আরো একটা পহেলা বৈশাখ ফিরে এলো। ভোরের হাওয়ায় রমনা বটমূলের পাতা ঝিরঝির করে কাঁপছে। গাছ থেকে টুপটাপ করে পাতা খসে পড়ছে ঘাসের ওপরে – স্টেজের ওপরে সাদা শাড়ি পরে মাথায় বেলি ফুলের মালা দিয়ে মেয়েরা সারি সারি বসে আছে, আর ছেলেরা সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরে, সমবেত কণ্ঠে গান গাইছে – ‘আনন্দধ্বনি জাগাও গগনে …।’ তাদের গায়েও একটা-দুটো অশ্বত্থ পাতা ঝরে পড়ছে।
সামনে আসন পেতে গান শুনছেন শ্রোতারা। লাল পেড়ে সাদা শাড়ি পরে নবীনা মেয়েরা, নানা বয়সের মানুষ – ছোট থেকে বৃদ্ধ – কারো হাতে পাখা। বৈশাখের সকালে সূর্যের তাপ ক্রমে বাড়ছে। অনুষ্ঠান যখন সাঙ্গ হলো, সব গান যখন থেমে গেল, তখন দূরপানে দৃষ্টি যেতেই দেখলাম – তিনটি আসন পাশাপাশি – একটাতে মফিদুলভাই (মফিদুল হক) বসে আছেন, একটাতে মিনু আপা (নাসিমুন আরা হক) আর মাঝখানের আসনটা ফাঁকা – যাঁর বসবার কথা ছিল তিনি আজকে উপস্থিত নেই – অনেক দূরে চলে গেছেন, যেখান থেকে আর কখনো ফিরবেন না।
হাসনাতভাই আপনার জন্য ওই আসনটি চিরদিন এমনি ফাঁকা থাকবে – কেউ সেই জায়গা পূরণ করতে পারবে না। আপনার আশেপাশে যারা ছিল, যাঁরা আপনার অত্যন্ত কাছের মানুষ, যারা দূরে থেকেও আপনাকে আপন করে পেয়েছে – সবাই গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে, অনেক ভালোবাসা দিয়ে আপনাকে মনে করবে চিরদিন। আপনি ভালো থাকবেন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.