ভোররাতে শুরু হয় অপারেশন

ভোররাতে শুরু হয় অপারেশন।  দুটো বন্দুক আর একটা মাত্র এলএমজি সম্বল করে এতবড় অপারেশন কল্পনাও করা যায় না। অবশ্য তাদের অন্যদের হাতে ছিল গ্রেনেড। এই গ্রেনেডও ঠিকমতো ছুড়তে পারলে খুব শক্তিশালী। সীমান্ত থেকেই তাদের ক্যাপ্টেন বলে দিয়েছিলেন, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। কাঁকড়ভরা চালের ভাত খেয়ে এতদিন বেঁচে আছো না? এই খানা খেয়েই যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছো না? তাইলে আর কথা কী? যতটুকু অস্ত্রশস্ত্র দিতে পারছি এইতেই শুকুর মানো। আর খবরদার, বিনা কারণে অস্ত্র ফেলে আসবে না। একটা গুলিও না। তোমাদের জীবনের চেয়ে এখন অস্ত্রের বেশি সম্মান, মনে রাখবে!

 

এই এলাকায় পাক মিলিটারি আস্তানা গেড়েছে তারা আগেই খবর পেয়েছিল।

সেই খবর পেয়েই তারা তিনদিন আগে রওনা দিয়েছে। রাতের আঁধারে নদী পেরিয়ে, খালের ভেতরে নৌকা ঢুকিয়ে, একেবারে চোখের আড়ালে সবকিছু রেখে তারা অপেক্ষা করছে। সুযোগের অপেক্ষা।

বিকালে রেকি করে এসে মেহেদি বলেছিল, এক্কেরে পরিষ্কার সবকিছু দোস্ত। রাইতে যেইহানে বইসা তারা আড্ডা দেয়, তাস খেলে, মদ খায়, কাওয়ালি গায়, সব কলিমুদ্দির দোকানের ভিত্রে। কলিমুদ্দি তাগো দোস্ত। তার দোকানের পিছনেই তাগো ডেরা।

কস্ কি দোসত্ম্? একটু অবাক হয়ে বলে উঠেছিল হারুণ।

তার অবাক হওয়া দেখে মেহেদি বলেছিল, আরে, অবাক হওনের কী আছে? এই এলাকায় তাগো সাক্সেস রেট এতো বেশি যে এক্কেবারে বেসামাল হইয়া পড়ছে। কুনো ভয়ডর নাই। অথচ শুনছি, তাগো নিয়ম নাই রাইতের বেলা ছাউনি ছাড়া কোত্থাও থাকনের বা আড্ডা মারার।

একটু পরে মেহেদি আবার বলে, পরশু এক গরু জবো কইরা খাইছে সকলে। গরুর চামড়া, আঁত, হাড্ডি পইড়া আছে রাস্তার নালির ভিত্রে।

কথা বলতে বলতে মেহেদি নিজের মাথার চুল টেনে লম্বা করতে থাকে। তার মাথার চুল একেবারে কদমছাঁট। ইচ্ছে করে এমন ভাবে চুল কেটেছে মেহেদি যেন মাসের পর মাস আর ক্ষক্ষŠরকর্ম করতে না হয়।

এমনিতে অবশ্য মেহেদির শরীরে চুলের আধিক্য কম। দাড়ি-গোঁফ নাই বললেই চলে।

আববাস, মানে আববাসুর রহমান মন দিয়ে তার কথা শুনে বলল, তাইলে ভোররাতে একবার হানা দিয়ে দেখি, কি বলেন?

তার কথা শুনে সকলে মাথা নাড়ল।

আববাস বর্তমানে তাদের কমান্ডার। বড় দুর্ধর্ষ কমান্ডার। সবেমাত্র যশোর এমএম কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছিল সে।  তার শরীর লম্বায় মাত্র পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি, শরীরও এমন কিছু আহামরি নয়, তবু সাহসে, ক্ষক্ষপ্রতায়, ত্বরিত সিদ্ধামেত্ম আববাস তাদের গ্রম্নপের ভেতরে অদ্বিতীয়। তার বয়স মাত্র সতেরো। স্কুলজীবন থেকেই সে ছাত্রলীগ করত। তেইশ বছরের লোকমানও বর্তমানে আববাসের অধীনে। আববাস যখন সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলে তখন লোকমান বড় বিনীতভাবে তার কথা শোনে এবং মানে।

এখন তার কথা শুনে কিছুক্ষণ সকলে চুপ থাকল। এর আগে তারা তিনটে অপারেশন করেছে।

তারা মানে আববাস, হারুণ, মেহেদি, অবিনাশ, শুকুর আলি, মোখলেস আর নাসিম। সবকটাতেই মোটামুটি সাকসেস বলা যায়। অন্তত তাদের সাবসেক্টরের ক্যাপ্টেন সাহেব খুশি।

