তমিজ উদ্দীন লোদী
-
আমার কবিতা হোক
আমি আর তোমার কাছে কোনো কবিতা পাঠাবো না হে বাতাস, তুমি আমার কবিতা উড়িয়ে নিয়ে যাও সাগরে কবিতা ভাঙতে থাকুক বরফ গুঁড়োর মতো ফেঁসো কি তুলোর মতো উড়তে থাকুক আমার কবিতা। আমার কবিতা হোক মৃৎশিল্পীর অব্যর্থ তুলি হোক শান্ত দিঘি, জল-থমথম হ্রদ, হোক উদ্ধৃত অন্ধকার আলো ফেলে যা অবিকল চিনে নিতে পারি। আমার কবিতা হোক…
-
আমাদের তখন খুব ইচ্ছে হতো গান গাইবার
আমাদের তখন খুব ইচ্ছে হতো গান গাইবার। কিন্তু গান তো দূর, আমরা ফিসফিসিয়ে কথা বলি। আমরা ততদিনে জেনে গেছি, বাতাসেরও কান আছে। আমাদের ঘরের পেছনে বৃক্ষসারি। সেখানে ঝরাপাতা। রাত হলে সেখানে পাতা ভাঙার শব্দ। বুটের শব্দ আমাদের বুকে কম্পন তোলে। তবু আমরা ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ খুলি। এয়ার এইড কানে লাগিয়ে ‘চরমপত্র’ আর রক্ত-উত্তাল করা…
-
বৃষ্টিতে মৌনতায়
তমিজ উদ্দীন লোদী আমরা যখন ট্রেন থেকে নামলাম, তখন সুনসান স্টেশন, স্তব্ধতা গড়িয়ে নামছে চারপাশে। অলৌকিক সান্ধ্যছটায় ভেসে যাওয়া প্রকৃতির অবয়ব। তার পাশে বসে আছে ধ্যানস্থ মেয়েটি। পাশ ফেরা কিয়দংশ মুখ। যেন পিকাসোর আঁকা কিউবিক ছবি। মুহূর্তে মনে হলো স্তব্ধতারও মানে আছে। অন্যরকম মানে। মায়াবী, ধ্যানস্থ, রহস্যের বাতাবরণে স্থিত। ফসফরাসের আলোর মতো কিংবা ক্ষীণতোয়া স্রোতস্বিনীর…
-
বরফ গলে গলে জল
প্রতিসরণে তীর্যক হয়ে আছে ডিসেম্বরের রোদ ন্যাড়া শাখায় বসে আছে পালকহীন পাখিরা শীত নেমেছে দৈত্যের মতো লজ্জাবতী লতার ধরনে গুটিয়ে আছে দিন পরগাছা গাছগুলোতেও শেকড় চারিয়ে গেছে হাওয়া থেকে জলে এবং মাটিতে বরফ গলে গলে জল। ঠান্ডা ও নিস্পৃহ । পানি ভেঙে অমøজান, হাইড্রোজেন উদ্বাহু জ্বলে প্রতিবেশ, অরন্তুদ ঘরদোর, গৃহ ।