বানেসা পরীর সন্ধানে

কুষ্টিয়ায় গড়াই নদীর ওপারে হরিপুর বহুদিন ছিল একটি আশ্চর্য সুন্দর গ্রাম। যন্ত্রের ছোঁয়া এখানে কতকাল লাগেনি। কুষ্টিয়া শহরের এত কাছে এই গ্রামজুড়ে ছিল আশ্চর্য রহস্যের হাতছানি। এই গাঁয়েরই আবদুল আজিজকে নিয়ে এগিয়ে গেছে এ-গল্প বহুদূরে। গড়াই ও পদ্মা নদীর মাঝখানে মাত্র তিন মাইল চওড়া এই ভূখণ্ড। কিন্তু লম্বায় অনেক বড় – শিলাইদহ, কুমারখালী ও খোকসাজুড়ে এক বিশাল ভূখণ্ড; তারপর তা চলে গেছে আরো দূরে গোয়ালন্দের দিকে। হরিপুরের উত্তরভাগ দিয়ে পদ্মা নদী বয়ে গেছে; কিছুটা ডানদিকে মোড় নিয়ে তা পৌঁছে গেছে রাজবাড়ী ছাড়িয়ে গোয়ালন্দে।

হরিপুরে আবদুল আজিজ থাকে আলাদা, বাবা-মার মৃত্যুর পর ছোট দুই ভাই তাকে আলাদা করে দিয়েছে। কিন্তু নিতান্তই সরল, গোবেচারা ও কল্পনাপ্রবণ আজিজকে তারা ঠকায়নি; পৈতৃক ভিটার পাশে একটি ঘর দিয়েছে। আজিজের কোনো বোন নেই, ছোট দুই ভাই বিবাহিত ও ব্যবসায়ী; কিন্তু প্রায় পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সী আজিজ এখনো বিয়ে করেনি। অতিরিক্ত সরল বলে তাকে নিয়ে গ্রামের সবাই হাসাহাসি করে; কেউ তার বিয়ের উদ্যোগ নেয়নি। দরকার না হলে সে কথা বলে না, সবসময় মুখে হাসি। তবে তার নিজস্ব একটি কাজ সে খুব মনোযোগ দিয়ে করে। সে-কাজটি হলো ভ্যান চালানো। হরিপুর থেকে দিনে কয়েকবার যাত্রীবোঝাই ভ্যান নিয়ে সে পাঁচ মাইল দূরে শিলাইদহ যায়। যাত্রীদের বেশিরভাগ আসে নদীর ওপারে কুষ্টিয়া শহর থেকে। কেউবা আসে বাংলাদেশের অন্য জায়গা থেকে। তারা অনেকে ভ্যানে চড়ে যায় শিলাইদহ। কেউবা দলবেঁধে হেঁটে যায়। খুব আনন্দ পায়। সবার একই উদ্দেশ্য, রবিঠাকুরের শিলাইদহ কুঠিবাড়ি দেখা। ভ্যানচালক আজিজকে সবাই ‘পাগল’ বলে ডাকলেও ওই নিরীহ মানুষটিকে তারা কেউ তেমন অপছন্দ করে না।

