হাসনাতভাই স্মরণে

অক্টোবরের উনিশ তারিখের দিকে খবর পেলাম লুভার কাছ থেকে যে, হাসনাতভাইয়ের শরীর খুব খারাপ করেছে। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একটা সময় ছিল সব রকম আশংকার ভেতর দিয়েও আশা করতাম চিকিৎসাধীন মানুষটা সুস্থ হয়ে আপনজনের কাছে ফিরে আসবেন। পরপর কয়েকটা মৃত্যু আমার সেই সাহসের জায়গাটা নড়িয়ে দিয়েছে। সুপ্রিয়কে দিয়ে এই ভীতির শুরু। এরপরে ভীষণ ধাক্কা খেলাম মুক্তিযোদ্ধা বন্ধু তারিকের চলে যাওয়াতে। তাই হাসনাতভাইকে নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় কাটল দিনটা। তবে সেই উদ্বেগের কিছুটা উপশম ঘটাল বন্ধু মিনুর বার্তা যে, ঠিকই হাসনাতভাইয়ের শরীর খুব খারাপ হয়েছিল, কিন্তু চিকিৎসকরা বলেছেন একটু সময় নিলেও সুস্থ হয়ে ওঠারই সম্ভাবনা দেখছেন তাঁরা। নভেম্বরের এক তারিখ খবর পেলাম হাসনাতভাই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন ওইদিন সকালবেলা। 

হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে। ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত আমার কোনো বন্ধুর মাধ্যমে একদিন এক সভায় আমন্ত্রণ পেলাম। জানলাম সভাটি সংস্কৃতি সংসদ বলে বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের।  আমি যেহেতু কখনো কোনো রাজনৈতিক দল বা তৎসংশ্লিষ্ট ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না তাই একটু অবাকই হয়েছিলাম এই আমন্ত্রণে। সংস্কৃতি সংসদ  যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির অঙ্গসংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন পরিচালিত একটি প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন সেটুকু খবর রাখতাম।  ঔৎসুক্য নিয়েই গেলাম। সভায় গিয়ে প্রথমে মতিভাইয়ের সঙ্গে (প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান) কথা হলো। সংসদের কমিটি গঠন হলো। সেই কমিটির সভাপতি হলেন হাসনাতভাই, আবুল হাসনাত। সাধারণ সম্পাদক পদে নাম ঘোষিত হলো মাহফুজ আনামের। চমকে গেলাম যখন সহ-সাধারণ পদে আমার নাম উল্লিখিত হলো। অন্য সদস্যরা সবাই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আসাদুজ্জামান নূর, মাসুদা মতিন, শিরীন হক, আহরার আহমদ, মিলিয়া গনি (আলী), বাশারত আলী, ইকবাল আহমদ, এদের কথা বেশি করে মনে আছে। সদ্যপ্রয়াত মুনীরুজ্জামানও ছিলেন আমাদের সঙ্গে। একঝাঁক নিবেদিতপ্রাণ কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সংস্কৃতি সংসদের কার্যক্রম সংক্রান্ত সব উদ্যোগে মূল ভূমিকাটা অবশ্যই  অবধারিতভাবে নিতেন হাসনাতভাই, কিন্তু একেবারে নেপথ্যে থেকে। 

হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বটা সংস্কৃতি সংসদের সূত্র ধরেই। আমি যে-সময়ের কথা বলছি তার আগেই বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সোভিয়েত ও চীনপন্থী হিসেবে দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে। সংস্কৃতি সংসদের ওপর তার প্রভাব পড়ে। সেই সংগঠনও দ্বিধাবিভক্ত। আমরা যুক্ত ছিলাম যে-অংশটি সংস্কৃতি সংসদ (মতিয়া গ্রুপ) বলে পরিচিত ছিল তার সঙ্গে। তবে আমি যেহেতু ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম না, সময়ে সময়ে আমার ছাত্র ইউনিয়নের বাধ্যবাধকতার বাইরে থাকার বিষয়টা মেনে নিতে হাসনাতভাইয়ের কষ্ট হতো। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা মেনে চলার ব্যাপারে হাসনাতভাই ছিলেন একেবারে একনিষ্ঠ। তাই মাঝে মাঝেই এসব ক্ষেত্রে হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে আমার একটু মতবিরোধ হয়ে যেত। সংস্কৃতি সংসদের অনুষ্ঠান কেমন হবে, বক্তা কারা কারা হবেন – সেসব নিয়েও প্রচুর তর্ক-বিতর্ক হতো আমাদের। সভাপতি হয়েও সেই কারণে আমার প্রতি যদিও কখনো অসন্তুষ্ট হতেন, বিরূপ হননি কদাচ। ব্যক্তিগত পর্যায়ে হাসনাতভাইকে আমি পেয়েছি অত্যন্ত সংবেদনশীল একজন প্রিয় বন্ধু হিসেবে। হাসনাতভাই ছিলেন একটু লাজুক প্রকৃতির,  নিভৃতচারী, শান্ত, একেবারেই প্রচারবিমুখ। তাঁকে দেখেছি গভীর সাহিত্যানুরাগী একজন কবি হিসেবে। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় তাঁর পড়া ভালোলাগা বইয়ের কথা উঠতই। তাঁর পছন্দের সাহিত্যিকদের, শিল্পীদের প্রসঙ্গ টানতেন। স্পষ্টতই তাঁর তালিকায় সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় অভিষিক্ত লেখকদের স্থানই ওপরের দিকে থাকত। মনে পড়ে আমার এক জন্মদিনে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা সমগ্র উপহার পেয়েছিলাম। সেই সময় বেশ কটা দিন হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ হয়েছিল। অবধারিত কারণেই হাসনাতভাই খুব আবেগপ্রবণ হয়ে যেতেন মানিকের লেখা নিয়ে। সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা আমাদের দুজনেরই প্রিয় ছিল। রবীন্দ্রনাথ তো ছিলেনই। চলচ্চিত্রের আলোচনায় প্রসঙ্গক্রমে সত্যজিৎ-ঋত্বিকের কথা উঠে আসত। অযান্ত্রিক, অশনি সংকেত নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ – আরো কত স্মৃতি। আমরা চলচ্চিত্র সংসদের সুবাদে তখন প্রচুর দেশি-বিদেশি সিনেমা দেখতাম। সোভিয়েত রাশিয়া, পোল্যান্ডের সিনেমার জন্য ছিল আমাদের এক ভিন্নমাত্রার ভালো লাগা। ধ্রুপদী চলচ্চিত্রের প্রতি আকর্ষণ। একই সঙ্গে দেশজ-আন্তর্জাতিক নাটক, সংগীত, কবিতা, চিত্রকলা সবকিছুতেই জীবনের স্বপ্ন, মানুষের উত্তরণের ইঙ্গিত পেতে উদগ্রীব তখন আমরা। দেখতে দেখতে  সময় আমাদের ঊনসত্তরের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিলো। সে আর এক উন্মাদনা। দিনরাত্রি মিটিং-মিছিল আর সাংগঠনিক কাজ। সংস্কৃতি সংসদের প্রতি বৈরী শক্তিগুলিও সক্রিয় হয়ে উঠল তখন। প্রতিপদে বাধা। একদিকে মোনায়েম খানের এনএসএফ বাহিনীর দাপট, অন্যদিকে অনুমতি, অনুমোদন নেওয়ার হঠাৎ বাধ্যবাধকতায় সংসদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াল। তখনকার যে-কোনো প্রগতিশীল কর্মকাণ্ডকেই আইয়ুব-মোনেম শাসনের বিরুদ্ধে বলে ধরে নেওয়া হতো। বস্তুত ছিলও তাই। সেই লক্ষ্যে প্রতিদিনই নতুন কিছু ঘটছে। নতুন পোস্টার, নতুন প্ল্যাকার্ড, নতুন কবিতা বা গান লেখার আর বাছার তাগিদ। কোথাও জড়ো হয়ে বা বসে কাজ করা ক্রমশই বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। সরকারি গোয়েন্দা বা অন্য বাহিনীর কেউ  যে-কোনো সময় ঢুকে যেতে পারবে না এই সুবিধাটুকু থাকার এবং একই সঙ্গে মা সুফিয়া কামাল ও বাবা কামালউদ্দীন খানের প্রশ্রয়ের কারণে অনেক কাজ আমাদের বাড়িতে সমাধা করার ব্যবস্থা হতো। যাঁরা সে-সমস্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন বত্রিশ নম্বরে ছিল তাঁদের প্রায় নিত্য আনাগোনা। হাসনাতভাই ছিলেন তাঁদের একজন। আমাদের বাড়ির আঙিনার পেয়ারা গাছটার নিচে বসতে ভালোবাসতেন হাসনাতভাই। মিটিং-মিছিলের আলোচনার ফাঁকে হাসনাতভাই ক্বচিৎ কখনো তাঁর ব্যক্তিগত অনুভূতির কথাও বলতেন।  অত্যন্ত শান্ত, কিন্তু তীব্র অনুভূতিপ্রবণ মানুষ হিসেবে যে-কোনো অসংগতি, অনিয়ম দেখলে আহত হতেন, নিজের মনের কথা সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারতেন না সবসময়, তাই অনেক বিষয়েই  নীরবে কষ্ট পেতে দেখেছি তাঁকে। কবিতা লিখতেন মাহমুদ আল জামান ছদ্মনামে। সেও ছিল প্রখর অথচ সূক্ষ্ম বোধসম্পন্ন এক অন্তর্মুখী কবির লেখা।

