এক শিল্পতরুর ছায়ায় : সমরজিৎ রায় চৌধুরী

মৌসুম ঠিক হিমেল হওয়ার মতো কি, তখনই?

কেন যেন আগস্টের এই শেষ বিকেলের রোদ্দুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরস কোয়ার্টারের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে শিরশিরে শীতল, কিন্তু নরম এক পরশ-হাওয়া ত্বক ছুঁয়ে গেল। অন্যদিকে, রোদ্দুরের মিষ্টি উত্তাপটুকু শেষ বিকেলের গরম চায়ের কাপটা দু-তালুর মাঝখানে কখন ঘুম ঘুম উষ্ণতার স্বস্তিটা এনে দেবে – সেই অনুভূতির পূর্বাশা শুনিয়ে যাচ্ছিল।

আমরা স্যারের বাসার কাছাকাছি পৌঁছলাম, এতক্ষণে। হাঁটছিলাম দুজনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চওড়া রাস্তার বুকে আমাদের লম্বাটে ছায়া আবার কবে, কখন, এমন মসীবর্ণ চলমান ছাপ আঁকবে, তা অনিশ্চিতের ভাবনা-কোষে ভাসছিল …

খট-খটাস … খট …

রুমা, স্যারের কন্যা, বন্ধু আমার, দরজা খুলে দিলো – গালভরা হাসিতে ‘স্বাগতম’ নিয়ে।

সামান্য পর স্যার এলেন, বললাম – ‘আমরা বিদেশে পাড়ি দিচ্ছি; আর দুদিন পরই, যাওয়ার আগে দেখা করতে এসেছি। আশীর্বাদ নিতে এলাম।’ অনেক কথার নন্দন উষ্ণ করে তুলল বৈঠক, অনেকটা বন্ধুর মতো আলোচনায় ডুবে গেলাম; চারুকলার শত গল্পগাথায় স্যারের পুরনো দিনের বেশ কিছু কাজ দেখা, আর তা নিয়ে শিল্পশৈলীর-প্রযুক্তিগত জ্ঞান লাভ হলো স্যারের কাছ থেকে। এখনকার মতো স্যারদের তরুণ দিনে অ্যাক্রিলিক আর্টিস্ট কোয়ালিটি রং এত সহজলভ্য ছিল না; কাজগুলির অনেক কটাই অক্সাইড কালারে করা, কিন্তু অত ওপাসিটির মধ্যেও এত অপূর্বতা, এত শৈল্পিক গুরুতা। স্যারদের যুগে এমনকি গ্রাফিকস ডিপার্টমেন্টেও, আজ যা আমরা কম্পিউটার জেনারেটেড প্রডাকশন ছাড়া কল্পনাও করতে পারি না, তার অধিক হাতের দক্ষতায় সিদ্ধ হতো; আর তা হাতেই অতুলনীয় হতো।

সন্ধ্যা ঘনীভূত, বিদ্যুতের হলুদাভ আলোয় চায়ের কাপ ঠান্ডা আর বিস্কিটের পিরিচ ফাঁকাপ্রায় হয়ে এলে হঠাৎ ধ্যান হলো ওঠার সময় এলো। বিদায় চাইলাম স্যারের কাছ থেকে আমরা, আমি আর অভীক, সুধীরা যাকে ‘স্বামী’ বলে জানেন। স্যারের পদধূলি নিতে নিতে কেন যেন চোখ ঝাপসা হয়ে এলো; কয়েক ফোঁটা জল কংক্রিটের মেঝেতে গড়িয়ে পড়ল – নিজেরই অজান্তেই। স্যার আলতো করে মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করলেন দুজনকে। রুমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে আসার পথে অদ্ভুত একটা কষ্ট, মন ভারি করা এক রুদ্ধশ্বাস, হৃদয়ের আঙিনায় থমকে থাকল।

