উত্তাপহীন নীল ছায়া

আমরা তিনজন বসেছিলাম সাততলার ওপর। চমৎকার রেস্তোরাঁ। চারপাশে নীল কাচের ভেতর দিয়ে বাইরের তপ্ত রোদকে মনে হচ্ছিল অপস্রিয়মাণ কিংবা উত্তাপহীন নিমগ্ন নীল ছায়ার মতো।

আমাদের তিনজনের অনুভূতি যথেষ্ট ঝরঝরে। তিনজনের ভেতরেই চলছিল একধরনের মনস্তাত্ত্বিক খেলা। বিশেষ করে আজকের যিনি নবাগতা, তাঁকে ঘিরেই আমাদের দুই বন্ধুর বিপরীতধর্মী রহস্যজনক চাঞ্চল্য। বন্ধুটিই ওর কথা বলে প্রলুব্ধ করেছে এখানে আসার জন্য। স্বাভাবিকভাবে নড়েচড়ে বলি, আপনার নাম যেন কী?

শিমুল।

ও হ্যাঁ শিমুল, মনে ছিল না।

কী খাবার পছন্দ?

যেমন ইচ্ছে।

ওয়েটারকে ইশারায় ডাকলাম। ফালতু একটা হাসি ঝুলিয়ে রাখি ঠোঁটে। বন্ধুটি বসেছিল ডানপাশের চেয়ারে, শিমুলের মুখোমুখি। আমি একটু বিচ্ছিন্নভাবে টেবিলের কৌণিক অবস্থানে বসেছি। এসি রুমের শীতার্ত নীল কাচের ভেতর দিয়ে দেখছি বলেই হয়তো রাস্তার মোড়, ট্রাফিক সিগন্যাল, ডানে-বাঁয়ে মোচড় নেওয়া গাড়িগুলো, এমনকি মানুষের দৈনন্দিন চলমানতাকে বেশ ম্রিয়মাণ লাগছে। শিমুল কিছু বলছে না। দু-হাতের মুঠোয় থুঁতনি ঠেকিয়ে আনমনে কিছু একটা ভাবছিল। বন্ধুটি গড়গড় করে মাত্র দুটি আইটেমের অর্ডার দিলো। স্যুপ আর খিরি কাবাব, সঙ্গে কোল্ড ড্রিংকস। এরই ফাঁকে শিমুলের দিকে চোখ নাচিয়ে আমাকে কিছু একটা বোঝালো, মোটেও দুর্বোধ্য নয়, তবু অবুঝ বালকের মতো ভান করে বলি, আপনাকে আগে কোথাও দেখেছি মনে হচ্ছে।

হতে পারে।

সম্ভবত কোনো স্কুলে।

এক্সক্লুসিভ লিটলসে দেখতে পারেন, ওখানে আমার ছেলেকে নিয়ে যেতাম।

ইয়েস, ওখানে আমিও মাঝেমধ্যে বড়ভাইয়ের ছেলেকে নিয়ে যেতাম।

শিমুল আগ্রহ দেখাল না। বন্ধুটি দ্বিতীয়বার শিমুলের দিকে ইঙ্গিত করে। আগের চেয়েও অশ্লীল, অন্যরকম অর্থপূর্ণ তো বটেই। শিমুল কথা বলে কম। বাইরে তাকায়। ওর দৃষ্টির পথ ধরে আমিও তাকালাম। সারি সারি গাড়ি ট্রাফিক সিগন্যালে   আটকে   আছে।   ভ্যাপসা  গা-তাতানো চড়া অনুভূতির এসব মুহূর্তকে এসি রুমে বসে ভালোই উপভোগ করা যায়। শিমুলের মোবাইলে রিং এলো। কথা ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছে না। মোবাইলটা কানবদল করে উঠে একটু দূরে যেতেই বন্ধুটি বলল, জিনিসটা কেমন?

ভালো।

পাত্তা লাগা উল্লু, দেখি কেমন স্মার্ট তুই, এটা হলো তোর প্রথম টিপস।

আমতা আমতা করে বলি, তুই ব্ল্যাকমেইল করছিস না তো?

