উতলা ঢেউ তুলে মিলিয়ে গিয়েছ জলে

অতলে প্রবেশ করে কোনো একদিন;

একটি মাছ হবার যুক্তি দিয়ে এ হৃদয়ে

খুঁজেছিলে প্রবল আস্থা; সুস্থির যাপন।

আকাশের শরীরে সঞ্চারিত বেদনা আমার

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে ভেঙে পড়ে আছে ডানা

অথচ জলে প্রতিটি মুহূর্ত অসীম আনন্দদায়ক

তবু তেতে ওঠো; ঠোঁটে রাখো নিরর্গল কাঁপন।

অমন গলাকাটা লাশ হয়ে ভেসে যেতে থাকি

মন পুড়ে ইটপাথরের স্তূপে দু-পা রেখে একাকী

বেদনাসংসারে বেশুমার বৈরাগ্য; কবেই দাফন –

করে অচেনা ঢেউফেনা হয়েছে হৃদয়ে আপন।

স্থির বাতাসের ঘুঙুরে কানে শুনি ঢেউয়ে কেউ

কাউকে নিয়ে কিছু বলছে; একাকী ভাসলেও!

কথার স্কুলে কত পড়া হলো ভাসার সংজ্ঞাপন

নীল অথই নির্জন নয় – জলকে জ্বালছে তাপন।

এমন গভীর ক্ষত করে জল টেনে নিয়ে যায়

এমন গভীর শোক হয়ে হঠাৎই পাশে দাঁড়ায়

এমন ঢেউ-তোলা উত্তাল অসুখে শরীর ঘামে

সকল বাসনা জমে উঠে হয় পুনরায় স্থাপন।

অনাবাদের গোয়ালে শুয়ে আছে বেদনাজোয়াল

না উঠে কাঁধে না তুলে ঢেউ সংসারে বহু বছর!

না উত্তাপ, না ঠান্ডা হয়ে একই রকম – দেখো

গ্রহণ-অন্ধকারে করে যাও আমাকেই তবু খনন।

ঢেউয়ে মিশিয়ে নিয়ে যতদূর যাও – সাথে যাই

যতদূর গিয়ে বিভাগ করে দাও; একাকী থাকি;

দরিয়ায় মাস্তুল ভাঙার পর যেমন থাকে মাঝি

তারচে’ বেশি দুরবস্থ হয়ে খুঁজি এতটুকু প্রাপন।

দুরারোগ্য লাঙল ফলায় লেগে আছে অতুল শিশির

ভাসতে ভাসতে পাঁকে পড়া জল রয় না তো স্থির।