এসব ১৯৯৮ সালের কথা। সে এক বিদায়বেলার অনুষঙ্গ।

এসব স্বপ্ন দেখারও আগের – স্বপ্নের বুননের স্টোরি-বোর্ড।

‘জীবন’ যখন তারুণ্য

তখন বিবাহোত্তর সদ্য শুরুর, নব্য, ‘সঙ’ ছাড়া সংসার। হঠাৎ করে বেশকটা টিউশনি হাতছাড়া হয়ে গেল। ছাত্রত্ব চলছে, অয়েল অ্যান্ড পেইন্টিং ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ক্লাসের কাজ, আবার তদুপরি আউটডোর অ্যাসাইনমেন্টের উপকরণের জোগান অবশ্যকীয়। আমার প্রাইভেট টিওটরিংয়ের ইতিহাস নিজের সেই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বয়স থেকে; অতএব বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতার স্তরে দাঁড়িয়ে, ছাত্র পেতে সমস্যা হওয়ার চিন্তাটায়ও অভ্যস্ত হইনি। ওইদিকে, পাশাপাশি, সমান্তরালে চলছিল টেলিভিশনের রেকর্ডিংয়ের ব্যস্ততা। সময় যেটুকু হাতে, তাতে নতুন ছাত্রের খোঁজে প্রচার চালানোর মতো অবসর নেই। প্রতিটি ক্লাস-ওয়ার্ক স্যাররা নম্বর করছেন। আমি ক্লাসের কাজে অবহেলা করার ধৃষ্টতা রাখতাম না। কয়েকদিন এদিক-ওদিক দু-একজনকে বলে তেমন কোনো ফল না পেয়ে কেন যেন সমরজিৎ স্যারের কথা মনে হলো। রুমা, আমার ছেলেবেলার বন্ধু হওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই পরস্পরকে জানি, স্যার আমায় কন্যার চোখে দেখতেন। আবার, আমার শিক্ষাবিদ পিতার সুবাদে শিক্ষক মহলে একটা সুপরিচিতি সহজাতভাবেই ছিল। দুপুরের খাবার বিরতিতে সমরজিৎ স্যারকে পেলাম, বললাম, ‘স্যার, আমার স্টুডেন্ট দরকার, ক্লাসের অনেক কাজ, রং আর অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনতে খরচ বাড়ছে প্রতিদিন; যদি স্যার কাউকে চেনেন তবে …’

অনুরোধ করেছি বটে, কিন্তু আশা করিনি কত দ্রুত তার ফল পেতে পারি; স্যার তিন দিনের মধ্যে ডেকে পাঠালেন গ্রাফিক্স‌ ডিপার্টমেন্টে, বললেন – ‘শিগ‌িগর যোগাযোগ করো, এই বাচ্চাটার মা আমাকে একটা ভালো শিক্ষক দিতে বলছেন, সামনে বাচ্চার পরীক্ষা।’ এখানেই শেষ নয়, এরপরে আরো ছাত্র পেয়েছি স্যারের অনুমোদনে। আমার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাজীবন অপরনির্ভরশীল, স্বাবলম্বী, আর তাই – গৌরবপূর্ণ। এই গৌরব দম্ভ নয়, নয় ঔদ্ধত্য; এ-মানুষ হিসেবে নারী হয়েও, নিজের শিক্ষাজীবনের ব্যয়ভার নিজে বহন করার অভিপ্রায়ে শিক্ষকতাকেই ব্যবহার করতে পারার, এবং পরবর্তী প্রজন্মের মেয়েদের প্রতি সুনজির রেখে যেতে পারার গর্বিত আনন্দ।

আমার সেই প্রয়াসে অভিভাবকের নিভৃত ছত্রছায়া পেয়েছি স্যারের কাছ থেকে।

চারুকলার বিস্তৃত চত্বরে দেখা হয়ে গেলেই কুশল জানতে চাইতেন, কণ্ঠের অনুভবে – ‘যত্নশীলতা’, মিছে সামাজিকতা নয়। ছেলেবেলায়

মা-বাবাকে হারিয়েছে, এটা যেন দৃশ্যের অন্তরালে মনে থাকত তাঁর। আজ স্যারকেও হারিয়ে সেই পুরনো দিনের ছোট ছোট, কিন্তু ‘তুচ্ছ’ নয় মোটেও, অ্যানিমেটেড স্মৃতি শরতের ঝরা পাতার মতো ভেসে চলছে মনের ক্যানভাসে … ঝরাপাতা – মৃত্যুমুখী, কিন্তু বিবর্ণ বা মø­ান নয়। সমরজিৎ স্যার, এবং অনুরূপ শিক্ষকরা ওপারে চলে যান বটে, কিন্তু পেছনে রেখে যান তাঁদের শিল্পকৃতির আভা … বর্ণিলতার সে ঋদ্ধরূপ রং-তুলির, ক্লে-এর, কীর্তি শুধু নয়, আমাদের দিয়ে যেতে থাকে আলোর দীপ্তি … তখনো, তারপরও আমরা শিখি, তাঁদের কাজের অপূরণীয় অরিজিনালিটি – মূলধারা।

‘শিল্প আর শিল্পী’ – নিগূঢ়, গুপ্ত,

প্রকৃতির এক এমন অদ্ভুত সৃষ্টি – শিল্পী চলে গিয়েও আসলে কি সে ‘গত’? একমাত্র শিল্পীরই তো ‘বিগত অধ্যায়’ এত বেশি জীবন্ত, এত আলোচ্য, এত মূল্যায়িত –

আদরণীয়! আর বারবার প্রদর্শিত!   

