August

  • পোড়ামাটির পুনর্নির্মাণ

    আলম খোরশেদ দুটি ভিন্নধর্মী শিল্পমাধ্যম নন্দনতত্ত্বের সব শর্ত পূরণ করেও যে একই চিত্রপটে অনায়াসে পরস্পর অভিন্ন-হৃদয় সহচর হয়ে উঠতে পারে তা দেখার অনন্য অভিজ্ঞতা হলো সম্প্রতি ‘বিস্তার : চিটাগং আর্টস কমপ্লেক্সে’ অনুষ্ঠিত তরুণ ও মেধাবী শিল্পী শারদ দাশের ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’ শীর্ষক প্রদর্শনীটিতে। এটি ছিল শিল্পীর তৃতীয় একক  চিত্র-প্রদর্শনী। এর আগে ২০১২ সালে তাঁর প্রথম…

  • মাজাম ওস্তাগারের পোলা

    মাহবুব রেজা আমি মোজাম ওস্তাগারের পোলা। আমার দাদায় আছিল ঢাকা শহরের সেরা ওস্তাগার গো মইদ্যে এক লম্বর। হের নাম হুরমত। হুরমত ওস্তাগার। হের নাম হুনে নাই পুরান ঢাকায় এমন আদম খুঁইজা পাওন যাইব না। বেকতে অই হেরে চিনে-জানে। খুব নাম-ডাক আছিল হের। আমার দাদারা চাইর-পাঁচ পুরুষ ধইরা ওস্তাগারির কাম করে। আদি ঢাকার বহুত দালাল-বাড়ি হেগো…

  • পটেশ্বরী

    শঙ্করলাল ভট্টাচার্য চতুর্থ কিস্তি   হাঙ্গেরির দুনাহারাস্তিতে এক অদ্ভুত নিসর্গের মধ্যে ছিলাম আমরা, তেমনই এক অপূর্ব নিসর্গ সিমলার। উপরন্তু মা ‘দ্য হোম’কে নতুন নতুন কার্পেট, আসবাব, ছবি দিয়ে সাজিয়ে                 আমাদের লাইফস্টাইলকেই আনকোরা নতুন করে ফেলল। থিয়েটার-টিয়েটার যাওয়া, এবাড়ি-ওবাড়ি ডিনার, বড়-বড় পরিবারের সঙ্গে ওঠাবসা তো ছিলই, তার সঙ্গে টক্কর দিয়ে চলল মার গৃহোন্নয়ন। মার গৃহ বলতে…

  • প্রচ্ছদ-পরিচিতি

    জীবনের ছন্দ সুলেখা চৌধুরী তাঁর ভিন্নধারার সৃজনের মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছেন এক বিশিষ্ট চিত্রকর। সাম্প্রতিক সময়ের যন্ত্রণা এবং উত্তাপ তাঁর চিত্রকে করে তুলেছে গহনতাসন্ধানী। একই সঙ্গে নারীত্বের দহন, যন্ত্রণা এবং নারীর অধিকারও তাঁর চিত্রে ফুটে ওঠে। সমাজে নারীর অবস্থানও তাঁর প্রিয় বিষয়। শিক্ষাজীবনের অন্তিম পর্যায় থেকে তিনি নদীর মতো বাঁক ফেরার জন্য প্রয়াসী হন। জীবনের…

  • সূচিপত্র

    প্র ব ন্ধ ১৯ নজরুলের একটি অজ্ঞাত-অগ্রন্থিত গান l  আবুল আহসান চৌধুরী ২৭ মঞ্জু সরকারের ছোটগল্প এবং রূপান্তরের গল্পগাথা l  আমির মুহম্মদ খসরু ১২১ দেশভাগের দলিল l  বুলবন ওসমান ছো ট গ ল্প ৩৮ কাঁটাতার l  শচীন দাশ ৪৪ একটি অন্যরকম প্রতিশোধ l  সাইফুর রহমান ৫২ রিয়ার প্রার্থনা l  নীহারুল ইসলাম ৫৬ শেফালি l  মহি…

  • পার্থিব-অপার্থিব

    ইমতিয়ার শামীম তখনো দিনের আলো ফোটেনি, তবু তার চোখে আলো ফুটে ছিল দিনের মতো। সারারাত ধরে অন্য সবার সঙ্গে জেগে আছে সে, জেগে জেগে কী যে দেখছে বুঝতে পারছে না। ক্ষুধায় শরীর ভেঙে আসছে, ঘুম ঘুম লাগছে, মাথা ঝিমঝিম করছে। কিন্তু চোখ দুটো এক আর হচ্ছে না কিছুতেই। কেউ কেউ অবশ্য দু-হাঁটুর মধ্যে মাথাটা গুঁজে…