অবশ্য আজিজকে অপছন্দ না করার অন্য কারণও আছে। গ্রামের লোকেরা দরকার হলে আজিজের কাছ থেকে দশ-বিশ টাকা ধার নেয়; কিন্তু কেউ টাকা শোধ দেয় না। আজিজও লজ্জাবশত কারো কাছ থেকে টাকা ফেরত চায় না, শুধু দাঁত বের করে হেসে তাকিয়ে থাকে। সবাই ভাবে, সে হয়তো টাকার কথা ভুলে গেছে। আরো একটি কারণ আছে অপছন্দ না করার। আজিজকে ভ্যান চালানোর পারিশ্রমিক হিসেবে যে যা দেয়, তাই সে হাত পেতে নেয়। কোনো প্রতিবাদ করে না। তাই ভ্যানচালক হিসেবে তার চাহিদাও বেশি। গাঁয়ের মোড়ল মধু শেখের বাড়ির দু-তিনজন মহিলা ও তাদের বড় ছেলে আজ যাবে শিলাইদহে। এ-গাঁয়ে তারা এতকাল আছে অথচ শিলাইদহ কুঠিবাড়ি দেখতে যায়নি। বড় বউয়ের বড় ছেলে কাসেম পড়ে স্থানীয় স্কুলে ক্লাস নাইনে। রবীন্দ্রনাথের ‘পোস্টমাস্টার’ গল্প আর কিছু কবিতা সে পড়েছে। সে-ই মা আর দুই চাচিকে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি দেখতে রাজি করিয়েছে। মাঘ মাসের মিষ্টি রোদের মধ্যে বড় ভালো লাগে ভ্যানে চড়ে যেতে। কাসেম সকালে আজিজকে পাকড়াও করেছে। আজিজ ভ্যানওয়ালা খুব খুশি, তার দূর-সম্পর্কের খালাত বোন এই বাড়ির ছোট বউ বানেসা। বানেসা তাকে ছোট থেকেই আপন ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করত, কোনোদিন ‘পাগল’ বলে ডাকেনি বা উপহাস করেনি।

সকাল দশটার দিকে শীতের হাওয়া আর হালকা রোদ মিলে কী চমৎকার পরিবেশ। ওরা দলবেঁধে রওনা হলো। তিন বউ বাড়িতে শ্বশুর-শাশুড়ির সামনে প্রাণ খুলে কথা বলতে পারে না, এখন ভ্যানে ওঠার পর তাদের কথার খই ফুটতে লাগল। কত রঙের কথা ও গান। গাড়িতে উঠে বানেসা প্রথমেই কথা বলতে লাগল তার দূর-সম্পর্কের ভাই আজিজ ভ্যানওয়ালার সঙ্গে –

‘আজিজ ভাই, আছেন কেমন? ছোট বইনকে তো ভুইলেই গেছেন। একবারো খোঁজ নিতি আসেন না। তবে দোষ আর কী দেবো ভাই? দোষ আমার কপালের। নিজের বাপ, মা, ভাইবোনই আসে না দেখতি। আপনি তো খালাতো ভাই।’

আজিজ তার কথায় বড় কষ্ট পেল। বলল, ‘বুইন, তুমি আমাক মাফ কইরি দিয়ো। তোমার মতো ভালো বুইন আমার একটাও নাই। তোমার কথা যে কতো ভাবি, তা আর কী কবো। সবসময় দোয়া করি, আল্লাহ যেন তুমাক শান্তিতে রাখে। সকালে কাসেম যখন ঘরে আইসলো তোমাদের কুঠিবাড়ি যাওয়ার কথা বইলতে, তখন আমার কী যে ভালো লাইগলো। মনে হইলো মনোয়ারা খালার আদরের মেয়ার সাথে আজ কতোকাল পরে আবার দেখা হবি। আমার মনের মধ্যি যে কী ভালো লাইগতে লাইগলো।’ এরপর আজিজ আর কথা বলতে পারল না। আবেগে তার গলা ধরে এলো। সে আপনমনে ভ্যান চালাতে লাগল।

আজিজ ভ্যানওয়ালার কথা শুনে বড় দুই বউ হি-হি করে হাসতে লাগল। বড় বউ বানেসাকে বলল, ‘এবার তুই পাগলকে ঠেকা। এই বোধহয় কাঁদতি শুরু করবি।’ বানেসা কোনো জবাব দিলো না। ছোট থেকেই সে জানে, তার দূর-সম্পর্কের এই খালাত ভাই বড় বেশি সহজ-সরল, সবসময় মুখে হাসি। কারো কথাতেই রাগে না। বানেসা বড় বউয়ের কথায় কান না দিয়ে তার আজিজভাইকে বলল, ‘ভাই, আপনি বিয়ে করলিই পারতেন। ছোট দুই ভাই আর তাদের ছেলেপেলে কি আপনাকে দেখবি? আপনে বুড়া বয়সে কোনে যাবেন?’