 

এই জায়গায় তারা এসেছে খুব সঙ্গোপনে। রাতের আঁধারে নৌকা করে। জায়গাটা নদীর ধারে। আশেপাশে, জলাভূমি, খাল, বিল, ধানক্ষিত। জলাভূমির একটা সাধারণ খোচের ভেতরে তাদের অবস্থান আজ তিনদিন ধরে। এদিকে মানুষজন বেশি আসে না। আরো দূরের জলাভূমিতে বাঘ আর কুমিরের উৎপাত আছে।  তবে তারা এদিকে আসে না।

একমাত্র খোরশেদ আর শুকুর আলি ছাড়া তাদের গ্রম্নপের কেউ এত গ্রামীণ পরিবেশে জীবনে বাস করেনি। সকলেই মোটামুটি মফস্বল শহরের ছেলে। তবে তাতে কিছু আসে-যায় না। কারণ এদেশে গ্রাম ও মফস্বলে বেশি তো তফাৎ নেই। তবু ভয় লাগে। রাতে যখন দূরের বনভূমিতে শেয়াল ডাকে, তখন ভয় লাগে।  পেঁচার ডাকও নিয়মিত শোনা যায়। সেদিন পানিতে গোসল করতে গিয়ে সবুরের পায়ে জোঁক লেগেছিল। দরদর করে রক্ত পড়ছিল তার পা বেয়ে। অবিনাশদা, বলে চেঁচিয়ে উঠেছিল সবুর। অবিনাশ অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করে তার দুপা থেকে জোঁক ছাড়িয়েছিল।  ছাড়াতে ছাড়াতে বলেছিল, এইডা কি কিছুর ভয়ের হলো, হ্যাঁ? আরে? এই জোঁক তো আমাগের জেবনের সঙ্গী। মাঝে মাঝে সুযোগ পালি পড়ে রক্ত খায়। এর চেয়েও বড় জোঁক যে পাকিস্তানি। আজ তেইশ বছর ধরে রক্ত খাতিছে।

এখানকার জলকাদার ভেতরে এক ধরনের লম্বা পোকা আছে, যেগুলো মাঝে মাঝেই তাদের লুঙ্গির ভেতরে, গেঞ্জির ভেতরে ঢুকে পড়ে বিড়বিড় করে হেঁটে বেড়ায়। আর আছে কেঁচো। দেখলে গা ঘিনঘিন করে। কিন্তু উপায় নেই।

এমনিতেই সকলের গায়ে আজকাল খোসপাঁচড়া হয়েছে। কারণে-অকারণে গা চুলকায়। হারুণ একটু আয়েসি ছেলে । তার গা বেশি চুলকায়। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলেও সে। মাঝে মাঝে তাই ঠাট্টা করে বলে, আমি মইরা গেলে আমার বাপে আবার বিয়া করবো, বুঝলা? নাইলে তার সয়সম্পত্তি দেখবো কেডা?

 

সীমান্ত থেকে ডাক্তার একটা পানি-পানি ওষুধ দিয়েছে, সেগুলো গায়ে লাগিয়ে বসে থাকলে একটু আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু শরীরের দিকে এখন তাকাবার সময় নয়। এখন অস্ত্রের দিকে তাকাবার সময়। অস্ত্র তাক করে রেখে সমুখে তাকাবার সময়।

বড় বড় ঘাসের ভেতর সবুজ রঙের সাপ এঁকেবেঁকে হেঁটে যায়।  অচেনা আরো কিছু হেঁটে যায়, যার নাম তারা জানে না। মাঝে মাঝে প্রকৃতিকে ভীষণ অচেনা মনে হয় তাদের। মনে হয়, এই কি তাদের দেশ? এই কি মাতৃভূমি? মনে পড়ে তাদের কমান্ডার বলেছে, তাদের জীবনের চেয়ে এখন অস্ত্রের মূল্য বেশি। সত্যি কি তাই? জীবনের চেয়ে অস্ত্রের কি দাম বেশি হতে পারে? তারপর মনে হয়, হ্যাঁ অবশ্যই পারে। একটি অস্ত্র দিয়ে সে নিধন করতে পারে তার মাতৃভূমির আক্রমণকারীদের। স্বাধীন করতে পারে দেশ। আকাশে ওড়াতে পারে লাল-সবুজের ঝান্ডা।

 

এই গ্রামে বর্তমানে যে-কটা ঘরবাড়ি মাথা তুলে আছে, তার ভেতরে জনবসতি নেই। সপ্তাহদুয়েক আগেই জ্বালাও-পোড়াও করে সবকিছু  তছনছ করা হয়ে গেছে।

মেয়েগুলোকে চালান দেওয়া হয়েছে যশোর ক্যাম্পে। হিন্দুরা কিছু পালাতে পেরেছে, কিছু পুড়ে মরেছে। বর্তমানে যে-কয় ঘর মুসলমান আছে তারা সকলেই এখন হানাদারদের দোসর হিসেবে বেঁচে আছে।

 

পাক মিলিটারি এখনো এই গ্রাম ছাড়েনি। নিশ্চয় তাদের স্ট্র্যাটেজিতে কোনো বৈধ কারণ আছে। তারা কি কোনো আক্রমণের আশংকা করছে? আববাসরা যে এখানে ওঁৎ পেতে বসে আছে আজ তিনদিন এটা কি তারা আন্দাজ করতে পেরেছে?

