রবীন্দ্রনাথের প্রতি

মোহাম্মদ সাদিক

 

ব্যারিস্টার হবার বাসনা থেকে আপনার বিলেত ভ্রমণ

ইউরোপের নারীরা আপনাকে ঘিরে ধামাইল গেয়েছে!

ভানুসিংহ ঠাকুরের তখন প্রকৃত অর্থে

কৃষ্ণ হবার জোগাড়।

অবশেষে আপনি হলেন লালন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট।

সিনিয়র প্রফেসর সৈয়দ শাহনুরের সাথে

আপনার দেখা হয়নি। তাতে কীইবা আসে যায়?

 

প্রাচীনকালে আর্যদের ধারণা ছিল

বঙ্গের লোকজন পাখির ভাষায় কথা বলে

মুঘলরা একসময় ভাবত

বঙ্গে আসা আর আত্মহত্যা করা সমান কথা

তবু আপনাকে নিয়োগ দেয়া হলো পূর্ববঙ্গে!

 

লোকে বলে জমিদার, সুখী মানুষ কিন্তু

দুঃখের কালো বোটের মধ্যে পদ্মার বাতাসে

আমরা শুনেছি আপনার আলখালস্নার দীর্ঘশ্বাস

বেদনার তালিমারা জোববা পরে আপনি

যখন শিলাইদহে এসে নামেন

তখন আপনার হাতে একতারা

পায়ে খড়ম, ফকির রবীন্দ্রনাথ আপনি

আর সেখানেই

শাহজাদপুরের মেঠোপথে বালিকা রতন এসে

কোমরে িআঁচল পেঁচিয়ে আপনার পথ

আগলে দাঁড়ায়। হাসতে হাসতে বলে –

‘আজ পাশা খেলব রে শ্যাম’…

 

কিন্তু আপনি এসব পেছনে রেখে

একটি রক্তাক্ত দেশ আর সূর্যোদয় পেছনে রেখে

নিবিড় নির্জন পথে হাঁটতে শুরম্ন করেন

অচিন পাখির জন্যে বিষণ্ণ একতারার জন্যে

পোস্টমাস্টারের উলাপুর থেকে দূরে বহুদূরে

একটি নদীর দিকে

একটি রাত্রির দিকে…