আহমাদ মোস্তফা কামাল

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

    পর্ব : ৮ সকালে ঘুম ভাঙতেই অবন্তির মনে হলো, আজ সে কোথাও যাবে না। অবশ্য অংশু আর ঋভুর সঙ্গে আড্ডায় যাওয়া ছাড়া গত কয়েক দিনে অন্য কোথাও যায়ওনি সে। আজ ওদের কাছেও যাবে না। ঘুম ভাঙার পর প্রথম অনুভূতিটা এরকম হলো কেন, এ নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলো অবন্তি। রাতের কথা মনে পড়লো। ঋভুর বাসায় আড্ডা, আকস্মিক…

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

    পর্ব : ৭ অবন্তি আর অংশু চলে যাওয়ার পরও ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে রইলো ঋভু। এখান থেকে রাস্তার বেশ খানিকটা দেখা যায়। ওদের গাড়িটা চোখের আড়াল হয়ে যাওয়ার পর কেমন এক শূন্যতাবোধ গ্রাস করলো ঋভুকে। নিজেকে একা আর নিরালম্ব মনে হলো। এরকম হওয়ার কথা নয়। একা থাকতে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে সে। সত্যি বলতে কী, এরকম নিঃসঙ্গ…

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

    পর্ব : ৬ অবন্তিকে পৌঁছে দিয়ে ফেরার সময় অংশুর ইচ্ছে করছিল আরো কিছুক্ষণ পথে পথে ঘুরে বেড়াতে। শহরের নানা প্রান্তে তার নকশায় নানা স্থাপনা তৈরি হয়েছে। মাঝে মাঝে সে একাই বেরোয় সেসব দেখতে, সাধারণত মাঝরাতে, যখন কেউ থাকে না আশেপাশে। কখনো-বা অপলাও সঙ্গে থাকে। একেকটা ভবন বা স্থাপনা সে অনেকক্ষণ ধরে দেখে। ভাবে, যা সে…

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

    পর্ব : ৫ ডিনারের পর অবন্তি যখন গভীর মনোযোগ দিয়ে ঋভুর সংগ্রহ করা ছবিগুলো দেখছিল আর ঋভু গিয়ে ওর পাশে দাঁড়িয়েছিল, অংশু দূরে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্যটির দিকে কতক্ষণ মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে ছিল। ঋভু ফিসফিস করে কথা বলছিল আর অবন্তি কান নামিয়ে এনেছিল ওর কাছে। কী সুন্দর একটা দৃশ্য, কী দারুণ মানানসই একটা জুটি! কেন যে…

  • জলের অক্ষরে লেখা

    জলের অক্ষরে লেখা

    যদি এই চিঠি তোমার কাছে পৌঁছে থাকে, তাহলে দয়া করে একটু জানাও। তোমার যে ভুলোমন, এখনই জানাও প্লিজ, নইলে ভুলে যাবে। – এই কথা লেখা ছিল চিঠিতে। নিচে নাম লেখা  লুসিয়া। এই নামের কাউকে ঋভু চেনে না, যদিও তারই ঠিকানায় এসেছে চিঠিটি। অবশ্য একে চিঠি বলা যায় না, অন্তত কেউ আর চিঠি শব্দটি ব্যবহার করে…

  • তাঁর স্নেহসিক্ত কণ্ঠস্বর

    তাঁর স্নেহসিক্ত কণ্ঠস্বর

    হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল সম্ভবত ১৯৯৫ সালের শেষে অথবা ১৯৯৬ সালের শুরুর দিকে। তখন তিনি দৈনিক সংবাদের সাহিত্য সম্পাদক আর আমি বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণ লেখক। সংবাদের সাহিত্য সাময়িকী তখন ভীষণ আলোচিত, আকর্ষণীয়, সুপরিকল্পিত, সুসম্পাদিত, অভিজাত সাহিত্যপাতা। সংবাদপত্র হিসেবে দৈনিকটির ততটা জনপ্রিয়তা না থাকলেও সাহিত্যামোদী পাঠকরা বৃহস্পতিবারের সাময়িকীর জন্য অপেক্ষা করতেন এবং অতি অবশ্যই সংগ্রহ করতেন।…

  • পাতাদের সংসার

    পাতাদের সংসার

    অনেকদিন আগে পথিক এ-বাড়িতে প্রথম এসেছিল নিতান্তই খেয়ালের বশে। তখন তার ছিল হাঁটার ‘ব্যারাম’, অন্তত লোকে তাই বলতো। শহরময় অবিরাম হেঁটে বেড়াতো সে, মনে হতো যেন নিজের নামকরণের সার্থকতা প্রতিপন্ন করতে চাইছে – পাঁচ-দশ মিনিটের বেশি বসতো না কোথাও, যেন উদ্ভ্রান্তের মতো খুঁজে বেড়াচ্ছে কোনো কিছু, এমনই ছিল তার হাঁটার ভঙ্গি। আসলে কী খুঁজতো সে?…

  • দাগ

    দাগ

    এই বিদেশ-বিভুঁইয়ে হঠাৎ দেখা হয়ে গেল তাদের। পাঁচতারা হোটেলের দীর্ঘ ও প্রশস্ত করিডোর, একপাশে সারিবাঁধা রুম, অন্যপাশটা খোলা। করিডোর না বলে ব্যালকনি বলাই ভালো। সেখানে রেলিংয়ে দুই হাত রেখে দাঁড়িয়ে ছিল সে। দূরে তাকিয়ে ছিল, অনেক দূরে, কী ভাবছিল জানে না কেউই। এই করিডোর ধরেই সিঁড়িতে যেতে হয়, কিংবা লিফটে। শায়লাও যাচ্ছিল। ডিনারের সময় হয়ে…

  • সেইসব পলায়নের গল্প 

    সেইসব পলায়নের গল্প 

    দশ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে পান আপনি? – এরকম একটা প্রশ্ন করা হয়েছিল আমাকে, ইন্টারভিউ বোর্ডে, অনেক বছর আগে। আমি তখন তরুণ ছিলাম, প্রথমবারের মতো চাকরির চেষ্টা করতে গিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলাম সেই ইন্টারভিউ বোর্ডের। সেখানে যারা ছিলেন সবাই মিলে যেন পণ করেছিলেন – কোনো অবস্থাতেই হাসবেন না। গম্ভীর-ভীতিকর সেই পরিবেশে প্রশ্নটি ছিল আমার কাছে…