2013

  • নকশাকেন্দ্রের আঙিনায়

    জাহিদ মুস্তাফা জনমানুষের রুচিবোধ তৈরিতে চারুশিল্পীরা অগ্রসর ভূমিকা পালন করেন। এদেশে মানুষের মনের ভেতর শিল্পের ঠাঁই যেটুকু গড়ে উঠেছে, তাঁর স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও তাঁর সতীর্থ-শিল্পীরা। কলকাতা আর্ট স্কুলের আদলে ১৯৪৮ সালে ঢাকায় গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্ট প্রতিষ্ঠার পর চারু ও কারুশিল্পের নান্দনিকতা ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে দেওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হয় এখানে। এরই ধারাবাহিকতায়…

  • পূর্ব-পশ্চিমের শিল্পিত বন্ধন

    মোবাশ্বির আলম মজুমদার বাংলাদেশের শিল্পকলার প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রালগ্ন থেকে পরবর্তী ছয় দশকে সৃষ্টি হয়েছে নানামাত্রিক কাজ। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আমাদের শিল্পকলার অবস্থান এখন সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। বাস্তবধর্মী শিল্পকর্ম সৃষ্টির পাশাপাশি পাশ্চাত্য ধারায় শিল্পসৃষ্টির প্রবণতা শুরু হয় পঞ্চাশের দশকের শিল্পীদের কাজে। এথেনা গ্যালারি অব ফাইন আর্টসের আয়োজনে ২৮ জন শিল্পীর কাজে মেলবন্ধনের সুর খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের…

  • অভেদ আত্মার আবাহন

    দ্রাবিড় সৈকত উপনিষদের নির্গুণ ব্রহ্ম থেকে প্লেটোর আইডিয়া হয়ে দেকার্তের কজিটো আর হেগেলের অ্যাবসলুট পর্যন্ত রাস্তায় অধিবিদ্যার সঙ্গে শিল্পের সখ্য সর্বজনবিদিত। শিল্পের জন্মটাই ম্যাটাফিজিক্সের কোলে কিনা, এ-বিষয়ে পন্ডিত মহলে যৎকিঞ্চিৎ মতবিরোধ থাকলেও প্রাথমিক জাদুবিদ্যা বা প্রাইমারি ম্যাজিকের বিষয়ে সবার মতামত প্রায় একই রকম। কিন্তু মধ্যযুগের পরে আধুনিকতার সূচনালগ্নেই যেমন দেব-দেবীর আশ্রয় ছেড়ে শিল্পকলা নেমে এসেছে…

  • কামারের পরমাত্মীয়

    মইনুদ্দীন খালেদ সভ্যতার আদিম আগুনে পুড়েছিল ধাতবখন্ড। চোখা ও ধারাল হাতিয়ার ছিল জীবনের অবলম্বন। এ-পথে আরো কিছুকাল এগোনোর পর ধাতব পাতের জোড়াতালিতে প্রাত্যহিক সরঞ্জামের সমৃদ্ধি এলো জীবনে। সেসব আদি কামারেরা পেশাজীবিতার সারণি তৈরি হলে একটা নাম পেল। তাদের ডাকা হলো স্যাকরা বলে। স্যাকরারা অনেক সুকৃতি সঞ্চয় করল। জীবনের প্রয়োজনকে শিল্পিত করে তুলল কঠিন ধাতু পিটিয়ে।…

  • বলরামের চেলা তুমি চে গুয়েভারা

    মফিদুল হক ১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর বলিভিয়ার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের জনবিরল স্থান লা হিগুইরাতে আহত ও ধৃত চে গুয়েভারাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাঁর এই মৃত্যু বড়ই করুণ। প্রায় এক বছর আগে তিনি বলিভিয়া এসেছিলেন গোপনে, অল্প কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে। তাঁর দল ছিল ছোট কিন্তু স্বপ্ন ছিল বিশাল। কিউবার বিপ্লব সফল করে তুলেছিল মুক্তির…

  • সূর্য অস্ত যায় না কখনো

    মোস্তাক আহমাদ দীন  এই শতকের দ্বিতীয় দশকে এসে গত শতকের পঞ্চাশের দশকের কবিদের মেজাজমর্জি ও বিশিষ্টতার চিহ্নগুলো কারো কাছে আর অস্পষ্ট নয়, নানা বিচার-বিবেচনা শেষে সেই দশকের কবি বলতেও এখন হাতেগোনা – এই সংক্ষিপ্ত তালিকায় দিলওয়ারকে গণ্য করা যায় কি-না, আজ, এ-প্রশ্ন তুললে পাঠক-সমালোচকদের মধ্যে নানামুখী তর্ক শুরু হতে পারে। সব মুখ্য/ গৌণ কবিরই কিছু-না-কিছু         …

