রাহমান ওয়াহিদ
কারো কারো চোখে প্রজাপতি বসলে কারো চোখ থেকে পিঁপড়ের বিষ উপচে পড়ে – যেন দহনে কালো হোক প্রজাপতির পেলব ডানা। আমার পাঁজরের খোলেও এক আদিম জিঘাংসা কার যেন বুক এফোঁড়-ওফোঁড় করে আর ক্ষরিত রক্ত ঝরে জমাট বাঁধে আমারই হৃৎপিন্ডে। ক্ষুধা নিবৃত্তিতেও কার যেন মাংসাশি দাঁত হলকুম কামড়ে ধরে, যেন গিলতে না পারি হেমলকও সহজে।
অথচ আমার জন্মই হয়েছিল কী চমৎকার পারিজাত বাগানে, আশ্বিনের জোনাকি সন্ধ্যায়, হারিকেনের টিমটিমে আলোয়। এখন চারপাশের আয়নায় এতো যে তীব্র আলোর আলিম্পন – মানুষের অবয়ব চোখেই পড়ে না, নিজেকেও দেখি এক উদ্ভট ইতরের বাচ্চা যেন। একদা ভরাট জরায়ু চিরেই তো সুন্দরের নগ্নতা দেখেছি আমি। হাহাকারের অন্তর্লীন গহবর থেকে ছলকে উঠেছে আলোকঝরা নদীর স্পন্দিত দুধার। তবুও কী করে যেন ভুলে যাচ্ছি শৈশবির সাঁতারি পুকুর, হৃদিপদ্ম শিরিন – তোমাকেও, ভুলে যাচ্ছি রোদ জোছনার সমুদ্রবিহার।
এতো বিষ, এতো জিঘাংসা, এতো বমন নিয়ে কী করে তাহলে বানাবো আত্মস্থ কবিতা, কী করে বলবো যে, ভালোবাসা তোমাকেও একটু নেমে আসতে হবে মৃত নক্ষত্রের বিপন্ন এই নগ্ন শহরে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.