হরিপদর দোকানে বিকেল নামার সময়

বহু পুরনো জংধরা টিনের বাক্সে বাঁশ কিংবা গজারি কাঠের চেলা দিয়ে বাড়ি মারলে যেরকম  পুরনো আমলের মতো একটা আওয়াজ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, ফইজুলের গলার স্বরটাও অবিকল সেরকম। ফইজুল যখন অপরিচিত জায়গায় গিয়ে কথা বলে তখন সবাই ওর দিকে যতটা না আগ্রহ নিয়ে তাকায় তারচেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়ে শোনে তার কথা। ফইজুলের এই কথা বলার ধরন-ধারণের জন্য এলাকার মানুষজন ফইজুলের একটা নামও দিয়েছে, ক্যারক্যারাইন্যা ফইজুল। প্রথমদিকে ফইজুল যখন শুনেছে গ্রামের কেউ কেউ তাকে ক্যারক্যারাইন্যা ফইজুল বলে ডাকে, তখন সে ভীষণরকমের ক্ষেপে গিয়েছিল। একদিন ফইজুলকে শিংপাড়া বাজার থেকে ফিরতে দেখে গফুর মিয়া বলল,

‘কী ক্যারক্যারাইন্যা ফইজুল, কামকাজ না কইরা আর কয়দিন ঘরের ভিত্তে বয়া বয়া দিন কাটাইবা? এমতে এমতে দিন যাইব?’

গফুর বয়সে ফইজুলের চেয়ে বড়। আগে আদাব-সালাম দিত ফইজুল। এখন সেদিন গত হয়েছে গফুরের খাসলতের কারণে। গফুরের সমস্যা নিজেকে সে সবসময় মুরুবিব হিসেবে জাহির করে। গ্রামের ছেলেছোকরাদের এখন আর মুরুবিব গোনার সময় নেই। কিন্তু গফুর এখনো কমবয়সীদের কাছে হন্যে হয়ে সালাম-আদাব খুঁজে বেড়াতে গিয়ে সমস্যা তৈরি করে।

গফুরের কথা শুনে ফইজুল তেতে ওঠে,

‘হউরের পো নিজের চান্দিতে তেল-পানি দেওন চোদাও – আজিরা কামে মাইনসের ধনে হাত দেও ক্যা?’

ক্যারক্যারাইন্যা ফইজুল যে বাজারের ভেতর অত লোকজনের সামনে গফুরকে এভাবে অশস্নীল ভাষায় আক্রমণ করে বসবে সেটা সে চিন্তাও করতে পারেনি। ফইজুলের কথায় গফুর মিয়া আতকা হতবিহবল হয়ে ফইজুলের দিকে তাকিয়ে থাকে। বাজারের লোকজন গফুরের হতবিহবল মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।

গফুর মিয়ার পাশ দিয়ে ঘোষপাড়ার নারায়ণ যাচ্ছিল। ফইজুলের কথা শুনে সে হেসে দিলো,

‘এক্কেবারে খাপে খাপ, জববারের বাপ।’

নারায়ণের ওপর গফুরের সাত জনমের রাগ এসে জমা হয়। সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না,

‘নাপ্তার পো নাপ্তা, আমগো কথার ভিত্তে তুমি হান্দাও কিল্লাইগা?’

গফুর মিয়া ফইজুলের দিকে আক্রোশ-মেশানো দৃষ্টিতে তাকিয়ে নারায়ণকে বলে।

ফইজুল নারায়ণকে দেখে হাসে,

‘উচিত কথা কইলে কালার বাপের মুখ খারাপ।’

‘ফইজুল তুই সুযোগ পায়া আমারে বালা কইরা খিচা দিলি’ – গফুর আর ফইজুলের দিকে ফিরেও তাকাল না। সে হনহন করে বাড়ির উদ্দেশে হাঁটা ধরল, ‘হউরের পো তুমারে আমি খালি বাগে পায়া লই এমুন মাইনকা চিপিতে ফালামু যে আহ-উহ কিচ্ছু করবার পারবা না -’ গফুর হাঁটতে হাঁটতে একা একা মিনমিন করে ফোঁস-ফোঁস করতে থাকে।