  • অনেকদিন পাইনি

    সিজন নাহিয়ান অনেকদিন পাইনি সেই ঘ্রাণ – অমরত্ব কিংবা অম্লান হয়ে যাওয়া একাকিত্বে; শুভেচ্ছা দূতের সঞ্চারিত হৃদস্পন্দনে; অন্তর্দ্বন্দ্বে বুকের সবটুকু ভালোবাসাতে…   অনেকদিন পাইনি সেই ঘ্রাণ – মিলনের এক একটি দিনের মৃত্যুর পর; ব্যর্থ প্রচেষ্টার অনুভবের টানে; হাতড়ে বেড়ানো প্রশ্নে – ‘কোথায় আমি। কোথায় আমার হারিয়ে যাওয়া বিকেল?

  • শহর দখলের পূর্বলেখ

    কামরুল হাসান বাঁধরাস্তা থেকে নেমে গেল চারজন গ্রামমুখো মানুষ মিয়ানো আলোর ভেতর তাদের তেরচা শরীর সুস্পষ্ট বাঁকালো দূরে কুয়াশা আর তোরসা একাকার।   বালি, ঘাস আর মাটির জুড়নে যে মাঠ তারা সেই মাঠের ভেতরে গিয়ে নামে, একটি সরলরেখার দাঁড়ায়।   অস্পষ্টতার ভেতর বিলীন সাদা পথ, ওরা সেই পথের শরীরে নামে, সাদা ও সরল।   কয়েকটি…

  • সূর্যোদয়ের পথ

    মোসলেম উদ্দীন পাঠ করো একবার কেন থেমে আছি নির্বাক মননের কথা নিয়ে শারীরিক ভাষায়, এ-পাঠে ভুল করলেই ভুল তোমার আমার চোখের ভাষা মনন থেকে সরে না একচুল।   জীবনটারে দেখতে হচ্ছে ধরে রেখে কায়ক্লেশে চলছে ক্ষীণগতির শকটে ছদ্মবেশে নয় বটে।   ছন্দে চলতে চাই সবাই তোমার কী যে মতি বাড়াও না আরো গতি বাড়িয়েই ছুঁতে…

  • তুমি বলো

    ধ্রুব দে আমি ভাবি আমি তুমি বলো গড়ো তুমি   মাঝখানে তিরতির নদী   দিন যায় রাত যায় বছরও কত পার ঘটি ভাসে বাটি ভাসে   তুমি বলো আমি ভাঙি আমি বলি   মাঝে থাকে পূর্ণতোয়া নদী

  • ত্রিমাত্রিক অঙ্কনের মতো

    তমিজ উদ্দীন লোদী ঝুলবারান্দা থেকে দেখছি তুমি ঝুলে আছ তোমার কার্নিশে টলোমলো পা তোমার, দুহাত ডানার মতো স্ট্যাটোস্ফিয়ার ঘেঁষে যাওয়া কুয়াশার মতো মেঘ ছুঁয়ে আছে।   যেন বহুরঙা ঘুড়ি, সুতোছেঁড়া, উড়ছে স্বাধীন ইচ্ছের মতো জলো কি ঠান্ডা বাতাসের ঘোর এসে ছুঁয়ে যাচ্ছে তোমার আঙুল আর ঈষৎ লিপস্টিক-ছোঁয়া ঠোঁটের কম্পন।   ত্রিমাত্রিক অঙ্কনের মতো যেন ক্যানভাসে…

  • চৈতন্য

    তপন গোস্বামী   খাঁ-খাঁ পড়ে থাকে বিকেল এখন নদীতীর সুনসান বাতাসও এখন ভারি হয়ে আছে দম ধরে আসে প্রাণ। এদিকে-ওদিকে শরৎ শিশির হিম জমা হয় হাড়ে তবুও নিমাই, পথে কত ভাই, কেউ কেউ বাড়ি ছাড়ে। মাথা ন্যাড়া করে পথে না নামলে সন্ন্যাসী তুমি নয় অথচ ভেতর পুড়ে পুড়ে খাক্ সংসারে বড়ো ভয়। নওল কিশোর কোথা…