মানে!

ও কি সত্যি সত্যি এ-লাইনের, ইনোসেন্ট মুখ আর ব্যক্তিত্বের ধরন দেখে তেমনটি মনে হচ্ছে না।

আরে উল্লু, সোজা পথ একটু বাঁকা করে দেখ।

কথাটি বলেই খলখল করে হেসে ফেলে। শিমুল এসে বলল, এতো আনন্দ কিসের?

না, ও বলল  –

কী?

সবসময় কেন জানি বোরড হয়ে যায়।

সে কী, কেন?

আমি চুপ করে থাকি। ততক্ষণে স্যুপ এলো। এরপর আসবে খিরি কাবাব। এক্সক্লুসিভ আইটেম, ভিন্ন স্বাদ। এরকম রেস্তোরাঁ ছাড়া সচরাচর পাওয়া যায় না। বন্ধুটি চমৎকারভাবে স্যুপ পরিবেশন করল। আমি শিমুলের নম্র, বিনীত কিংবা আনন্দদায়ক স্বস্তির মুখটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে বলি, আপনার ছেলের বয়স কত হবে এখন?

পনেরো।

কোন ক্লাসে আছে?

এসএসসি।

কথাটি বলেই শিমুল মাতৃপ্রাণের ঔজ্জ্বল্য নিয়ে বলে, জানেন, ও খুব ব্রিলিয়ান্ট, ক্লাসের সেকেন্ড বয়। একবার থার্ড হওয়াতে আচ্ছামতো পিটিয়ে সারারাত কেঁদেছিলাম।

ওর বাবা কিছু বলেনি?

ওর বাবা তো ফরেস্টে থাকতেই স্ট্রোক করে মারা যায়।

ওহ্!

কথা শেষ করে শিমুল কেমন নিজের ভেতর ডুবে যায়, কিংবা বলা যায়, একধরনের অতলস্পর্শী ভাবজগতে ওর অন্তপ্রাণ খলবল করছে। শরীর মোচড় দিয়ে ইতিউতি করে মাথাটা বন্ধুর দিকে বাড়িয়ে বলি, ভুল করছিস না তো?

মোটেও না।

খটকা লাগছে।

ফালতু আবেগ।

দেহ সটান করে ফের শিমুলের দিকে তাকালাম। শিমুলও তাকাল। মনের দ্বন্দ্ব কিংবা অপ্রকাশিত কথার সূত্র ধরে বলি, আপনার কষ্ট হয় এমন কোনো সংকট আছে কি?

নিশ্চয়ই, আমার ছেলেবেলা।

কী রকম?

শৈশবটাকে বড় মিস্ট্রিয়াস লাগে, এই যেমন কীভাবে বড় হয়ে উঠলাম, বড় হওয়ার পেছনে একটি আত্মবিশ্বাস হয়তোবা ছিল –

এবার আমি নিজেই গাঢ় পিটপিট চোখে তন্ময় হয়ে পড়ি। নিজের শৈশবকে মনে পড়ে। সেই যে নির্ভার ছোটাছুটি, মনের অকপট ছেলেমানুষির ভেতর অগ্নিপিণ্ডের মতো কোনো দৈত্যের হাত আমাকে পথভ্রষ্ট করেছিল কি না, কিংবা সেই সময়ের সূত্র ধরে আজকে, এখানে এই ত্রিমুখী মনের খেলায় আমি কতটা সার্থক যুবক – এসব ধোঁয়াশা অনুভূতির ভেতর সহসা মোচড় দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলতেই সঙ্গের বন্ধুটি বলল, স্যুপ ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।

এ্যাঁ!

