না-পারার কবিতা

যতদূর দেখতে পাই

ততদূর হাঁটতে পারি না

যতদূর ভাবতে পারি

ততদূর নামতে পারি না

হাওরে নৌকায় বসে দেখি

বিস্তীর্ণ জলের ওপারে ছোটবড় পাহাড়

পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে ঘাপটিমারা গ্রাম

ঝর্ণায় স্নান করছে আদিবাসী বালিকারা

আসন্ন বিহুর দিনে কারো কারো বিয়ে হয়ে যাবে

বালিকারা একদিন দিদিমাও হবে, তবে

আমার যা জানাই হবে না –

প্রত্যেকের জীবনই বহু কবিতার মুহূর্ত গোপন করে গেছে

হাওরে নৌকায় বসে দেখতে দেখতে ভাবি

সূর্যাস্তের আগেই আমাকে ফিরে যেতে হবে

ভাবনার ধারে জানলাখোলা দুপুর

ইচ্ছে হলেই আকাশ করি উপুড়

ভুরভুর করে উড়তে থাকে কদমফোটা দিন

আমি জানি, ভালোবাসার ভোমরা লুকিয়ে আছে

বিরাট দিঘির জলের তলায় কৌটোর ভেতরে

কৌটোকে পাহারা দিচ্ছে একদল জলপাখি

আমি যে ভালোবাসার ভোমরার কাছে গিয়ে বলব –

‘চলো আমাদের কুঁড়েঘরে ফিরে যাই’

– সেই সুযোগই দিচ্ছে না জলপাখিদের পাহারা

আমি কি পাখিদের চোখ এড়িয়ে যেতে পারি?

আমি কি মাছেদের চোখ এড়িয়ে যেতে পারি?

দুই পা এগোলেই তো রাজার লোকেরা আমার দুই হাতে

আমাকেই পিঠমোড়া করে বেঁধে নিয়ে যাবে অজ্ঞাত থানায়

তাই আমি তোমার কাছেও পৌঁছতে পারি না

যতখানি বাসব ভালো

ততখানি বাসতে পারি না