ঊনসত্তরের গণআন্দোলনে আইয়ুবশাহির পতন ঘটল। যদিও আর এক সামরিক শাসকের হাতেই ক্ষমতা স্থানান্তরিত হলো, নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিতে সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক ধরনের আশা সঞ্চারিত হলো।

সংস্কৃতি সংসদের মাধ্যমে সাধারণের কাছে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা পৌঁছে দেওয়ার দায়ও যেন বেড়ে গেল। সত্তরের পহেলা বৈশাখে রক্তকরবী নাটক মঞ্চস্থ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন উপাচার্য সে-খবর পেয়ে আমাদের পাঠিয়ে দিলেন রাও ফরমান আলীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আসতে। যে তিনজনকে যেতে হয়েছিল তার মধ্যে ছিলাম হাসনাতভাই, মাহফুজ আনাম এবং আমি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক নিজে তাঁর ছাত্রদের সুরক্ষার দায়িত্ব না নিয়ে ঠেলে দিয়েছিলেন বাঘের মুখে। যাই হোক, আমরা অনুমতি আদায় করে এনেছিলাম এবং রক্তকরবী মঞ্চস্থ হয়েছিল যদিও সেনা গোয়েন্দা বাহিনী নজরদারি করতে ছাড়েনি।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো। আমরা যার যার মতো করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম। হাসনাতভাইও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে অনেকের সঙ্গেই আর আগের মতো একসঙ্গে চলা হয়নি। হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে আবার দেখা হলো  সংবাদ পত্রিকার সুবাদে। সংবাদের সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে মা সুফিয়া কামালের কাছে লেখার অনুরোধ নিয়ে আসতেন। আমাদের জীবনধারা অবশ্য ভিন্ন ভিন্ন দিকে ধাবিত তখন। দু-চারটা কথা হয়েছে দেখা হলে –  এই পর্যন্তই। এর মধ্যে আমরা সংসারী হয়েছি যার যার মতো। হাসনাতভাইয়ের জীবনসঙ্গিনী হলেন সহপাঠী মিনু (নাসিমুন আরা হক)। আমাদের বন্ধুত্ব ভিন্ন মাত্রা পেল। তবে আমি রাজধানী ছেড়ে কখনো সিলেট কখনো বিদেশ থাকাতে মাঝখানে বহুদিন হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে তেমনভাবে যোগাযোগ আর ছিল না। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ের হতাশা পরস্পরের সঙ্গে এই বিচ্ছিন্নতাকে আরো এক অদ্ভুত পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল যেন। এর বেশ কিছুদিন পরে রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের মাধ্যমে আবার আমাদের একসঙ্গে কাজ করা শুরু। রাজনীতি নিয়ে তখন আমাদের আশা-নিরাশার পারদ সদা চঞ্চল। রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যন্ত প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির প্রসার ও চর্চা বৃদ্ধির উদ্যোগে শামিল হওয়া নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাঁড়াল। এখানেও হাসনাতভাইয়ের ভাবনাচিন্তা আর সুচিন্তিত পরামর্শ বরাবরের মতোই অপরিহার্য ভূমিকা রেখেছে। অত্যন্ত বিষাদক্লিষ্ট মনে একসময় হাসনাতভাই সংবাদ ছেড়ে কালি ও কলম পত্রিকার সম্পাদক হয়েছেন। সংবাদ ছাড়ার মন খারাপের কথা একদিন বলেছিলেন আমাকে।  এর মাঝে গণসাহিত্য বলে একটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের কবিতা সংকলন ও ছায়ানটের ওপর গ্রন্থের সম্পাদনার দায়িত্ব পালনকালে আমার সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করেছিলেন। কবিতা সংকলনের জন্য মায়ের কবিতা বেছে দিতে আর ছায়ানটের সংকলনে আমি যেন একটা লেখা দিই সেই কারণে। 

