রাশেদ রহমান

কোথায় যেন পড়েছি – ‘মৃত্যু মানুষের প্রেমকে অমরত্ব প্রদান করে, নান্দনিক ও মহিমান্বিত করে।’ কারো গল্প কিংবা উপন্যাসে হয়তো। শরৎচন্দ্রের কোনো লেখায় কি? হতে পারে, নাও হতে পারে। ঠিক মনে করতে পারছি না। শরৎবাবু তো বলেছেন – ‘বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলিয়া দেয়’ – এই দূরে ঠেলে দেওয়াই কি মৃত্যু? হতে পারে,…

‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন – আমরা তো আল্লাহরই সৃষ্টি, তিনি লা-শরিক, এবং নিশ্চয়ই তাঁর কাছেই আমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে …।’ অবতীর্ণ এবং শাশ্বত এই বাণীর কখনোই ব্যত্যয় ঘটে না। ঘটবেও না কোনোদিন। তাই তো, মানুষ সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই, কেউ কারো মৃত্যুসংবাদ শুনলে, অবতীর্ণ এই বাণী পাঠ করে। এটি মৃত ব্যক্তির, যার আত্মা কি প্রাণবায়ু…

লোকটির নাম কৃষ্ণ মুহাম্মদ যিশু …। আমরা আসলে জানি না – লোকটির নাম প্রকৃতপক্ষেই কৃষ্ণ মুহাম্মদ যিশু – নাকি অন্যকিছু। অন্যকিছু হওয়াই স্বাভাবিক। লোকটির নাম নিয়ে কথা উঠলেই আমাদের মধ্যে, এটা অবধারিত – তর্ক বেঁধে যাবে। আমি হয়তো বললাম, হতে পারে – কৃষ্ণ মুহাম্মদ যিশু লোকটির নাম। সঙ্গে সঙ্গে একঝাঁক মৌমাছি আমাকে আক্রমণ করে বসবে।…

আমরা মেয়েটির নাম জানতাম। জরিনা খালা মেয়েটির নাম রেখেছিল কুসুম। কুসুমফুলের মতো লাল-হলুদ মিশ্রিত গায়ের রং – নাম তাই কুসুম। কিন্তু একসময় আমরা মেয়েটির নাম ভুলে যাই …। দেখো কাণ্ড! আমাদের চোখের সামনেই বেতসলতার মতো বাড়তে বাড়তে মেয়েটি যুবতী হয়ে গেল, যাকে বলে ষোড়শী কন্যা। গাঁয়ে কত কথা মেয়েটিকে নিয়ে, কিছু আমাদের কানে আসে, কিছু…

আঁতুড়ঘরে ঠাঁই হওয়ার পর থেকেই স্বপ্নটি বন্যার ওপর জেঁকে বসেছে। কেবল রাতের ঘুমের মধ্যেই যে স্বপ্নটি সে দেখে তা নয়, দিনের বেলায়ও, একটু তন্দ্রার মতো এলেও, একই স্বপ্ন দেখে বন্যা দাই। চোখে ঘুম কি তন্দ্রা ভর করলেই মানুষ স্বপ্ন দেখে কিনা, তাও আবার প্রতিদিনই একই স্বপ্ন; বন্যার তা জানা নেই। দিন সাতেক হলো বন্যা দাই…

আসসালামু আলাইকুম …। – ওয়ালাইকুম আসসালাম। আপনি কে হে ভাই? আমার এই পর্ণকুটিরে …! – আমি আজরাইল …। – আজরাইল! তা, আমার বাড়িতে কী মনে করে, জনাব …? – মহান আলস্ন­vহতায়ালার হুকুম হয়েছে, আপনাকে এখন যেতে হবে। আমি আপনাকে নিতে এসেছি। স্ত্রী-পুত্র-পরিজন – কাউকে কিছু বলতে চাইলে ঝটপট বলে ফেলুন। আমার হাতে সময় কম …।…

কুন্তলা পাল নিজের বুকে ছুরি মেরে আত্মহত্যা করেছে – এই খবর শোনামাত্র; আমার গগনবিদারী চিৎকার দেওয়ার কথা, চিৎকার করে বলার কথা – না, না; এটা হতে পারে না, কুন্তলা কেন আত্মহত্যা করবে, কে ছড়াল এই মিথ্যে খবর – এসবের কিছুই হলো না; হলো কী, খবরটা শোনার পর তাৎক্ষণিকভাবে আমার মনে হলো – কুন্তলা নিশ্চয়ই ছুরির…

আসলে লীলাবুর কোন গল্পটি যে সত্য, কে জানে! সত্য গল্পও তো মিথ্যা হয়ে যায়…..