আমার বৈরী বসন্ত

লিপি নাসরিন

সে তো কবেই গিয়েছে চলে
আলাপন ফেলে নক্ষত্রের রাতে,
আমার বসন্ত তারই পিছে পিছে
সাদা কাফনের রক্তিম মলাটে
শিমুল-পলাশের বুকে জাগে।
বসন্ত সমীরণ হিমেল কুয়াশা সনে
মাখামাখি যত আজো নিভৃত বনে,
অঞ্জলি তার শতপ্রণতি উত্তরীয় প্রাণে।
আজ বসন্ত উৎসব জাগে ধরণিতলে,
আমার বসন্ত শুধুই বৈরী কুহেলিকা
ঝরা পাতার ক্লান্তিহীন মর্মরে।
আজো তার উন্মত্ত আবেশ হৃদয়ে ধরে
কত বিনিদ্র রজনী জাগে আঁধারের গহ্বরে,
দীর্ঘশ্বাসে ঝলসানো কামনার অব্যক্ত সুরে,
ঋতুর অধীর পরিক্রমায় বারবার ফিরে আসে।
তবুও তার চির নীরবতা,
ব্যথিত হৃদয়ের সঙ্গীহীন কথা,
বহুদূরের পথ ভেঙে ঠাঁই পায় হৃদয়ের কোণে।
আজ বসন্ত দিনে ছাইচাপা কথার অগ্নিস্ফুলিঙ্গে
লাগে দোল, লাগে দোল দক্ষিণা বাতাসে।
সে অগ্নিসম বাতাস হৃদয়ের বিস্তীর্ণ বেলাভূমে
ছুটে চলে শূন্য থেকে নিশ্ছিদ্র কুঞ্জবনের শীতল কূপে।
শেষ পঙ্‌ক্তির শেষ কথা অনুচ্চারিত কণ্ঠে
বারবার ভেসে আসে নগ্ন ইথারে,
বাসন্তী রঙে, রক্তভেজা সুরশ্রীর অজস্র গানে।