আরো আগে, ১৯৯২, শিক্ষানবিশতায়

আমাদের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী সাবসিডিয়ারি সাবজেক্ট অনেক কটা নিতে হতো। তাতে উপকার অনেক। শিক্ষার্থীদের নিজেদের আগ্রহের পাশাপাশি, যোগ্যতা এবং সহজাত মেধা কোন খাতে গভীর তা বুঝতে পারার অবকাশ প্রসারিত থাকে। যথারীতি আমাদেরও গ্রাফিক্স‌ ডিপার্টমেন্টের অ্যাসাইনমেন্ট করার সপ্তাহ এলো। প্রায় সবাই বর্ণমালা ট্রেসিং কোরে ড্রইংটা মিলিয়া নিচ্ছিল; কারণ আছে, এমনকি আউটলাইনের ড্রইং মিলিয়ে নেওয়ার পরও প্রায় সবাই হিমশিম খাচ্ছিলাম প্রতিটি বর্ণমালাকে তাদের অবিকৃত আকারে রেখে তুলি ব্যবহারের  মাধ্যমে গুণগত মান সম্পূর্ণ এবং জমা দেওয়ার মতো কাজ শেষ করতে। কেউ তেমন সাহস তখনো সঞ্চয় করে উঠেছে কি না জানি না, কারণ আমরা মাত্র নবীন শিক্ষার্থী; কিন্তু আমি সরাসরি গিয়ে পৌঁছলাম সমরজিৎ স্যারের কাছে। এখনো মনে পড়ে, দু-মিনিট মাত্র, স্যার তাকিয়ে সরাসরি আমার মুখের দিকে তির্যক একটা চাহনি দিয়ে বল‌লেন – ‘তুমি কেন ট্রেস করবা? তোমার তো নিজের হাতে লেটারিং করার কথা; নতুন করে হাতে শুরু করো।’

স্যারকে বলতে ভয় হলো ‘সবাই তো ট্রেসই করছে।’ খুব ইতস্তত করে শুধু বল‌লাম, ‘স্যার, হাতে করলে তো শেইপ পারফেক্ট হচ্ছে না।’ স্যার আলতো হেসে ‘ইম্পারফেকশনটা কেমন হয় তাই দেখতে চাচ্ছি; একেক জনের ইম্পারফেকশন তো একেক রকম, কি তাই না?’ – বলে পাশে বসা অন্য এক শিক্ষকের দিকে তাকিয়ে কৌতুকের হাসি বিনিময় করলেন। আজ, এই নিজস্ব পরিপক্বতায় বুঝি, স্যার কী বুঝিয়েছিলেন সেদিন; এমনকি ভুলের ভেতরেও কারটা মূলত কতটা নির্ভুল বা যথার্থ হয়, কার তুলির টানে কতটা পারদর্শিতা, তাই উনারা

দেখতে চেয়েছেন। তবু অপছন্দ করেছেন শিল্পী বানানোর কারখানায় বর্ণমালা ট্রেস করাকে।

আজ, এক অনন্য শিল্প – হাতে আঁকা ‘ক্যালিগ্রাফি’ কম্পিউটার জেনারেটেড লেটারিংয়ের বদৌলতে বিলুপ্তপ্রায়। স্যার মাত্র কয়েকটি পোচে, অতি সাধারণ কালি ব্যবহার করে দেখিয়ে দিয়েছিলেন কীভাবে খালি হাতে বর্ণমালা আঁকতে হয়! আমার, আমাদের বিস্ময়ের সীমা ছিল না।

