্প্রতি চ্যানেল আই টেলিভিশনে প্রচার হওয়া ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ তেমনি একটি রিয়েলিটি শো, তেমনি একটি খেলা, তেমনি একটি লড়াই! এই রিয়েলিটি শো বাংলা ভাষাকে নিয়ে, এই খেলা বাংলা ভাষার ওপর, এই লড়াই বাংলা সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে চেতনা জাগানোর, সচেতনতা বাড়ানোর। এই প্রতিযোগিতার নিয়মিত বিচারক অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা, সাহিত্যিক আনিসুল হক আর আমি দারুণ উপভোগ করেছি প্রতিযোগীদের জ্ঞান আর দক্ষতা। সঙ্গে প্রতি পর্বে ছিলেন একজন করে অতিথি-বিচারক।

বাংলাদেশের প্রায় নিরানববই শতাংশ মানুষ বাংলায় কথা বলেন, বাংলায় পড়েন, বাংলায় ভাবেন, বাংলায় ভালোবাসেন। বাংলায় তাদের মননের বিকাশ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রমিত বাংলার চর্চা, শুদ্ধ বাংলার ব্যবহারে বাংলা একাডেমি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, হাতেগোনা কিছু সংবাদপত্র ছাড়া কারো ভূমিকা চোখে পড়ার মতো নয়। বই-পুস্তক, প্রচারপত্র, বিলিপত্র, বিজ্ঞাপনের ব্যবহৃত মাধ্যমগুলো, বাসে-রেলে, দাফতরিক কাগজপত্রে বাংলা বানানে ভুলের ছড়াছড়ি। বাংলা শুদ্ধতার চর্চা এবং এ-ব্যাপারে দেশব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে ইস্পাহানি বদ্ধপরিকর। আবার ব্যবসায়ের দৃষ্টিকোণ থেকে ইস্পাহানি গ্রম্নপের এই প্রজন্মের সঙ্গে পরিচিত হওয়া খুব দরকার। উভয়দিক বিবেচনা করেই ইস্পাহানি বাংলা ভাষা নিয়ে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। বাংলা ভাষাই নতুন প্রজন্মকে সমৃদ্ধ করবে এবং এ-উদ্যোগ ইস্পাহানির সঙ্গে নতুন প্রজন্মের পরিচয় ঘটাবে। এই ভাবনার যোগাযোগ থেকেই বাংলাবিদের সৃষ্টি। বাংলাবিদ একটি মঞ্চ করে দেবে যা শুদ্ধ বাংলা, বানান চর্চা, উচ্চারণ এবং বাংলা ভাষার চর্চাকে উৎসাহিত করবে। বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার বাড়ছে, বাড়ছে পাশের হার কিন্তু আজ স্বাধীনতার ছেচলিস্নশ বছর পরও আমরা জাতি হিসেবে আমাদের প্রত্যাশিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারিনি; আমরা সেভাবে পারিনি আমাদের সংস্কৃতিকে বিশ্বের মঞ্চে কাঙিক্ষত অবস্থানে নিয়ে যেতে। বরং আজ আমাদের ঘরে ঘরে ভিন্ন ভাষার, ভিন্ন সংস্কৃতির আগ্রাসন লক্ষণীয়।  এ-সমস্যার মূলে রয়েছে মননশীল শিক্ষার পরিবর্তে অনুকরণমূলক আচরণ, অন্য সংস্কৃতিকে অযাচিত আয়ত্তকরণ, যা আজ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের টিভি অনুষ্ঠানগুলোও আজ এর ব্যতিক্রম নয়, অহংকার করার মতো চমৎকার ঐতিহ্য ছেড়ে ধীরে ধীরে অন্যান্য দেশের অনুষ্ঠানগুলোর অনুকরণমূলক অনুষ্ঠানে ছেয়ে যাচ্ছে সব টিভি চ্যানেল। এ সবকিছুর মূলেই রয়েছে মেধা ও মননের ‘বেস্নন্ডে’র একপ্রকার শূন্যতা; কখনো অমত্মঃসারশূন্যতা।