এখনো অনেকে ফইজুলের সামনে পেছনে ওকে ‘ক্যারক্যারাইন্যা ফইজুল’ বলে ডাকে। এটা এখন ফইজুলের গা-সওয়া হয়ে গেছে। এই নামে কেউ তাকে ডাকলে সে তার কোনো প্রত্যুত্তর করে না। সে অনেক ভেবেচিন্তে দেখেছে এলাকার যেসব মানুষ তাকে এই নামে ডাকে ফইজুল তাদের পোছে না, এমনকি পাছা পর্যন্ত মারে না।

ফইজুল কি তাদের খায়? না পরে?

 

 

দুই

ফইজুল মাটির সরু আলপথ দিয়ে বাতাস কাঁপিয়ে পাকা সড়কের দিকে যাচ্ছিল। দুপাশে আলুক্ষেত। এবার দেশগ্রামে আলুর ফলন বেশ ভালো হয়েছে। মাটি ফুঁড়ে আলু বেরিয়ে আসতে চাইছে। মাটির ভেতর থেকে হালকা মেটে আর সবুজ রঙের ছোট ছোট আলু কিশোরী মেয়ের স্তনের মতো উঁকি মারছে।

সকালে ফইজুল হরিপদর দোকানে ব্যাটারি ঠিক করতে দিয়েছে। হরিপদ টুকটাক ইলেকট্রিকের কাজটাজ জানে। আগে নয়াবাজারের এক দোকানে মিস্ত্রির হেলপার ছিল। নেশা, ভাং আর হাতটানের দোষ থাকায় খবিরুদ্দি তার দোকান থেকে হরিপদকে বাদ দিলে গ্রামে এসে সে উলটো খবিরুদ্দির বিরুদ্ধে কথা ছড়িয়েছে, ‘হালার পুত হালা বাঙ্গু, অয় তো ইলেকট্রিকের কামকাইজ জানে না – আমারে কী কাম শিখাইব? মাইনসের বাইত্তে কাম করবার গেলে কাম করবো কি খালি মাইয়াগো দিকে কুনজরে তাকায়া থাকে, টেকা-পয়সা খরচা কইরা খালি মাইয়াগো ভাও করনের ধান্ধা করে।’

ফইজুলকে অত সকালবেলা নিজের দোকানে দেখে হরিপদ একটু অবাকই হয়,

‘ফইজুল এতো সক্কাল সক্কাল? রাইতে ঘুম আহে নাই -’

‘এতো কথা মারাইছ না হইরা’ বলে ফইজুল চোখেমুখে বিরক্তি ফুটিয়ে তোলে, ‘হইরা, এই ধনের ব্যাটারিটা তর এহানে রাইখা গেলাম – ঠিক কইরা রাখিছ। বিকালে আয়া লয়া যামু নে।’ ফইজুল ব্যাটারির দিকে তাকিয়ে দাঁত কিড়মিড় করতে থাকে যেন ওর সব রাগ ওই ব্যাটারির ওপর।

ফইজুল ব্যাটারি নিয়ে হরিপদর সঙ্গে আর কথা বাড়ায় না। ব্যাটারিটা হরিপদকে বুঝিয়ে দিয়ে ফইজুল দোকান থেকে বেরিয়ে জগার দোকান থেকে গোটা চারেক গরম পরোটা আর বুটের
ডাল-ভাজি নিয়ে ঘরের দিকে পা বাড়ায়। ফইজুল পারে তো কাল রাতেই ব্যাটারি সারাই করতে হরির দোকানে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু অত রাতে হরিপদ তো আর ফইজুলের জন্য দোকান খোলা রেখে ভেরেন্ডা ভাজবে না।