ভুলগুলো ধরিয়ে যখন দিতেন, মনে হতো – এভাবে আমি কেন ভাবতে পারলাম না? দেখতে জানলাম না? এমন অবিবেচিত-স্থানে স্যারের চোখে আমাদের তৎকালীন কাজের ভুল ধরা পড়তো, যা একমাত্র তাঁর নিজস্ব ক্ষেত্র আর অনুষদের একজন গুরুই দেখতে পান। আমি গ্রাফিক্‌েসর নই, ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিংয়ের – তবু, কয়েকটি মাত্র সাব‌সিডিয়ারি ক্লাসের বদৌলতে স্যারের কাছ থেকে যা শিখেছি তা মননের খাতায় শুধু শিল্পশিক্ষা নয়, প্রকৃত শিল্পীর আসলে জ্ঞানার্জনের সময়ে কী কী বিষয়ে কখনোই আপস বা কম্প্রোমাইজ করতে নেই, তাও শিখেছি। কঠিন ভাবে, নিজের মেধা আর গুণগত পারদর্শিতাকে চ্যালেঞ্জ করে, ছাত্রকালে যা কষ্টার্জিত জ্ঞানার্জন হয়, পরিপক্ব মেধাবৃত্তিতে তা প্রভূত বোধিসম্পন্ন সর্বাঙ্গীণ ধীশক্তিতে পরিণত হয়। যে শিল্পীর প্রচেষ্টা – নিজেকে এমন একজন সৃষ্টিশীল অস্তিত্বে পরিণত করা, যে-শিল্পকলার অন্তর্গত সার-নির্যাসকে অবগত করতে পারে – এমনকি আরেকটি ভিন্ন ধারার শিল্পের ক্ষেত্রেও, সে শিল্পী কালজয়ী, ক্ষণজন্মা। সমরজিৎ স্যার সেসব শিক্ষকের একজন, যাঁদের কারণে ওপরে উল্লি­খিত বোধগুলি অনুধাবিত হয়।

আরেকটি ভিন্ন সমাবেশে আমরা জড় হয়েছিলাম একটা বিশেষ আর্ট ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের জন্য। পঁচিশ বছরেরও আগের কথা, শিল্পশালাটির আয়োজকের নাম ঠিক মনে নেই। তবে আমাদের শিক্ষকমণ্ডলীর অনেকেই অংশগ্রহণ করেছিলেন, এটা পরিষ্কার মনে পড়ছে। সবাই প্রফেসরদের সামনাসামনি সরাসরি কাজ করতে দেখে খুব উৎসাহিত, খানিকক্ষণ পরপর ঘুরে-ঘুরে কাজ দেখছিলাম বিভিন্ন টেবিলের সামনে গিয়ে। সমরজিৎ স্যারকেও তখন দেখেছি; কী অসাধারণ উনার হাতের দখল, কি ম্যাসট্রি উনার তুলির, রঙের ব্যবহার ও প্রয়োগে – তা অনুধাবন করেছি স্তরের পর স্তর তাঁর কাজের অগ্রসরতা দেখে। শিক্ষকদের কাছ থেকে শেখা – জ্ঞানের একটি ধারার স্তর; আর তাঁদের নিজেদের দক্ষতার আলোকে, বেপরোয়া মনন ও মেধার বিচ্ছুরণে যখন তাঁরা নিজের জন্য কাজ করেন, যার পেছনে ‘শিক্ষার্থীরা শিখতে পারবে কি পারবে না’ – এই উদ্বেগ অনুপস্থিত থাকে, সে-কাজ দাঁড়িয়ে ততক্ষণ দেখা যায়, যতক্ষণ দু-পা না বলে যে তারা আর খাড়া থাকবে না।

‘মনে থাকা’, আর ‘মন পড়ে থাকা’ দুটো দুই ব্যাপার। শিল্পগুরুদের সান্নিধ্যে শিক্ষাগ্রহণের কিছুটা সময়ের স্বর্ণালি অভিজ্ঞতায় আমার মতো কারো কারো মন পড়ে থাকে …     

যাবার বেলায় … কুড়িয়ে

নেওয়া সুঘ্রাণ 

ছোট্ট বালিকা কোঁচা ভরে কুড়োয় ফুল, মার্বেল, আম অথবা প্রিয় ফল …

এটা-সেটা।

আমি সেই ১৯৯৮-এর হিম-ছুঁয়ে যাওয়া সন্ধে শেষের রাতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চওড়া পথের কোল থেকে, হাঁটতে হাঁটতে কুড়িয়ে এনেছি শেষ দেখা করা এই মহান, অবদানকারী শিল্পী এবং শিক্ষকের সহানুভূতিশীল, অনুবেদনাপূর্ণ মননের কিছু টুকরো মুহূর্ত।

‘শিল্পকলা’ – স্বয়ং, নিজেই, একটি অদ্বিতীয়, অনুপম দান; একটি উপহার।

আমার শিক্ষকেরা এক একজন শিল্পতরু; সমরজিৎ রায় নামে এক শিল্পতরুর ছায়ায় কিছু সৃজনময় সুগন্ধি সময় আমায় অনন্ত মহাকালে সাথ দেবে।

‘স্যার, আপনি এখন শান্তিতে ঘুমান, আমরা জাগছি আজও – হৃদয়ে আপনার, আপনাদের অঙ্কিত তন্ত্রীতে বাজছে অনন্য সুর … আমরা যেন বিভিন্ন মাধ্যমের শিল্পের আলোকচ্ছটায় বয়ে নিয়া যাই আপনাদের স্রোতধারা …।’