  • সাক্ষ্য

    আহমাদ মোস্তফা কামাল ওমন, কাঁদো কেন? ও চোখ, কেন এত ভিজে ওঠো? – নিজেই নিজের মন আর চোখকে জিজ্ঞেস করেন আজিজুল হক। আর না করেইবা উপায় কী, ওরা যে কাজই করতে দিচ্ছে না, কোনো শাসনও মানছে না। অথচ দ্রুত কাজটি করে ফেলতে হবে, এই কবর তৈরি করার কাজটি, মুর্দাকে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি দাফন করার তাগিদ দিয়ে…

  • আমাদের সাম্প্রতিক ছোটগল্পের গল্প

    ফেরদৌস আরা আলীম ‘যে নিতে জানে তার জন্য ছড়িয়ে রয়েছে আপনিই হয়ে ওঠা গল্প। শুধু দরকার দেখবার চোখ, যেমন করে হীরাকে কেটে বার করতে হয়, তেমনি দরকার তাকে উদ্বুদ্ধ করার শক্তি।’ এ-শক্তি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে প্রথমবারের মতো যাঁর মধ্যে দেখেছিলেন বা আবিষ্কার করেছিলেন তিনি নিশ্চয়ই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথের সময়ে তাঁর অর্ধশতাব্দী পরে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সময়ে…

  • স ম্পা দ কী য় বাংলাদেশের আধুনিক স্থাপত্যচর্চার পথিকৃৎ মাজহারুল ইসলামকে নিয়ে কালি ও কলমের এ-সংখ্যাটি প্রকাশিত হলো। তাঁরই একক প্রচেষ্টা, চর্চা ও সাধনায় এদেশের স্থাপত্য বোধে, মননে ও শৈল্পিক গুণাবলিতে সমৃদ্ধ হয়েছে; স্থাপত্যচর্চার প্রসারও ঘটেছে। তাঁর সৃজন-কৌশলে, ভাবনায় ও জিজ্ঞাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে উত্তরকালের স্থপতিরা নিজেদের ক্ষেত্রে নতুন ধারণা তৈরি করেছেন। পঞ্চাশের দশকে পাশ্চাত্যে স্থাপত্যবিদ্যায়…

  • বাজ

    সৈয়দ মনজুরুল  ইসলাম আয়াজের বাবা যখন পা রাখেন আটিরচরে, যমুনা খুব দয়ালু ছিল বড় এই চরটার প্রতি। প্রতি বছর এর আয়তন বাড়ত; চরের মানুষ কিছু ধান, কলাই বাদাম ফলিয়ে গরু চরিয়ে বেশ চালিয়ে দিত দিনকাল। রাজাপুর থেকে নৌকায় ঘণ্টাখানেক লাগত আটিরচরে পৌঁছাতে। তারপরও ব্যবসায়ীরা দলবেঁধে আসত। আয়াজের বাবা বলতেন আয়াজকে, এই বছর সাতেক আগেও, নদী…

  • দেহাবশেষ

    জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত প্লাবন সব ভাসিয়ে নিয়ে যায় Ñ রেখেও যায় কিছু, ফিরিয়েও দেয় কিছু কখনো। বর্ষায় ফুঁসে ওঠা, গ্রীষ্মে ক্ষীণতোয়ার শরীর যখন নিরাভরণ, তখন দেখা যায়। গভীর জলাশয়ের সব সম্পদ নদীতে ফিরে গেলেও পলিতে গাঁথা থাকে তস্কর প্লাবনের লুণ্ঠিত কিছু সামগ্রী। তবে ঠিক যেমনভাবে তাকে নিয়ে গেছিল, তেমন করে ফিরিয়ে দেয় না, সেই চেহারায়ও নয়।…

  • হরকিশোরবাবু

    হরিশংকর জলদাস সেদিন সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে হরকিশোরবাবু মারা গেলেন। বইচাপা পড়েই মারা গেলেন তিনি। তাঁর মারা যাওয়ার কোনো কারণ ছিল না। বয়স তাঁর ৫৫ হলেও শরীরে কোনো রোগবালাই ছিল না। প্রেসার ছিল নরমাল, ডায়াবেটিস, ক্ষুধামান্দ্য, মাথা ঝিমঝিম, হাঁটতে কষ্ট – কোনোটাই ছিল না হরকিশোরবাবুর। পাঁচ ফুট আট ইঞ্চির হরকিশোরবাবুর শরীর ছিল সুঠাম, শুধু গলার…