‘বাংলায় জাগো ভরপুর’ – মাকসুদা ইকবাল এই সেস্নাগান সামনে রেখে ইস্পাহানি শুরু করে ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ নামে এক প্রতিযোগিতা। একে খেলাও বলা চলে। কারণ এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের কাছে আনন্দ-সহযোগে বাংলাকে তুলে ধরা। শুদ্ধ বানান ব্যবহারে উৎসাহিত করা, ভুল ও অপপ্রয়োগের হাত থেকে বাংলাকে রক্ষা করা ইত্যাদি এর প্রধানতম লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে। বাংলা ভাষার পূর্ণভাবে জেগে ওঠার ডাক দেওয়া হয়েছে এভাবে : ‘বাংলায় জাগো ভরপুর’। তাই বলতে হয়, বাংলাবিদ শুধু একটি সাধারণ টিভি রিয়েলিটি শো বা বাংলা প্রতিযোগিতা নয় বরং বাংলাবিদ একটি ধারণা, ভাষার স্বাভাবিক গতি রক্ষার একটি লড়াই। বাংলাবিদ হচ্ছে বাংলা ভাষার পুনর্জাগরণের ডাক – এমন বললেও খুব বাড়িয়ে বলা হবে না। আমাদের
মাতৃভাষার প্রতি অবজ্ঞা, অবহেলা ও অসচেতনতা থেকে জেগে উঠে মাতৃভাষার শুদ্ধ চেতনায় আবার ফিরে আসার ডাক। কারণ আপনি, আমি এবং আমরা সবাই জাগলে বাংলা আবার জাগবে। এজন্যই ‘বাংলায় জাগো ভরপুর’ এই আহবান। এই আহবানে সাড়া দিয়েই এবার প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয় ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ – যে-আয়োজন ছিল সম্পূর্ণভাবে সফল এবং এই খেলা বা প্রতিযোগিতা সারাদেশে পেয়েছে অভাবনীয় সাড়া। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে বুদ্ধিজীবী, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে চাকরিজীবী সবাই ছিলেন এই আয়োজনের নিয়মিত দর্শক। তাঁদের মতামত ও প্রশংসা নানাভাবে এ-উদ্যোগকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও বাংলাবিদের মূল্যায়ন ছিল অত্যন্ত ইতিবাচক।

দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা দৈনিক প্রথম আলোর ক্রোড়পত্র ‘আনন্দ’তে গত ১৭ আগস্টের টিভি সমালোচনায় ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ সম্পর্কে মন্তব্য করা হয় : ‘মাতৃভাষার প্রতি কৌতূহল জাগ্রত করার জন্য এবং বৈচিত্র্যময় করার জন্য অনুষ্ঠানটিকে কয়েকটি পর্বে বিভক্ত করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের এসব নীতিমালা ও প্রতিযোগীদের অংশগ্রহণ যথার্থ ও আকর্ষণীয় হয়েছে বলা যায়।’ পাশাপাশি তরুণদের মাঝে মাতৃভাষা বাংলার উন্নয়ন ও জাগরণে এমন তাৎপর্যপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ধন্যবাদও জানানো হয়। বাংলাবিদের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাংলা চর্চার উপলক্ষ তৈরি। বাংলা প্রতিযোগিতা করার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের একটি সহজ ও সুন্দর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তাদের বাংলা পড়ার ও লেখার গাঁথুনিকে আরো শক্ত করা এবং সবার সহযোগিতায় পুরো আয়োজনটি এমনভাবে সাজানো, যেন এতে অংশগ্রহণকারী ও দর্শক সবাই আনন্দ খুঁজে পান। আয়োজকদের লক্ষ্য ছিল, এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে কিশোর-কিশোরীরা মেধাভিত্তিক সংস্কৃতির চর্চা করবে, তাদের মননের বিকাশে ব্যাপৃত হবে, নতুন নতুন বন্ধুত্ব তৈরি করবে, নতুন জায়গায় ঘুরবে, নতুন পরিবেশের সঙ্গে মিশবে এবং সফল মানুষদের সাহচর্য পাবে – এভাবেই তাঁদের জীবন অন্যরকম ভালোলাগায় ভরপুর হয়ে উঠবে। যে ভরপুর জীবন হবে অনেক অর্থপূর্ণ, সৃজনশীল, জীবনের বহুবিচিত্র কর্মকা–র মধ্যে বিসত্মৃত। এ-প্রত্যাশা ও স্বপ্নই বোধকরি ইস্পাহানি লালন করে। নতুন প্রজন্মকে নিজ ভাষায় তাদের মেধা ও মননের সঠিক বিকাশে সহায়তা দেওয়া, মেধা ও মননের শ্রেষ্ঠ বেস্নন্ডের বা মিশেলের মানুষ তৈরি করার এ-লক্ষ্য সামনে রেখেই দেশব্যাপী বাংলা প্রতিযোগিতা ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদে’র প্রয়াস।