 

 

কয়েকদিন ধরে ব্যাটারিটা ঠিকমতো কাজ করছিল না। বাংলা সিনেমা দেখার সময় বলা নেই কওয়া নেই হুট করে প্রথমে ঘের-ঘের ধরনের একটা বিশ্রী আওয়াজ তোলে ব্যাটারিটা, তারপর কিছুক্ষণ জিরোয়, শেষে চুপসে যাওয়া টাইপের ভরভরভর শব্দের আওয়াজ তুলে কেমন নেতিয়ে বসে যায়। যে-মুহূর্তে ব্যাটারিটা ওরকম শব্দ করে নেতিয়ে বসে পড়ে তখন ফইজুলের যে কী অবস্থা হয়। একেবারে ছ্যাড়াব্যাড়া অবস্থা। ব্যাটারি বসে গেলে ফইজুলের যত না মেজাজ খারাপ হয় তার চেয়ে শত-সহস্র গুণ মেজাজ খারাপ হয় ফুল্লরা বেগমের। ব্যাটারিটা অমন করে বসে গেলে ফুল্লরা বেগমের বাংলা সিনেমা দেখার বারোটা বাজে আর তখনই সে খ্যাকখ্যাক করে ফইজুলের ওপর হামলে পড়ে,

‘লস্করের পো লস্কর কি একখান ধনের ব্যাটারি আনছে – সিনেমার কাহিনি যহন উত্তেজনার চরমে ওঠে, তহন বালটা ধ্বজভঙ্গের মতো নেতায়া পড়ে।’ ফুল্লরা বেগম ফইজুলের দিকে তাকিয়ে একটু বিরতি নেয়। তারপর ফইজুলের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলে, ‘যেমুন তার মালিক হেমুন তার ব্যাটারি।’

ফইজুল ভেবে পায় না ফুল্লরা বেগম কেন তাকে সামান্য এক ব্যাটারির সঙ্গে এক করে দেখে। সে কি ব্যাটারি! ফুল্লরা বেগমের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর সময় সে যখন চরম অবস্থায় উপনীত হয় তখন কি সে ব্যাটারির মতো ওরকম শব্দ করে নেতিয়ে পড়ে? না, নেতিয়ে পড়ার সেরকম কোনো ইতিহাস ফইজুলের এই জীবনে আছে বলে সে স্মরণে আনতে পারে না। ফইজুল সেরকম ব্যাটসম্যান নয়। বাছবিচার নেই, ফইজুল ভালোমন্দ পিচ পেলে আশি-নববই রান না তুলে ক্ষান্ত হয় না। বন্ধুমহলে তাই ফইজুলের নাম হয়েছে বিরাট কোহলি। ফইজুল অবশ্য দাড়িবিহীন ব্যাটসম্যান। তাহলে ফুল্লরা বেগম কেন কারণে-অকারণে ফইজুলকে ব্যাটারির সঙ্গে তুলনা করে তার মান-ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে?

ফুল্লরা বেগমের কথায় ফইজুল উত্তর দেয় না। তবে মনে মনে বলে, ‘আরে মাগি আমারে তুলনা করবি তো কর একটা ভালো ব্যাটারির লগে কর। নেতাইনা ব্যাটারির লগে কি ফইজুলের তুলনা হয় রে, বদের হাড্ডি বদ -’

‘ক্যা তুমি কি আমারে দেখছো কারো লগে কাম করণের সময় কাম শেষ না কইরা আমি ব্যাটারির মতন নেতায়া পড়ছি?’