মনোযোগী হয়ে স্যুপ চামচে করে মুখে তুলতে যেতেই শিমুলের পায়ের সঙ্গে পায়ের স্পর্শ লেগে যায়। শিমুল বলল, আপনি সম্ভবত নার্ভাস।

না, তা না।

তো –

ছেলেবেলার একটি ঘটনা মনে পড়ল কি না –

বলুন প্লিজ, মানুষের স্মৃতিকাতর অনুভূতিগুলো আমাকে খুব নাড়া দেয়।

গা ছেড়ে বসলাম। শরীরটা ডানে-বাঁয়ে মুচড়ে আড়ষ্টতা দূর করে তাকালাম। অতীতের মুহূর্তগুলো দমকা বাতাস-লাগা বইয়ের পৃষ্ঠার মতো ফড়ফড় শব্দে উল্টাতে থাকে। প্রতিটি মুহূর্তের ভেতর যেমন আছে যুগসন্ধিক্ষণের রোমান্টিকতা … নেপথ্যের ধূলি-ধূসর অবিশ্বাসের চমক, সেই সঙ্গে গভীর এক ঘোর থেকে থেকে আত্মমগ্ন করে প্রবল হতাশায়, আমি কি হতাশা ঢাকতেই এখানে … কিন্তু কীভাবে সরল সাহসিকতায় অন্তর্জগৎকে মেলে ধরা!

কী হলো বলুন?

কী?

শিমুল এবং বন্ধু দুজনেই হেসে ফেলে। একে অপরের দিকে তাকায়। তাকানোর ভেতর একটা বোঝাপড়া হয়ে গেল সম্ভবত। আর আমি, এই প্রথম একটা কৌণিক অবস্থানে বসে নিরেট খাপছাড়া কিংবা তিক্ততায় ভরা নিজস্ব শূন্যতায় মজে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলাম।

খিরি কাবাব এলো। কথা না বাড়িয়ে ওরা খাবারে মেতে ওঠে। সেইসঙ্গে পালা করে চলল ওদের স্বাভাবিক কথাবার্তা। আমি কি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লাম? অকস্মাৎ নিজের গাঢ় তন্ময়তা ঝেড়ে স্বাভাবিকভাবে বলি, আমরা বরং বর্তমান নিয়েই কথা বলি।

দুজন একসঙ্গে তাকাল। শিমুল ঠোঁটভরা মিটিমিটি হাসি নিয়ে বলল, কী রকম?

এই যেমন আমাদের আজকের মুহূর্তগুলো, আমাদের প্রত্যাশা।

শিমুল অবাক চোখে বলল, প্রত্যাশা! কী রকম?

বারে, এটা কি ব্যাখ্যার বিষয়, প্রত্যাশা থেকেই তো প্রাপ্তি, ঠিক যেমন আদর কিংবা মিলনের মধ্য দিয়ে আসে এক ধরনের প্রশান্তি।

শিমুল ইতস্তত গলায় কেমন ভেঙে ভেঙে বলল, আদর … কিংবা মিলন …!

হ্যাঁ।

আপনি কি তা চান?

চাওয়াটা কি অন্যায়?

ন্যায়-অন্যায় নিয়ে তো কিছু বলছি না।

তো?

শিমুল টিস্যুতে নরমভাবে মুখ মুছে আমার বোকা-বোকা ছ্যাবলা হাসির দিকে

 কিছুক্ষণ তাকিয়ে বলল, আপনি যা বলতে পারেন না, তা না বলাই ভালো।

কী রকম?

রকমসকম কিছুই না, সবাই সবকিছু বলতে পারে না।

পকেটের বড় বড় নোট নেড়েচেড়ে আত্মবিশ্বাস জাগানোর ব্যর্থ চেষ্টা নিয়ে হ্যাবলার মতো বলি, সবাই বলতে পারলে আমি পারব না কেন?

বলুন, হাজারবার বলুন, তবে আপনার মুখ দিয়ে কথাগুলো ভূতের মতো শোনাবে।

বন্ধুটিকে মনে হচ্ছে কত নির্ভার। এ-যুগের চালচুলোহীন সার্থক হিরো। গোগ্রাসে গিলে যাচ্ছে। এদিকে ‘ভূত’ শব্দটি শোনার পর সহসা হোঁচট-লাগা নীরব আত্মদংশনে মন বিষিয়ে উঠতে থাকে। পকেটের নোটগুলোকে মনে হচ্ছে কতগুলো ওয়েস্টেজ পেপার। কোল্ড ড্রিংকসের বোতলটা মুঠোয় নিয়ে বাইরে তাকালাম। পায়ে-হাঁটা বিক্ষিপ্ত মানুষেরা বুঝি একে অপরকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে। বস্তুত ধূলিধূসর পথকে যেন দেখছি নির্ঘুমে, আধো-স্বপ্নের গাঢ় তন্ময়তায় …

আপনি নিচ্ছেন না? শিমুল বলল।

এই তো নিচ্ছি।

ধূমপান করেন?

