আবুল মোমেন
-
সৈয়দ শামসুল হক : নায়ের ভিতর থিকা ডাক দ্যায় ভুবন
আবুল মোমেন গত শতাব্দীর পাঁচের দশক কেবল বাঙালি জাতীয়তাবাদের সূচনাকাল ও স্বাধীন বাংলাদেশের গর্ভকালই নয়, এ দশকেই বাঙালি মুসলমানসমাজ যথার্থ অর্থেই আধুনিককালের পথে যাত্রা শুরু করেছিল। সাতচল্লিশের দেশভাগ উপমহাদেশ জুড়ে অনেক অশুভ ঘটনা ও প্রবণতার জন্ম দিলেও এ যেন বাঙালি মুসলিমসমাজের জন্যে এক বিভাজনরেখা। কলকাতার উনবিংশ শতকের জাগরণ মুসলিমসমাজকে সরাসরি ছোঁয়নি, কিন্তু ঔপনিবেশিক পরাধীনতা থেকে…
-
এই শহরের কান্না
আবুল মোমেন এই শহরের কান্না আজকাল কেউ শুনতে পায় না। নিজের ভিতরে দ্যাখ, ঝাপসা সব, ঘষা কাচের আয়না সব শুষে আড়াল করেছে, তুমি তো আলেয়া, মরীচিকা-পরাধীন, পাহাড়কে খুবলে খেয়েছ – বোঝনি কখন চুরি গেছে তার উদাসীন। নগ্ন ধ্বস্ত পাহাড়িয়া মাটি আর আব্রম্ন রাখতে পারে না, বেয়াড়া হিংসুটে লোকালয় ছায়া খেয়ে স্তব্ধতা খায়, নির্জন হাসে না!…
-
তাঁর রেনেসাঁস-সত্তা
আবুল মোমেন সত্যিকারের বড় মানুষ সত্যিই দুর্লভ। কারণ বড় হওয়া মানেই খ্যাতিমান হওয়া, প্রতিষ্ঠিতজন হওয়া, পুরস্কার-স্বীকৃতি-সম্মাননায় অভিষিক্ত হওয়া। গণমাধ্যমের নজরে থাকা, তাতে প্রায়ই হাজিরা দেওয়া। এতে গৌরব বাড়ে, গর্বিত হওয়ার অধিকার জন্মায়। এই অধিকারবোধ প্রায় সবার অগোচরে সন্তর্পণে দূরত্ব আর আড়ালগুলো তৈরি করতে থাকে। বড় মানুষ কখন যে চূড়ার ছোট্ট পরিসরে আটকে যান, হারিয়ে যান,…
-
অদ্ভুত ক্ষমতা, নমনীয় অহঙ্কার
আবুল মোমেন সূর্যাস্তের বেশ কিছুক্ষণ পরও শ্রাবণের বর্ষণক্লান্ত ছিন্ন মেঘে আচ্ছন্ন গোধূলির ফিকে লালিমায় চারিদিক অলৌকিক আলোয় ভাসছে। তাতে চেনা মানুষটা অন্যতর ব্যঞ্জনায় অচেনা হয়ে উঠেছেন। কিন্তু তাতে নাতাশার মনে কোনো খটকা লাগে না। বরং মনের মধ্যে গুনগুনিয়ে ওঠে রবীন্দ্রনাথের গান – অচেনাকে ভয় কী আমার ওরে? শহরের এক ধারের এই পাহাড়ের ঢালে সে আগেও…
-
একুশে : বাঙালির বাঙালি হওয়ার সোপান
আবুল মোমেন দাবি ছিল বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার। সেই দাবি এগিয়ে নিতে নিতে আমরা বাংলা ভাষাভাষির রাষ্ট্র বাংলাদেশ আদায় করে ছাড়লাম। কুড়ি বছরের মাথাতেই এ-ঘটনা। এখন দুই কুড়ি অর্থাৎ আরও চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকে তাকিয়ে বিচারে বসলে হিসেব কিছু কি মেলে? বাংলাদেশ আছে, বাংলা অবশ্যই একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, সংসদ চলে বাংলায়, দেশের কর্ণধারগণ সকলেই বাঙালি। আর…
-
সংগীতের মুক্তি বেঙ্গল-নিবেদিত উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের সূত্রে
আবুল মোমেন ভারতসভ্যতার যেসব মহত্তম উত্তরাধিকার প্রাচীনকাল থেকে ধারাবাহিকভাবে আজ অবধি চলে এসেছে তার মধ্যে শাস্ত্রীয় সংগীতকে সবচেয়ে এগিয়ে রাখতে হবে। পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কাল এই সংগীতে তার স্বাক্ষর রেখেছে, কিন্তু তা কখনো এই মহৎ শিল্পকে ক্ষয়িষ্ণু বা নেতিবাচক হতে দেয়নি। ক্রিয়াত্মক শিল্পে (perfoming art) প্রকাশের যে-সুযোগের প্রয়োজন তা হয়তো সবসময় একইভাবে মেলেনি, গুরু ও…