শিমুলপুরের কবিতা

হাবীবুল্লাহ সিরাজী

মটরদানার মতো পলকহীন চোখে
অশ্রু যদি ঝরে দুই ফোঁটা
ঈশ্বরীর বিনয় মজুমদার বোঝে না তার কিছু
কেবল কুটোর ন্যায় ওড়ে মরা ত্বক
দুঃখ আর বেহিসেবি না-ফেরা বেলায়
শিমুলপুরের কবিতা মাঠ-পাহারায় যায়

আশ্বাসের সেগুনে মোড়া দূর জনপদে
বিশ্বযুদ্ধে নিভে আসে মোম ও বিশ্বাস
নগর কলকাতার ছকে তোলা নদীজল
বদল হবার আগেই ওড়ে তেজপাতা
গন্ধ তার গায়ত্রীর ললাটের অধীর বেলায়
শিমুলপুরের কবিতা ঘাট-সীমানায় যায়

পেছনে-সামনে ব’লে কথা নেই
প্লাটফর্মের বেঞ্চ রেখে এজরা ওয়ার্ড নেই
নেই আলু-কুমড়োয় মাখামাখি তিনবেলার ভাত
একমাত্র অংকযাত্রায় নুনসহ নতুন সমীকরণ
যত চাকায় তারো অধিক ফেরার দ্বিধায়
শিমুলপুরের কবিতা বৃক্ষতলায় যায়

অঘ্রানেই খুব শীত এখনো তো পৌষ বাকি
ডালে কাক আর বারান্দার চড়ুই
সে-খবর পৌঁছানোর আগে সারসেরা উড়ে গেছে
মানুষেরা বড়ো বেশি হাঙরের কাছাকাছি
শর্ত মেনে এখনো যে টিকে থাকা অশ্বিনীতারায়
শিমুলপুরের কবিতা বসতঘরে যায়

যেই চোখে ঘুম আর যেই মুখে যন্ত্রণার সুই
যেই আঙুলে বিয়োগ আর যেই হাতে সুপ্ত ভাগ
নারী ও কবিতা যেন উভয়ের অনন্ত দোহাই
আরো এক অভিযানে যোগ ও গুণন
সৃষ্টির ভেতর কোনো অসমাপ্ত মৃত্যুর মায়ায়
শিমুলপুরের কবিতা পূর্বজন্মে যায়