না।

আপনার বন্ধু বলেছিল, আপনার নাকি একটু-আধটু পান করার অভ্যাস আছে।

হুম, বলেছিল বুঝি –

শিমুল ঠোঁট টিপে হাসে, সহজাত কৌতুকের অন্যরকম ভদ্রোচিত মিষ্টি খোঁচা। আমাকে নীরব দেখে হাতের ওপর ওর নরম হাতটা রেখে বিনয়ের সঙ্গে বলে, মাইন্ড করলেন?

স্পর্শের আবেগমথিত জলোমেঘ ভেতরে ভেতরে মেঘ গর্জন করে ওঠে, মনে হচ্ছে বজ্রপাতের মতো আমাকে ঘিরে আছে ভয়ভীতির দুর্বোধ্য আকুল-ব্যাকুল খেলা। বন্ধুটি ওর অবস্থান থেকে অকস্মাৎ খলখল করে হেসে ফেলে। শিমুলের ভাবান্তর নেই। হাতের স্পর্শ নানাভাবে নেড়েচেড়ে আদর্শ শিক্ষকের মতো ঠিক শাসন নয়, বরং কোনো তাত্ত্বিক আলোচনার সূত্র ধরেই যেন বলল, আচ্ছা, আপনি এসেছেন কেন বলুন তো?

ইচ্ছে করল তাই।

আপনার ইচ্ছের কাছে আপনি কি শতভাগ আন্তরিক?

জানি না।

একটু চুপ করে শিমুল বলল, আপনি বরং আপনার সেই অতীতের কথা বলুন।

সত্যি শুনবেন?

বা রে, মিথ্যের কী হলো!

একবার হলো কি জানেন …

হুঁ হুঁ বলুন …

লাটাই নিয়ে ছেলেবেলায় ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলাম। আজকের মতোই এমন ভরদুপুর। মাঠে তখন কেউ ছিল না। বিলের ওদিকটায় কয়েকজন রাখাল অবশ্য গরু চড়াচ্ছিল। ঘুড়িটাকে নিয়ে বিভিন্নভাবে খেলছিলাম। কখনো চরকির মতো, কখনো হেলেদুলে …

আপনার বয়স কত হবে তখন?

চৌদ্দো কি পনেরো।

আমার ছেলের বয়সী, এরপর?

তো হলো কী, আমি এঁকেবেঁকে আনন্দে সুতা ছাড়ছি, টানছি, হঠাৎ কানের পাশে অদৃশ্য এক গম্ভীর গলা বলে, উড়াসনে! ঘুড়ি তখন তড়তড় করে শূন্যে উঠছিল। কথাটি আমল করার মতো মনের অবস্থা তখন নেই। পরম আনন্দে সুতা ছাড়ছি, অথচ থেমে থেমে প্রতিবার একই কথা, উড়াসনে! গলায় ঝাঁজ মিশিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে কেউ একজন শাসাচ্ছে। একসময় বিরক্তি উঠে যায়। একঝটকায় লাটাই কোমরের দিকে টেনে পাল্টা গলা হেঁকে বলি, তোমার কী! ততক্ষণে প্রবল ঝটকায় সুতা ছিঁড়ে ঘুড়িটা বাতাসে কেমন পিছলে পিছলে পড়তে থাকে। কিছুক্ষণ বোকার মতো তাকিয়ে থেকে ছেলেবেলার রক্তচড়া মাথায় ডানে-বামে আগন্তুকের অশরীরী মুখটা খুঁজতে খুঁজতে চিৎকার করে বলি, ওই কুত্তা, তোর কী, সামনে আয়, আমার ঘুড়ি দে! খোলা মাঠে তড়তড়া হাওয়া ছাড়া কিছু ছিল না তখন। বাসায় ফিরে আসি। রোদে পোড়া ক্ষোভ আর হতোদ্যম মুখে মা তখন চড় বসিয়ে দেয়। মায়ের পিটুনি আগেও খেয়েছি। এতে বরং আনন্দই হতো, আরো বেশি দুষ্টুমি করে ক্ষেপিয়ে তুলতাম; কিন্তু সেদিনের একটি চড়ে দীর্ঘ সময় কেঁদেছিলাম, এরকম কান্না দেখে মা-ও কেঁদে ফেলে। তখন অবশ্য বুঝতে পারিনি, একজন মানুষের আপন গতির পেছনে কেউ একজন বাধা হয়ে যায়, সেটি শরীরীভাবেই হোক, কিংবা অশরীরীভাবেই হোক।

