যে-মানুষকে ভুলেছে সবাই

নেপালি কবিতার অনুবাদ . মুনীর সিরাজ

অভি সুবেদী

রাজা এবং নেতার চলার পথের পাশে

অন্তরের দীনতায় ক্ষুদ্র ঘাসের মতো অস্তিত্ব আমার।

শক্তিমানের স্বপ্নে প্রসারিত পথের পাশে

নিরন্তর সময়ের বাহন ছোট পথের যাত্রী

আমি কিছুতেই বাড়তে পারি না।

দেশের মুখচ্ছবি দেখতে পাই –

রক্তাক্ত, ব্যারাক, পাহারাদার এবং সিংহদরবার।

 

অনেক স্বপ্ন আছে,

যদিও তা ভুলেছে সবাই।

আমারই মাঝে তা প্রোথিত এখন

এবং শুরু হয়ে গেছে আমার উত্থান,

আমি সেই পথে দাঁড়িয়ে এখন, যে-পথ দিয়ে

আবার ফিরবে সময়।

এখন এক জাগ্রত আশায়

সময়ের ঝুঁটি ধরে মুক্ত করব অভিশপ্ত ইতিহাস,

শক্তিধরের স্বপ্নমোহের অনিবার্য পতন জেনেই

সূর্যানুপ্রাণিত আমার উত্থান।

 

 

দক্ষিণ এশিয়া

বৃষ্টিভেজা সকাল।

গাছের ছায়া অরুণের ঘর অবধি প্রলম্বিত –

পিয়ানোর মৃদু ধ্বনি আর

স্নিগ্ধ সবুজে মিতালি,

আর আমাদের নিঃশব্দ পঠন।

 

এশিয়ান এজ আর দি ডনের

কলামে দৃষ্টি পড়তেই দক্ষিণ এশিয়ার

আর্তচিৎকার শুনতে পেলাম।

ভয়ানক হিংসা আর হিংস্রতা,

প্রচ- ঘৃণায় জন্ম নেওয়া শিশুদের

নোংরা কাপড়ে সেøাগান লেখা

‘যখন বড় হবে

পারমাণবিক শক্তিশালী অস্ত্রটি খেলনার মতো

পরম ঘৃণায়

তোমার খেলার সাথিদের দিকে ছুড়ে দেবে।’

 

পত্রিকার পাতার বর্ণনা

অস্তগামী সূর্যের ঘৃণা-কলুষিত বিচ্ছুরণ

আগামী সকালের আলোক দগ্ধ করে –

তবে কি জাগবে না উজ্জ্বল সূর্য!

তবে কি পতিত হবে সূর্য-ঝলমল!

তবে কি শুনব না পত্রমঞ্জরির কম্পনে

আলোকিত গান!

তবে কি ঢেউশীর্ষে মুক্তোর সাথে

বইবে না মুক্ত সমীরণ?

(নেপালি কবি অভি সুবেদী কবিতা ও সাহিত্যকর্মের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত। জন্ম ৩০ জুন, ১৯৪৫। ত্রিভুবন বিশ^বিদ্যালয়ে তিনি ৪০ বছর ইংরেজি ভাষায় অধ্যাপনা করেন। তিনি ‘নেপাল লোককাব্য সমিতি’র সহসভাপতি এবং ‘নেপাল সাহিত্য সমিতি’র সভাপতি ছিলেন। তিনি The International Theatre Institute (ITI)-এর সভাপতি এবং Linguistic Society of Nepal-এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নেপালি ও ইংরেজি ভাষায় কবিতা, প্রবন্ধ, নাটক ও অনুবাদে তাঁর প্রকাশনার সংখ্যা ঈর্ষণীয়।)