হাসনাতভাইয়ের চরিত্রের একটা বৈশিষ্ট্য ছিল – সুপরিচিত  লেখকদের  সঙ্গে অল্প চেনা, অচেনা লেখকদেরও লেখা ছাপা। তাদের উৎসাহিত করাটাও  হাসনাতভাই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতেন। নানা মতের মানুষের লেখাও তিনি সাদরে গ্রহণ করতেন।  কালি ও কলম নবীন লেখকদের সম্মাননার আয়োজন স্বাক্ষর রাখে যে, নতুনদের সাহিত্যচর্চার প্রতি হাসনাতভাই কত যত্নবান ছিলেন। আমার অনুজা সাঈদা কামালের কবিতা কালি ও কলমে ছেপেছেন আগ্রহভরে। মনে পড়ল, আমার শাশুড়িমা ওয়াহিদভাইয়ের (ওয়াহিদুল হক) মৃত্যুর পর একটা লেখা লিখেছিলেন। খবর জেনে হাসনাতভাই সে- লেখাটা খুঁজে এনে কালি ও  কলম বিশেষ সংখ্যায় ছাপিয়েছিলেন। 

বছর কয়েক আগে আমাকে ছায়ানটের কার্যকরী পরিষদে স্থান দেওয়া হয়েছিল। হাসনাতভাই দীর্ঘদিন ধরে একজন উচ্চমানের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে ছায়ানটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ছায়ানট-সংক্রান্ত কাজে আবার হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে মাঝে মাঝে দেখা হয়েছে। আগের মতোই পিছনে থেকে সব কর্মকাণ্ডে, অনুষ্ঠানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আমার মনে হয় কিছু বিশেষ কাজে কিছু কিছু মানুষের বিকল্প থাকে না। হাসনাতভাই ছায়ানটের জন্য তেমনই একজন ছিলেন। গভীর মমতা আর নিষ্ঠাভরে তিনি প্রতিটি সভায় তাঁর মতামত আর সিদ্ধান্ত জানাতেন, যা থেকে ছায়ানট উপকৃত হয়েছে যারপরনাই। ছায়ানটের সর্বশেষ সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানলাম, হাসনাতভাই অন্যতম সহসভাপতি হিসেবে প্রাক্তন হয়েছেন। এই সিদ্ধান্তে খটকাটা প্রকাশ না করে পারলাম না। এর আগেও শুনেছি তাঁর পছন্দের দল তাঁকে যথাযথ মর্যাদা দেয়নি অনেক সময়ই। হাসনাতভাই এমনই একজন মানুষ ছিলেন, যিনি তাঁর প্রতি এরকম অনেক অবিচার, অন্যায্য আচরণ মেনে নিয়েছেন গভীর বেদনা নিয়েও। সেটা তিনি করেছেন তিনি দুর্বল ছিলেন বলে নয়, তিনি অন্যের অন্যায় আচরণকে অবজ্ঞা করতে পারতেন আপন অন্তর্নিহিত শক্তিবলে।  হাসনাতভাইয়ের মৃত্যু আমাকে ব্যথিত করেছে শুধু একজন বন্ধু হারালাম বলে নয়, বাংলার মানুষ হারাল একজন নিষ্ঠাবান, শক্তিমান অথচ মমতাময় একজন সমাজকর্মীকে।