এখনো কি তাই?

কী?

পেছন থেকে জামার আস্তিন টেনে ধরে কেউ?

মনে হয় তাই, তবে মজার ব্যাপার কি জানেন – এখন আর কণ্ঠ শোনা যায় না, এমনিতেই টের পাওয়া যায়। সেই ছেলেবেলার ভরাট কণ্ঠস্বর ছিল কেমন একটা প্রতীকী বাধা, মানুষের নিত্যচলাচলে একটা চপেটাঘাত, একটা ছন্দপতন।

শিমুল অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকে। কিন্তু বন্ধুটি এতোক্ষণ কিছু শুনছে বলে মনে হলো না। ও আপন মনে খেয়ে যাচ্ছে। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা শিমুলের মুখটি দেখতে একটু সংকোচ হচ্ছে। আনমনে বাইরে তাকালাম। চোখ বন্ধ করে আত্মার সাময়িক খলবল অবস্থা ঝেড়ে তাকাতেই শিমুল বলল, আপনি কি অসুস্থ ফিল করছেন?

নাহ্।

বেড়াতে যাবেন?

কোথায়?

যেখানে আধুনিক রেসিং কার ছুটে এসে আচমকা ব্রেক কষে দাঁড়ায়।

ঠিক বুঝিনি …

বন্ধুটি হো-হো করে হেসে ফেলে। ওয়েটার বিল নিয়ে এলো। পকেটে হাত ঢোকাতেই থামিয়ে দেয় শিমুল। পুরো হতবাক বানিয়ে পার্স খুলে সীমিত টাকা থেকে বিল মেটাতে মেটাতে বলে, একটা কথা বলি?

বলুন।

আপনাকে যদি লাটাইয়ের সঙ্গে ফের ঘুড়িটি বেঁধে দেওয়া হয়, কী করবেন?

কী করব … কী করব …

বিড়বিড় করে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে থাকি। সমস্যায় ফেলে দিয়েছে শিমুল। হয়তো ওড়ানো দরকার, নয়তো না, কিংবা … ধাৎ, ফের ডানে-বাঁয়ে মাথা ঘুরিয়ে রোবটের মতো সূত্রহীন জটিল আবর্ত নিয়ে বিড়বিড় করতে থাকি, ঘুড়ি বেঁধে দিলে, অর্থাৎ এখনো বেঁধে দেওয়া হয়নি। দেওয়ার পর কী করা, কী করা … অর্থাৎ করণীয় বিষয়টি তবে পরে কিংবা কী করলে ভালো হয়, কিংবা …..

মিটিমিটি চোখে শিমুল কিছুক্ষণ তাকিয়ে বলল, হুম, অনেক হলো, এবার উঠুন।

কাঁধে পার্স ঝুলিয়ে হাঁটা দিলো শিমুল। বন্ধুটি দাঁড়াতেই ওর দিকে অসহায়ভাবে তাকিয়ে বলি, কী রে কেমন হয়ে গেল সব। ও বলল, প্রথম টিপসে তুই পরাজিত। দ্বিতীয় টিপসের জন্য অপেক্ষা কর। আশা করি জিতে যাবি। তার আগে ফালতু ভাবনাগুলো ঝেড়ে ফেল, ওসব দিয়ে কিছু হয় না।

Published :


Comments

Leave a Reply