আজিজ এবার হেসে ফেলল, বলল, ‘কোনে আবার যাবো? মইরি যাবো হঠাৎ কইরি। তারপর মামলা সব খতম। একে পাগল মানুষ আমি, বাপ-মা নাই। তুমিই কও বইন বানেসা, একটা মেয়ের জীবন কি নষ্ট করবো আমি? পাগল মানুষ দিয়ে কি সংসার হয়?’

এবার বড় বউ আর মেজো বউ একসঙ্গে বলল, ‘কেন সংসার হবি না। হতিই হবি। পুরুষ মানুষের আবার বিয়ার বয়স বইলে কিছু আছে নাকি? আপনি বিয়া করেন, পাগল এক রাইতে ভালো হয়া যাবি।’ এরপর তারা হি-হি করে হাসতে লাগল। কাসেম বলল, ‘মা তুমি আর দুই চাচি কী শুরু কইরলে? আমরা যাচ্ছি রবীন্দ্রনাথের বাড়ি দেখতি। আর তোমরা কী খাজুরে প্যাঁচাল শুরু করিছো।’

আজিজ এসব কথা শুনে বাস্তবিকই লজ্জা পেল। সে ঘাড় ফিরিয়ে সোজা হয়ে ভ্যান চালাতে লাগল। শেখবাড়ির বউয়েরা এখন নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকল। তবে কথা যত, হাসিও তত। সর্বক্ষণ হি-হি-হি। কাসেম এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত। বলল, ‘রবীন্দ্রনাথ এই শিলাইদহের বাড়িতে বইসে কবিতা লিখতো। আর কবিতার ভাব কইমে গেলে যাইতো ছেঁউরিয়ায় ফকির লালনের কাছে। সাঁইজি খুবই ভালোবাইসতো রবিঠাকুরেক। শিলাইদহে বইসি কবিতা লিইখে রবীন্দ্রনাথ বিলাত থেইকে নবেল পুরস্কার পায়েছে।’

তিন বউ এত জ্ঞানী নয় কাসেমের মতো। তারা শুধু মুখ বুজে সব কাহিনি শুনল। কাসেম পরম বিজ্ঞের ভান করে মুখটা গম্ভীর করে রাখল। কিছুক্ষণ পর তারা অন্য প্রসঙ্গে চলে গেল।

আজিজ নীরবে ভ্যান চালাচ্ছে। নির্জন পথের বাঁক নিতে শিলাইদেহ কুঠিবাড়ি দেখা গেল। তিন বউ দূর থেকে একটি বিস্ময়কর দৃশ্য দেখার মতো চুপ করে থাকল। আজিজ প্রায়ই ভ্যানে যাত্রী নিয়ে এখানে আসে, তার কোনো বিস্ময় নেই।

কুঠিবাড়ির চারপাশে পাঁচিলের ওপাশে কিছু কিছু বড় গাছ আছে। গাছতলায় ভ্যান রেখে আজিজ বলল, ‘তোমাদের যতক্ষণ খুশি ঠাকুরবাড়ি দ্যাখো। আমি এখানে বসলাম। তোমাদের কাজ শেষ হলি আমাক ডাকবা। ফের তোমাদের হরিপুর নিয়ে যাবো।’ আসলে  কুঠিবাড়ি দেখতে আসা প্রতিটি দলের সঙ্গে এভাবে যাওয়া-আসার চুক্তি হয় আজিজ ভ্যানওয়ালার। আসা-যাওয়ার ভাড়া একশ টাকা। কিন্তু বেশিরভাগ সময় ওর ভাগ্যে জোটে ষাট-সত্তর টাকা। এ নিয়ে কোনোদিন এতটুকু মন খারাপ করে না আজিজ ভ্যানওয়ালা। ওরা সবাই রবিঠাকুরের বাড়ির আঙিনার দিকে রওনা হলো, এ-সময় বানেসা হঠাৎ করে ফিরে এলো। বলল, ‘আজিজ ভাই, আপনি কিন্তু এইখানেই থাকবেন। আইজ আমরা একসাথে খাব। চাইলের ময়দার রুটি আর নাইরকেল দিয়ে মুরগির গোশত। সব আমি রাঁধিছি।’

