সুহিতা সুলতানা
-
অবিশ্বস্ত হলদে গোলাপ
সুহিতা সুলতানা সফলতা নিয়ে আমার কখনো কোনো ভাবনা ছিল না আজো নেই। মানুষের ভেতরে এত লোভের হাঁকডাক বেসামাল পথভ্রষ্ট হয়ে চূড়ায় উঠে যেতে চায়। হিম হিম অন্ধকারে ডুবে ডুবে জল খায় নব্য রাজাকার। সূর্যগ্রহণ জলভর্তি থালায় নেমে এলে অর্ধেক পৃথিবী কার হবে কে জানে? এই যে তুমি এখন খণ্ড খণ্ড সফলতার মোহে ঋষি হতে চাও…
-
মৃত্যু ও জাদুবাস্তবতা
সুহিতা সুলতানা (কবি জীবনানন্দ দাশকে নিবেদিত) মানুষ বারবার নিজের কাছেই ফিরে ফিরে আসে কখনো কখনো খুব কাছ থেকে মৃত্যুকে অসম্ভব মনে হলেও হাটু মুড়ে মুখোমুখি বসে। জীবন ঘাসের চেয়েও ছোট আরো ছোট! অগ্রহায়ণের এমন দিনে শূন্যতায় উড়ে উড়ে যায় স্বপ্ন ও স্মৃতির অনিশ্চিত দূরত্ব! শ্যামল ছায়ায় বদ্ধ জলাশয় উঠে এলে অস্বস্তির লবণাক্ত ক্লান্তি দিবসের তাবৎ…
-
হৃদয়ে বাজে মৃদঙ্গ
সুহিতা সুলতানা কে জানতো অগ্নিগাছ হয়ে সে আগুন ছড়াবে চৌদিকে কেবল তুমি নও সবাই জীবিকাবদ্ধ জীব। মধ্যরাতে ভালোবাসা চৌকাঠ জুড়ে আলো ছড়ালে প্রেমও বেজে ওঠে নন্দিনী হয়ে। তোমাকে না দেখার দিনগুলিতে প্রতিদিন ভোর এসে জানালায় ঢেউ তোলে অবাধ্য প্রণয়ের মতো; আকাশসমান অপেক্ষার ভেতরে আয়ুর উঠোনে এসে দাঁড়ায় যমদূত। সেও চাকরির আসিত্মনে চুপিচুপি মদ ঢেলে খায়,…
-
অলৌকিক পাখিকাব্য
মানুষের জীবন এখন অর্ধসমাপ্ত ভুল নামতা গুনতিতে ভুল হলে বৃষ্টি ও আগুনের তারতম্য মিলেমিশে একাকার। জীবন এক রহস্যময় অগ্নি এখন চোখের কার্নিশ বেয়ে গড়িয়ে পড়েছে প্রতিশ্রম্নতিহীন জল। অবশেষে তোমার সাথে আমার দেখা হবে তো? আমাদের না-দেখা-হওয়া দিনগুলিতে কী ভয়ানক আগুনের উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছে শহরব্যাপী, তুমি বরাবর নিরাপদে থাকতে চাও, তুমিই আবার খুলে ফেলতে চাও রাজার…
-
হাঁসকল ২৫
সুহিতা সুলতানা মনের ভেতরে বেজে ওঠে গিটারের কান্না, কমলা বাগানের পাশ ঘেঁষে যখন লোরকাকে ওরা নিয়ে যাচ্ছিল সেদিনও সন্দেহ জেগে উঠেছিল স্পেনের দরোজা-জানালা নিদ্রিত নগরীর রাস্তাজুড়ে। আজো মানুষের মনের ভেতরে সন্দেহ খেলা করে! জলপাই বন তছনছ করে যে কহর ছেড়ে শহরের দিকে মুখ করে শুয়েছিল জীবন অনিশ্চিত জেনেও; তার বাসনা ছিল কেবল একজন স্বাস্থ্যবতী…
-
জলে ভরা মেঘের দিকে
সুহিতা সুলতানা (কবিতার মতো অনিবার্য মাকে) জীবনের লম্বা দৌড়ে আমি বরাবরই পিছিয়ে থাকি। চোখের ওপরে ভেসে ওঠে ডোরাকাটা বাঘ! যেদিন ভাঙা শামুকে পা কেটে গিয়েছিল সেদিন থেকেই ভাবি আমি কেন এদেশে জন্মালাম? সারাক্ষণ পেছনে হাঁটতে থাকে দাঁত ও চোখের তীব্র শাসন। সন্ধ্যা নেমে এলে বড় বেশি নিঃসঙ্গ হয়ে উঠি আমি! এ-শহরে কোনো খরস্রোতা নদী…
-
হারিকেন ১২
সুহিতা সুলতানা আজ এমন দিনে তারে বলা যায় নিষ্পেষিত হাওয়ায় উলঙ্গ আনন্দ নিয়ে কালো বন্যতায় চৌদিক অাঁধার করে রাখে সে কী কখনো কারো ছিল? এত হিংস্রতা ভালো নয় জেনো, দাসত্বের চেয়ে মৃত্যু ঢের শ্রেয় দাহ আর নির্জনতায় কথার ভিন্নতা দীর্ঘ সময়ের ভেতরে ক্রমশ অচেনা শহরের উপকণ্ঠে নিয়ে যায়
-
হারিকেন ১১
সুহিতা সুলতানা জগতের সব আলো নিভে গেলে শুধু তোমার চোখের আলোয় জেগে উঠবে সবুজ দিগন্ত! এরকম বিশ্বাস নিয়ে সুপ্রভাতে তিনি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন বিমুক্ত হাওয়ায়। তবে কি সে ছিল নিঃসঙ্গ, উদ্বাস্ত্ত? বস্ত্তত অনেকেই যখন তাকে নপুংসক ভাবতে ভাবতে দিশেহারা অবস্থা তখন বিভীষিকাময় বার্ধক্য তাকে আতসবাজির শহরে নিয়ে এলো আবার বধ্যভূমির অভিশাপ তার পিছু…