দুটি ধাপের এই অনুষ্ঠানের প্রথম ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে সাতটি বিভাগীয় শহরে। সেখান থেকে শীর্ষ আশিজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে হয় প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় ধাপ। এ-প্রতিযোগিতার প্রতিটি পর্ব প্রচারিত হয় চ্যানেল আইয়ের পর্দায় প্রতি শুক্র ও রোববার সন্ধ্যা ৯টা ৩৫ মিনিটে। এই অনুষ্ঠানের ফলে শুধু অংশগ্রহণকারীরা নয়, দেশের

সর্বস্তরের বাংলা ভাষাভাষী এ-অনুষ্ঠান দেখতে পারে, সেসঙ্গে উপভোগের মাধ্যমে নিজেদের বাংলা জ্ঞান, মেধা ও মননের জায়গায় নিজেকে আরো শানিত করার সুযোগ পায়। আর ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ সে-ধরনেরই এক উদ্যোগ, যার ফলে লাভবান হয় সব বাংলা ভাষাভাষী। আর এখানেই ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ অনন্য আয়োজনে পরিণত হয়। ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ একটি টিভি রিয়েলিটি শো, যেখানে প্রথাগত বিনোদনমূলক আয়োজনের পরিবর্তে এমন কিছু বিষয়কে তুলে ধরা হচ্ছে – যা সমাজ, দেশ ও সংস্কৃতির জন্য প্রয়োজনীয় কিন্তু দর্শকদের জন্য বিনোদনমূলক ও আকর্ষণীয়। হয়তোবা প্রথম বছরেই সব লক্ষ্য অর্জিত হবে না, কিন্তু ধারাবাহিক আয়োজনের মাধ্যমে ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে আরো সমৃদ্ধ, মেধা ও মননে পরিপূর্ণ এক দেশ, যারা অন্যের ধার করা সংস্কৃতি নয় বরং নিজেদের সংস্কৃতিকে বিশ্বমঞ্চে ছড়িয়ে দেবে; তারা হবে ভাষার সৈনিক। বাংলা ভাষা তাদের চেষ্টায়-চর্চায় হয়ে উঠবে আরো সমৃদ্ধ ও শ্রদ্ধাস্পদ। ৭ জুলাই যখন এ-বছরের ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদের প্রথম পর্ব প্রচারিত হয়, তখন টিভি জরিপে বাংলাদেশি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদের অবস্থান ছিল ৩০১ নম্বরে। অন্যদিকে ২৫ আগস্ট ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদের পনেরো ও শেষতম স্টুডিও পর্বটি ছিল সব বাংলাদেশি দর্শকের পছন্দের তালিকায় পনেরোতম, যা আমরা মনে করি প্রথম বছরের মতো আয়োজিত একটি ভাষাভিত্তিক নতুন ধরনের রিয়েলিটি শো  আয়োজনের সফলতার জন্য একটি বিশাল অনুপ্রেরণা।