বহুদিন এভাবে আজিজকে কেউ আদর করে খেতে বলেনি। তার নিজের মায়ের কথা সহসা মনে হলো, তখনই হয়তো সে কেঁদে ফেলবে। বড় কষ্টে অশ্রু সংবরণ করল। কিন্তু বানেসারা কুঠিবাড়িতে চলে গেলে সত্যিই দু-একফোঁটা অশ্রু ঝরে পড়ল আজিজের চোখ থেকে।

আজিজ কুঠিবাড়ির বাইরে গাছতলায় বসে এলোমেলো নানা কথা ভাবতে লাগল। বানেসার সঙ্গে কতদিন পরে দেখা। অনেক বছর আগে মনোয়ারা খালার সঙ্গে বানেসা মাঝেমধ্যে দু-একবার তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসত। লাবণ্যময়ী কিশোরী বানেসার সেই সরল-নিষ্পাপ চেহারাটা তার চোখে এখনো ভাসে। বানেসা নামটির সঙ্গে আবদুল আজিজ ভ্যানওয়ালার আরো একটি স্মৃতি গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। বেশ কয়েক বছর আগে কোনো এক জেনারেলের শাসনামলে সারাদেশে যাত্রাপালার চল লেগেছিল। প্রিন্সেস লাকি খান আর প্রিন্সেস মেরি-অভিনীত সেসব যাত্রা সেসময় কারো কারো মধ্যে রীতিমতো বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল। গাঁয়ের স্কুলের কিংবা প্রাজ্ঞ প্রবীণ প্রায়ই বিরক্ত হয়ে বলতেন, ‘যাত্রার নামে এ কী অশ্লীলতা শুরু হইল সারাদেশে। এই লুচ্চামি তো বরদাশত হয় না।’ তবু সেই অরাজকতার মধ্যে একটি ভালো যাত্রা এসেছিল হরিপুরের হাটে। নাম বানেসা পরী ও রাজ্জাক বাদশাহ। আহারে সে কী যাত্রা। প্রেমের জন্য কী আত্মত্যাগ। যাত্রার একটি দৃশ্যে অভিমানী বানেসা পরীর সামনে নতজানু হয়ে রাজ্জাক বাদশাহ করুণ সুরে গান ধরতেন :

তুমি যে বানেসা পরী

সোনার চেয়েও দামি।

তোমার জন্যে সিংহাসন

ছাড়তে রাজি আমি –

ওগো বানেসা পরী।

যাত্রাপালার এই দৃশ্যটি দেখে সে-আমলে অনেক দর্শকই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদত। এবার আজিজের হঠাৎ করে মনে হলো, সে এই দুপুরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ির সামনে বসে বানেসার কথা এমন করে ভাবছে কেন? বানেসা তো তার ঘনিষ্ঠ কেউ নয়, দূর-সম্পর্কের খালাত বোন। তবু বানেসা যে-কদিন কথা বলেছে, তাকে মনে হয়েছে বড় বেশি আপন। আজ ভ্যানে হরিপুর থেকে শিলাইদহ আসার সময় যখন বানেসা তার সঙ্গে কথা বলছিল, তখন মনে হয়েছিল, এই নিষ্ষ্ঠুর-নিষ্প্রাণ দুনিয়ায় তাকে ‘আজিজ ভাই’ বলে এমন মধুমাখা স্বরে আর কেউ কোনোদিন ডাকেনি।