কথাটা ফইজুলের মুখের আগায় এসে গিয়েছিল। কিন্তু সে না বলে চেপে গেল। তবে ভেতরে ভেতরে ফইজুল ফুল্লরার ওপর  ফুঁসতে থাকে। ফইজুল মনে মনে বলে, ‘আইজকা আমার অবস্থা আগিলা দিনের মতো বালা থাকলে তোর মতন মাগিরে আমি ঘরের দাসী-বান্দি কইরাও রাখতাম না।’ না, না তা হবে কেন? ফইজুল আবার নিজেই নিজেকে সংশোধন করে, ‘তরে আমি ঘরে রাখতাম ঠিকই তয় বউ হিসাবে না, খালি মজা লওনের লাইগা ঘরের আলনায় সাজায়া রাখতাম। মানুষজন আয়া তরে দেখত আর মজা লইত -’

ফইজুল কথাগুলো মনে মনে বলল আর নিজের ভেতর এক ধরনের সুখানুভূতির তৃপ্তিতে হাসতে থাকল। সে-হাসি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। ফইজুলের বুকের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়, ‘ফুল্লরা বেগম, দিনটা খালি আমার লগে নাই রে। থাকলে তরে যে আমি কী করতাম -’

 

তিন

বাইরে থেকে দেখে বোঝা না গেলেও বয়স অনুযায়ী ফুল্লরা বেগমের শরীরস্বাস্থ্য বেশ টাইটফিট। ফুল্লরা বেগমের শরীরস্বাস্থ্যের বিষয়টি যদি সিমেন্টের সঙ্গে তুলনা করা যেত তাহলে ফইজুল কোনো কথা বাড়তি খরচ না করে চোখ বন্ধ করে এক নিশ্বাসে বলত, ‘ফুল্লরার শইলের গঠন-গাঠন সাত ঘোড়া সিমেন্ট কোম্পানির মতন।’
ফুল্লরার দেহবল্লরী দেখার মতো। তার ভরভরন্ত দেহসৌষ্ঠব দেখলে যে কারোরই মনে হবে ফুল্ল­রার বয়স বুঝি সেই কতকাল ধরে পঁচিশ-তিরিশের ঘরে ঘুরপাক খাচ্ছে; কিন্তু তলে তলে সে যে চলিস্নশ পেরিয়েছে বছরতিনেক আগে সে-কথা কে বলবে!

ফইজুল এ-বিষয় নিয়ে আর ফুল্ল­রা বেগমের সঙ্গে কথা বাড়ায় না। সে জানে, ফুল্ল­রার সঙ্গে এ-ব্যাপারে কথা বাড়িয়ে খুব একটা সুবিধা করা যাবে না। কারণ ফুল্ল­রার মুখের ভাষার যে ছিরি সে ভালো করেই তা জানে। কথা বলার সময় ফুল্লরার কথাবার্তার কোনো ঠিকঠিকানা থাকে না। বাজে আর অশস্নীল খিস্তিখেউর সবসময় তার মুখের ডগায় এসে সাপের মতো ফণা তুলে বসে থাকে। ফুল্লরা কখন কোন পরিস্থিতিতে কী কথায় কী বলে ফেলবে সেটা সে নিজেও জানে না। গ্রামের মানুষজন ভালো করেই জানে, ফুল্ল­রার মুখের গালাগাল শুনলে পোয়াতি মেয়েছেলেকে প্রসবের জন্য আর দাইয়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মেয়েমানুষের প্রসব-বেদনা উঠলে শুধু কষ্ট করে ফুল্লরা বেগমকে খবর দিয়ে এনে প্রসূতির পাশে বসিয়ে দিলেই হলো। ফুল্লরা বেগম গালি শুরু করার পর সেই গালি শুনলে পেটের বাচ্চা আর পেটে থাকতে চাইবে না। পেটের বাচ্চা হয়েছে বলে কি তার লজ্জাশরম থাকতে নেই!