অবিনাশ এই গ্রামেরই ছেলে। তার কোনো প্রশিক্ষণ নেই। তাতে তার কোনো মাথাব্যথাও নেই। সে কীভাবে খোঁজ নিয়ে এসে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। যোগ দেওয়ার সময় অবিনাশের হাতে ছিল একটা বাঁশের বাঁশি। আর তাই দেখে লোকমান বলে উঠেছে, দাদা, একখান লাঠি আনলেও তো কুকুর তাড়াইবার কামে দিত।

 

দেশটা ছারখার কইরা দিলো।

মাঝে মাঝে আপনমনে বিলাপ করে শুকুর আলি।

তার বাড়ি বরিশাল। কিন্তু প্রশিক্ষণ নিয়েছে এই দলের সঙ্গে। সে বড় কঠিন প্রশিক্ষণ। প্রথমে ভারতের রানাঘাট ইয়ুথ ক্যাম্পে ট্রেনিং। তারপর সেখান থেকে আরো দূরে গহিন এক জায়গায় গিয়ে সকল প্রকার অস্ত্র, বোমা এবং গেরিলা ট্রেনিং নিয়ে সে দলের সঙ্গে ফিরে আসে। তার পেটে এক ধরনের ব্যথা আছে। সে ভারী অস্ত্র বেশিক্ষণ বহন করতে পারে না। কিন্তু মুখ ফুটে-একথা সে কাউকে বলে না। পাছে তাকে দল থেকে বাদ দেয়।

মেহেদির বাড়ি ঢাকার মানিকগঞ্জ। কিন্তু তার বাবা ঝিনাইদহে পাটের ব্যবসা করত। মুক্তিযুদ্ধে মেহেদির বাবা প্রথমেই পাকিস্তানি সেনার গুলি বুক পেতে নিয়েছে। তার পরদিন থেকেই মেহেদি ঘরছাড়া। বাড়িতে কে কীভাবে আছে সে এখনো জানে না। জানার চেষ্টাও করেনি। সীমান্ত পার হয়ে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় নাম লিখিয়েছে।

তার মতো কমবেশি সকলেরই ইতিহাস একরকম।

শুধু আববাসের কাহিনি ভিন্ন। তার বোনকে, যে-বোনটি তার একদিন বাড়ির পুকুরঘাট থেকে গোসল সেরে ঘরে ফিরছিল, তাকে স্থানীয় রাজাকাররা ধরে নিয়ে চলে গেছে। তারপর চালান দিয়েছে মিলিটারি ক্যাম্পে। আববাস তখন কলেজে ছিল। খবর শুনে আববাস আর বাড়ি ফিরে যায়নি।

সেই পায়েই সে সীমান্ত পেরিয়ে চলে গিয়েছিল ভারত।

ভারতের বিরান কোনো জলাভূমির ধারে পঁয়তাল্লিশ দিন থেকে সে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এসেছে দেশের সীমামেত্ম।

এখন সে ছোট্ট একটি মুক্তিযোদ্ধা দলের অধিনায়ক।

এবং ভালো অধিনায়ক।

 

রাত হলেই এই ছোট্ট গ্রম্নপটির ভেতরে একটা আহাজারি দেখা যায়।

কেউ বাবা-মায়ের কথা বলে বিলাপ করে। কেউ ভাইবোনের কথা বলে বিলাপ করে। কেউ পেটভরে ভাত খেতে না পারার জন্যে বিলাপ করে। কেউ বা তার ভালোবাসার মানুষের জন্যে বিলাপ করে। শুকুর আলি বিলাপ করে তার বাড়ির বুধি গাইয়ের জন্যে। মাতৃপিতৃহীন শুকুর আলির কাছে বুধি গাইটি ছিল তার সহোদরার মতো। যেদিন তাদের গ্রাম আক্রান্ত হয় আর একশ একত্রিশ জন গ্রামবাসীকে রাজাকার আর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী উলস্নাসের সঙ্গে হনন করে, সেদিন কোনোরকমে প্রাণ হাতে করে শুকুর পালাতে পেরেছিল। বুধিকে সে ফেলে এসেছিল গোয়ালে। বুধির কপালে কী হয়েছিল কেউ তাকে না বললেও শুকুর আলি জানে। আর তাই সে গোপনে ফিচফিচ করে কাঁদে, ও বুধিরে, বুধি, বোনডি আমার!

