আসাদ চৌধুরী
কোলে-কাঁখে কখনো দেখিনি
চার চরণের ব্যবহারও নেই,
উল্লসিত মাতৃকুল চোখ ঠেরে বলেননি
‘ও রে ভাঁদর ফিরে চা।’
শুরু থেকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছোটা দিগন্তের দিকে।
আগে-পিছে নার্সিসাস হুমড়ি খেয়ে পড়ে আছে।
কোরাসের দলে নেই, শুধু মেঘ একাই বলেছে
দগ্ধ দেহে প্রতিধ্বনি গুনগুন করে, ‘যাব, যাব’।
লাঠি ফেলে, ঘৃত ঢেলে, সোনার মেয়েরা
দশটি প্রদীপ জ্বালো আলো দেখি প্রবল প্রচুর।
তখন স্বপ্ন ছিলো দুচোখে অনেক
রফিক আজাদ
আমরা আগুনমুখা নদীর তলদেশ থেকে
সাঁতরে উঠে এসেছিলাম –
আমাদের এই উত্থান তখন অবশ্য অনিবার্য ছিলো :
দুঃসময়ে উঠে এসে আমাদেরও ওই
পায়ের নিচের মাটি খুব ভালোবেসেছিলাম –
অনন্তর হাতে হাত ধরে
মানববন্ধন করে সামনে এগোতে চেষ্টা করেছি,
– এগোনো কি যায়? কতো যে ঝড়ঝঞ্ঝা,
বাতাসের অবিশ্বাস্য গতিবেগ, বিরুদ্ধ বিষম স্রোত –
বিভিন্ন নৌপথে, ডাঙাতেও আগ্নেয়ঝড়,
মাইল-মাইলব্যাপী শস্যের প্রান্তর জ্বলছিলো,
সেই সে আগুন নেভাতে আগুনেরই মধ্যে
অন্তহীন আগুন হয়ে আমরা পেরিয়েছি
তেপান্তরের পথ,
তীব্র হিংস্র খল সব জলের স্রোতের বিপরীতে
আমরা উজিয়ে উঠে পৌঁছি প্রার্থিত ডাঙায় –
বাতাসের তীব্র গতিবেগ পরাস্ত করে অবশেষে
গন্তব্যে তো পৌঁছেছিলাম…
কিন্তু বন্যা, ঝঞ্ঝাবাতে, বিক্ষুব্ধ গর্কিতে, জলোচ্ছ্বাসে,
মারী ও মড়কে, অগ্নিঝড়ে, মঙ্গায় পীড়িত জন
দৃঢ়পায়ে দাঁড়ানোর কোনো ঠাঁই-ই তো পেলাম না!
তা-হলে কি জন্মাবধি প্রাণান্তকর দুঃখজয়ী
ওই প্রচেষ্টাটি আমাদের প্রিয় স্মৃতিভান্ডারেই
জমা থাকলো!
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.