আজেবাজে গালাগাল যে ফইজুল জানে না বা করে না তা নয়, তবে ফুল্লরার মতো সে কখনো ওরকম করে গালাগালের কাজটা করতে পারে না। ফুল্লরার মতো গালাগাল করার কাজটি ফইজুল বারকয়েক চেষ্টাচরিত্তির করে দেখেছে; কিন্তু তার মুখে ফুল্লরার মতো আজেবাজে কথাবার্তা ঠিক আসে না। এসব কারণে ফইজুল ফুল্লরার ভরভরন্ত দেহবল্লরীর চেয়ে ওর মুখকে বেশি সমীহ করে।

ফইজুল হরিপদর দোকানে ব্যাটারি আনতেই যাচ্ছিল। আলুক্ষেতের সীমানা শেষ হলে একটা ভাঙাচোরা কাঠের পোল আলুক্ষেত আর পাকা সড়কের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে দাঁড়িয়ে আছে। সড়কের পাশে খোলা জমিন, সেই জমিনের পাশ দিয়ে একটা মরা খাল তিরতিরিয়ে হাঁটে কি দৌড়ায় কি বসে থাকে বোঝা যায় না। সড়ক ঘেঁষে বয়ে যাওয়া সেই খালের ওপর হরিপদ বেশ কেরামতি করে লম্বা সিমেন্টের পিলার খাড়া করে দিয়ে তার ওপর টিনের ঘর বানিয়েছে। আম-কাঁঠালগাছের তক্তা দিয়ে ঘরের মেঝে দিয়েছে। বুদ্ধি করে খালের দিকে মুখ খোলা রেখে ছোট ছোট দুটো জানালাও হরিপদ রেখেছে। শহর থেকে গ্রামের গণ্যমান্য লোকজন গ্রামে এলে হরিপদর চায়ের দোকানে ঢুকে চা খায়। কাস্টমার কম থাকলে কেউ কেউ আবার ভাবের আবেশে জানালার ধারে শুয়ে বাইরে চোখ মেলে সিগারেট ধরিয়ে হরিপদর প্রশংসা করে, ‘হরিপদ তুমি তো মিয়া দোকানটারে আস্তা একখান লঞ্চ বানায়া ছাড়ছো। এহানে বয়া মনে লয় আমি বুঝি লঞ্চে চইরা মাওয়া থিকা জাজিরা যাইতাছি। না মিয়া তোমার রুচির তারিফ করণ লাগে। তুমি মিয়া রোমান্টিক আছো -’

ফয়জুল হরিপদর দোকানের সামনে চলে আসে। সে দেখল হরিপদ খুব ব্যস্ততার সঙ্গে চার কাপ চা বানাচ্ছে। টুংটাং শব্দ হচ্ছে। দোকানে চারজন উঠতি বয়সের ছেলেমেয়ে। দুজন ছেলে, দুজন মেয়ে।

হরিপদ ফইজুলকে দেখে বলল, ‘তোমার মাল রেডি।’

দোকানের ভেতর বসে থাকা গোঁফদাড়িতে মুখের অর্ধেকটা ঢেকে থাকা ছেলেটা সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে পাশে বসে থাকা মেয়েটার দিকে তাকাল, তারপর একটা দুষ্টুমির হাসি হেসে বলল,

‘মামা কী বুঝলা?’

‘মাম্মা, যা বুঝনের আমি বুইঝা লিছি -’ বলে মেয়েটা হাসল আর তাতেই তার সারাশরীর পাইন্যা সাপের মতো হিলহিল করে কেঁপে উঠল।

‘তোমার মাল রেডি’ – অন্য সময় হলে ফইজুল হয়তো হরিপদর মুখে এ-কথা শুনলে লজ্জা পেত না। কিন্তু এই বিকেলবেলায় কেন যেন ফইজুল হরিপদর কথায় ভীষণ রকমের কুঁকড়ে গেল লজ্জায়।

ফুল্লরা বেগমের সামনে যেরকম হয় এখন ঠিক সেই রকমের অবস্থার মধ্যে পড়ল ফইজুল। তার মুখ দিয়ে কথা বেরোল না। সে শুধু উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকল। মাঝে মাঝে মানুষের এরকম হয়।