কিন্তু এইসব আহাজারি তাদের মনের ভেতরে। ভেতর বলতে যতদূর ভেতর বলা যায়। একেবারে ভেতরের ভেতর। গহিনের গহিন।

যখন তাদের মনের গহিনে বিলাপকার্য চলে, তখন প্রকৃতির ভেতরেও চলে অশ্রম্নক্ষরণ। নীরবে-নিভৃতে অশ্রম্নক্ষরণ।

প্রকৃতিও তো মানুষের সহোদর বটে!

কিন্তু আববাস বিলাপ করে না। তার সে কোনোদিন বাবা-মা বা ভাইবোন ছিল বা আছে, এ-কথা তুলে কে কখনো বিলাপ করে না, যেন এসব কোনোদিন তার জীবনে ছিল না!

যেন জীবনের শুরু থেকেই সে হানাদার বাহিনীর নিধনের দায়িত্বে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে! এই হচ্ছে তার একমাত্র ধ্যান ও জ্ঞান।

এই বয়সেই তার মুখে পাথরের স্তব্ধতা!

সে কথা বলে খুব স্বাভাবিকভাবে। তার ভেতরে কোনো উত্তেজনা কখনো দেখা যায় না। তার গলার স্বর ধীর এবং সংযত। কথা বলার সময় সে কখনো এক কথা দুবার করে বলে না। যা বলে স্পষ্ট করে বলে। এসব সে কখন শিখল, কীভাবে শিখল, কেউ জানে না। তার পকেটে একটা গ্রম্নপ ফটো শুধু। যে-ফটোয় সে আর তার বোন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখ গম্ভীর। কিন্তু বয়সে বড় বোনটি তার ঘাড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ফটোর দিকে তাকিয়ে হাসছে। শখ করে তার বোন সেদিন ফ্রক ছেড়ে মায়ের শাড়ি পরেছিল ছোটভাইয়ের সঙ্গে ফটো তুলবে বলে।

ফটোটা ঝাপসা। সাদা-কালো ফটো। কারো মুখ সেভাবে দেখা যায় না। শুধু বোনের মুখের হাসিটুকু বড় উজ্জ্বলভাবে দেখা যায়।

আববাস হাসে না সহজে। বা হাসলেও সে-হাসিতে কোনো আনন্দ ফুটে ওঠে না। সে শুধু মাঝে মাঝে পুবদিকে মুখ করে বসে থাকে। বিশেষ করে ভোরের বেলা। যে পুবে তার একদার বাড়িঘর। যে পুবে তার দেশ, মা, মাতৃভূমি।

সেই মাতৃভূমিতে সে কি কোনোদিন লাল-সবুজের পতাকা ওড়াতে পারবে? বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে ছিনিয়ে আনতে পারবে শত্রম্নর করাল থাবা থেকে?

এ-কথা যত সে গোপনে ভাবে, তত তার মুখ পাথরের মতো নিরেট হয়ে ওঠে।

 

শেষরাতের দিকে তারা অপারেশন শুরু করল। খুব সহজভাবে করল। দুটো বন্দুক আর একটা এলএমজি দিয়ে প্রায় সবকটাকে শেষ করল। চারখানা গ্রেনেড ফুটল এখানে ওখানে।

শেষ গ্রেনেডটা ফুটল একেবারে কলিমুদ্দির দোকানে। সেদিন কলিমুদ্দি দোকানেই ঘুমিয়ে ছিল। পাক মিলিটারির সঙ্গে স্ফূর্তি করে সেও রাত কাটিয়েছিল তাদের ডেরায়। তারপর শেষরাতে ফিরে এসেছিল নিজের দোকানে।

অবশ্য তার দোকান আর মিলিটারির ডেরা কাছাকাছি।

যুদ্ধ জয় হলো।

কিন্তু একেবারে বিনা মাশুলে নয়। পাক মিলিটারির মেশিনগানের আচমকা এক ধাক্কায় নিহত হলো তাদের প্রিয় কমান্ডার আববাস আলি।

মৃত্যুর সময় একটা কথাও বলতে পারল না সে। বলার মতো অবস্থাও ছিল না। সে মারা গেল অবিনাশের কোলে মাথা রেখে। তার শরীরের কোথাও অখ-তা বলে কিছু ছিল না, কিন্তু বুকপকেটে সেই ফটোখানা তেমনি অবিকৃত ছিল। ভাইবোনে তোলা ফটো। যে-ফটোতে তার বোন শখ করে সেদিন শাড়ি পরেছিল আর ছোট্ট ভাইটির কাঁধে হাত রেখে হাসিমুখে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ছিল। তেমনি সাদা-কালো।