এই আয়োজন ছিল আড়ম্বরপূর্ণ এবং দেশব্যাপী বিসত্মৃত। গত ২৫ ফেব্রম্নয়ারি চ্যানেল আইয়ের ছাদ বারান্দায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শুরু হয় ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদের আনুষ্ঠানিক পথযাত্রা। এ-বছরের আয়োজনটি ছিল দেশের সব বাংলা, ইংলিশ ও মাদরাসার ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য (ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে class VI থেকে O level)। প্রথমেই চলে এক মাসব্যাপী নিবন্ধন-প্রক্রিয়া, যেখানে খুদেবার্তা ও অনলাইনের মাধ্যমে নিবন্ধন করে সাড়ে পঁয়ত্রিশ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের নিয়ে সাতটি বিভাগীয় শহরে অডিশন বা বাছাই পর্ব শেষে আমরা নিয়ে আসি দেশসেরা আশিজন শিক্ষার্থীকে, যাদের নিয়ে শুরু হয় দেশের শীর্ষস্থানীয় টিভি চ্যানেল আইয়ে টিভি পর্বের মূল প্রতিযোগিতা। স্টুডিও পর্বগুলো সাজানো হয়েছিল বিভিন্ন নিত্যনতুন খেলা দিয়ে-যেমন বিভিন্ন ধরনের বাংলা সাহিত্য ও ব্যাকরণভিত্তিক প্রশ্ন, মজার মজার বাগধারা, ছবির ধাঁধা, বাজানো পর্ব, উপস্থিত বক্তৃতা, সৃজনশীল লেখনী, সমসাময়িক ছবির ভুল, হিজিবিজি ইত্যাদি। বৈচিত্র্য ও বিষয়ের দিক থেকে ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রচারিত টিভি রিয়েলিটি শোগুলো থেকেও অনন্য ও অসাধারণ। তেরোটি স্টুডিও পর্বের মাধ্যমে বাংলা জ্ঞান, মেধা ও মননশক্তি বিচার করে খুঁজে নেওয়া হচ্ছে এ-বছরের ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’কে, যার জন্য পুরস্কার হিসেবে থাকছে দশ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি, দ্বিতীয় সেরা বাংলাবিদের জন্য থাকছে তিন লাখ টাকার মেধাবৃত্তি ও তৃতীয় সেরার জন্য থাকছে দুই লাখ টাকার মেধাবৃত্তি।  এ ছাড়া শীর্ষ দশের সবার জন্যই থাকছে একটি করে ল্যাপটপ, বইয়ের আলমারি ও বইসহ মোট পঞ্চাশ হাজার টাকারও বেশি মূল্যের পুরস্কারসামগ্রী। প্রতিবছর একুশে ফেব্রম্নয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে আমাদের বাঙালি পরিচয় জেগে ওঠে, সব সংবাদমাধ্যমে সর্বস্তরে শুদ্ধ বাংলা চর্চার কথা তুলে ধরা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছোট পরিসরে বিভিন্ন ভাষাভিত্তিক আয়োজনও হয় কিন্তু ফেব্রম্নয়ারি চলে গেলে সব উদ্যোগ ও কর্মকা- আবার সিত্মমিত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অনেক ইতিবাচক কাজ করে থাকেন, যেসব Nation Building বা, Nation Branding উদ্যোগ নামে পরিচিত। ইস্পাহানি মনে করে ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ তেমনই এক-

Nation Building বা, Nation Branding উদ্যোগ, যার সুফল পাবে সারা বাংলাদেশ ও সব বাংলা ভাষাভাষী। ইস্পাহানি এমন এক প্রতিষ্ঠান, যারা সমাজের প্রতি নিজেদের দায়বদ্ধতাকে সবসময়ই অত্যন্ত গুরুত্ব নিয়ে দেখে এবং শুধু কথায় নয় বরং কথার চেয়ে কাজ করতেই বেশি উৎসাহী। দেশের, সমাজের ও শিক্ষার প্রতি প্রকৃত দায়িত্ববোধ থেকে ইস্পাহানি কখনো পিছপা হয় না। আর এই ধারাবাহিকতা ২০১৭ সাল থেকে শুরু হতে যাওয়া ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ শুধু ফেব্রম্নয়ারি বা এপ্রিলভিত্তিক একটি গতানুগতিক অনুষ্ঠান না হয়ে বরং বিসত্মৃত পরিসীমার এক আয়োজন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। আশা করছি, এই আয়োজন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিজের মাতৃভাষা শুদ্ধচর্চার পাশাপাশি নিজেদের মেধা ও মননকে আরো উন্নত ও বিকশিত করে বিশ্বের সব ভালো কিছুতে নিজেদের নতুন উচ্চতায় তুলে নিতে পারবে। তাতেই ভাষার লড়াইয়ে যোগ হবে নতুন মাত্রা। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ছিল এই প্রতিযোগিতার মহোৎসব। r