আজিজ কুঠিবাড়ির পাশে ভ্যানের ওপর বসে আরো অনেক কথা ভাবল। একসময় সে কিছুটা ঘুমিয়ে পড়েছিল। বড় বউয়ের কথায় ঘুম ভাঙল। কাসেমের মা একটু হেসে জোরে কথা বলল, ‘আজিজ, তুমি ঘুমায় পড়েছ। আমরা কুঠিবাড়ি ভালো কইরি দ্যাখলাম। এইসব বড়লোকের আমরা কী বুঝি। তবু ভালো লাইগল, কত ফুলের গাছ।’

হরিপুর থেকে রবিঠাকুরের ‘কুঠিবাড়ি’ দেখতে আসা দর্শনার্থী দলের বড় বউকে দেখে একটু আশ্চর্য হলো আজিজ, সে ভেবেছিল বানেসা তাকে ডাকতে আসবে। এবার বড় বউ বলল, ‘তুমি বকুলতলার ঘাটে আসো। আমরা সব খাতি বসিছি। বানেসা শখ কইরি রাঁধেছে সব।’

আজিজ বকুলতলার ঘাটে এসে হাত-মুখ ধুয়ে খেতে বসল। চেয়ে দেখল, বানেসা ও কাসেম তার জন্য অপেক্ষা না করে আগেই খেতে বসেছে। নারকেল দিয়ে রান্না করা মুরগির গোশত, সেসঙ্গে চালের ময়দার রুটি। রান্নায় স্বাদ বাড়ানোর জন্য এ-অঞ্চলে কেউ কেউ নারকেল-মুরগির গোশতের তরকারির সঙ্গে আস্ত রসুনও দেয় দু-তিনটা। এতসব খাবারের পর খেজুরের গুড়ো ‘রস পিঠা’।

খাবার বড় পছন্দ হলো আজিজের। সে দেখল কাসেম খাওয়ার সময় কী নিয়ে যেন অনেক কথা বলছে। আসলে কাসেম রবীন্দ্রনাথের ‘পোস্টমাস্টার’ গল্পের কাহিনি বলছে বানেসাকে। পোস্টমাস্টার নৌকাযোগে গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তার বাসার কাজের মেয়ে রতন বাসার চারপাশে হাঁটছে আর ভাবছে, দাদাবাবু যদি ফিরে আসে? বানেসা ক্লাস ফোর পর্যন্ত পড়েছে, বাড়ির অন্য দুই বউয়ের চেয়ে কিছুটা শিক্ষিত সে। তাই হয়তো গম্ভীরভাবে কাসেমের দিকে তাকিয়ে গল্পটা বোঝার চেষ্টা করছে। কাসেম মুরগির রান চিবিয়ে বলছে, ‘কত বড় কথা কয়ছে রবীন্দ্রনাথ, দাদাবাবু যদি ফিরে আসে?’ আজিজ আড়চোখে একটু অবাক হয়ে বানেসার দিকে তাকাল, মনে হলো, ওই বানেসা যেন তাকে চেনেই না। একটু পরে যখন সে ভ্যান চালিয়ে শেখবাড়ির এই দলটিকে শিলাইদহ থেকে হরিপুর নিয়ে যাবে, তখনো কি বানেসা তার সঙ্গে কথা বলবে না? কে জানে কার মনে কখন কোন রোদ-বৃষ্টি-মেঘের খেলা ঘনিয়ে আসে? হয়তো জগতের এই নিয়ম, একদিন পরিচিত মানুষ চিরদিনের মতো অপরিচিত হয়ে যায়। কেন হয় – সে-রহস্যের কূলকিনারা হয়তো কোনোদিনই পাওয়া যাবে না।