বিলাপ করিনে আর
‘পথে হেঁটে চলি
মনে মনে বলি’
কী হবে বিলাপ করে।

যদি কেউ দিতে চায় বিলাপের ঢেউ
দিতে পারে, দিঘিতে, নদীতে
হয়তোবা জানা নাই তার
নদী হারিয়েছে পথ আমারই শোকে।

          দিঘিটি ঢেকেছে
          বিশতলা বাড়ি।

বাড়িটির ছাদে মাঝে মাঝে দেখি
কার যেন চুল
উড়ছে বাতাসে
কি জানি কি ভেবে
চুল এসেছিলো উড়ে
পথিকের বাড়ি।

বাড়িটির বিশতলা ছাদে ঝুলে থাকে কার যেন
শাড়ির আঁচল
বারবার তাকিয়ে আমার দিকে
করুণার চোখে।

ভয় পেয়ে ঢেকে ফেলি চোখ
ঠিক তখুনি অচেনা লিলুয়া বাতাস
আমাকে নিয়ে যেতে চায় কালো খোঁপার কাছে

পথে এসে মনে মনে বলি,
কী হবে বিলাপ করে।

পরের আঁচল দেখে।

কুয়াশা, হলুদ দালানে

শিহাব সরকার

সিএনজিতে কারা শহরতলির নদীতে যায়
কারা ফোনে এসি ট্যাক্সি ডাকে
ছোটে এয়ারপোর্টে, প্লেন ছেড়ে গেল বুঝি!
যাবে ব্যাংকক, বালিদ্বীপ; খুব পার্টি হয় উইকেন্ডে

লোকাল মিনিবাস ছেড়ে ওরা কারা নরনারী
কালো তন্বী-কারে চড়ে যায় দূরের পার্কে,
নদী আর বন দেখে সাধ মেটে না
দুদিনে যদু-মধু অচেনা হয়ে যায় পেখমে

কবিতার চেয়ে দুরূহ এ-ধাঁধার মূলে নামা।

নোনাধরা পুরনো বাড়িটি এখনো আছে বনে
ফটকে প্রহরীর জেরা, আমার মলিন শার্ট
অথচ আমি তো রবিনের বাল্য-ইয়ারও
গলাগলি করে মর্নিংশোর থার্ডক্লাসে ঢুকিনি কি?
এইসব রাতে চেনামুখ ভুলে যেতে হয়?
বাগানে বার-বি-কিউ, বিয়ার উপচে পড়ছে।

তরুণীর চেয়ে প্রৌঢ়া মায়েরা কেন বেশি মাতে

আমার ছেঁড়া মানিব্যাগ খোয়া গেছে বাসে
দীর্ঘ রাস্তা হেঁটে এসে রিসিপশনে হাঁপাই,
রক্ষীরা ঘেমো লোকেদের খুব সন্দেহ করে
চেকপোস্টে যে ঘামে, তার বিপদের শেষ নেই

ড্রামে ট্রাম্পেটে ডিস্কোর তালে বাংলো গুলজার
কামিনী ঝোপের কাছে তরুণী তুলেছে ফণা,
গেট থেকে আমি তার ডাকনাম ধরে ডাকি
কুয়াশা নামছে বনের ভেতরে হলুদ দালানে।